সারা রামায়ণ কিংবা মহাভারত জুড়ে ভিলেন খোঁজা মানে হলো ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়। রামায়ণ মহাভারত কোনো রোমান্টিক প্রেমের কাহিনী তো নয়, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৎকালীন সমাজ দর্পন।
নায়ক ভিলেন এসব সেন্টিমেন্ট নিয়ে মাথা ঘামায় নেকু পাব্লিক।
(রামায়ণ)
রাজনীতিতে অত উতলা হলে গদি ছিঁড়ে ভেতরের ছোবড়া পেছনে খোঁচা দেয়। ওখানে ফেলো কড়ি মাখো তেল, সীতা তুমি কি আমার পর??
কে যেতে বলেছিল আমার সাথে বনবাসে, তিন তিনজন শাউড়ি সামলে ঘর করবে না তাই স্বামীর রিমোট পোষ্টিং এ বাক্স গুছিয়ে তড়িঘড়ি রেড়ি।
তার ওপর আবার হঁ, রাম ওই হরিণটো লুব, একি আহ্লাদিপনা!! এবার যদি রাজ্যের লোকেরা তোমাকে রেপড ভেবে তোমাকে ত্যাগ করতে বলে তখন আমি তো আর পত্নীপ্রেম দেখিয়ে নিজের রেপুটেশন এর তেরোটা বাজাতে পারি না। অযোধ্যার সিংহাসনে কি সারাবছর পাদুকা বিরাজ করবে নাকি??
আঃ,মোদিত এই পুণ্য ভারতধাম,
বনেতে পচেন সীতা, রাজা হন রাম।।
ওহে লক্ষ্মণ, সুগ্রীব কিংবা বিভীষণ কে দেখে কিছুই কি শিখলে না, কোনো মানে হয় দুজন নব্যবিবাহিতের মাঝে কাবাব মে হাড্ডি হওয়া, শোনো গুরু, আগে তুমি লছমনরেখার মানে বোঝো তারপর অন্যেরটা টানবে।
ভাই ভরত তুমি কিন্তু Awesome. সোনি সি তেন্নু চাল। ক্ষমতার কলকাঠি সে সিংহাসনে বসেই হোক আর আড়াল থেকেই হোক। দুই ই উপাদেয়। ত্যাগের উদগারের আনন্দও তো তাতে কম নয়।
আসলে জনতা জনার্দন চিরকালই আবেগে ভাসে।
নইলে রাবণের মতো প্রেমিক যে কিনা অনুমতি বিনা সীতা অঙ্গ স্পর্শমাত্র করেনি, শুধুমাত্র বোন শূর্পনখাকে লক্ষ্মণ রিফিউজ করেছিল বলে, একবার দেখিয়ে দিতে চেয়েছিল, হাঁ ম্যয় ভি কুছ কর সাকতা হু আগর চাহু তো।
বিভীষনের মতো সে ভাবতেই পারতো, ওইসব বোনফোনের সেন্টিমেন্ট এ দাও লবডঙ্কা।
বিদেশী শত্রুর সাথে চুক্তি সাইন করো। লেটস উয়িন লঙ্কা।
শোনো বাপু, ওসব headstrong দের দিয়ে রাজনীতি হয় না। রাজনৈতিক কাব্যে কোনো নায়ক নেই সবাই ভিলেন।।।
(মহাভারত)
কার শুক্র কার গর্ভে গিয়ে পেল ঠাঁই।
কুরুক্ষেতোরে হুইসেল ফুঁকিলেন কানাই।।
কে কৌরব, কে পান্ডব, কে কার ছেলে, কে ভয়ে চোখবুজে গর্ভিনী হলেন বলে কানা ছেলে হলো, কে ভয়ে পান্ডুরবর্ণ হলেন বলে ছেলেটির জন্ম থেকে লিভার ফাংশন খারাপ, তাই পুরুষত্ব নেই এসব ঘাঁটাঘাঁটি করে লাভ নেই বাপু।
সেযুগে নারী পুরুষ ইচ্ছেমতো সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারতো, গঙ্গা, সত্যবতী, কুন্তি, দ্রৌপদী সবাই এই স্বাধীন সমাজের মুক্ত নারী।
গান্ধারীকে চোখে ঠুলি এঁটে বসে থাকতে কে বলেছিল, বাবা অক্ষম হলে মাকেই ছেলেপুলে মানুষ করবার জন্য রণে কোমর বেঁধে নামতে হয়, সেটা কুন্তি দেখিয়ে দিয়েছে। মাদ্রীর মতো আগুনে ঝাঁপ দিয়ে সতীত্ব অন্তত কুন্তি দেখায় নি।
যদি সবে, খলনায়ক হবে ডুবে যাবে বিশ্ব।
সব তীব্র তীরের তীর্যক শর একা একা সহিবেন পিতামহ ভীস্ম।
এমন মেদুর নায়ক আর দুটি দেখিনি। নায়ক হতে গেলে অনেক অন্যায় হজম করতে হয়, খলনায়কদের সে দায়ভার নেই। তাদের খল-বল-ছল
ভরসা।
সেই দেবব্রত যিনি পিতার প্রেমে প্রশ্রয়দাতা, নিজপ্রেমে বাউল দার্শনিক, এক প্রচন্ড সম্ভাবনাময় নায়কের মেঘের আড়ালে নিজেকে আজীবন আচ্ছাদিত করে রাখা। যে যুগে সিংহাসন পাবার বাসনা নিয়ে এত নিয়োগপ্রথা, এত হানাহানি, এই সর্বতোসক্ষম মানুষটি সেই হীনমন্য যুগের নির্বাক দাবার ঘুঁটি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজের ইচ্ছাধীন। নির্লিপ্ত, নিঃসঙ্গ, নীরব।
অথচ ইনি রাজা হলে,পুরো কাহিনীটার ending টাই আলাদা মাত্রা পেত?
তাই তো হয়, এখনো তাই হচ্ছে, উপযুক্ত মানুষদের কজনাকে নির্বাচন করি আমরা রাজসম্মানে??
যুগে যুগে গঙ্গায় বয়ে যায় শান্তনুর সুযোগ্য সন্তান।
দেশের যোগ্য নেতাটি দিগন্তের ছায়াপথে একাকী হাঁটতে হাঁটতে একদিন কবে যে ধূমকেতুর ইচ্ছামৃত্যু নেয় কেউ জানতেও পারে না সেকথা।
ভারতবর্ষ বারবার বেজন্মা কুরুক্ষেত্রে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে।
বোলো বোলো ভিলেন বাপ্পা কী জয়।।। ত নি মা।।
তীর্যক পাঠ বেশ লিখেছেন। আরেকটু বড় করে রয়েসয়ে লিখলে পারতেন! শুভ
#
ইচ্ছে করলে লগইন এর ঘরে গিয়ে নিজের নাম সম্পাদনা করে বাংলায় লিখে নিতে পারেন
অসামান্য লেখা! খুব ভাল লাগল।