এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Souparno Adhikary | 192.66.***.*** | ১২ নভেম্বর ২০১৫ ১৭:৩৯688103
  • এই ইস্যুটা দেখি মাঝেমধ্যেই ফেসবুকে উদয় হয়...

    বিবর্তনের তত্ত্বে তিন ধরনের সংগ্রামের কথা বলা ছিলঃ ১) অন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম, ২) আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম এবং ৩) প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রাম... মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রামে জয়ী হয়েছে টেকনোলজির ব্যবহারের ভিত্তিতে... সোজা ভাষায়, যে প্রকৃতি প্রজাতির ঘাড়ে চাপতো, মানুষ তার ঘাড়ে চেপে বসেছে...

    বেশ কয়েক যুগ আগে, আমেরিকার কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী বারবারা ম্যাকক্লিনটক ট্রান্সপোজন বলে একধরনের জেনেটিক এলিমেন্ট, অর্থাৎ যা স্বাভাবিকভাবেই একটা ডিএনএ অণুতে থাকে, সেই জিনিস আবিষ্কার করেন...

    আরে মশাই, থামুন... জিন মানেই তো সেই গণ্ডগোল, মনসান্টো, ডুপন্ট অমুক তমুক... জিন কী তাহলে???

    কোশের লাইব্রেরি বললে অত্যুক্তি হবে কি??? লাইব্রেরিতে যেরকম পাতার পর পাতা বই গোছানো থাকে, ডিএনএ মলিকিউলও সেইরকম... অস্ট্রিয়ান ধর্মযাজক মেন্ডেল জোহান গ্রেগর, চার্চের বাগানে মটরশুঁটি গাছ নিয়ে পরীক্ষা করে বুঝেছিলেন প্রাণের বার্তাবাহক কিছু স্পেসিফিক গুণ (traits)... ১৯০৯ সালে উইলিয়ম জোহানসেন এই অজ্ঞাত বার্তাবাহকের নামকরণ করেন জিন... ১৯৪০-৫০ এর দশকে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী গ্রিফিথ এবং অন্যান্যদের কাজের মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয় কোশের নিউক্লিয়াসের মধ্যে থাকা ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (নামেই অ্যাসিড, সংক্ষেপে ডিএনএ) হচ্ছে এই জিনের রাসায়নিক চেহারা...

    ৫০এর দশকের প্রথম দিকে রোজালিন্ড ফ্রাংক্লিন, মরিস উইলকিনস, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং জে ডি ওয়াটসন এর গঠন আবিষ্কার করলেন... ফ্রেডরিক স্যাঙ্গার বের করলেন এই বার্তা পড়ার উপায়- বিজ্ঞানীদের কাজ হয়ে গেল সোজা...

    বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মলিকিউলার বায়োলজির লাফালাফির সাথে সাথে বিজ্ঞানীরা বুঝলেন জিন প্রযুক্তি ভবিষ্যতের খাদ্য সমস্যার সমাধান হতে পারে... অর্থাৎ, এই ডিএনএ মলিকিউলের সামান্য গঠনের এদিক ওদিক করেই উৎপাদন বাড়ানো বা কমানো সম্ভব... ম্যাকক্লিনটকের আবিষ্কার সেই পদ্ধতিকে আরেকটু সোজা করে দিয়েছিল...

    ব্যাসিলাস থুরিনজিয়েনসিস বা সংক্ষেপে বিটি, একটা ব্যাক্টেরিয়ার নাম... এই ব্যাকটেরিয়ার কিছু নির্দিষ্ট জিন আছে, যা পোকার পেটের ভেতরের আম্লিক পরিবেশে কাজ করে পোকার মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম...

    মনসান্টো এই টেকনোলজির পেটেন্ট কিনে নেয়... এবং যেকোনো বিজ্ঞানী যার বিরোধিতা করেন, অর্থাৎ তথ্য গোপন করা, তার আশ্রয় নিয়ে ভারতবর্ষে বিটি কটনের চাষ শুরু করে...

    বিটি শুধু কটনই নয়, ভুট্টা, বেগুন এবং অন্যান্যতেও পরীক্ষা করা হয়েছে...

    লেপিডপ্টেরান ডাইভার্সিটি অর্থাৎ প্রজাপতির বৈচিত্র্য কমতে থাকে ফসলের প্রয়োগের ফলে... উত্তর আমেরিকায় এর চাষের সময়ে খেয়াল করা গেছিল মৌমাছিদের কলোনি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনা...

    তা সমস্যার কী??? প্রথমেই তো বলেছি প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রামের কথা, তা দিব্যি তো মানুষ জিতে যাচ্ছিল...

    প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটা একমুখী নয়... দ্বিমুখী... পোকামাকড় স্বাভাবিকভাবে পরাগমিলনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেয় এবং জিনগত বৈচিত্র বজায় রাখে... এদের বিলুপ্তির সাথে সাথে জিনগত বৈচিত্র কমা এবং বিভিন্ন অন্যান্য প্রজাতির বিলুপ্তিও স্বাভাবিক... এবং প্রজাতির বিলুপ্তির সাথে সাথে খাদ্য শৃঙ্খল থেকে একাধিক প্রাণী প্রজাতি, যারা এই উদ্ভিদের ওপর খাদ্যের জন্য নির্ভরশীল, তাদেরও বিলুপ্তি স্বাভাবিক... মানুষ খাদ্য শৃঙ্খলের বাইরে নয়... অর্থাৎ, খাদ্য সংকট মানুষকেও রেহাই দেবে না...

    সমস্যাটা রাজনৈতিক... ধনতন্ত্রের অগ্রগতি এবং বিজ্ঞানের অগ্রগতি একই সাথে ঘটে- প্রমাণিত... কিন্তু, ধনতন্ত্র তার নিজস্ব মুনাফার স্বার্থে বিজ্ঞানকে ব্যবহার করেছে দাস হিসেবে... অভিযোগ, বিটি প্রযুক্তির ওপর সেফটি টেস্টের বহু রিপোর্ট এই কোম্পানিগুলো দিনের আলো দেখতে দেয়নি...

    মনসান্টো চায় দ্রুত লাভ করতে... বিজ্ঞানী চান সমস্যার সমাধান করতে... আশু সমস্যার সমাধানের মধ্যে দিয়ে ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতে (বুঝহ যে জন, লাইন করহ সন্ধান...)

    ভারতবর্ষের সরকারের নীতি, নন-নেট ফেলোশিপ তোলা সবই এই কর্পোরেটের স্বার্থে... বিজ্ঞানের স্বার্থে নয়...

    সমস্যাগুলো এক সুতোয় বাঁধা...

    ‪#‎UGCProtests‬ ‪#‎GMO‬
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন