শুভেন্দু অধিকারী আজ একটি ইন্টারেস্টিং কথা বলেছেন- তিনি আগে যে দল করতেন সেইটা নিষ্ঠার সঙ্গে করতেন বলে তখন বিজেপি হঠাও স্লোগান দিয়েছিলেন। আজ থেকে যে দল করবেন, সেটিও নিষ্ঠার সঙ্গে করবেন বলে তোলাবাজ ভাইপো হঠাও স্লোগান দিলেন। অর্থাৎ, দলের প্রয়োজনে যা দরকার, দল যে কাজ দেবে সেটা পেশাদারি দক্ষতায় করবেন। নিষ্ঠা, দক্ষতা দিয়ে দলের কাজ করা আসল। কিন্তু, কী কাজ করছেন সেইটি কি নয়? একবছর আগে সি এ এ বাতিল করো, এন আর সি বাতিল করো বলতেন, নিষ্ঠার সঙ্গে বলতেন, এমনভাবে বলতেন যে তাঁর স্লোগান শুনে নিজেদের কর্মীরা উদবুদ্ধ হবে, পথচলতি মানুষ নিজের অবস্থান পালটে ফেলবেন। আজ তিনি সেইভাবেই এন আর সি লাগু করো, সি এ এ বলবৎ থাকুক বলবেন? ভেবে দেখলে পেশাদার শুভেন্দুর কাছে এটি যেমন শ্লাঘার, ব্যক্তি শুভেন্দুর কাছে এটি হয়ত তত গৌরবের নয়। পথচলতি যে মানুষটা শুভেন্দুর স্লোগান বক্তৃতা শুনে কাল একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ্তিনি কিন্তু এরকম দুম করে নিজের বক্তব্য পালটে ফেলতে পারেন না। অন্ততঃ নিজের পরিমণ্ডলে সেটা এত সহজে গৃহীত হয় না। কিম্বা, শুভেন্দু অধিকারী খুব গুরুত্বপূর্ণভাবে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিভিন্ন কারিগরদের কথা বলেন, অথচ তিনি যে দলটা করছেন, সেইটা ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরোধী ছিল। -- এইটা যে কোনো ব্যক্তির কাছে একটা সমস্যার জায়গা তো বটেই। সাধারণ মানুষ পেশাগতভাবেও এরকম কিছু করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে না যা তাঁর নিজস্ব ইন্টিগ্রিটিকে প্রশ্নে ফেলে, পার্টি পলিটিক্সের লোকজন এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়ে যায়। আর, এইটা শুভেন্দু একা নন। দলবদল, এবং নতুন দলে এসে পেশাদারি দক্ষতায় পুরোনো পজিশনে খেলা, আগের দলের গোলে বল ঠেলা খুব বিরল নয়। আমাদের রাজ্যপাল ধনখর আগে কংগ্রেস করতেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে ডেমোক্র্যাট ছিলেন, বিমল গুরুং আগে বিজেপির সঙ্গে ছিলেন। ইতিহাসেও বহু বহুবার এরকম হয়েছে। ছিলে কংগ্রেস হল মুসলিম লিগ তো স্বাধীনতার পূর্বপর্যায়ে খুব সাধারণ ব্যাপার।
দেখা যায়, ব্যক্তির নিজস্ব কিছু ইচ্ছে থাকে, সেটা কখনো তাঁর ভাবধারার সঙ্গে জড়িয়ে, কখনো তাঁর ব্যক্তিগত উন্নতির সঙ্গে জড়িয়ে, কখনও যে গোষ্ঠী বা যে আন্দোলনকে তাঁরা ধারণ করছেন তার বিকাশের সঙ্গে জড়িয়ে, যা আগের দলটিতে থেকে পূরণ হচ্ছে না, তাই নতুন দলে যাওয়া। কিন্তু, নতুন দলের একটা সামগ্রিক এজেন্ডা আছে, যা হয়ত, ঐ ব্যক্তির পুরোনো অবস্থানের অনেক কিছুর বিরোধী। ফলে তাঁকে দুম করে বিবিধ বিষয়ে নিজের অবস্থান পালটে ফেলতে হবে- এইটা সমস্যার। কিন্তু, এই সমস্যা পার্টি-পলিটিক্স নামক ব্যপারটারই। রাষ্ট্র পরিচালনের নীতি নিয়ে একটি পলিটিকাল পার্টি যেহেতু উঠে আসে, তাই তাকে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের স্পষ্ট বক্তব্য রাখতে হয়। এইবার