এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আমাদেরই মা বাবা

    Abhyu
    অন্যান্য | ০৫ জুলাই ২০১৫ | ৭২৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 198.155.***.*** | ০১ জুলাই ২০১৬ ২৩:০৪681026
  • এর পরে একদিন রাজুর অত্যাচার খুব বেড়ে গেল। রাজু তার বাবার গায়ে হাত তুলল। রাজুর মা পুলিশে খবর দেবে বলে রাজুর বাবাকে। এরপর রাজুর মা বাড়ী থেকে বেরিয়ে যায় টিউশান করতে। রাজুর বাবা রাজুকে বলেন তের মা পুলিশে খবর দিতে গেছে। তখন রাজু তাড়াতাড়ি তার মাকে ফোন করে বলে, পুলিশে যেও না, আমরা চলে যাচ্ছি। তারপর রাজুর বাবা দেখেন রাজু বৌকে নিয়ে বেরিয়ে গেল। রাজুর মা টিউশান করবার সময় মোবাইল ফোন সায়লেন্ট রাখে। কয়েকটা টিউশান হবার পরে দেখে মিসড কল। অচেনা নম্বর থেকে। তারপর ফোনটা আবার বাজলে ধরে। পুলিশ ফোন করছে। রাজু বৌকে নিয়ে সোজা থানায় গিয়ে মায়ের নামে বধু নির্যাতনের আরোপ করে জিডি করেছে। পুলিশ রাজুর মাকে বলে, আপনি থানায় আসুন আমরা কথা বলতে চাই আপনার সঙ্গে। সেদিন ছিল একটা শনিবার। রাজুর মা বলে, আমি এখন ছাত্র পড়াচ্ছি। তখন পুলিশ বলে, তাহলে আমরা যাব আপনার বাড়ী। রাজুর মা বলে, বেশ, রাত দশটা হয়ে যাবে আমার ফিরতে ফিরতে, নয়ত কাল আসুন রাত দশটার পর। কাল রবিবার সারাদিন আমি ব্যস্ত থাকব। একটা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আছি। কাল অনুষ্ঠান আছে, সারাদিন ব্যস্ত থাকব। তখন রফা হয় পুলিশ আসবে সোমবার সকালে।
  • সে | 198.155.***.*** | ০১ জুলাই ২০১৬ ২৩:০৯681027
  • রাজু ও তার বৌ এর মধ্যে আর ফেরেনি। রবিবার অনুষ্ঠানের শেষে রাজুর মা সবাইকে বলেন, কাল সকালে পুলিশ আসবে আমায় ধরতে। সবাই অবাক হয়ে যায় শুনে।
    রাজুর মা, এক পারিবারিক বন্ধুকেও বলেছিলেন ঘটনাটা। তারপরে সোমবারে রাজুর মা অপেক্ষা করছে পুলিশ কখন আসবে সেজন্য, তখন পারিবারিক বন্ধুকে ফোন করে একটু। তিনি বলেন এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা হবে। পুলিশ আসেনি। পরে বন্ধুটি কলব্যাক করে জানান যে তখন তিনি নিজেই থানায় পুলিশকে আসল ব্যাপার জানিয়েছেন। পুলিশ আসবে না।
    তার পরের দিন, রাজু ও তার বৌ এসে নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে চলে যায়। দুটো জিনিস পরে এসে নিয়ে যাবে। টিভি ও এসি।
  • Du | 118.19.***.*** | ০২ জুলাই ২০১৬ ০৬:১৫681028
  • পুরোপুরি যাওয়া পর্য্যন্ত নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে না।
  • সে | 198.155.***.*** | ০২ জুলাই ২০১৬ ১০:১৭681029
  • এটা প্রায় একমাস আগে। এরমধ্যে আর আসেনি। কিন্তু মায়ের মন তো। গতকাল কথা হল। চিন্তা করছে, ছেলে কোথায় আছে কী করছে কী খাচ্ছে এই সমস্ত। আবার পরক্ষণেই বলে যে একটা মাস শান্তিতে রয়েছে।
    যা বুঝি, সম্পর্ক তো সাদা বা কালো দিয়ে দাগিয়ে দেওয়া যায় না।
  • Abhyu | 106.32.***.*** | ০৭ জুলাই ২০১৬ ১১:৪১681030
  • এখানেই থাক
    http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=24421&boxid=17918223

    দেখভালের পরিষেবা বাড়ছে শহরে

    অনির্বাণ ঘোষ

    স্ট্রোকের ছোবলে পক্ষাঘাতের শিকার বেকবাগানের নীলিমা ঘোষ৷ হারিয়েছেন বাকশক্তিও৷ একমাত্র সম্বল ছেলেও মার্কিন প্রবাসী৷ সত্তরোর্ধ্ব এই বিধবার দেখভাল করবে কে ?

    সত্তরোর্ধ্ব স্ত্রী অসীমা দেবীকে নিয়ে গড়ফায় দু’ জনের সংসার অশীতিপর অজিতকুমার দামের৷ দুই বিবাহিতা মেয়ের একজন থাকেন মুম্বইয়ে , অন্য জন বেঙ্গালুরুতে৷ অশক্ত দম্পতির নিঃসঙ্গ একাকী জীবনে ভরসা কে ?

    হূদরোগী অনিল , আর হাঁটু নিয়ে কাহিল আল্পনা --- সল্টলেকের সত্তরোর্ধ্ব সামন্ত দম্পতিরও পরিবারে আর কেউ নেই৷ রাতবিরেতে পড়ে গিয়ে কোমর ভেঙেছিল আল্পনার৷ আর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল আশি ছুঁইছুঁই অনিলের৷ কী হবে এ বার ?

    হাসপাতাল ছুটি দিয়েছে বটে ষাটোর্ধ্ব অনিতা সমাদ্দারকে৷ কিন্ত্ত ডাক্তারবাবু বলে দিয়েছেন , বাড়িতেই এবার ব্যবস্থা করতে হবে অটো -অ্যাডজাস্টেবল এয়ার -বেড সমেত ফাউলার্স বেড , অক্সিজেন কনসেনট্রেটর , বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশন , নেবুলাইজার ইত্যাদির৷ তা-ও কি সম্ভব ?

    সবই সম্ভব৷ নিছক কল্পনায় যে নয় , বাস্তবেও , তা দেখিয়ে দিয়েছে কলকাতারই বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা৷ অনিতার বাড়িতেই এমন একটি সংস্থা বানিয়ে দিয়েছে ‘মিনি আইসিইউ ’৷ সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার নার্স৷ বাড়িতে প্রায় হাসপাতালের সমতুল পরিষেবা দেওয়ার পরও ওই সংস্থার গ্যারান্টি --- ইমার্জেন্সির সময়ে প্রয়োজনে নিকটবর্তী হাসপাতালে যত দ্রুত সম্ভব পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে তারাই৷ পক্ষাঘাতগ্রস্ত নীলিমার ফিজিয়োথেরাপি থেকে শুরু করে রাইলস টিউবের সাহায্যে খাওয়ানো ---সবই করেন এমনই আর একটি ‘হোমকেয়ার -এল্ডারকেয়ার ’ পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরা৷ তাঁর মার্কিন প্রবাসী পুত্র নীল ঘোষও তাঁদের হাতে অশক্ত মায়ের স্বাস্থ্য আর সংসার ছেড়ে দিয়ে ঝেড়ে ফেলতে পেরেছেন দুশ্চিন্তা৷

    একান্নবর্তী পরিবারের ধারণা যত লোপ পেতে বসছে , জোটবদ্ধ সংসার যত বাড়ন্ত হয়ে অণু-পরিবারের বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে , ততই সেই ফাঁকা জায়গাটা ভরাট করার চেষ্টায় জন্ম নিচ্ছে বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা৷ নিঃসঙ্গ মা -বাবাকে ছেড়ে কর্মসূত্রে প্রবাসী হতে বাধ্য হয়েছেন একমাত্র ছেলে কিংবা মেয়ের বিয়ের পর একাকীত্বে ভুগছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা অথবা একসঙ্গে থেকেও ব্যস্ত ছেলে -বউয়ের পক্ষে প্রবীণ মা -বাবা -শ্বশুর -শাশুড়ির খেয়াল রাখা বাস্তবে সম্ভব হচ্ছে না ইচ্ছা থাকলেও --- দুনিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কলকাতা কিংবা শহরতলিতে এমন নজির দিন দিন বাড়ছে উল্কাগতিতে৷ আর সময়ের দাবি মেনে সেই তাগিদ থেকে এই মহানগরেই জন্ম নিয়েছে ট্রাইবেকা কেয়ার , উই কেয়ার , সাপোর্ট এল্ডার্স, কেয়ার কন্টিন্যুয়ামের মতো সংস্থা৷ এরা রীতিমতো পেশাদার ঢঙে অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধার দৈনন্দিন জীবনচর্যার পাশাপাশি নিরন্তর খেয়াল রেখে চলেছে তাঁদের স্বাস্থ্যেরও৷ আর দিন দিন বেড়ে চলেছে এদের কাজের বহরও৷

    প্রায় মাঝরাতে স্ত্রী পড়ে গিয়ে যখন আর উঠতে পারছেন না , তখন এমনই একটি সংস্থা সাপোর্ট এল্ডার্সেরর পরিষেবা নিতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা অনিল এসওএস অ্যালার্ট পাঠিয়েছিলেন সংস্থার সার্ভারে৷ তথ্যপ্রযুক্তির অ -আ -ক -খ না -জেনেও , স্রেফ তাঁদের দেওয়া এমইএএস (মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেম ) ডিভাইসের বোতাম টিপে সহজেই তিনি যোগাযোগ করে উঠতে পেরেছিলেন ওই সংস্থার কন্ট্রোল রুমে৷ বাদবাকি ঝক্কির পুরোটা , একেবারে পরিবারের মতোই সামলেছিলেন আমাদের সংস্থার কর্মীরা ,’ জানাচ্ছেন ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই একটি গ্যাজেটের কথা বলছিলেন ট্রাইবেকা -র কো -সিইও প্রতীপ সেনও৷ তাঁর কথায় , ‘আপত্কালীন পরিস্থিতিতে ছোট্ট এই যন্ত্রটির বোতাম টিপলেই আমাদের কন্ট্রোল রুমে খবর চলে যাবে নিমেষে --- কিছু একটা গণ্ডগোল নিশ্চয়ই হয়েছে৷ সঙ্গে সঙ্গে আমরা ফোন করি৷ যন্ত্রটি তখন ফোনের মতোই আচরণ করতে শুরু করে৷ কোনও জবাব পেলে ভালো৷ অন্যথায় , সঙ্গে সঙ্গে আমরা অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে দিই৷ ’

    ‘তবে বয়স্কদের শুধু শরীর -স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখাই নয় , তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য , একাকিত্ব ইত্যাদি বিষয়ে খেয়াল রাখাটাও সমান জরুরি৷ আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে সে কাজটাই করার চেষ্টা করি ,’ মন্তব্য কেয়ার কন্টিন্যুয়ামের অধিকর্তা সোমা ভট্টাচার্যের৷ ঠিক যেমন , অজিত -অসীমাদের বাড়িতে ট্রাইবেকা -র তরফে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে পরিচারিকা ও নার্সের৷ এখন তাঁরাই নিত্য খেয়াল রাখেন দাম দম্পতির যাবতীয় ভালোমন্দের৷ আর সব কিছুর দেখভাল করেন ওই সংস্থা নিযুক্ত যে ‘কেয়ার ম্যানেজার ’ তরুণ , জীবনসায়াহ্নে পৌঁছে তাঁকেই এখন ‘ঘরের ছেলে ’ আখ্যা দিচ্ছেন খোদ দাম দম্পতি৷ ‘কারণ , এই ছেলেটির কাজে পেশাদারিত্ব যেমন আছে , তেমনই রয়েছে মানবিক পরশও৷ আমার নাতি থাকলে , সেও এমনটাই হত৷ তাই নিশ্চিন্ত আমার দুই প্রবাসী মেয়েও ,’ মন্তব্য অজিতের৷

    ইউরোপ -আমেরিকায় বহু পুরোনো হলেও এ দেশে এমন পরিষেবার ধারণা একেবারেই নতুন৷ দিল্লি -মুম্বই -বেঙ্গালুরুতে তবু যদি বা মেড -ওয়েল , পোর্টিয়া , ডাবরের মতো সংস্থা এই পরিষেবা শুরু করে দিয়েছে গত পাঁচ -সাত বছর আগেই , কলকাতা ও শহরতলিতে এমন পরিষেবাকে হালের বললে অত্যুক্তি করা হবে না৷ কিন্ত্ত গত দু’-আড়াই বছরে সব সংস্থারই ক্লায়েন্টের সংখ্যা বেড়েছে লক্ষ্যণীয় ভাবে৷ অধিকাংশই মূল কলকাতায় পরিষেবা দিতে শুরু করেছিল দু’ বছর আগে৷ আর বর্তমানে তাদের অনেকে পরিষেবা সম্প্রসারণ করে ফেলেছে উত্তর শহরতলিতে বারাসত পর্যন্ত, দক্ষিণে সুভাষগ্রাম পর্যন্ত কিংবা গঙ্গার উল্টোপাড়ে হাওড়া শহর আর হুগলির চুঁচুড়া -চন্দননগর পর্যন্তও৷ ১৯৮৮ থেকে এ শহরে কাজ করে চলছে সিএমআইজি (ক্যালকাটা মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট অফ জেরেন্টোলজি ) নামের যে প্রতিষ্ঠান , তার প্রতিষ্ঠাতা কর্ণধার ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী জানাচ্ছেন , তাঁদের প্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত ৮০০ প্রশিক্ষিত ছেলে -মেয়ে বেরিয়েছে৷ কেউ বসে নেই৷ সকলেই পেশাগত ভাবে কোনও না কোনও সংস্থায় কর্মরত৷ কেননা , সামাজিক কারণেই প্রবীণদের বিবর্ণ হয়ে যাওয়া জীবনে রং ঢালার চাহিদা বাড়ছে এ শহরে৷

    ➨ ভারতে হোমকেয়ার -এল্ডারকেয়ারের বাজার বর্তমানে প্রায় ১ ,৬২৫ কোটি টাকার৷ কলকাতার ‘মার্কেট শেয়ার ’ ৭ % এরও কম ➨ সারা পৃথিবীতে হোমকেয়ার -এল্ডারকেয়ারের বাজার ৩৯ ,০০০ কোটি টাকা যার মধ্যে স্রেফ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই এই বাজার প্রায় ২৯ ,০০০ কোটি ➨ সারা দুনিয়ায় গত পাঁচ বছরে এই বাজার বার্ষিক ২০ % হারে বৃদ্ধি পাচ্ছেহোমকেয়ার -এল্ডারকেয়ারএই সেই মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেম --- এই সময় ৷
  • pi | 233.23.***.*** | ২৫ জুলাই ২০১৬ ১০:৫৩681031
  • এটা আবার পড়তে শুরু করলাম। দেখছি, মাঝে অনেক পোস্টই আগে পড়িনি।
  • Abhyu | 212.78.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১৬ ১৬:৫০681032
  • http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=25487&boxid=141747315

    বিমুখ সন্তানরা , একাকী মায়ের ঠিকানা ফুটপাথ

    ক’দিন আগে ৯০ বছরের মাকে গুন্ডা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ছেলের বিরুদ্ধে৷ সেটা ছিল বসিরহাটের ঘটনা৷ এ বার খাস কলকাতাতে পরিজনের অবহেলায় ফুটপাথই ঠিকানা হয়েছে আর এক মায়ের৷ ওই প্রৌঢ়া মায়ের অস্তিত্ব স্বীকারেই রাজি নন ছেলে৷ অন্য দিকে টাকা -পয়সা না -পাওয়ায় মেয়ে -জামাইও মায়ের দেখভালে নারাজ৷ পঞ্চান্ন বছররে ওই প্রৌঢ়ার নাম মঞ্জু মিশ্র৷ একটা সময় টলিউডের বেশ কিছু সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি৷ দিন কয়েক আগে গুরুতর অবস্থায় ফুটপাথে তাঁকে কাতরাতে দেখে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ৷ বর্তমানে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে চিকিত্সাধীন মঞ্জু জানেন না একটু সুস্থ হলে ফের তাঁকে ফুটপাথেই ফিরতে হবে কি না৷

    ১৫ অগস্ট একবালপুরের ফুটপাথে পায়ের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন মঞ্জু৷ তাঁকে ওই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে খবর দেন৷ ঘটনাস্থলে পেঁৗছন একবালপুর থানার সার্জেন্ট মণীশ পাণ্ডে -সহ অন্যান্য পুলিশকর্মীরা৷ শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের চিকিত্সক মঞ্জুকে ভর্তির জন্য লিখে দিলেও ছুটির দিন হওয়ায় তাঁকে ওয়ার্ডে পেঁৗছে দিতেই রাজি হচ্ছিলেন না নার্স-ওয়ার্ড বয়রা৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশকর্মীরাই তাঁকে ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে পেঁৗছে দেন৷ কিনে দেন ওষুধও৷

    মঞ্জুর কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে পুলিশকর্মীরাই যোগাযোগ করেন তাঁর ছেলে অমিত মিশ্রর সঙ্গে৷ তবে মা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন শুনেও সেখানে আসতে রাজি ছিলেন না অমিত৷ পুলিশের ধমক খেয়ে ওই দিন হাসপাতালে এলেও তারপর দেখা মেলেনি তাঁর৷ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে মঞ্জু বলছিলেন , ‘তিনদিন হল ছেলে আসছে না৷ ওষুধও ফুরিয়েছে৷ খোঁজ নেয়নি মেয়ে -জামাইও৷ ’ তাঁর আক্ষেপ , ‘স্বার্থের সঙ্গেই সবার সম্পর্ক৷

    সম্পত্তি দিলেই হয়তো মেয়ে -জামাই দেখতে আসত , দেখভাল করত৷’ কে এই মঞ্জু মিশ্র ?প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় , সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘এক পশলা বৃষ্টি ’ ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মঞ্জু৷ উল্লেখযোগ্য কোনও ভূমিকায় অভিনয় না করলেও কাজ করেছেন সন্ধ্যা রায় -বসন্ত চৌধুরী অভিনীত ‘সত্যমিথ্যা ’, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় অভিনীত ‘ধর্মযুদ্ধ’-সহ বেশ কয়েকটি বাংলা ছবিতে৷ এ ছাড়াও বলিউড অভিনেত্রী জুহি চাওলা -নাগমা অভিনীত একটি হিন্দি ছবিতেও কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন মঞ্জু৷ একবালপুরে দোতলা বাড়িও ছিল তাঁর৷ মঞ্জু জানিয়েছেন , তাঁর এক মেয়ে থাকেন দিল্লিতে , অন্যজন মুকুন্দপুরে৷ একমাত্র ছেলে ভাড়া থাকেন একবালপুরে৷ কী করে এমন করুণ পরিস্থিতির শিকার হলেন মঞ্জু? তাঁর দাবি , অনেক বছর আগেই তাঁর সঙ্গে সর্ম্পক চুকিয়েছেন স্বামী৷ তিন সন্তানকে একবালপুরের মায়ের বাড়িতেই মানুষ করেছেন৷ কলকাতায় পরের দিকে সে ভাবে কাজ না মেলায় কয়েক বছর মুম্বইতেও ছিলেন মঞ্জু৷

    সেখানেও সাড়া পাননি তেমন৷ ছেলে -মেয়েদের মানুষ করতে পানশালাতে গানও গেয়েছেন৷ তাঁর অভিযোগ , ‘মায়ের সম্মতিতেই একবালপুরের বাড়ি বিক্রি করা সিদ্ধান্ত নিই৷ তবে বাড়ি বিক্রির জন্য যার উপর ভরসা করেছিলাম , পথে বসিয়েছে সে -ই৷ ১৬ লক্ষ টাকার কিছুই তেমন হাতে পাইনি৷ ’ কী বলছেন তাঁর পরিজনরা ? তাঁরা যা বলছেন , তা শুনলে অবশ্য সব খুইয়ে ছেলে -মেয়ে মানুষ করা বাবা -মায়ের আঁতকে ওঠার যথেষ্ট কারণ আছে৷ ছেলে অমিতের পাল্টা প্রশ্ন, ‘আমি কেন দেখব ? উনি আমার মা -ই নন৷ বেহিসেবি জীবনযাপন করে বাড়ি বিক্রির টাকা উড়িয়েছেন৷ আমার নিজেরই চলে না৷ ’ ছেলের মুখে এ কথা শুনেও কিন্ত্ত তাঁর বদনাম করতে নারাজ মঞ্জু৷

    তাঁর কথায় , ‘ছেলে অভিমানে এ সব বলছে৷ ওর আর্থিক অবস্থা সত্যিই ভালো নয়৷ তাই হয়তো আমার দেখভাল করতে পারে না৷ ’ আর মেয়ে ? মুকুন্দপুরের বাসিন্দা মঞ্জুর এক মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ফোন ধরেন তাঁর জামাই মনোজ পোদ্দার৷ তিনি জানিয়ে দেন , গত কয়েক ব ছর তাঁদের সঙ্গে সর্ম্পক নেই শাশুড়ির৷ অসুস্থ একাকী প্রৌঢ়াকে কেন দেখভাল করেন না , প্রশ্ন করা হলে , কার্যত ক্ষিন্ত হয়ে ওঠেন মনোজ৷ তাঁর প্রশ্ন, ‘আমরা কেন দেখব ? আমাদের কি সম্পত্তি দিয়েছে ? ওঁর ছেলে আছেন৷ তিনি দেখবেন৷ ’ তাঁর দিল্লিবাসী মেয়ের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি৷ হাসপাতালে ভর্তির সময় মঞ্জুকে নিয়ে ‌ে য বিপত্তির শিকার হন পুলিশকর্মীরা , তাতে হাসপাতালের এক শ্রেণির কর্মীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল৷ এ নিয়ে হাসপাতাল সুপার সৌমাভ দত্তের প্রতিক্রিয়া , ‘এটা অপ্রত্যাশিত৷ আমি খোঁজ নিয়ে দেখব সে দিন কারা ডিউতে ছিলেন৷ ’ হাসপাতাল তো সাময়িক ঠিকানা৷ এখন প্রশ্ন, সুস্থ হলে ফের সেই ফুটপাথই কি ভবিতব্য মঞ্জুর ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন