এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  বিবিধ

  • কোয়ারেন্টিন থেকে ৬

    নীলাদ্রি শেখর গঙ্গোপাধ্যায়
    আলোচনা | বিবিধ | ০৫ এপ্রিল ২০২০ | ২৬৪০ বার পঠিত
  • কোয়ারেন্টিনথেকে১

    না মন্বন্তর দেখা হয় নি। সাহিত্যে সংবাদ ফিচারে যে টুকু জ্ঞান। প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন সেই সময়। না নিছক ভয় দেখাতে মন্বন্তরের প্রসঙ্গ অবতারণা করা নয়। ভাবছি সেই সব সহ-নাগরিকদের কথা। যারা ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছেন অন্য এক মন্বন্তরের গহ্বরে।

    মনিরুলের কথা:
    মুর্শিদাবাদের ডোমকলের মানুষ আমি। রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ের কাজ করি। রাজারহাটে মস্ত বড় বাড়ি তৈরির কাজ করছিলাম। লেবার কন্ট্রাক্টর হঠাৎ বাড়ি চলে যেতে বলল। ১০ রোজের টাকা পেয়েছি আরোও ১৮ রোজের টাকা পাবো। কিন্তু এখন একটা হুড খোলা ট্রাকে আরও চল্লিশ জনের সঙ্গে গাদাগাদি করে অজানার উদ্দেশ্যে। হ্যাঁ অজানাই বটে। বেলডাঙ্গা পর্যন্ত এই বাহন যাবে। সেখান থেকে ফের কোনো ফেরেস্তার অপেক্ষায় থাকতে হবে। খরচ যদিও অনেক বেশিই হবে। কিন্তু কি আর করব?
    বাড়িতে যা চাল আর আলু আছে তাতে ১১ টা পেট মেরে কেটে চার দিন যাবে। তারপর? শহরের বাবুদের দেখেছি বাড়ি বসে কাজ করতে কিন্তু আমি কি ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে পারি?
    আর ২১ দিন পর যদি বেঁচে থাকি উত্তর খুঁজব।


    কোয়ারেন্টিনথেকে ২

    প্রথম বিশ্বযুদ্ধ যখন শেষ হয় সেই বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের শেষ প্রান্তে বিশ্ব জুড়ে দেখা দিয়েছিল ইনফ্লুয়েঞ্জা। প্রায় ১০ কোটি মানুষের প্রাণ গিয়েছিল সেবার। ভারতবর্ষেই নাকি ৮০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতদেহ শেষকৃত্য করার লোক পাওয়া যাচ্ছিল না। ধ্বংসের সেই স্তুপ ঠেলেও এগিয়ে গেছে জীবন। তখনকার মহামারীর অর্থনৈতিক প্রভাব কতটা তা খুব একটা জানা যায় না। আন্দাজ করে নিতে হয়।

    শেফালীর লক-ডাউনের দিনলিপি:

    উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর স্টেশান থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূর আমাদের গ্রাম। স্বামী দিন মজুর। যখন যেমন কাজ পায় তাই করে। ছেলে বাসের হেল্পার। মেয়েটার বিয়ে গেল বৈশাখে দিয়ে দিয়েছি। আমি নিজেও প্রতিদিন বারাসাতে তিনটে বাড়িতে ঠিকে কাজ করি। মোটামুটি তিন বেলা চলে যায়। কিন্তু রবিবার থেকে কাজে যেতে পারছি না। কাজের বাড়ির বৌদি রা ফোন করে হুমকি দিচ্ছে পাশের বস্তির কাজের মেয়ে রেখে দেবে। ওরা তো আর আমার মতো ট্রেনে চেপে কাজে যায় না। ট্রেন বন্ধ হলে, লক-ডাউন হলে ঘর মোছা, কাপড় কাঁচা, বাসন মাজা তো আর থেমে থাকতে পারে না।
    আমার মনে হয় কাজ গুলো গেল। বৈশাখ মাস নতুন বছর আসছে হয়তো নতুন বছরটা শুরু হবে অনটন দিয়ে। এদিকে ছেলে আর বরও তো বাড়ি বসে। সরকার থেকে শুনেছি চাল-ডাল দেবে। বেঁচে থাকলে আবার নতুন কাজ খুঁজতে হবে। এই অলক্ষুণে রোগটা যে কবে শেষ হবে।


    কোয়ারেন্টিনথেকে৩
    উনবিংশ শতাব্দীর একেবারে শেষ লগ্নে তৎকালীন বোম্বাই থেকে কলকাতায় ছড়িয়ে যায় মহামারী প্লেগ। শহর ছেড়ে দলে দলে লোক গ্রামের দিকে ছড়িয়ে যেতে থাকেন। না লক ডাউন হয়নি তবে কলকাতার রাজপথের নির্ভরযোগ্য বাহন ঘোড়ার গাড়ি অমিল হয়ে যেতে থাকে। কলকাতা কর্পোরেশন থেকে টীকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। অনেকেই ভয় পেতে থাকেন। অবিশ্বাসের বাতাবরণ ছেয়ে ফেলে তিলোত্তমা কলকাতার নাগরিকদের মধ্যে। অভূতপূর্ব এক সোশ্যাল ডিস্টেনসিং-এর সাক্ষী ছিল কলকাতা। নিজের ভগ্ন স্বাস্থ্য উদ্ধারের আশায় সে সময় দার্জিলিং-এ ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। তাঁর নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো ত্রাণ কার্যে ঝাঁপিয়ে পরে সদ্য স্থাপিত রামকৃষ্ণ মিশন।

    প্রাণকেষ্ট'র দিনলিপি:
    কলকাতা কর্পোরেশনে কাজ করছি ন' বছর হলো। না পাকা চাকরি নয়। তাই সরকারি চাকরির সব সুবিধা আমার নেই। জঞ্জাল অপসারণ বিভাগে আমার কাজ। শহরের উচ্ছিষ্ট, নোংরা জঞ্জাল ঘেটেই আমার দিন কেটে যায়। কাকভোরে ইন্দিরা নগর কলোনী থেকে সাইকেল চেপে দুর্গানগর স্টেশান, সেখান থেকে লোকাল ট্রেনে শিয়ালদহ ফের বাসে করে বোরো অফিস। সব চাজ সেরে ৭:৫২ দত্তপুকুর লোকালে ফেরা। এই রুটিন হঠাৎ বদলে গেলো ২২শে মার্চ থেকে। টানা এক সপ্তাহ বাড়ি ফিরিনি। ফিরব কি করে। ট্রেন বন্ধ। সকাল বেলা যাব কি করে? মানিকতলার কাছে একটা বড় হল ঘরে আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। এখন সকালে শুধু জঞ্জাল সাফ করা নয় স্যানিটাইজার স্প্রেও করছি আমরা। কিন্তু খুব ভয় হয় জানেন। ময়লা ঘাটাই আমার পেশা কত জীবাণু ঘেটেছি এত বছর ধরে। কিন্তু এবার খুব ভয় পাচ্ছি। না জানি জঞ্জালের সঙ্গে কত বিষাক্ত শ্লেষ্মা সাফ করে চলেছি। কর্পোরেশন থেকে দস্তানা, মাস্ক পেয়েছি কিন্তু সংক্রমণের ভর কেন্দ্রে বিপদ কখন ঘটে যাবে কিছুই জানি না। নির্দিষ্ট মাস মাইনের জন্যই লড়ে যাচ্ছি। মেয়েটা এবার ক্লাস সিক্সে ভর্তি হবে। নতুন বই খাতা কতো খরচ। মনেপ্রাণে ভগবানকে ডেকে চলেছি এই কালো দিন যেন শেষ হয়। মেয়ের আব্দার লক-আউট উঠলে দিন দুই যেন ছুটি নিই। আপনারা যারা বাড়ি থেকে কাজ করছেন তারা বাড়িতেই থাকুন তবেই তো আমি দু'দিন ছুটি পাব সব মিটে গেলে।


    কোয়ারেন্টিনথেকে ৪
    কোভিদ ১৯ যবে থেকে ভারতবাসীকে গৃহবন্দী করেছে তখন থেকেই এই ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রতিষেধক পাওয়া গেছে বলে অনেক অত্যুৎসাহী সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করতে শুরু করেছেন। কিন্তু আদৌ তার কোনো দেখা নেই। ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা কিছু ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক ব্যবহার করার কথা বলেছেন ঠিকই কিন্তু তা এখনও খুব একটা কার্যকরী তার কোনো প্রমান নেই। তাই চাপান- উতোর চলছেই।
    ঊনিশ শতকেও প্রতিষেধক নিয়ে যথেষ্ট হৈচৈ হয়েছিল। কলকাতা কর্পোরেশন থেকে প্লেগের প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু গুজব রটল যে পেটের কাছে এক পয়সার আকৃতির মাংসপিন্ড উপড়ে ফেলে সেখানে ওষুধ পুরে দেওয়া হচ্ছে। কারও মত ছিল টিকে নেওয়ার পর এক বেলাতেই মৃত্যু হচ্ছে। চিকিৎসার এই কল্পিত পৈশাচিক বিবরণ শুনে মানুষ বিভ্রান্ত হতে শুরু করলেন। স্বভাবত ইংরেজ শাসক তখন হয়তো খানিকটা বল প্রয়োগও করতে শুরু করে। ফলে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। অদ্ভূত এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা যারা প্রদান করেন যেমন ঝাড়ুদার, মেথর, ভিস্তিওলা সবাই ধর্মঘট করলেন। 'কর্মনাশা ধর্মঘট' শাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করল। ছোটলাট ঘোষণা করলেন যে এখন থেকে কোনো নাগরিক যদি প্লেগে আক্রান্ত হন তাকে বলপূর্বক হাসপাতালে পাঠানো হবে না তিনি বাড়িতে আলাদা থেকেও চিকিৎসা করাতে পারেন। এভাবেই কলকাতা প্রথমবার হোম কোয়ারেন্টিনের পরিচয় পেয়েছিল।

    সুকৃতির আকুতি:
    উত্তর-পূর্বের ছোট্ট রাজ্য মণিপুরের মেয়ে আমি। পাঁচ বছর কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করছি। ভি আই পি রোডের কেষ্টপুরে আমার রাজ্যের তিন বন্ধুর সঙ্গে মেস করে থাকি। এতদিন কলকাতায় থেকে কাজ চালানোর মতো বাংলা বলা ও বুঝতে আমার কোনো অসুবিধা হয় না। এই লক-ডাউন হওয়ার পর সারাদিন দাপিয়ে বেড়ানো শহরটা কেমন মাঝ রাতের আদুরে বেড়াল ছানার মতো গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে মনে হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মী আমি তাই লক-ডাউন, ওয়ার্ক ফ্রম হোম আমার জন্য নয়। কিন্তু ক'দিন ধরে এই প্রাণচঞ্চল শহরটা কেমন যেন বদলে যাচ্ছে। টিভিতে দেখলাম কোথায় যেন আমারই মতো এক স্বাস্থ্যকর্মীকে বাড়িওয়ালা বাড়ি ছাড়তে বলেছে সংক্রমণের ভয়ে। সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং-এর মতো ভয়ানক কুপ্রবাব আর কি হতে পারে? খুব ভয়ে আছি আমাদের ল্যান্ডলর্ডকে নিয়ে। যদি তাড়িয়ে দেন। এমনিতেই আমাদের মতো ছোট চেহারা, খুদে চোখের মঙ্গোলিয়ান ছাদের দেখতে মানুষদের অনেকেই অপছন্দ করেন। পথে ঘাটে অপমান ও নানা ভাবে লাঞ্ছনার শিকার হই আমরা তাই নিজেদের নিরাপত্তার চাইতেও বেশি ভয়ে আছি কখন মাথার উপর থেকে ছাদ উড়ে যাবে তার। রোগ-জীবাণু না মারলেও সামাজিক দূরত্বের নামে যে অবিশ্বাসের সংক্রমণ আমাদের ভোগাবে।


    কোয়ারেন্টিনথেকে৫

    একবার ভাবুন তো বাস নেই, ট্রেন নেই, রাস্তায় অন্য কোনো বাহনও নেই। দলে দলে মানুষ হেঁটে চলেছেন। সময়টা ৩১শে অক্টোবর ১৯৮৪। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে দেহরক্ষীরা হত্যা করেন। অদ্ভূত এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সেদিন কলকাতা জুড়ে। বন্ধ হয়ে যায় যান বাহন। শহরতলীর লোকাল ট্রেন স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বহু নিত্যযাত্রী সেদিন রেল লাইন ধরে হেঁটে রানাঘাট অব্দীও পৌঁছান। রাত থেকে কারফিউ বলবত হয়।
    নিরাপদ থাকার সেই আকুতি কলকাতা দেখেছিল ঊনিশ শতকেও প্লেগ মহামারী যখন শহর কলকাতায় ছেয়ে ফেলেছে অবিভক্ত বাংলার বহু নাগরিক তখন নিজেদের রুটি-রুজি আর এই মহানগরীর মায়া কাজল মুছে ত্রস্ত পদে পালাচ্ছিলেন। শহস্রাধিক মানুষ ট্রেনে, ঘোড়ার গাড়িতে, স্টিমারে কলকাতা ছাড়ছিলেন। ভিড় সামলাতে রেল কোম্পানিকে অতিরিক্ত ট্রেন চালাতে হয়েছিল। স্টিমার ঘাটও লোকারণ্য হয়ে গিয়েছিল। এই সুযোগে ফের একবার মাৎসন্যায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল বাংলার বুকে। ঘোড়ার গাড়ির কোচোয়ান, নৌকার মাঝি, মুটে সবাই যেমন খুশী রাহা খরচ দাবী করতে শুরু করলেন। দ্বিগুণ-চারগুণ অর্থ দিয়েও অনেকে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছিলেন।

    তরুণের দুঃসাধ্য যাত্রা:

    বীরভূম জেলার নানুরে বাড়ি। কলকাতার রেষ্টুরেন্টে খাবার বানাই। ২৩ মার্চ দিনটা ভুলতে পারব না। ২২শে মার্চ রবিবার জনতা কারফিউ থাকায় সারাদিন রেস্তোরাঁয় কাজ ছিল না। রাতে শুনলাম কলকাতায় লক-ডাউন শুরু হচ্ছে পর দিন বিকেল থেকে। মালিক পক্ষ জানালো বাড়ি যেতে চাইলে যেতে পারি। সহকর্মীরা ঠিক করল বাড়ি চলে যাবে। সকাল বেলা হাওড়া গিয়ে শুনলাম এক্সপ্রেস কোনো ট্রেন নেই। কিছুক্ষণ বসে থেকে ধর্মতলা এলাম। একটা ভিড়ে ঠাসা বর্ধমানগামী বাসে চড়লাম। বর্ধমান যখন পৌঁছলাম তখন কলকাতায় লক-ডাউন শুরু হয়ে গেছে। তাও দুর্গাপুরের একটা বাস পেলাম পানাগড় পর্যন্ত যাওয়ার। পানাগড়ে যখন নামলাম বেশ আতান্তরে পরেছি কোথায় যাব কি করব? নিতান্তই অপারগ হয়ে হাঁটতে থাকলাম। কত কিলোমিটার হেঁটেছি মনে নেই। রাত ন'টা নাগাদ পুলিশের একটি জীপ আমাকে দাঁড় করায়। নিতান্ত দয়াপরবশ হয়ে বোলপুরগামী একটি মালবাহী গাড়িতে তুলে দেন পুলিশ কর্মীরা। রাত ১২টায় বোলপুর নেমে ফের হাঁটা। নানুরে গ্রামের বাড়িতে যখন ঢুকেছি তখন ভোরের মোরগ ডাকছে। ভাবুন এতটা সময় লক-ডাউন না মানায় কোনো ভয় হয়নি। ভাইরাসের ভয়ও পাইনি। শুধু বাড়িতে পৌঁছাতে চেয়েছিলাম। আজ যখন বাড়িতে বসে টিভিতে দেখছি দিল্লীর পথে আমারই মতো পরিযায়ী শ্রমিকেরা কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে কয়েক'শো কিলোমিটার হেঁটে পাড়ি দিচ্ছেন তখন বার বার নিজের সেদিনের কথাই মনে হচ্ছিল।


    কোয়ারেন্টিনথেকে৬

    করোনা আতঙ্কে যখন আমরা উঠতে বসতে চীনকে গালাগাল করছি, তখন আজ থেকে ৫০০০ বছর আগে এই চীনের এক প্রাগৈতিহাসিক গ্রামের সকল অধিবাসিরা মৃত্যুবরণ করেছিলেন কোনো এক অজানা মহামারীতে। যা আধুনিক চীনে এক অভিনব পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন হামিন মাংঘা নামে পরিচিত।

    আর মহামারী পাচার। ১৩৪৬ খ্রীষ্টাব্দে ইউরোপের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা সাফ হয়ে গেছিল ব্ল্যাক ডেথ নামক মহামারীতে তা নাকি মাছির মাধ্যমে ছড়াত। আর এশিয়া থেকেই তা ইউরোপে ছড়ায়।

    তবে কোথা থেকে কোথায় রোগ ছড়াল, কাদের কারণে ছড়াল সেই সব ঠগ বাছার আগে এখন ভাবতে হবে প্রতিরোধ কিভাবে সম্ভব। কিন্তু যারা যে সব চিকিৎসক এর বিরুদ্ধে লড়ছেন তারাই বা এগোবেন কিভাবে।

    অথ কিট কথা:
    কোভিদ১৯ হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে নির্দিষ্ট কিছু টেষ্ট কিটের প্রয়োজন। মাত্র গত মাসের শেষ সপ্তাহে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের অনুমোদন নিয়ে এবং সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশানের ছাড়পত্র নিয়ে দেশে তৈরি এই কিট বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষাযোগ্য এই কিট উৎপাদক সংস্থা মাত্র ২০ হাজারই এই মুহুর্তে বানাতে সক্ষম। অন্যদিকে ব্যাঙ্গালুরুর এক সংস্থা গত ৩রা এপ্রিল বাজারে এনেছে র‍্যাপিড টেস্ট কিট যা বাড়িতে বসে অনেকটা ব্লাড সুগার মাপার মতো করোনা সংক্রমণ পরীক্ষা করা যাবে। মূল্য আনুমানিক ২০০০-৩০০০ টাকা। সত্যি কত সুলভ! অথচ প্রতিবেশী বাংলাদেশের গন স্বাস্থ্য কেন্দ্র একই রকম প্রায় র‍্যাপিড কিট বাজারে এনেছে যা সে দেশের মূদ্রায় মাত্র ২০০ টাকায় করা সম্ভব। অথচ ভাগ্যের কি পরিহাস দেখুন প্রতিবেশী এই দেশ থেকেই কাতারে কাতারে মানুষ আরোগ্য লাভের আশায় ভিড় জমান ভারতের হাসপাতালগুলিতে। হেল্থ ট্যুরিজমের নিরিখে বাংলাদেশের মতো মৃগয়াক্ষেত্র পাওয়া সত্যিই দুর্লভ।

    রাকেশের উৎকন্ঠা:

    বাংলাদেশের যশোরের মানুষ আমরা। আমার ভাইয়ের কিডনি বিকল। বাইপাসের কাছে এক হাসপাতালে ডায়ালিসিস চলছে। লক-ডাউনের দু'দিন আগে ভর্তি করেছি। এখন এবারের মতো ডায়ালিসিস শেষ। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছে। এদিকে লক-ডাউন নিজেই ঠিক মতো খাবার পাচ্ছি না, রোগীর পথ্য কোথায় পাব? সঙ্গের টাকা পয়সাও ফুরিয়ে আসছে। শুনছি ১৫ তালিখের পরও বাড়বে লক-ডাউন। দূতাবাসে যোগাযোগ করছি। বুঝতে পারছি না কি হবে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • r2h | 162.158.***.*** | ০৫ এপ্রিল ২০২০ ২০:২০730453
  • বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্যে আসা আটকে থাকা মানুষদের দুর্দশাও বড় চিন্তার বিষয়, এঁরা কেমন আছেন, কী করে সামলাচ্ছেন কে জানে। অনেক নিম্নবিত্ত মানুষও আসেন, কলকাতায়, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই।
  • r2h | 162.158.***.*** | ০৫ এপ্রিল ২০২০ ২৩:৩২730455
  • একটা জিনিস মনে হলো, পর্বগুলি আলাদা হলে একটু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকছে, মাঝে অন্য আলোচনা ঢুকে গেলে অন্য পর্বগুলি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। একটা থ্রেডেই সবকটা পর্ব পর পর আসতে পারে।

    এই সময়ের ক্রনিকল লেখা থাকা দরকার, নানান দৃষ্টিকোণ থেকে।
  • একলহমা | ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০৯:৩৯730467
  • এক জায়গায় নিয়ে আসাটা ভাল হয়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন