করোনা ভাইরাস চলে যাওয়ার পর কেমন হবে আমাদের জীবনযাত্রা?
প্রথম থেকে শারীরিক দূরত্বকে সামাজিক দূরত্ব বলে প্রচার করাটার মধ্যেই কিরকম একটা যেন অভিসন্ধির গন্ধ লাগে। তার মানে কি আমরা আর কোন বন্ধু বা আত্মীয়দের বাড়ি যাব না? আমার অতিপ্রিয় কোন বয়স্ক মানুষকে পারবো না দেখতে যেতে? আমার বাড়িতে কেউ এলেই শঙ্কায় ভরে উঠবে আমার মন যে এই বুঝি সে সাথে করে নিয়ে এল ভাইরাসকে, তাকে বসতে দেওয়ার আগে অনেকবার ভাববো তাকে কোথায় বসাই। কারণ সে চলে যাওয়ার পর তো সেই জায়গাটাকে আবার স্যানিটাইজ করতে হবে, তাতেও মনের কোণে থেকে যাবে ভয়ের রেশ। কারুর সাথে দেখা করার আগে বারবার জেনে নিতে চাইব সে গত সাত দিনে কার কার সাথে মিশেছে, কোথায় কোথায় গেছে।
অফিসের কাজ বাড়ি বসে করে ফেলাটাই অভ্যাস হয়ে যাবে আমাদের। হয়তো সপ্তাহে একবার বা মাসে একবার দেখা হবে সহকর্মীদের সাথে। এক টেবিলে বসার আগে বা অফিস ক্যান্টিনে খেতে বসার আগে ভাল করে মেপে নেব তিন ফুট দুরত্ব বজায় রাখছি কিনা।কোন আলোচনা বেশী করা যাবে না, যতোই ছুটি কমুক কি মাইনে না বাড়ুক।
কোনদিন আর হয়তো একসাথে ফুচকা খেতে দাঁড়াবো না, কারণ তিন ফুট দূর থেকে তো ফুচকা দেওয়া যাবে না। মদ্যপানের শুরুতে হবেনা গেলাসে গেলাসে ঠেকিয়ে উল্লাস, পাছে করোনা চলে আসে আমার শরীরে। আগে অপেক্ষা করে থাকতাম, বিদেশ থেকে কবে কোন বন্ধু আসবে, সাথে আনবে বিদেশী দামী পানীয়। এখন প্রথমেই ভয় লাগবে যাব কি আনতে, যদি কিছু হয়ে যায়।
একটা কথা বলা যায় যে কাজ কমবে নীতি পুলিশদের। কোন প্রেমিক-প্রেমিকা আর হয়তো হাত ধরে হাঁটবে না,কোন পার্কের র্নিজন কোণায় আর থাকবে না কোন ঘনিষ্ঠ মূ্হু্র্ত।
স্কুলে পাঠাবার আগে নিজের সন্তানকে বারংবার মনে করিয়ে দেব মাস্ক না খুলতে, গাড়ীতে তোলার আগে বলে দেব তিন ফুট দূরে দূরে বসতে, কথা না বলতে বেশী, না হলেই করোনা আসবে। তোমার প্রিয় বন্ধু কে তুমি বিশ্বাস করতে পারো না, কারণ কার করোনা আছে কেউ জানে না।
এক যুগ পরের এই বিচ্ছিন্ন পৃথিবী হয়তো দোষারোপ করবে আমাদের।
তথাগত