http://globalextractionnetworks.com/coltan-mining-in-congo-what-we-should-know/
আপনার মোবাইল ফোন কতজন কঙ্গোলি মানুষের প্রাণের বিনিময়ে জানেন? এ এক মর্মান্তিক কাহিনি।
আপনার সেলফোন যে ঠিকমতন কাজ করে, গরম গিয়ে যায় না, আপনি ফোন করতে পারেন , ফোন ধরতে পারেন, অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন , একবার চার্জ দিলে অনেকক্ষণ ধরে চলে, এক কথায় আপনার আশ্চর্য ডিভাইসের কেন্দ্রে একটি খনিজ পদার্থ আছে -- কোলটান । কোলটান দুটি অন্য মিনেরালের সমষ্টি - একটির নাম নিওবিয়াম, আর একটি ট্যানটালাম। কোলটান এর সবচেয়ে বড় সম্ভার আফ্রিকার পূর্ব কঙ্গোয় । সেই খনিজ পদার্থটি ঘন জঙ্গল অধ্যুষিত পাহাড়ের বম নদীর জলে পাওয়া যায়। সবচেয়ে মর্মান্তিক, এই খনিজ পদার্থটি সরবরাহ করতে গিয়ে একদিকে যেমন কঙ্গোর জঙ্গল নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে, ৮০% গোরিলা জনসংখ্যা ধ্বংস হয়ে গেছে। পরিতাপের বিষয় যে গোরিলাদের কথা বলছি, তাদের কেবলমাত্র কঙ্গোর ঐ জঙ্গলেই বসবাস, সেখানেই একমাত্র তাদের দেখা মেলে।
সে তো একটা দিক। আরেকটা মর্মান্তিক ও অমানবিক দিক এই খনিজ পদার্থটিকে কেন্দ্র করে কঙ্গোয় মারাত্মক রকমের অশান্তি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বহু মানুষ, বহু শিশু ক্রীতদাসের জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। চোরাপথ ধরে কোলটান পৌঁছে যাচ্ছে এশিয়ান সেল ফোন ইলেকট্রনিকস নির্মাতাদের কাছে, সেখান থেকে দুনিয়ার বাজারে সস্তা দামী নানারকমের গ্যাজেট, মায় খেলনা, ইলেকট্রিক গাড়ি, ইত্যাদির সূত্রে আমার আপনার কাছে।
এর নেপথ্যে রয়েছে ক্রমাগত পরিবেশ ধ্বংস, মানুষকে ক্রীতদাস করে রাখা, শিশুদের exploitaton, গোরিলাদের ক্রমান্বয়ে বিলুপ্তি, যুদ্ধ, মানুষের হত্যা, হাহাকার এক মর্মান্তিক দুনিয়া।
হাতের মুঠোয় সেলফোন ধরলে আপনার মনে হয় ব্যাপারগুলো? নিজেকে মনে হয়, এই চক্রে আপনিও একজন অংশীদার?
Corrections:
১) বম নদী নয়, বহমান নদী
২) এশিয়ান নয়, এশিয়া ইউরোপ, পৃথিবীর সর্বত্র গ্যাজেট নির্মাতাদের কাছে।
কোলটান এবং তদ্বজনিত ধ্বংস, হত্যার কথা জানতাম না। ধন্যবাদ অরিন। লিখুন।
ধন্যবাদ অরণ্য। পর্বে পর্বে লিখব। এটা দেখুন,
আপেল, স্যামসাং, গুগল, সবাই জড়িত। এবং তাদের সূত্রে আমার আপনার হাত কঙ্গোলিদের রক্তে রঞ্জিত।
লজ্জা লাগে মশাই।
আপেল, এবং কোলটান,
এটাও রাখা থাক, পড়ুন
এইটা
কী বলব? কিছুই জানতাম না। অজান্তে এমন কত বঞ্চনার অংশীদার আমরাও।
বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি?
অজান্তে কতো পাপ করে চলেছি আমরা ....
এগুলো নিয়ে এক সময় প্রচুর ভেবেছি এবং পড়াশুনা করেছি। কিন্তু তাতে করে কিছুই হয় নি - এ সমস্যাগুলি এতই গভীরে যে রাষ্ট্রের এবং আইনের শৃঙ্খল ছাড়া বিচ্ছিন্ন উদ্দ্যোগে তেমন কিছু করা সম্ভব নয়।
নিজে কতটা পরিত্যাগ করবেন আপনি? তাহলে তেল চালিত গাড়ি চড়া বন্ধ করতে হয়, যে কোন মাইনিং ইন্ডাষ্ট্রি জাত দ্রব্য ত্যাগ করতে হয়। কারন তেল এবং খনিজ এই দুয়ের মত কলঙ্কিত ব্যবসা আর কিছু নেই। বিশেষ করে তেল। এছাড়াও আছে সব ব্যান্ডেড পোষাক আশাক, জুতো এদের অনৈতিক কাজ কর্ম। এসবই বহুল আলোচিত।
আজকাল অনুভূতি ভোঁতে হয়ে গেছে কেমন - সামনা সামনি দেখলে হয়ত এফেক্ট হয়। ভেবে ভেবে তেমন কিছু ইমপ্যাক্ট আসে না মননে।
রঞ্জনবাবু , শিবাংশুবাবু, সুকি, কমেন্টের জন্য অজস্র ধন্যবাদ।
সুকি, করার অনেক কিছু আছে, এবং হচ্ছেও। পুরনো ফোন গুলো রিসাইকল করলেও অনেকটা হয় (অনেকে পুরনো ফোন বাড়িতে জমিতে বা ফেলে রাখেন)। আমেরিকায় ওবামা ফ্র্যান্ক-ডড আইন act পাস করিয়েছিলেন, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন সামনের বছর ঐরকমের আইন পাস করাবেন। কাজ হচ্ছে। কিন্তু এগুলো নিয়ে আমাদের কনজিউমারদের আরেকটু সচেতন হবার জায়গা আছে। আপনি Fairphone টাইপের মডিউলার ফোন ব্যবহার করতে পারেন, ইত্যাদি। তাতেও কাজ হয়।