"নিরাভরণ”
ওপরের শত-শীর্ণ-জীর্ণ বিজ্ঞাপনের প্ল্যাকার্ড, কিছু খড়, দু-দশখানা চৌকো শ্যাওলাছোপ টালি, রিফুময় ছাদের নীচে, তখন নিগ্রো ভাতের হাঁড়ি, ফ্যানের বুদবুদ ভাঙছে - গড়ছে, একমাত্র জীবন্ত তখন উনুনের কাঠকয়লা আর আগুনখানা, দুঃখ-দারিদ্র্য - পাই নি - হতভাগ্য, সব দীর্ঘশ্বাস আর শব্দ, ভাবনা পোড়াতে পোড়াতে ক্লান্ত...... চিরস্বরূপ ......
সদ্য উত্তোলিত হল জাতীয় পতাকা, কিছু টুকরো ফুল বাতাসে - আকাশে, নিবেদন ...... তবু ওই তেরঙা অনেক প্রশ্ন জাগিয়েছে, ওই ছোট্ট ছেলেটার মনে, যার হাসিটি হাজার বছরের, শুকনো - হাড় জিরজিরে হাতটি মার হাতে রেখে, ও প্রশ্ন করে,
"পতাকায় ওই তিনটে রং কেন মা?", মা তখন ব্যস্ত হাঁড়ির ফ্যান ওলটাতে, দু-মুঠো ভাত, বাকিটা ফ্যান গোলা জলে রোজের মতো সম্পূরক ......
ওর মা বোধহয় কোনো রং খুঁজে পায়নি ওই ফুটন্ত জলে......তাই অকুন্ঠ উত্তর, "জানি না রে..... ''
উষ্ণ উত্তেজনা ওদের কাছে শীতল, শুষ্ক
সত্যিই ওদের দিনলিপি নেই, নেই রাত-দিন,
নেই বছর; আমরা তো কেন্দ্রবাসী, ওরা প্রান্তিক, কী আর ওদের দোষ...... উনুনের ধোঁয়ায় হাওয়া দিতে দিতে কাশির দমক, মা ব্যস্ত ......
ছেলেটি বোধহয় জাতিস্মর, হয়তো বা সত্যাগ্রহী, বুকের রক্তে ভিজিয়েছে ওই তিন রঙের পতাকা, তবু ছিঁড়তে দেয়নি ৷ তাই বুঝি আমাদের দৃষ্টি ওই কাদার প্রতি আর ছেলেটি
এখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে ৷৷