এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • দলিত রাজনীতি এবং বর্ণবাদের উপকথা

    bip
    অন্যান্য | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ | ১১৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • bip | 81.244.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:০৭692624
  • (১)
    রোহিত ভেমুলার মৃত্যুতে ভারতের জাতপাতের রাজনীতি উত্তাল । আরো খোলসা করে লিখলে, ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে গেছে সব রাজনৈতিক পার্টি।

    প্রশ্ন হচ্ছে ভারতের এই দলিত শ্রেনীটির উৎপত্তি কোথায় ? ব্রাহ্মণ্যবাদ, ব্যাদে আছে-অনেক কিছুই বলা যায়। কিন্ত এটাও সত্য পৃথিবীর সব দেশের ইতিহাসেই দলিতরা ছিল-এখনো আছে। খোদ আমেরিকাতেই কালোদের স্থান, ভারতের দলিতদের মতন। শুদ্রদের অস্তিত্বের কারন মনুবাদি হিন্দুধর্ম-এমন মনে করাটা সরলীকরন। কারন এই দাসশ্রেনীর অস্তিত্ব ইতিহাস জুরে পৃথিবীর সকল দেশে । শুধু ভারতেই এটার ওপর ধর্মীয় সীলমোহর মারা আছে। সুতরাং এই বর্ণবাদের একটা সঠিক ঐতিহাসিক নৃতাত্ত্বিক বিশ্লেষন দরকার। কেন কোন দেশে দলিত বা বর্ণবাদের জন্ম হয়?

    পৃথিবীর প্রাচীন তিনটি সভ্যতা-ইজিপ্ট, মেসোপটেমিয়া এবং সিন্ধু সভ্যতা। এই তিনটি সমাজে দাসেরা এল কি করে? মানুষ যখন প্যালিওলিথিক স্টেজে, বনেবাদারে ঘুরছে-সেই হান্টার গ্যাদারার সমাজে ত দাসেরা ছিল না। দাসেদের উৎপত্তি হল কৃষিকাজ শুরুর সাথে সাথে?

    সত্যিই কি তাই ? কৃষিভিত্তিক সমাজ শুরু হতেই কি সভ্যতাতে মানুষ "ক্রীতদাস" দের দেখলো?

    এটা বুঝতে প্রথমেই এই তিন অতীত নদী সভ্যতা-যা উন্নতির চরম শিখরে উঠেছিল-তাদের দিকে তাকাতে হবে।

    সিন্ধু সভ্যতাতে দুটো জিনিসের সন্ধান পাওয়া যায় নি। এক, অস্ত্র। দুই দাস প্রথা। পাশাপাশি রাজা বা রাজপ্রাসাদের ও সন্ধান পান নি প্রত্নতাত্ত্বিকরা।

    মিশরের প্রাচীন সভ্যতা-তিন ভাগে বিভক্ত। ওল্ড, মিডল এবং নিউ কিংডম। বিখ্যাত পিরামিডের জন্ম এই ওল্ড কিংডমে ( খৃঃ পূ ২৬৮৬-২১৮১)। পিরামিড করতে হাজারে হাজারে শ্রমিক লেগেছে-কিন্ত তাদের কেউ ক্রীতদাস ছিল না। এই সময়ে মিশরে ক্রীতদাসের নজির নেই। তবে ৮০% লোক ছিল ভূমিদাস। কিন্ত মিডল কিংডমের ( খৃঃ ২০৫৫-১৬৫০) সময় থেকে ফারাওরা নুবিয়া, কানান এবং সিরিয়া আক্রমন এবং আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। এই সময় থেকেই মিশরীয় সভ্যতাতে ক্রীতদাসের দেখা পাওয়া যাবে-যুদ্ধে পরাজিত জাতির লোকেদের ক্রীতদাস হিসাবে রেখে দেওয়া হত। এছাড়াও ধার শোধ করতে না পারলে, লোকে ক্রীতদাস হতে বাধ্য হত-তবে সারা জন্মের মতন না। ধার শোধ করতে যদ্দিন থাকতে হয়।

    কিন্ত নিউ কিংডমে মিশরে ক্রীতদাস ব্যবসার রমরমা শুরু। ফারাও তৃতীয় টিসমোস অসংখ্য ক্রীতদাসের মালিক ছিলেন-যা উনি মূলত হাইতি এবং ন্যুবিয়ানদের যুদ্ধে হারিয়ে পেয়েছিলেন।

    মোদ্দা কথা, মিশর সাম্রাজ্য যেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির রূপ নেওয়া শুরু করে-বাণিজ্যের শুরু হয়-ঠিক সেই সময় থেকেই ক্রীতদাস বা আজন্ম দাসবৃত্তির ধারনা মিশরীয় সভ্যতায় আসতে শুরু করে।
    শুধু কৃষিভিত্তিক সমাজে ক্রীতদাস আসে না। যখন সেই সমাজ আস্তে আস্তে সাম্রাজ্যবাদি হয় বা সাম্রাজ্যবাদি শক্তির পদানত হয়-ঠিক তখনই সভ্যতার মধ্যে ক্রীতদাসের জন্ম। এটা আরো পরিস্কার হয় মেসোপটেমিয়ার ইতিহাস থেকে।

    ইনফ্যাক্ট ভারতে যখন হরপ্পা মহেঞ্জোদারোতে ক্রীতদাসহীন, শ্রেনীহীন কৃষিসমাজ চলছে-সমসাময়িক ( খ্মৃঃপূ ২৩০০) মেসোপটেমিয়ার উরু, আকাদ এবং মারী শহরে ক্ষত্রিয়, ব্রাহ্মন, বৈশ্য, শূদ্র -এই চারটি শ্রেণীর পরিস্কার অবস্থান। তার সাথে ছিল ক্রীতদাস, তবে বৈশ্য আর শুদ্র শ্রেনীকে আকাডেমিয়ান সম্রাজ্যে বলত আপার আর লোয়ার কাস্ট।

    (২)
    তাহলে ভারতে বর্নবাদ এলো কোথা থেকে? সিন্ধু সভ্যতায় বর্ণবাদ ছিল না-এটা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। কিন্ত ওই সময়, মেসোপটেমিয়াতে একদম বর্তমান ভারতের বর্নবাদ চালু ছিল। সেটাও বহুল প্রমানিত। তাহলে কি কোন সন্দেহের অবকাশ থাকে এই বর্ণবাদ ভারতের বাইরে থেকেই এসেছে?

    বর্তমানের হিন্দুত্ববাদিরা মানতে চান না আর্য্য সভ্যতা -যা ঋকবেদ নিয়ে ভারতে ঢুকলো-তারা ভারতের বাইরের ! ঋকবেদে ত চারটে শ্রেনীর পরিস্কার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে-যা সিন্ধু সভ্যতায় নেই। যদি হিন্দুত্ববাদি ঐতিহাসিকদের কথা সত্য হয় যে আর্য্যরা বা ঋকবেদ ভারতের বাইরে থেকে আসে নি -তাহলে ঋকবেদের সমসাময়িক সময়ে ( ৩০০০-১৫০০ খৃঃপূ ) ভারতে কেন বর্নবাদের সাপেক্ষে কোন প্রত্নতাত্বিক উদাহরন নেই -যেখানে ঋকবেদে বর্নবাদের উল্লেখ আছে প্রায় সর্বত্র?

    স্যার উইলিয়াম জোন্স এরিয়ান ইনভেশন তত্ত্বের জনক। সংস্কৃত শিখতে গিয়ে উনিই প্রথম লক্ষ্য করেন ঋকবেদের আদি সংস্কৃতের ভাষার সাথে ল্যাটিনের অসংখ্য মিল। ইনফ্যাক্ট ইটালীয়ান শিখতে গিয়ে, আমিও অবাক হয়েছিলাম ল্যাটিনের সাথে সংস্কৃতের এত অজস্র মিল আছে দেখে। এর পরে এই নিয়ে ঐতিহাসিকদের অজস্র কাজ আছে- প্রোটো ইন্ডো ইরানিয়ান সংস্কৃতির সাথে মেলে এমন দুটি মধ্য এশিয়ার সভ্যতাও আবিস্কৃত [ সিন্থাস্থা এবং আন্দ্রনোভো কালচার] । আর্য্যরা যে বহিরাগত সংস্কৃতি-তার অজস্র আধুনিক ইতিহাস উইকিপেডিয়াতেই পাওয়া যাবে ( https://en.wikipedia.org/wiki/Indo-Aryan_migration_theory ) ।

    তবে হিন্দুত্ববাদিদের আশা ভরসাতে শেষ পেরেক ঠুকেছে জেনেটিক্স রিসার্চ। দেখা যাচ্ছে ভারতের ব্রাহ্মনদের সাথে ইউরোপিয়ান ওয়াই জিনের মিল খুব সাংঘাতিক রকমের বেশী। শুদ্রদের সাথে কিন্ত সেই মিল নেই! হার্ভাডের মাইকেল উইজেল এই ব্যপারে কাজ করেছেন-যাতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয়দের দুটী জেনেটিক গ্রুপ স্পষ্ট। একটি ভারতীয় এবোরিজিনাল-অন্যটি ককেশিয়ান বা মধ্য এশিয়ান অরিজিন। এই আর্টীকলে সব ডিটেলেসে পাবেন ( http://www.livescience.com/38751-genetic-study-reveals-caste-system-origins.html )। আরো দুটি আর্টিকল দেখে নিতে পারেন আর্য্য এবং বর্নবাদি সিস্টেমের উৎস কিভাবে জেনেটিক্স রিসার্চের মাধ্যমে জানা হয়েছে

    ক) Time Magazine :http://world.time.com/2013/08/27/what-dna-testing-reveals-about-indias-caste-system/

    খ) Link of the original paper : http://www.cell.com/AJHG/abstract/S0002-9297%2813%2900324-8

    " Most Indian groups descend from a mixture of two genetically divergent populations: Ancestral North Indians (ANI) related to Central Asians, Middle Easterners, Caucasians, and Europeans; and Ancestral South Indians (ASI) not closely related to groups outside the subcontinent. The date of mixture is unknown but has implications for understanding Indian history. We report genome-wide data from 73 groups from the Indian subcontinent and analyze linkage disequilibrium to estimate ANI-ASI mixture dates ranging from about 1,900 to 4,200 years ago. In a subset of groups, 100% of the mixture is consistent with having occurred during this period. These results show that India experienced a demographic transformation several thousand years ago, from a region in which major population mixture was common to one in which mixture even between closely related groups became rare because of a shift to endogamy."

    অবশ্য ভারতে হিন্দুত্ববাদিরা অতীতে প্লেইন এট্মবোম ইত্যাদি ছিল বলেও বিশ্বাস করেন! যাদের ঘিলুর দৌঁড় ক্লাস ফোরের বেশী না-তাদের এত কিছু মাথায় ঢুকবে বলে মনে হয় না।

    (৩)
    এবার ইতিহাস থেকে আসি বর্তমানে। বলা হচ্ছে আই আই টি গুলোতে নাকি সিডিউলড কাস্টের ওপর অনেক অত্যাচার অবিচার হয়। তা হয়। সে নিজের চোখেই দেখেছি। কিন্ত তার কারন দলিত রাজনীতি। এই নয় যে আই আই টির অধিকাংশ ছেলেরা বর্ণবাদি। কোটা সিস্টেমের মাধ্যমে, দলিতদের প্রতি ঘৃণা তৈরী হয় অটোমেটিক্যালি।

    কারনটা লিখি। আই আই টিতে মুসলমান-হিন্দু জেনারেল কাস্টের মধ্যে ভাই ভাই সম্পর্ক। কিন্ত দলিতদের প্রতি উষ্মা । কেন ? কেন হবে না ? আপনি যদি দেখেন, আপনার বাবা একজন সাধারন চাকুরে-একটা ছেলে বহু খেটে কোন রকমে আই আই টিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে, আর পাশের ঘরে একটা ছেলে, এসসি কোটাতে কম্পুটার সায়েন্স পড়ছে-তার সাথে তার খাওয়া থাকা ফ্রি-এবং তার বাবা আই এ এস অফিসার। আপনার রাগ হবে না? রাগ না হওয়াটা কি অস্বাভাবিক? এগুলোর জন্যেই আই আই টি ক্যাম্পাসে দলিতদের ওপরে বাকীদের রাগ। যদি এই কোটা সিস্টেমে অর্থনৈতিক ক্রাইটেরিয়া থাকত যে গরীব দলিতের ছেলে মেয়েদের জন্য এই কোটা-আমি গ্যারান্টি দিয়ে লিখতে পারি, আই আই টি ক্যম্পাসে এমন এন্টি দলিত ফিলিংস থাকত না। কিন্ত যখন একজন ছেলে দেখছে, তার থেকে অনেক বড়লোকের ছেলে এস সি কোটাতে বিনা পয়সায় পড়ছে, সে রাগতে বাধ্য। আই আই টিতে এস টি কোটাতে যেসব ছেলেরা আসে তারা খুব গরীব। কীন্তু দলিত কোটাতে আসা ছেলে মেয়েদের মধ্যে ৯০% বেশ বড়লোক ঘরের।

    এর মধ্যে দলিত ছাত্রদের মধ্যে একটা ক্ষুদ্র শ্রেনী আছে, যাদের চির জীবনের ধারনা, তারা এস সি বলে মার্কস পায় না। স্যারেরা ফেইল করিয়ে দিচ্ছে!! তারা নির্যাতিত! এদের সবাই প্রায় জীবনে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা দলিত, তাই ভিক্টিমাইজ - এই ভাবে সর্বত্র ভিক্টিমাইজেশন তত্ত্ব নিয়ে চললে, তাদের মেন্টাল ব্রেইক ডাউন হতেই পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু বর্ণবাদি প্রফেসর থাকেন-সেটাও সত্য। কিন্ত তারা ব্যতিক্রম। নিয়ম কখনোই না।

    এবার বলবেন মশাই আপনি দলিত না-দলিতদের ব্যথা কি বুঝবেন? আমি উত্তর দেব আপনি বুলশিট বকছেন। আমি উঁচু কাস্টের লোক নই-বরং দলিত না হলেও নীচু কাস্টেই আমার জন্ম। কিন্ত তাতে কি? সমাজে কখনো কি কিছু ঘটেছে, যাতে আমার কাস্ট সামনে এসেছে? আসল কাস্ট সামাজিক অবস্থান। আমার দাদু ছিল প্রাইমারী স্কুলের হেডমাস্টার, ঠাকুর্দা পাট ব্যবসায়ী। বাবা-মা দুজনেই হাইস্কুলের টিচার। সেই সামাজিক অবস্থানই আমার আসল কাস্ট। স্কুল কলেজে একজন ব্রাহ্মন ও জেনারেল কোটাতে ঢুকেছে-আমিও জেনারেল কোটাতে ঢুকেছি -ফলে একজন ব্রাহ্মনের সাথে আমার কখনোই কোন দূরত্ব তৈরী হয় নি। কিন্ত এটাই হত-যদি কোটাতে ঢুকতাম। তাহলে এই এন্টি দলিত ফিলিংস জেনারেল ছাত্রদের মধ্যে ঢোকানোর জন্য দায়ী কে? দলিত রাজনীতি। যারা অর্থনৈতিক বা সামাজিক ক্রাইরেটিয়া না রেখে কোটা সিস্টেম তৈরী করেছে। একজন ধনী বা উচ্চশিক্ষিত এস সি ছেলে মেয়েদের জন্য কেন কোটা সিস্টেম থাকবে? তাতেত গরীব হরিজনদের পথই বন্ধ করা হচ্ছে!!!

    আমাদের প্রত্যন্ত নদী শহর করিমপুরে ব্রাহ্মন ছিল মাত্র কয়েকঘর। তিনটে পুরুত বামুন ফ্যামিলি ছিল। তারা এবং আমাদের ঝি রা -দুই পক্ষই থাকত শহরের ধারে কলোনীতে যেখানে গরীবেরা থাকে। ফলে আমিও ছোট বেলাতে ভাবতাম বামুনরা মানে ঝি চাকরদের মতন গরীব শ্রেনী!

    এই সেন্স অব ভিক্টিমাইজেশনের আবহ তৈরী করাটা খুব বাজে-রাজনীতি। এবং তাতে আসলেই দলিত ছাত্রদের ও ধ্বংস করা হয়।

    আমার ছেলে এখানে ফুটবল খেলে। মাঠে বেশ রেশিয়াল স্লার এবং বুলিং হয়-মাঝে মাঝে আমার ছেলে এসে অভিযোগ করেছে আগে। আমি ওকে কি বলবো ? আমি পরিস্কার বলেছি-যারা এসব রেশিয়াল স্লারিং করে তারা অশিক্ষিত, অজ্ঞ। ইগনোর। তাদের প্রতি রাগলে, খেলায় ফোকাস নষ্ট হবে। আর ও যেহেতু গোলকীপার খেলে, বিরোধি টিমের উদ্দেশ্যই থাকে গোলকিপারের মনঃসংযোগ নষ্ট করা। যদি বেশী করে, বা ফিজিক্যালি কিছু হয়-তার জন্যে রেফারি আছেই। আমি এটাও তাকে বলেছি-এগুলো জীবন এবং খেলার অংশ। লোকে ফোকাস নষ্ট করার চেষ্টা করবে-কিন্ত নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে সাফল্যের জন্য। পৃথিবীর প্রায় সব মহান ব্যক্তিই অন্যায় অবিচার বুলিং এর শিকার হয়েছে ছাত্র বা পেশাদার জীবনে। কিন্ত তারা সেটা নিয়ে ওবসেসড হয়ে বসে থাকে নি। নিজেদের কাজটা ভাল ভাবে করে গেছে।

    ফেসবুকে কিছু লোকজন দেখছি সারাদিন দলিত ছাত্রদের জন্য সেন্স অভ ভিক্টিমাইজেশন ফিলিং তৈরী করছে। তাতে কি দলিত বিরোধিতা কমবে? কিছু কমবে না। দলিত বিরোধিতা কমাতে গেলে দলিত কোটাতে অর্থনৈতিক অবস্থানের ক্রাইটেরিয়া ঢোকাতেই হবে।
  • দেব | 127.197.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১৩:১৯692635
  • "আই আই টিতে এস টি কোটাতে যেসব ছেলেরা আসে তারা খুব গরীব। কীন্তু দলিত কোটাতে আসা ছেলে মেয়েদের মধ্যে ৯০% বেশ বড়লোক ঘরের।"

    বিপ্লবদা কি ওবিসির কথা বলছেন? দলিত আর এসসি তো সমার্থক। নাকি ভুল জানি।
  • sm | 233.223.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১৫:৪২692646
  • Slavery dates back to prehistoric times and was apparently modeled on the domestication of animals. From the earliest periods of recorded history, slavery was found in the world's most "advanced" regions. The earliest civilizations--along the Tigris and Euphrates rivers in Mesopotamia, the Nile in Egypt, the Indus Valley of India, and China's Yangtze River Valley--had slavery. The earliest known system of laws, the Hammurabi Code, recognized slavery. But the percentage of slaves in these early civilizations was small, in part because male war captives were typically killed, while women were enslaved as field laborers or concubines.
    http://www.digitalhistory.uh.edu/disp_textbook.cfm?smtID=2&psid=3027
    সিন্ধু সভ্যতায় দাস প্রথা ছিল না বলে বিপ এমন কনফিডেন্টলি গুল দিচ্ছে কেন?
  • এমনকি | 192.69.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১৫:৫৪692648
  • সিন্ধু সভ্যতায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার ছিল, কমিউনিকেশনের জন্য কোনও তার পাওয়া যায় নি হরপ্পায়।
  • bip | 81.244.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:৪০692649
  • It is often assumed that intensive agricultural production requires dams and canals. This assumption is easily refuted. Throughout Asia, rice farmers produce significant agricultural surpluses from terraced, hillside rice paddies, which result not from slavery but rather the accumulated labor of many generations of people.

