বইমেলা রাজনীতির জায়গা নয়।
কলেজ - ইউনিভার্সিটি রাজনীতির জায়গা নয়।
শিল্পী হয়েছেন, রাজনীতি করে বুদ্ধিজীবী সাজবেন না।
ডাক্তারির জায়গা রাজনীতির আখড়া না।
এবার রাজনীতিবিহীন আপনার একটা দিন ভাবুন।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলেন। উঠে ব্রাশ করতে যাবেন না ভুলেও, ব্রাশ কিনতে যে মূল্যবৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছেন, তা রাজনীতির ফসল। অতএব গন্ধযুক্ত মুখ নিয়েই লোকের নাকের সামনে হ্যাঃ হ্যাঃ করতে থাকুন।
এরপর প্রাতঃক্রিয়া সেরে ফেলুন। জৈবিক ক্রিয়াটা অরাজনৈতিক পদ্ধতিতে সারার জন্য খোলা ময়দানে সারুন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রাজনৈতিক দ্রব্যাদির সংস্পর্শ থাকবে না। আর হ্যাঁ, ঐ ক্রিয়াটি সম্পাদনের আগে থেকে পরে একই অবস্থায় অর্থাৎ বিশ্বরূপ দর্শন করাতে থাকবেন। পোষাকাদির দাম আবার রাজনীতির সাথে জড়িয়ে যাবে কী না?
এরপর যদি আপনি চাকরি করেন, তাহলে সেটা করা বন্ধ করে দিন। কারণ চাকরি বিষয়টা সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত। খাওয়ার জুটবে না? খাবেন না। খাওয়ার জন্যই তো রাজনীতি। অতএব উপোস করা শুরু করুন (এমনিও দেখবেন আপনার এক্কেবারে অরাজনৈতিক ধর্মটি উপোস/রোজা করাকে পুণ্য বলেই মনে করে)। আর যদি চাকরি না করেন, তাহলে তো কোনো সমস্যাই নেই। চাকরির চেষ্টাও ছাড়ুন, না খেয়েই ঘুমোন।
ভুল করেও পড়াশোনা করতে যাবেন না। বইপত্র আপনাকে ইতিহাস, দেশ, কাল সম্বন্ধে জানাবেন। প্রতিটা জিনিস রাজনীতির ভিত্তি। অতএব এসব সম্বন্ধে নিজেকে অজ্ঞ রাখুন সম্পূর্ণভাবে। যদি ভুল করেও বিজ্ঞানবিভাগে পড়াশোনা করতে আসেন, বেসিক সায়েন্স প্রসঙ্গে কথা বলবেনই না। ওটা চিন্তাভাবনার বিষয়, তার প্রয়োগ কীভাবে হবে তা দিয়ে যে বিশ্ব রাজনীতি নির্ধারিত হতে পারে তার প্রমাণ কী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পাননি? ওঃ দুঃখিত। অরাজনৈতিক থাকার চেষ্টা করতে গিয়ে ভুলে যান যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো কিছু ঘটেছিলো কোনো কালে।
ঘরে ফিরে রিল্যাক্স করার কথা মাথায় আছে? কীভাবে করবেন? গান শুনে? সিনেমা দেখে? নাটক দেখে? বই পড়ে? একদম না। বইটই আগেই শিকেয় তুলে রাখুন। সামাজিক বিষয়কে তুলে ধরে যে মাধ্যম সেই গল্প-কবিতার আসরে নিজের অরাজনৈতিক সত্ত্বাকে বিকিয়ে যেতে দেবেন না। সামাজিক বইয়ের বদলে ছ্যঁকা প্রেমের ন্যাকা কাহিনী পড়বেন? সে গুড়ে বালি। প্রেমটেম ছাড়ুন। ভালোবাসা নাকি মনের মিল হলে হয়, মনের মিল খোঁজার মতো আলোচনাটুকুও করবেন না। প্রচণ্ড রাজনৈতিক হয়ে যেতে পারেন।
অবশেষে রাত্রিবেলায় নির্জলা উপোস সম্পূর্ণ করে উলঙ্গ অবস্থাতেই বিছানায় শুয়ে পড়ুন।
একদিন এভাবেই ঠিক চিরনিদ্রার দেশে চলে যাবেন।
আপনাদের সাথে আমি সহমত। রাজনীতি সব জায়গা থেকে বর্জন করুন, শীঘ্রই উলঙ্গ হয়ে মাঠে ঘাটে ঘুরতে ঘুরতে অনাহারী গোসন্তান হয়ে উঠবেন, এই আশা করি।
"অরাজনৈতিক থাকাটা একটা ছদ্মবেশ", আশা করি খুব শীগগির শ্রেষ্ঠ ছদ্মবেশের জন্য অরাজনৈতিক পুরষ্কার দেওয়া শুরু হবে।
ওয়েলকাম জয়র্ষি। এটা বোধহয় গুরুতে তোমার প্রথম পোস্ট। তাইতো? :-)
লিখতে থাকো। লিখতে কোনো অসুবিধে হলে জানিও।