সেই পার্টিতে যোগ দিতে গেলে একজনকে পার্টির প্রায় সমস্ত বিষয় মেনে নিতে হয়। (নতুন দল করলে সমস্যা কিছু কমে, কিন্তু সেটা ব্যতিক্রম, আর ইউরোপ আমেরিকায় নতুন দল করা প্রায় গৃহযুদ্ধ করার মতন ব্যাপার)। আবার পার্টির ক্ষেত্রেও একজন ব্যক্তি সমস্যার। শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামের অর্জন তৃণমূলের অ্যাকাউন্টে গেছে, সেইটা অস্বীকার করা প্রায় কমিউনিস্ট পার্টির ট্রটস্কিকে অস্বীকার করার মতন কঠিন।
এইখানে আমরা দেখি, এই সমস্যাটা পার্টি-পলিটিক্স নামক ব্যাপারটারই। মানুষের আন্দোলন, অ্যাস্পিরেশন, পরিচিতি, ভাবধারা বিবিধ এবং অনেকক্ষেত্রে সেগুলো একটা লোককেই আলাদা আলাদা গোষ্ঠীতে ফেলে। সেখানে একটা পার্টিতে একজনকে ধারণ করা খুব কঠিন ব্যাপার। আবার পলিটিক্স যে পার্টি-নির্ভর, কর্মীরা নেতার ভরসায় জীবনপণ করছেন, কিন্তু নেতা নিজে পেশাদার- তিনি ভালো নিযুক্তি পেলে অন্যদিকে চলে যাবেন। এরকম নয়, যে আজকের সোশাল মিডিয়া আর চূড়ান্ত আপতিক মতপ্রকাশের অধিকারের যুগে এইটা উঠে আসছে। পলিটিক্সের এই সমস্যা আগেও অনেকবার মানুষ দেখতে পেয়েছে। বাংলার জাতীয় আন্দোলনের উন্মেষপর্বে একাধিক চিন্তাবিদ- স্বামী বিবেকানন্দ, ঋষি অরবিন্দ, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন কিম্বা রবীন্দ্রনাথ এই নিয়ে লিখেছেন। দেশের কথা প্রবন্ধে চিত্তরঞ্জন এই পলিটিক্স-কে বিদেশি জিনিস বলেছেন- খুব বিশদে লিখেছেন আইনসভার কার্যকলাপ কেন মানুষের নিজস্ব অ্যাস্পিরেশনকে ধরতে পারে না। অরবিন্দ তাঁদের গুপ্তসমিতির লড়াই ব্যর্থ কেন বোঝাতে বলেছেন, এটিও পলিটিক্স এবং এই পলিটিক্স ব্যপক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে না। পার্টি নিয়ে রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন ফর্মের লেখার কথা সর্বজনবিদিত। চিত্তরঞ্জন আর রবীন্দ্রনাথ, দুজনই এইটার একটা বিকল্প বলেছেন, যা হল সমাজকে শক্তিশালী করা যাতে রাষ্ট্রের পরিসর কমে আসে। সমাজ, এবং গ্রাম বা অন্য আঞ্চলিক ফর্মে তার ক্ষুদ্র ইউনিটগুলি নিজেদের বিভিন্ন অ্যাস্পিরেশন এবং সঙ্ঘাত রাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী না হয়ে সমাধান করতে পারে, ফলে একটি রাষ্ট্রীয় পার্টির দরকার কমে আসে এবং পার্টির অ্যাসার্শন এবং পার্টিনেতৃত্বের পেশাদারদের বাদ দিয়ে মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই চলতে পারে। রবীন্দ্রনাথ একেই সমাজতন্ত্র বলেছেন। বলশেভিকরাও বিপ্লবের পরে সোভিয়েতকে ক্ষমতায়িত করে রাষ্ট্রের পরিসর কমাতে চেয়েছিল, যদিও পার্টির টিকে থাকার স্বার্থে তাদের পরবর্তীকালে সোভিয়েতের হাত থেকে ক্ষমতা কমিয়ে রাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে হয়।
তিন মাস বলেছি মানে তিন মাস একদিন হবে না। ইয়ে না, হবে। পয়লা এপ্রিল দেব। যাতে ভুল প্রমাণিত হলে নিছকই ঠাট্টা বলে কেটে উঠতে পারি!)))))))))
বোধিদা, বিগত ৩০ বছরের কোন ইলেকশানে লোকসভা-বিধানসভায় খুব বেশি পার্থক্য ছিল?
ও বড়েস ফিরে এলেন আবার? বেশ। তাইলে খ, আপাতত নদীয়ার ১৭টা সিট। তিনোর জন্য চাপড়া, নাকাশিপাড়া ও কালীগঞ্জ। নবদ্বীপে টাফ ফাইট হবে। বড়জোর আরেকটা তিনোর কপালে যেতে পারে। ফাইন্যাল বিজেপি ১২-তিনো ৫ (তিনোকে সামান্য এগিয়ে রেখে)। এখনও অবধি। তিন মাস পরে এটা ১৪-৩ হতে পারে। আপনি বীরভূম বলুন, মিলিয়ে দেখি। আগে নিজের নিজের জেলায় খেলি বরং।
"আর স্টক মার্কেটের মত রেশনাল অবজেক্টিভ করে এখানে দেখা টা স্টক মার্কেটেই ঠিক না, এখানে কি ঠিক হবে ? মানে স্টক মার্কেট কে, ভারতে অন্তত, ইকোনোমির সিরিয়াস ইন্ডিকেটর আর বলা যায় কি? তোমাদের ওদিকেই কি আর বলা যায়?"
এইটা যে বোধিদা কিসব হাবিজাবি লিখলেন কিছুই বুঝলাম না। র্যশনালিটি আর মার্কেট এফিসিয়েনসির মধ্যে পার্থক্য আছে। মার্কেট এফিশিয়েন্ট না হতেই পারে, প্রচুর উল্টোপাল্টা ভ্যালুয়েশন থাকতেই পারে। কিন্তু তাতে প্রাইস টেকার মার্কেট পার্টিসিপেন্টরা র্যাশনাল এন্টিটি নয় সেটা প্রমাণ হয়্না।
একই ভাবে বিজেপি আসলে রাজ্য এবং রাজ্যবাসীর সমূহ বিপদ হতেই পারে, হবেই। কিন্তু তাতে এক্সোডাস যারা করছে, তারা নিজেদের ইউটিলিটি ফান্কশান ম্যাক্সিমাইজ করছে না, সেটা প্রমানিত হয়না। সবাই বুঝে শুনেই ডিসিশান নিচ্ছে।
আর শোভন বা সৌমিত্রর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হাল্কা করে খিল্লি করা যেতেই পারে, টিভির সামনে তাদের নাটকটাও অসহ্য লাগে, কিন্তু পলিটিকালি ওসবের খুব বেশি গুরুত্ব আছে বলে মনে হয়না।
খ এর বিশাল প্রবন্ধের হাবিজাবি আমিও কিচ্ছু বুঝলাম না। কাশ্মীর থেকে রাম মন্দির থেকে তিন তালাক -এই সমস্যাগুলো এতো বছর ধরে অন্য কোনো সরকার এড্রেস করেছে কি ? এতো বছর ধরে তো ফেলেই রাখা হয়েছিল।ম্যাংগো লোকে সমাধান দেখতে চায়না , লং টার্মে সেই সমাধান কত ঘেটে যাচ্ছে সেটা দেখার ধৈর্য্য ও কারোর নেই , লোকে অ্যাকশন দেখতে চায়। সেটা পুরোদমে পাচ্ছে। পলিটিক্স এখন লাইভ এন্টারটেনমেন্ট।
তো আপনার ধারণা সোশ্যাল মিডিয়ায় গামা গামা প্রবন্ধ নামিয়ে বিজেপির আইটি সেল ম্যাসিভ জাগারনাট এর কাউন্টার করবেন ? আর লোকে সেগুলো পড়বে আর বদলে যাবে -? শুভেচ্ছ রইলো। চালিয়ে যান।
আর হ্যা আমিও কোনো পার্টি মেম্বার নই , জাস্ট হয়তো সামান্য একটু বাম মনস্ক। তাও ভুল হয়তো , আমি বরং মনে করি মমতার থেকে বুদ্ধদেবের সরকার ভালো ছিল , একটা কিছু কন্সট্রাক্টিভ করার বা গড়ার চেষ্টা করেছিল। যেগুলোকে মমব্যান আর বিবেকবান বুজিরা যত্ন সহকারে অন্তর্জলি যাত্রায় পাঠিয়েছেন।
আর বিজেপি আর মমতার কোনো তফাৎ আমার কাছে নেই , দুটোই এক রকমের ফ্যাসিস্ট। ইন্ডিয়ার বাকি লোকের ভাগ্য খুবই ভালো যে তালেগোলে মমব্যান কোনোভাবে প্রধানমন্ত্রী হয়ে যায়নি। সুতরাং যে আসে আসুক , আমার কিচ্ছু আসে যায়না। আর যদি কারোর কাছে এগারোতে "যে আসে আসুক বামেরা যাক " স্লোগান ঠিক থাকে তাহলে একুশে "যে আসে আসুক মমতা যাক " স্লোগানও আমার কাছে ঠিকই আছে .
তার জবাবে আপনারা হাজারটা প্রবন্ধ নামাতেই পারেন। কিন্তু সেই সব পড়ে বা শুনে কেও গিয়ে নিজের ভোট বদ্লাবে ,জাস্ট হাসি পাচ্ছে শুনে মাইরি । বামেদের কেন লোকে ভোট দেবে এই বাজারে ? কে আছে ওদের মুখ্যমন্ত্রী মুখ এখন বলার মতো ? বিকল্প মুখ , বিকল্প মডেল সামনে না থাকলে এই বাজারে জাস্ট খাবেনা। ইন ফ্যাক্ট এই একটা কারণেই বিজেপি হারতে পারে যে মমব্যান এর এগেনস্টে ওদের পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্ডিডেট নেই (এখনো অবধি)। কালকেই খেলা ঘুরতে পারে।
এবং এই একটা কারণেই নেক্সট ১-২ লোকসভা ভোটেও আমি মনে করি বিজেপি যতই ছড়াক , কিন্তু আবার জিতবে কারণ বিরোধীরা কাউকে পাল্টা প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে তুলে ধরতে পারবেনা কিছু মেজর মিরাক্কেল নাহলে। সব রিজিওনাল পার্টি নিজের নিজের আখের গোছাবে আর কংগ্রেস সেই রাহুল আর প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর পায়ে তেল মালিশ করবে। এতে প্রবন্ধ পড়া বা নামানোর কোনোটারই উৎসাহ বা কোয়ালিফিকেশন নেই আমার। জাস্ট ফ্রম কমন সেন্স স্টান্ডপয়েন্ট।
নিজের সার্কলে চেনাশোনা লোকের সাথে আলোচনায় দেখেছি কি পরিমানে ঘৃণা জমা হয়েছে এভারেজ মিডল ক্লাস বাঙালিদের মধ্যে মমতার এগেনস্টে (যদিও ভোটার % এদের সংখ্যা খুবই কম )। এখানে মায়াপাতায় আপনি বলে যেতেই পারেন মমব্যান খুব ভালো , কোনো সংখ্যালঘু তোষণ করেননি ইত্যাদি । এখানে গুরুর পাতায় যারা লেখেন তাদের ৮০-৯০% অলরেডি বাম মনস্ক। এখানে কনভিন্স করার চেষ্টা করে কি লাভ ? এসব আগে নিজের বরং নিজের আত্মীয়দের বা বন্ধুদের কনভিন্স করুন, দেখুন তাতে কাজ হয় কিনা। আরাবুল থেকে শাহী ইমাম বরকতী ওদিকে অনুব্রত মন্ডলের নকুলদানা - এদের মতো চূড়ান্ত লুম্পেন এলিমেন্ট দের নিয়ে মমব্যান এর আদিখ্যেতা লোকে ভোলেনি , দিব্যি মনে রেখেছে।
মমতা যাক বিজেপী আসুক এ ত অমিতচাড্ডি দুবছর আগে থেকেই বলে আসছে। বিদেশে বসে ইনিয়ে বিনিয়ে বিজেপীর হয়ে বলাই দস্তুর। বঙ্গের জন্য যে আসে আসুক এর লবেঞ্চুষ ঝোলানো।
নিননিছার দেখি এখানেও উপদ্রব।
আমিও তাই বলছিলাম বিজেপি র হয়ে প্রচারটা তো এখানে করে লাভ নেই, এখানে তো সবাই বাম মনষ্ক। আর যারা বিজেপি মনষ্ক তারা তো রয়েইছেন বিজেপি র সঙ্গে। আপনিও রাস্তায় প্রচার করুন। সেখানেই দেখা হবে। না হলে এই অনুযোগ তো কিস্যু কাজে আসছে না
বোধির এই মতটাতে ক, যে বিজেপি শয়তান হতে পারে কিন্তু সব জায়গায় নিশ্চিদ্র ভাবে সেই শয়তানি পুরোপুরি করে ওঠা যাচ্ছে না। কাশ্মীরেও জোট হচ্ছে, উনিজীকে গুরুদ্বারে মাথা ঠুকতে হচ্ছে, এ এম ইউ-তেও বক্তৃতা দিতে হচ্ছে। উপরন্তু, এখানে সম্পূর্ণ পোলারাইজড প্রচার দিয়ে ভোটকর্ম শুরু করতে পারেনি, সি এ এ-কে কাজে পরিণত করা নিয়ে সমস্যা আছে, আগামী বছরে বাংলাদেশে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে মোদী যাওয়ার আগে খুব একটা চেঁচাবে না ইত্যাদি। তো এই পরিস্থিতিতে কেউ যদি বাম-্মনোভাবের বা লিবারেল হন, বিজেপি বিরোধী হন, তার চেষ্টা করা উচিত সেই প্রচারটা করা, এটা মেনে না নিয়ে যে রাজ্যের সব লোকই এখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে কাকে ভোট দেবে সেই ব্যাপারে, মিটিং-প্রচার তো সেই জন্যই। তারপর কার কতখানি ক্ষমতা ইচ্ছে জোর সেসব তো আছেই।
ও বড়েস ফিরে এলেন আবার? বেশ। তাইলে খ, আপাতত নদীয়ার ১৭টা সিট। তিনোর জন্য চাপড়া, নাকাশিপাড়া ও কালীগঞ্জ। নবদ্বীপে টাফ ফাইট হবে। বড়জোর আরেকটা তিনোর কপালে যেতে পারে। ফাইন্যাল বিজেপি ১২-তিনো ৫ (তিনোকে সামান্য এগিয়ে রেখে)। এখনও অবধি। তিন মাস পরে এটা ১৪-৩ হতে পারে। আপনি বীরভূম বলুন, মিলিয়ে দেখি। আগে নিজের নিজের জেলায় খেলি বরং।
এলে, নোটেড। ঠিক আছে। আপনি তাহলে বিজেপি কে অনেক এগিয়ে রাখছেন নদীয়ায়। এখন কি আছে? ১৬ টার মধ্যে ১১ টা টি এম সি, ৩ টে কংগ্রেস, ১ টি বিজেপি, একটি সিপিএম দেখছি ২০১৬ r রেজাল্টে। আপনি ১৭ টা সিট বলছেন, আমি ১৬ টা সিট বলছি কেন, কোথায় ভুল হচ্ছে। আমি বিধান সভার ওয়েবসাইট অনুযায়ী বলছি।
৩০ মে ২০১৬ র ডেটা। এর পরে কি সিটের সংখ্যা / লিমিট বদলেছে কিছু?
বীরভূমে গল্পটা মোটামুটি এইঃ
১১ টা সিট। আপাতত ২০১৬ র ডেটা হল, ৯ টি এম সি, একটি সিপিএম, একটি কংগ্রেস। এটা আমি এখনি প্রেডিক্ট করছি না। একটু খোঁজ নিতে হবে। তবে এটা উল্টে ধরুন নদীয়ার মত বিজেপির সুইপ হবার প্রোবাবিলিটি বহুত কম।
বীরভূমে বিন্যাস টা এই। বীরভূমের শহর গুলো তে বরাবরি কংগ্রেস শক্তিশালী, গ্রামে ভুমি সংস্কারের আমলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের শক্তি তৃণমূলের আমলে বেড়েছে, তাই পৌরোবোর্ড গুলৈই শুধু না , গ্রামেও তৃণমূলের ভোট বেড়েছে। দুবরাজপুরে বিজেপির সংগঠন ছিল, আদিবাসী দের পুনঃ হিন্দুকরণ ইত্যাদি অপূর্ব প্রোগ্রাম হত, রাম জনমভোমি আন্দোলনে দুবরাজ পুর থেকে জেলার লজ্জা কয়েকটি ইঁট গেছিল, আদারওয়াইজ বাম আমলে বিন্যাস টা ছিল, শহর এর সিট কংগ্রেস পেত, পৌরবোর্ডে সিপিআই কোথাও কোথাও ফাইট দিতো। রেয়ারলি বাম পৌরবোর্ড গঠন করত। গ্রামের সিট বাম্ফ্রন্ট, আর এস পি, বা সিপিএম, বা ফ ব পেত। ভূমি সংস্কার, খেত মজুর সংগঠন আদিবাসী সংগঠন এর জন্য গ্রামে প্র্যাকটিকালি লেফ্ট সুইপ করত। এটা বিরোধীহীন তৃণমূলের আমলে টি এম সি সুইপ করেছে। ডেমোগ্রাফিক বদল ও হয়েছে, কৃষি র আয় কমেছে, গ্রামীন এলাকায় অকৃষি কাজ বেড়েছে। জমির নতুন কনসোলিডেশন ও হয়েছে, রাস্তার পাশে চাষ আর হয় না। এবং আগেকার জমিদার না হলে বড় জমির মালিকরাই এখন বিল্ডার হিসেবে , বা সিভইল কন্ট্রাকটর হিসেবে রয়েছেন, তারা লোকাল এম্প্লয়ার হবার কারণেইহয়, ব অন্য কারণে হোক, তৃণমূল্র আমলে তারাই জেলার একেছত্র নেতা। নদীয়ার সংগে একট মিল, রিজার্ভ্ড সিট সিপিএম পেয়েছে ২০১৬ অব্দি ও। নিম্নবর্গ দের নিয়ে আলদা বক্তব্য না থাকা সত্তএও।মোটমাট এখন তৃণমূল বিশাল এগিয়ে। এটা কমলেও , বিজেপির পক্ষে সুইপ করবে এরকম গল্প এখনো নেই। তবে একটা বিষয় অবশ্যই আছে, বীরভূমের রাজনীতি বরাবরি একদম তারাশংকরীয় মডেলে, উচ্চবর্ণের সামাজিক দুশ্চিন্তা সংক্রান্ত। তৃণমূলের লিডারশিপের একটা অংশ বিজেপিতে গেলে আশ্চর্য্য কিসু নেই, কিন্তু এখনো বড় ডিফেকশন হয় নি। বাম ভোটের একটা অংশ বিজেপি তে গেছে ২০১৬ তেই, , তবে সেখানেই সেটা থেকে যাবে এরকম কোন ডেটা নেই। একটু ক্খোঁজ নিয়ে বলব, ২০২১ নিয়ে কে কি ভাবছেন। আমি কিছুই ভাবছি না, একট কথা ছাড়া, বিজেপি সুইপ করবে এরকম কোন খবর নেই।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
এলে, আরেকটা কথা স্বভাব বিনয়ে বলতে ভুলে গেলাম :-)))) নিজের জেলায় খেলতে অসুবিধে নেই। অন্য জেলায় হঠাত আপনি কোথা থেকে ৯০ পেলেন, সেটা এরকম ভাবে বুঝিয়ে দেবেন। এপ্রিল অব্দি সময় নিন। তবে একটা প্রোতোকল মেন্টেন করলে ভালো হয়।। ২০১১, ২০১৬, ২০২১ পাশাপাশি আর ২০৪-২০১৯ পাশাপাশি দেখাবেন। নইলে কিসের ভিত্তিতে উন্নতি অবনতি দেখাবেন।
খ, শুধু আপনার পাণ্ডিত্যকে সম্মান জানিয়ে এই টইতে খেলছি। নাহলে অনেক আগেই আমার খুলে নেওয়ার কথা।
আপনি ২০২১-এর পরীক্ষা দেবেন ২০১১ আর ২০১৬-র সিলেবাস পড়ে? তাইলে স্রেফ ফেল করবেন! ২০১১ মানে সিপিএম ভার্সাস তিনো, ২০১৬ মানে তিনো ভার্সাস বিজেপি ভার্সাস জোট। ২০২১ মানে তিনো ভার্সাস বিজেপি। নতুন সিলেবাস, নতুন প্রশ্ন, নতুন পরীক্ষার্থী। এখানে ওসব অ্যানালিসিস করা মানে পণ্ডশ্রম। চাইলে আপনি করতেই পারেন।
রানাঘাট টাউন কি ধরেছেন নদীয়ায়? ওইটা ধরে তিনোকে ৫ টা দিয়েছি। আর নাকাশিপাড়া নয়, পলাশিপাড়া।
এবারে আপনার জেলা। খাতায় টুকে রাখুন - মুরারই আর হাসান কং। দুবরাজপুর-নলহাটি-রামপুরহাট-সিউড়ি আর একটা বিধানসভা যার নামটা এখন বদলে গেছে এই ৫টা বিজেপি। বাকি ৪টে তিনো। নিন, মেলাতে থাকুন।
আর স্বভাববিনয়বশত বলি আপনি বিজেপির পাঁচটা সম্ভাব্য সিটে গুছিয়ে লিফলেট আর পোবোন্দো বিলি করতে থাকুন। চাইলে পার্সোনাল কনভার্সেশনও।