    http://www.crystalinks.com/induscivilization.html
  • বিপ | 81.244.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:৫৩692650
  • sc is scheduled caste, ST is tribe...ST are truly poor..SCs are not...in IITs at least
  • sswarnendu | 198.154.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১৯:১৭692651
  • "যা ঋকবেদ নিয়ে ভারতে ঢুকলো"---- ঋকবেদ কেউ নিয়ে ভারতে ঢোকেনি........ ভারতে Indo-European culture এর dominance এবং তার পরেও একটা phase of acculturation এর পরে লিখেছে ....... Witzel থেকে genetics নিয়ে link quote করলেন ( যদিও Witzel আদৌ geneticist নন ), আর বেদ নিয়ে এইটা, যা Witzel ই লিখেছেন আর পড়ে ওঠা হয়নি ( অথচ Witzel Vedic philologist )
  • দেব | 135.22.***.*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:৫০692652
  • ওহ হো আপনি এস টি লিখেছেন খেয়াল করিনি। হ্যাঁ।
  • pp | 174.67.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৬:৩৮692653
  • ঋকবেদ কেউ লিখেছে কি? শুনেছি বেদ লিখিত সাহিত্য নয়। শ্লোক গুলি শুনে শুনে মোনে রাখ্ত। আর্য্য রা লিখতে জানত না প্রথম দিকে।
  • pp | 174.67.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৬:৪০692625
  • @এমনকি
    আপনি বোলতে চান তারা তারকাটা ছিলো? ঃ
  • sosen | 184.64.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৭:১২692626
  • পশ্চিমবঙ্গের অভিজ্ঞতা দিয়ে ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রান্তের বর্ণবাদ মাপতে না যাওয়াই ভালো। বিশেষ করে দক্ষিণ ভারত(অন্ধ্র, তামিলনাড়ু), রাজপুতানা ও বিহারের ব্রাহ্মণ্যবাদ ও ছুৎ অচ্ছুৎ ব্যাপারস্যাপার পুরো আলাদা লেভেল। খড়গপুর আই আইটি দিয়ে তা কিস্যু মালুম হয় না। বাঙালীদের পক্ষে এই বর্ণবাদ বোঝাই মুশকিল।
  • | 192.69.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৮:৩০692627
  • সোসেনকে। পশ্চিমবঙ্গের শহরে যারা বড় হয়েছেন, তারা কল্পনাও করতে পারবেন না বর্ণবাদ জাতিভেদ বাকি ভারতে কোন লেভেলে চলে।
  • lcm | 83.162.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৯:৪১692628
  • আমি পারি। এক পিসির বিয়ে হয়েছিল বামুন পরিবারে, আশির দশকে। আজ অবধিও শ্বশুড়বাড়িতে ঢুকতে পারে নি। খোদ কলকাতায়।
  • Abhyu | 106.32.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ১০:২৬692629
  • তবে আমার চেনা যে কজন (অনেক বছর আগের কথা অবশ্য) সেখানে বিপের একটা অবজারভেশন মিলে যায়। SC কোটায় ঢোকা জনতা বেশ বড়লোক (একজন আমাদের বিদেশী চকলেট খাওয়াতো), কিন্তু ST কোটায় ঢোকা ছাত্রছাত্রীরা বেএএশ গরীব (একজনের মা লোকের বাড়ি কাজ করত, অন্য জন্যের আই আই টি যাবার আগে কোনো জুতো ছিল না)।
  • sswarnendu | 198.154.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ১৫:২০692630
  • ঋকবেদ লেখা মানে রচনা অর্থে, লিখিত ফর্মে সংরক্ষণ করা হয়েছে অনেক পরে
  • :( | 181.25.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ১৬:০২692631
  • ঋকবেদে কমোড ছেল? হরপ্পায়?
  • ): | 105.2.***.*** | ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ১৬:২৫692632
  • ছেল। আর তাতে হাগার মতো কমুনিস্টও ছেল।
  • bip | 81.244.***.*** | ২৪ জানুয়ারি ২০১৬ ২৩:৩৩692633
  • eTa FB ye pelam....
    **********************
    দ্ধাস্পদেষু,
    আমারও বড় হয়ে ওঠা অনেকটা আপনার মতো কষ্ট করেই। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমার চেয়ে ৪০, ৫০ কিংবা ১০০ নম্বর কম পেয়েও যখন দলিত বন্ধুরা স্কলারশিপ পেত আর আমি ওদের উজ্জ্বল মুখগুলো দেখতাম, আমার একটুও ভাল লাগত না। গা জ্বলে যেত। ওদের অনেকের বাবাই যে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকুরে। আর আমার বাবা...
    বিশ্বাস করুন, ‘একটাও রয়্যাল গুলি কিনতে পারিনি কখনও/ লাঠি লজেন্স দেখিয়ে চুষেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা...বাবা আমার কাঁধে হাত রেখে বলেছিল, দেখিস, একদিন আমরাও...।’
    আপনি লিখেছেন, অনেক কষ্ট করে আপনি বড় হয়েছেন। দলিত হওয়ার জন্য কত্তো অপমান আপনি সয়েছেন। কই একবারও তো লেখেননি কী কী সুবিধা পেয়েছেন। আসলে আপনার বলার জায়গা আছে। কাঁদবার মতো প্ল্যাটফর্ম আছে। আমার নেই। কারণ আমার পদবী। কতবার ইচ্ছে করেছে, এই পদবীটাকে গলা টিপে মেরে পুঁতে রেখে আসি কোনও বিরান জলাভূমির মাঝখানে। যাতে আর বেকার হওয়ার ভয় না থাকে। পারিনি। অনেক কিছুই তো পারা যায় না।
    সংরক্ষণটা অর্থনীতির ভিত্তিতে হলে বড় ভাল হতো। খ্রীষ্টের জন্মের ৩৩৬ বছর আগে হয়ত আমার কোনও দুঃসম্পর্কের পূর্বপুরুষ আপনার কোনও দুঃসম্পর্কের পূর্বপুরুষকে গালাগাল দিয়েছিল। কিন্তু তাতে আমার কোনও হাত নেই বিশ্বাস করুন। স্কলারশিপটা আমারও বড্ড দরকার ছিল। আমি তো এতগুলো নম্বর বেশি পেয়েছিলাম বলুন? আমারও তো হস্টেলে সন্ধ্যের পর খুব খিদে পেত। আমিও কী অত্যাচারিত নই?
    আমি দলিত বিরোধী নই। রোহিত ভেমুলার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। উচ্চবর্ণের ধ্যাষ্টামোকে আমিও ঘৃণা করি। কিন্তু আপনার কাছে অনুরোধ, দয়া করে ঘোলা জলে সিমপ্যাথি কুড়োবেন না। তাতে সত্যিকারের দলিতদের অপমান হয়
  • bip | 81.244.***.*** | ২৬ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:১২692634
  • ট্যাগানো-চ্যাংরামো এবং সংরক্ষনের অবান্তর গণতন্ত্র
    (১)
    গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই হচ্ছে ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা। প্রত্যেকের জীবনের উদ্দেশ্য কি এক হবে? কখনোই না। সুতরাং মতের ভিন্নতা থাকবে। এবং রামধেনুর মতন এই ডাইভার্সিটিকে ধারন করতে না পারলে কোন গণতন্ত্রই সমৃদ্ধ হবে না।

    ফেসবুকে যেদিকেই দেখি-সর্বত্র অসহিষ্ণুতা। সংরক্ষনের বিরুদ্ধে মত রাখলেই আপনি কাস্টিস্ট। যেন যারা সংরক্ষনের পক্ষে, তাদের যুক্তিই ১০০% ঠিক। এগুলো ভুল ভাল ধারনা। কোন আর্গুমেন্ট বা কাউন্টার আর্গুমেন্টই ১০০% কারেন্ট হতে পারে না। কারন প্রতিটা আর্গুমেন্টের সাথেই জীবনের উদ্দেশ্য জড়িত এবং সেটা যেহেতু সবার জন্য এক না-মতের ভিন্নতা থাকবেই।

    ভারতের লিব্যারাল এবং রক্ষনশীল গোষ্ঠি -দুটোই অগণতান্ত্রিক-অর্ধশিক্ষিত। সংরক্ষনের বিরুদ্ধে লিখলে কাস্টিস্ট বলে ট্যাগাবে, ৪৯৮ এর মতন কালা আইনের বিরুদ্ধে লিখলে সেক্সিস্ট বলে ট্যাগাবে, মার্কেটের পক্ষে লিখলে নিওলিব্যারাল বলে ট্যাগাবে। একই ভাবে ভারতের কোন ব্যাপারে সমালোচনা করলে আপনি পাকিস্তানপন্থী। হিন্দু ধর্মের সমালোচনা করলে আপনি সিকুলার। ইসলামের সমালোচনা করলে আপনি ইসলামোফোবিক।

    মুশকিল হচ্ছে বিরুদ্ধ পক্ষকে যারা এইভাবে ট্যাগাতে ভালোবাসে-আপনি নিশ্চিত ভাবে জানবেন, তাদের ঘটে কিস্যু নাই। ইস্যুভিত্তিক বিতর্ক করার ক্ষমতা নেই বলে ট্যাগাতে ভালোবাসে।

    (২)
    রোহিতের মৃত্যুতে রিসার্ভেশন বিতর্ক আবার সামনে আসছে-তার কুৎসিত রূপটাও দেখছি।

    প্রথমেই লিখে রাখি আমি সংরক্ষনের পক্ষে। কিন্ত তা যেন হয় অর্থনৈতিক অবস্থানের পরিপেক্ষিতে। এস সি , এস টিদের সংরক্ষন থাকুক- কিন্ত অবশ্যই যেন তা হয় তাদের অর্থনৈতিক মাপকাঠিতে। সংরক্ষনের মূল কারন পিছিয়ে পড়া শ্রেণীদের জন্য আপওয়ার্ড মোবিলিটি। সুতরাং শহরের প্রতিষ্ঠিত এস সিদের জন্য সংরক্ষন করে গ্রামের পিছিয়ে থাকা এস সিদের কি লাভ? আঙুল ফুলে কলাগাছ করা এই রিজার্ভেশন পলিশিতে আসলেই ত, গরীব দলিতদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা বুঝতে কি পি এই চ ডি করতে হয়? আলটিমেটলি বর্তমানের এস সি পলিসি , দলিতদের মধ্যে বড়জোর 5% এর কাজে আসছে-যাদের টাকা আছে। বাকী ৯5% দলিত, গরীব-তাদের কি লাভ হচ্ছে এই পলিসিতে ?

    ইনফ্যাক্ট এটাত নতুন কিছু না। ওবিসি রিজার্ভেশনের জন্য অর্থনৈতিক ক্রাইটেরিয়া চালু আছে। ২০১৫ সালের নিয়মে, যেসব ওবিসির হাউসহোল্ড ইনকাম ১৫ লাখের বেশী বা ক্লাস ওয়ান বা টু অফিসার-তারা রিজার্ভেশনের আওতাই আসে না। এই আইন এসসি দের জন্যও না আনার ত কিছু দেখি না।

    আমি যেটা লিখছি-সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি কে জি বালকৃষ্ণান-তার একটি রায়ে একই কথা লিখেছেন ( ২০০৮) ঃ

    “Though for the purpose of convenience, the list is based on caste, it cannot be said that backward class has been identified solely on the basis of caste. The only possible objection that could be agitated is that in many of the castes included in this list, there may be an affluent section (creamy layer) which cannot be included in the list of SEBCs.”
    He added: “When socially and educationally backward classes are determined by giving importance to caste, it shall not be forgotten that a segment of that caste is economically advanced and they do not require the protection of reservation.”

    যদিও এই রায় ছিল ওবিসিদের নিয়ে, এটাত দলিতদের জন্যও প্রযোজ্য।

    এস সি , এস টির মধ্যে এই আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া শ্রেনীটিকে বাদ দেওয়া নিয়ে অনেক মামলা হয়েছে। কিন্ত দলিত শ্রেনী যে সত্যই পিছিয়ে আছে, তার সব থেকে বড় প্রমান এই যে প্রতিটা ক্ষেত্রে, দলিতদের মধ্যে ক্রিমি লেয়ারটা দুধের সর খাওয়ার ধান্দায় বাকী আসল গরীব দলিতদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে।

    ২০১৪ সালে রাজস্থান হাইকোর্টে এই নিয়ে পিটিশন মুভ করা হয়--সরকার জবাব দিক কেন ওবিসির ক্রাইটেরিয়া গুলো এস সি, এস টিদের মধ্যেও থাকবে না? কিন্ত সেক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে রাজনীতিই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০৬ সালে সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি জাস্টিস ওয়াই কে সাভরাওয়ালও সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে একই নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যসরকারগুলিকে ""It is made clear that even if the state has compelling reasons, the state will have to see that its reservation provision does not lead to excessiveness so as to breach the ceiling limit of 50 per cent or obliterate the creamy layer of extended reservation indefinitely,"

    (৩)
    এবার আসি দলিতদের বঞ্চনা, সোস্যাল আঊটকাস্টিং ইত্যাদি নিয়ে। যাদবপুরের এক অধ্যাপক, যিনি ক্লাসে পড়াতে পারেন না, আনন্দবাজারে অনেক কাঁদুনি গেয়েছেন-এস সি বলে তাকে অনেক বঞ্চনা চ্যালেঞ্জের শিকার হতে হয়েছে।

    এগুলো সত্য সন্দেহ নেই। অভিযোগগুলো ততোধিক ফালতু। আমার জানা এমন কেউ নেই-যারা কর্মক্ষেত্রে বা ছাত্র অবস্থায় বুলিং এর শিকার হন নি। কর্পরেট পলিটিক্স ত আরো মারাত্মক। সেখানে সবাই সবার পেছনে লাগে। আমি ত গ্রাম থেকে এসেছি। কলেজ লাইফে অনেক বন্ধুই আমার গ্রাম্যতা নিয়ে হাঁসি ঠাট্টা করেছে। ইংরেজি ভাষা জ্ঞান-সব ব্যাপারেই খোঁটা খেয়েছি। তাতে কি ছেঁড়া যায়? এর জন্যে কাউকে এস সি হতে হয় না। কে কি বলল তাতে কি যায় আসে? যে বক্তা মূর্খ, তার মূর্খামি দায়, তার নিজের। আমি ভারতীয় বলে এখানে সাদারা আমার পেছনে লাগে নি? তাতে কি যায় আসে? যারা পেছনে লেগেছে, অনেকে তারাই পববর্তী কালে আমার ভাল বন্ধু হয়েছে। যে কোম্পানীতেই গিয়েছি-অনেক সাদা লোকই প্রথমে পেছনে লেগেছে। কিন্ত আস্তে আস্তে প্রত্যেকেই আমি নিজের বৃত্তে এনেছি। কর্মক্ষেত্রে সন্মান অর্জন করতে হয়- রিজার্ভেশনের মাধ্যমে ওই ভাবে কাউকে সন্মান দেওয়া সম্ভব না। আমার এক রেড নেকের কথা মনে আছে। আমি ক্যালিফোর্নিয়াতে যখন প্রথম জয়েন করি, সে আমার বিরুদ্ধে আমাদের জার্মানির হেডকোয়াটারে নালিশ করেছিল। যাইহোক জার্মানরাও গাধা না। আস্তে আস্তে যেটা হল-লোকটা কাজ করত সেলসে-ও দেখলো-ওর সেলস বৃদ্ধি করতে, আমি খুব কাজের লোক! ফলে তার বাড়িতে এক সাথে বিয়ার খাওয়া থেকে শুরু করে, তার ডিভোর্স ঠেকানোর জন্য মাঠে নামতে হয়। এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিলাম আমরা। ধণতন্ত্র খুব দড়ের জিনিস-এখানে প্রতিটা সম্পর্কই স্বার্থের। ওই ভাবে কাস্টের কারনে কেই কাউকে পেছনে ফেলবে না।

    তবে সামন্ততান্ত্রিক কাঠামোতে জাত ফাতের সমস্যা থাকতেই পারে । কিন্ত মার্কেটের আগমনে, তা আস্তে আস্তে কেটে যেতে বাধ্য।

    এবার বিবাহের প্রশ্নে আসি। অভিযোগ এস সিদের সাথে উচ্চবর্নের লোকেরা বিয়ে দিতে চায় না। এই অভিযোগ সঠিক। এর মূল কারন এরেঞ্জড মেরেজ। এই জন্য আমি আইন করে এরেঞ্জড মেরেজ তুলে দেওয়ার পক্ষে। এরেঞ্জড মেরেজ আরো অনেক কারনেই ক্ষতিকর-সেটা নিয়ে আগেই লিখেছি। কিন্ত তার জন্য চাকরিতে বড়লোক এস সিদের সংরক্ষন? কোন যুক্তিই যথেষ্ট না।

    (৪)
    বেসরকারি ক্ষেত্রে সংরক্ষনের প্রশ্ন উঠেছে। কারন আগামী দিনে সরকারি চাকরি আস্তে আস্তে অনেক কমে যাবে। সুতরাং এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

    আমেরিকাতে গর্ভমেন্ট ঠিকাদার ( নন-মিলিটারী) দের ক্ষেত্রে কিছুটা সংরক্ষন চালু আছে অন্যভাবে। ওখানে প্রজেক্ট প্রপোজাল মুল্যায়নের সময় পয়েন্ট সিস্টেম থাকে-যে কোম্পানীর মালিকানা কাদের-তাদের মাইনরিটি স্টাটাস কি। এক্ষেত্রে হায়েস্ট স্টাটাস থেকে রেড ইন্ডিয়ান এবং এক্স মিলিটারিদের। কিন্ত তা হয় মালিকানার ভিত্তিতে। ফলে এই ডিসিতে পুরো সিস্টেমটাই রিগড। রেড ইন্ডিয়ানদের কোম্পানী সামনে রেখে, অন্যরা প্রজেক্ট তোলে। তাতে রেড ইন্ডিয়ান মালিকের লাভ-কাট মানি।

    ভারতে সরকার সেরকম কিছু চালু করতেই পারে-তবে সিস্টেম পুরো দুদিনেই রিগড হয়ে যাবে।

    বেসরকারি ক্ষেত্রে সরকার মোটেও ঠিক করতে পারে না-একজন কোম্পানী কাকে নেবে। প্রতিটা কোম্পানীর নিজস্ব স্ট্রাটেজি থাকে হায়ারিং এ। আমি নিজে মফঃশহর থেকে উঠে আসা গরীব ছেলে মেয়েদের পছন্দ করি বেশী। এই পক্ষপাতিত্ব যদি ডিসক্রিমিনেশন হয়, মেনে নিতে রাজী আছি। কারন ওটা আমার ব্যবসার কারনেই দরকার। আমার অভিজ্ঞতা বলে এই ছেলে মেয়েগুলি কাজের হয় বেশী।

    তবে আমি মনে করি, ভারতের প্রোডিউসার ক্লাসগুলিকে উৎসাহ, সরকারি সাহায্য দেওয়া উচিত বেশী। এদের অনেকেই ওবিসি শ্রেনীর। চাষী, তাঁতি, কুমোর,ছুতোর-এদের জন্য ত সরকার কিছু করলো না-অথচ এরাই গ্রামীন অর্থনীতির ব্যকবোন।

    তবে এদের ছেলে মেয়েদের সরকারি চাকরি দেওয়া, অর্থনীতির ক্ষতি করা। দরকার এদের ছেলেমেয়েদের জন্য স্কিল মিশনের, লোনের-যাতে এরা আধুনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর দক্ষ হয়ে, লোনের মাধ্যমে বাপের কারখানাকেই উন্নত করতে পারে। ভারতের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কিন্ত সেই ধরনের পরিকল্পনা কই?

    অথচ সংরক্ষনের নামে একটা শহুরে এস সি শ্রেনী ঘি খাবে-এটাই হচ্ছে এদের বক্তব্য। এবং এই অবিচারের বিরুদ্ধে বলতে গেলে আপনি হয়ে যাবেন কাস্টিস্ট।
  • Reason Why | 222.2.***.*** | ২৬ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:৫৬692636
  • কিন্তু রোহিত আত্মহত্যা করল কেন? পেটে খুব বেশি ঘি চলে গেছিল?
  • bip | 81.244.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:০৯692637
  • আমার দশ বছরের আই আই টি লাইফে ১৫ জন আত্মহত্যা করেছে।
    এর মধ্যে ৫ জন প্রেমে আঘাত পেয়ে। মহিলারা না বলেছে। এতেব যেসব মহিলারা প্রেমে না বলে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হৌক। কারন তাদের আঘাতে কত পুরুষ আত্মহত্যা করছে।

    জোক্স এপার্ট এটা রাজনৈতিক হত্যা- বিজেপি ক্ষমতায়। ক্যাম্পাস দখলের লড়াইতে বিরোধি পার্টিকে সাসপেন্ড করেছে।
    পশ্চিম বঙ্গ হলে মেরে দিত
  • ওও | 195.65.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ০৯:১৫692638
  • তাহলে তো ঠিকই আছে। আল ইজ ওয়েল।
  • Abhyu | 85.137.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ০৯:৩৭692639
  • Reason whyর পোস্টটা বাজে লাগল। বিপকে ঠুকে লেখা হলেও কুকুরের পেটে ঘি সয় না প্রবাদটা বেশি মনে পড়ছে। ভি কে সিং টাইপের লাগল।
  • ঘি বিষয়ক ব্যাখ্যা | 118.166.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:৩১692640
  • ঘি এর কথা বিপ আগে বলেছে.

    "অথচ সংরক্ষনের নামে একটা শহুরে এস সি শ্রেনী ঘি খাবে-এটাই হচ্ছে এদের বক্তব্য। এবং এই অবিচারের বিরুদ্ধে বলতে গেলে আপনি হয়ে যাবেন কাস্টিস্ট।"
  • সে | 198.155.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৩:১২692641
  • না। তা নয়। ফ্রাস্ট্রেশন রিলিজ হচ্ছে।
  • সে | 198.155.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৩:১৪692642
  • নরেন্দ্রপুরের টোকাটুকিটা ফাঁস করে দিয়ে বিপ হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন। ;-)
  • Abhyu | 138.192.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৯:১১692643
  • সেটা বুঝেছি রে, বিপের কথাটা সেই জন্যেই লিখেছিলাম কিন্তু তাও ...
  • Robu | 11.39.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৯:৩১692644
  • বিপ - একটা গোটাগুটি পোস্ট 'আসলেই' শব্দটা বাদ দিয়ে একবার লিখবেন প্লিজ।
  • sm | 233.223.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ ২১:৫৫692647
  • এই ভদ্রলোকের লেখাটি ব্যতিক্রম বলা চলে।কোটায় ভর্তি হয়েছেন কিন্তু চাকরিতে কোটার সুযোগ নেন নি।এমন ব্যক্তি ধন্য বাদার্হ; কিন্তু বাস্তবে বিরল!
    আমরা সচরাচর যাদের দেখি তারা উচ্চ শিক্ষা থেকে চাকরি; সর্বত্র কোটার সুযোগ নিয়ে থাকেন। সুযোগ থাকলে , সেটা ছেড়ে দিয়েছেন, এমন লোক কয়টি চোখে পড়ে? এর পড়ে আসে সন্তান সন্ততিদের ও কোটায় ভর্তি করা ও সেম সুযোগ প্রদান করা।
    সুতরাং আর্টিকেল এর লেখকঃ এক্জাম্পেল সেট করতে পারেন।অন্যান্য লোকজন অনুপ্রানিত হলে; আরো বেশি নিডি লোকজন সুযোগ পাবেন।নতুবা এটি একটি ব্যতিক্রম হিসেবেই রয়ে যাবে।
    আর আমার দেখা হোস্টেলে; বহু বাবা মারই সামর্থ্য ছিলনা গাড়ি নিয়ে সপ্তাহান্তে ছেলে মেয়েদের সঙ্গে দেখা করার। যারা গাড়ি করে আসতেন ;তাদের মধ্যে কোটা/ না কোটা/ সরকারী চাকুরে/ ব্যবসায়ী সমস্ত ধরনের লোকজনই ছিলেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন