এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • টেনি শর্মা | 111.22.***.*** | ০৭ জুন ২০১৫ ১৩:৫৪678935
  • ঘটনাটা পুরানো একটু। একটি ট্রেনযাত্রা বা অযাত্রার গল্প। অফিস ফেরত হাওড়া থেকে ট্রেনে উঠেছি। অঝোরধারে বৃষ্টি হচ্ছে। কোনরকমে একটা কামরায় উঠলাম।দেখি বেশ ফাঁকা আছে। তা বেশ। উঠেছি ক্ষতি নেই। মনোমত জায়গা নিয়ে বসলাম। সামনে একজন অবাঙালী ভদ্রলোক আর তার মেয়ে বসে আছে। না না, আবার রোমান্স খুঁজবেন না। আমি লোকটা একটু বেরসিক আছি। মেয়েটা দেখছি খুব মন দিয়ে কুড়কুড়ে খাচ্ছে আর বাবাটা ততোধিক মন দিয়ে গুটখা। গন্ধে মনে হল রজনীগন্ধা। যাই হোক। আমার বাঁ পাশে একজন বসে বসে খবরের কাগজ মুখের সামনে ধরে মেয়েটাকে পড়ছে। এত্ত মন দিয়ে পড়ছিলেন যে মনে হল কুড়কুড়ের প্যাকেটের সমস্ত লেখা ওনার মুখস্থ হয়ে গেছে। তা হোক। ক্ষেতি নেই কো!! পাশের রোয়ে দেখি দুই ভদ্রলোক বসে বসে বাঙালীর সিভিক সেন্স নিয়ে গল্প করছে আর প্যাটিস খাচ্ছে। মোটামুটি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালী কতটা অসভ্য এটাই দুই বাঙালি বসে প্রমান করছেন। প্যাটিস খেয়ে প্যাকেটটা ট্রেনের মেঝেয় ফেলে দুজনে নিজেদের আলোচনায় মত্ত থাকলেন।এদিকে আস্তে আস্তে ভীড় বাড়তে লেগেছে। ট্রেনের ছাড়ার সময় ছিল ৬-০৫ এ। অথচ ৬:৩০ বেজে গেলেও ট্রেন ছাড়ার নাম নেই। বেশ গ্যাঁট হয়েই দাঁড়িয়ে আছে। এদিকে ভীড়ও যথেষ্ট বাড়তে লেগেছে। প্রত্যেক চ্যানেলে লোক ঢুকে গেছে। ইংলিশ চ্যানেল হয়তো পার হতে পারব, কিন্তু এই চ্যানেল পার হয়ে বাইরে বেরোন অসম্ভব। ফলত গরম লাগলেও বসে আছি। নেহাত বৃষ্টি হচ্ছে বলে বাঁচোয়া। পিছনে দেখি হঠাৎ কার ল্যাপটপের কোলে কে বসেছে তা নিয়ে লড়াই লেগে গেছে। আশেপাশের লোকজনও বেশ উৎসাহ দিচ্ছে। বেশ মোরগ লড়াই, মোরগ লড়াই আবহ। বসে বসে ভাবছি বাজি লাগাব কিনা!! এমন সময় একজন এসে খবর দিল তিন নম্বর লাইন দিয়ে ট্রেন চলবে না। শুনে আমার কি এরকম একটা মনোভাব নিয়ে বসার পরেই খেয়াল হল আমার ট্রেনটাই তিননম্বরে দাঁড়িয়ে আছে। দেখি মোরগ লড়াই তখন স্প্রিন্টে পরিনত হয়েছে। কেবা আগে প্রান করিবেক দান এর মতন আর কি!! মাইরি বলছি এক ট্রেন ভীড় এত তাড়াতাড়ি খালি হয়ে গেল যে দেখে ম্যাগিও লজ্জা পেয়ে যেত। আমি আবার নিজেকে এত্তু সেয়ানা ভাবি। তাই এদিক ওদিক তাকিয়ে অন্য ট্রেনগুলির অবস্থা দেখে নিলাম। দেখি মোটামুটি ফেভিকলের অ্যাডের চেহারা নিয়েছে। অত ভীড় ট্রেনে ঢুকতে গেলে জাদু শরবত খাওয়া ছাড়া পথ নাই। ফলত নিজের জায়গাতেই বসে থাকলাম। কিন্তু বসে বসে আধাঘণ্টা কেটে গেলেও দেখি ট্রেনের নড়াচড়ার কোন ইচ্ছাই নেই। ফলত বাধ্য হলাম নামতে। নেমে এদিক ওদিক ঘুরে বুঝলাম অন্য ট্রেনে ওঠার কথা ভাবাই বৃথা। ফলত চললাম ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের দিকে। কিন্তু তার আগেই পুরো মানবপ্রাচীর!! ঠিক যেন ওবেলিক্সকে আটকাতে রোমান সৈন্যরা দাঁড়িয়ে আছে। কোন রকমে ভীড়ের মধ্যে ঢুকেই বুঝলাম কেস খেয়েছি। বাইরে থেকে যাকে নিশ্চল ভেবেছিলাম,ভিতরে তার চোরাস্রোত চলছে কে জানত?? এদিকে অ্যানাউন্স হচ্ছে ৫ নম্বরে ট্রেন তো একদল আমাকে সুদ্ধু চলল ৫ নম্বরে, ওদিকে আরেক দল চলল ১ নম্বরে তো আমিও চললাম। নিজেকে কিরকম জোয়ারের ইয়ের মতন মনে হচ্ছিল। যাইহোক, জোয়ারের ইয়ের তীরে আসে। আমিও। মানে ওই ভীড় থেকে বেরোতে পারলুম। কিন্তু ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে দেখি হাড়িকাঠ বসিয়েছে। যে যাচ্ছে কুচুত করে গলাটা কেটে নিচ্ছে।মানে গলাকাটা ভাড়া বলছে আর কি!! তাও দেখি কোন্নগর কেউ আসবে না। অগত্যা ট্রেনই ভরসা।এবার আর রিস্ক না নিয়ে টুকটুক করে এক নম্বরে চলে এসে দাঁড়িয়ে থাকলাম। দেখি একটা ট্রেন দাঁড়িয়ে। লোকে উঠছে দেখে আমিও সামনের দিকে হাঁটা লাগালাম।মোটামুটি মাথার কাছে এসেছি, দেখি অ্যানাউন্স করছে যে পাঁচ নম্বরে নতুন ট্রেন দেওয়া হবে। আবার কেস। এখন ঘুরে ওই জোয়ার ঠেলে যেতে যেতেই তো ট্রেনে ওঠার ক্ষমতা থাকবে না। কি আর করা!! নামলুম লাইনে। লাইন পেরিয়ে পেরিয়ে পাঁচ নম্বরে উঠলাম। ওঠার সময় হাল্কা ভারসাম্য হারানোয় হাতটা মাটিতে রেখে সাপোর্ট রাখায় হাতে একটু নোংরা লেগে গেছিল।যাইহোক।সামনে একজন ভদ্রলোক যাচ্ছিলেন। ওনার পিঠে হাতটা রেখে জিগালাম যে এই ট্রেন যাবে কিনা। লোকটা মাইরি এমন যা তা বলে কিনা ওনার পিঠে হাত মুছেছি!!! বলুন তো কিরকম এরা??? হ্যা মানছি হাতে নোংরা লেগেছিল। পিঠে হাতটা দেবার পর হাতটা পরিষ্কার হয়ে গেছিল। তাই বলে হাত মুছেছি বলবে?? ধুস ধুস। ভালমানুষির যুগ নেই আর। আমি অবশ্য খুব নিরীহ মানুষ,তাই ঝামেলায় না গিয়ে টুক করে সামনের কামরায় উঠে গেলাম।আর ট্রেনটাও দুলে উঠে ছেড়ে গেল।
  • Soumyadeep Bandyopadhyay | ০৭ জুন ২০১৫ ১৯:৪২678936
  • ভালই লাগলো বেশ ! আরো কিছু নতুন অ্যাড হবে?
  • টেনি শর্মা | 111.22.***.*** | ০৮ জুন ২০১৫ ১২:২২678937
  • না
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন