এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ধর্ম, পোশাক - রাষ্ট্র বনাম ব্যক্তিস্বাধীনতা

    Arijit
    অন্যান্য | ১৬ অক্টোবর ২০০৬ | ১৪১৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Samik | 125.23.***.*** | ১৬ অক্টোবর ২০০৬ ২০:১১669417
  • সময়োপযোগী। দু পয়সা দেব।
  • Samik | 61.95.***.*** | ১৯ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:১৫669428
  • কদিন ধরেই এই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছিলাম। রাস্তায় একজন পঞ্চ-ক পরিহিত লোক দেখলে কিন্তু অবচেতন মন কোনও বিরূপ মেসেজ পাঠায় না আমাকে। ভয় পাই না, এড়িয়ে যাই না, সর্দার বলি, হাল্কা চুটকি রসিকতা করি, একেবারে সাধারন মানুষের মতই।

    কিন্তু একটা বোরখা পরা মেয়ে কিংবা মাথায় ফেজ টুপি গোড়ালির ওপর পাজামা দেখলেই অবচেতন মেসেজ পাঠাতে থাকে, কেন? কেন নিজের অজান্তেই মনে হয়, ঐ: শালা আল্‌-কায়দা! ব্যাটা ধর্মভীরু মুসলমান! আরও অনেক কথা মনে হয়, কেন? অবচেতন বলে, এড়িয়ে যাও, এড়িয়ে চলো, এক্ষুনি তোমার কী কথার কী মানে করে বসবে, বলবে এ ব্যাটা ইসলামের অবমাননা করছে, ফতোয়া দিয়ে তোমার মাথা ধড় থেকে নামিয়ে দিতে পারে।

    অবচেতন একইরকমের সতর্কবার্তা পাঠাতে থাকে সামনের লোকটার কপালে 'জয় মাতাদি' লেখা ফেট্টি কিংবা রক্ততিলক কিংবা গেরুয়া পরনে থাকলে। অবচেতন বলে, এড়িয়ে যাও, এ করসেবক জাতীয় লোক, যারা বাবরি মসজিদ ভেঙেছিল, লাখ লাখ লোক যাদের জন্য খুন হয়েছিল, এ সেই হিন্দু মৌলবাদী। এক্ষুনি জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে তোমার কাছ থেকে করসেবার জন্য টাকা চাইবে, না দিলে তোমার বাচ্চার গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দিতে পারে, তফাৎ যাও।

    একজন খ্রিস্টানের ঠিক ধর্মভিত্তিক কোনও পোষাক নেই, তাই সে রকম কিছু মনে হয় না, কেবল সাদা চামড়া দেখলে অবচেতন প্রথমেই বলে, কান সজাগ রেখো, এদের ইংরেজি তোমাদের মত নয়, বুঝতে অসুবিধা হবে। ... অন্তত তফাতে যেতে বলে না।

    রাষ্ট্রও তো কিছু ব্যক্তিসমষ্টি বই তো নয়, তারাও তো আমাদের মতই চিন্তাভাবনা করে, তারপরে কিছু ফতোয়া দেগে দেয়, এই চলবে, ঐ চলবে না।

    এই আর কী।

    ছোটবেলায়, যখন বোধোদয়ও হয় নি, তখন কিন্তু শিখ দেখলে ভয় করত। ইন্দিরা গান্ধী সদ্য খুন হয়েছে, 'পাঁইয়া' মুর্শিদাবাদে একটা কি দুটো ছিল, দেখলেই মায়ের আঁচলের পেছনে লুকিয়ে পড়তাম, কারণ মা বাবা আলোচনা করত, রেডিও আলোচনা করত, পাঞ্জাবিরা 'উগ্রপন্থী' হয়, খালিস্তানি উগ্রপন্থী। কাগজে উগ্রপন্থীর ছবি বেরতো সব পাগড়ি পরা দাড়িওলা মুখ। এখন যেমন সন্ত্রাসবাদীর ছবি বেরোয় সব মুসলমান। এখন যেমন হিন্দু মৌলবাদীর কপালে থাকে তিলক, ফেট্টিতে লেখা থাকে জয় শ্রীরাম, গলায় থাকে গেরুয়া উত্তরীয়।
  • r | 194.203.***.*** | ১৯ অক্টোবর ২০০৬ ১৬:৩০669438
  • অবচেতনে নয়, সচেতনে।

    তবে অরিজিৎ যে প্রসঙ্গে এই থ্রেডটা খুলেছে, সেটা আরও একটু জটিল।

    ১) কারুর সাথে কথা বলার সময় আমাদের কি মনে হয় যার সাথে কথা বলছি তার মুখ দেখতে পাওয়া উচিত?

    ২) কোনো শিক্ষিকা পড়াবার সময় যদি মুখ ঢেকে থাকেন, তাহলে শিশুদের কি পড়া বুঝতে অসুবিধা হয়?

    ৩)রাষ্ট্র যদি বলে যে কোনো ধর্মের যে কোনো পরিচিতি প্রকাশ্যে ধারণ করা নিষিদ্ধ, সেটা কি ব্যক্তিগত অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে সমর্থনযোগ্য নয়?

    ৪) রাষ্ট্রের ধর্মনিরপক্ষতা এবং ধর্মপালনের স্বাধীনতার মধ্যে কোথায় সীমানাটা টানা যায়?
  • Arjit | 128.24.***.*** | ১৯ অক্টোবর ২০০৬ ১৬:৪৯669439
  • টিক টিক। একবার ভেবেছিলুম ডিটেলস লিখবো, তাপ্পর খোলা সুতো ছেড়ে দিলুম...
  • Samik | 125.23.***.*** | ১৯ অক্টোবর ২০০৬ ২২:৩৮669440
  • (হাতা গুটিয়ে)

    অবচেতন বা সচেতনের সীমারেখার কনসেপ্ট পার্সন টু পার্সন ভ্যারি করতেই পারে।

    (১) উচিত। ফেস টু ফেস ইন্টার‌্যাকশনের কোনও দামই থাকত না তা হলে। অ্যানোনিমিটি মায়াপাতাতে ভাট মারাতেই ভালো, প্রাত্যহিক জীবনে নয়, ব্যবসা করতে গেলে নয়, সম্পর্ক গড়তে নয়।

    (২) হয়। একই যুক্তিতে। অ্যানোনিমিটি সামনাসামনি ইন্টার‌্যাকশনে পছন্দ নয়। শিশুই হোক বা পূর্ণবয়স্কই হোক। শিশুর সামনে মুখ ঢেকে মা-বাবাকে ঘুরতে দাও, বুঝতে পারবে শিশুর অসুবিধা হচ্ছে কিনা।

    মানুষের আইডেন্টিটি তার মুখে, ফোটো আইডি কার্ডে মানুষের হাত পা বুক পিঠের ছবি থাকে না। সেই মুখ কেউ ঢেকে ইন্টার‌্যাকশন করলে সভ্য মানুষের অসুবিধে হওয়াই উচিৎ।

    (৩) একেবারে নয়। ধর্মনিরপেক্ষ বলে কোনও রাষ্ট্র নিজেকে দাবি করলে সবার আগে তার উচিৎ এই রুলটা ইম্পোজ করা। যে পরিচিতি আমাকে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ভূক্ত করে দেয়, অন্যদের থেকে পৃথক প্রতিপন্ন করে, সে পরিচিতি অসাম্যের। ওসব ব্যক্তিগত স্বাধীনতা-ফতা বকোয়াস। এটা স্টাইলের কুর্তা পাজামা বা ফ্যাশনদার সালোয়ার কামিজ বা ঢাকাই শাড়ি বা বেনারসী নয়। বাহ্যিক পরিচিতি যখন ধর্মচিহ্ন, তখন তা বর্জনীয়, ধর্মনিরপেক্ষ দেশে।

    (৪)এটা এক কথায় বলা সম্ভব নয়। রাষ্ট্র সম্ভবত ধর্মনিরপেক্ষ কথাটার মাধ্যমে প্রমাণ করতে চায় সকল ধর্মের প্রতি সমানভাবে সহিষ্ণু। যদিও ভারতরাষ্ট্রের রাষ্ট্রিকনীতিতে তার চিহ্ন দেখা যায় না। ধর্মপালনের স্বাধীনতাটা নিজের ঘরের চৌকাঠের মধ্যে কিংবা সমমনোভাবাপন্ন লোকজনদের শান্তিপূর্ণ জমায়েতেই জমে ভালো, যে জমায়েত বিষমমনোভাবাপন্নদের বিব্রত করে না। ঘরের মধ্যে আমি জয় শ্রীরামই করি আর নামাজই পড়ি আর চামরই দোলাই, তাতেকারুর কিছু এসে যায় না। কিন্তু আমি যদি ধর্মপালনের স্বাধীনতার নামে মসজিদের সামনে নামাজের সময়ে ঢাক পেটাই, কিংবা জয় শ্রীরাম বলে কৌটো ঝাঁকিয়ে অনিচ্ছুক লোকের কাছ থেকে পয়সা আদায় করি, কিংবা শরিয়তি আইনের নাম নিয়ে কাউকে অন্যরকম ট্রিটমেন্ট দিই, সেটা ধর্মনিরপেক্ষতা নয়। রাস্তা আটকে দুর্গাপুজো করাটাও যেরকম অন্যের ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, রাস্তা জুড়ে ট্রাফিক জ্যাম ঘটিয়ে অফিস টাইমে নামাজ পড়াটাও তেমনি। এটা ঘটতে দেওয়া ধর্মনিরপেক্ষতা নয়।
  • du | 67.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ০২:২৩669441
  • খুবই interesting টপিক । ব্রিটেনে বোধ হয় শুরু হয়েছিলো স্কুলে কৃপান নেওয়া নিয়ে প্রায় ২৫ বছর আগে (স্মৃতি থেকে বলছি ,ভুল হতেই পারে)।
    এটার একটা দিক, যে মুখ ঢাকা থাকলে, বা হাতে কৃপান থাকলে কর্তৃপক্ষের অসুবিধে হয় সেটা মোটামুটি বুঝতে পারি আমাদের দিক থেকে।
    কিন্তু যে সেটি ধারন করে আছে , তার কাছে এটি কি ব্যক্তিস্বাধীনতার লক্ষণ নাকি সেটি সে করছে ধর্মের অধীনতা বা অনুশাসন মেনে ? সেটা বোঝা অন্য একজনের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি রোকেয়া বেগমের একটি লেখাতে পড়েছিলাম তিনি বোরখার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। মুক্ত চিন্তা
    এবং সচ্ছন্দ ঘোরাফেরায় ওটা তাকে সহায় করেছিলো বলেই তার মনে হয়েছে।তা সেখানে তিনি যখন বোরখা পরেন সেটার স্ব-ইচ্ছতে এবং
    সেটা তার ব্যক্তিস্বাধীনতার আওতায় বলেই ধরে নেওয়া যায় এবং সেটা তাকে খুলে ফেলতে বলা তার স্বাধীনতায় অন্যায় হস্তক্ষেপ।কিন্তু ওটা পরার নির্দ্দেশও যদি বাইরে থেকে আসে ,তবে সেটা কারো ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।

    তবে ধর্ম মানুষের জীবনে এতোটাই গভীর যে সেটি তার দ্বিতীয় সঙ্কÄ¡ই হয়ে দাঁড়ায় , নিজেকে ওর থেকে আলাদা করাই হয়ে ওঠে দুস্কর।ছোটবেলায় যখন পড়েছি ... 'যা চেয়েছো তার কিছু বেশি দিব, বেণীর সঙ্গে মাথা' মনেও কি হয়েছে যে তার এই বলাটা কতটা অযৌক্তিক ? অথচ যারা শিখদের বিষয়ে না জেনেই বড় হয়েছে, তেমন বাচ্চাদের আপনি গল্পটা শুনিয়ে দেখুন, প্রশ্ন করবেই ...whats wrong in cutting the hair? একই জিনিষ বাইরে থেকে দেখতে একরকম, ভেতর থেকে অন্য । কে যে শেষ কথা বলবে? ভারতীয় হিসেবে বলতে পারি আমি সবাইকে তার বিশেষ চিহ্ন সহ দেখেছি , তাই আমি তাদের সেভাবেই মেনেও নিতে পারি বেশি।সেই যে ... নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান , বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান ... এই ঐতিহ্য আমার গর্বের।

    অপ্রাসংগিক হয়তো, তাও সুবিধে অসুবিধের কথা ভাবতে গিয়ে মনে এলো যে আমার বিজাতীয় মুখটাও, যা নাকি মেলেনা তার মা বাবা প্রিয়জনদের কারো সংগেই, সেও তো এক ভিনদেশী শিশুর কাছে অস্বস্তিকর লাগতে পারে প্রথম প্রথম সে যখন স্কুলে আসে, নয় কি?

    অনেক ক্ষেত্রেই ধর্মের চিহ্ন শুধুই তো ধর্মের চিহ্ন নয় .. সেটা একটা সাংস্কৃতিক আগ্রাসনেরও চিহ্ন । বাঙালী মেয়ের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকতে হওয়ার সাথে
    এক ও সর্বষক্তিমান নিরাকার ঈশ্বরে বিশ্বাস যতটা না যুক্ত , তার চেয়ে বেশি নয় কি এটা যে মেয়েদের সেই বিশেষ পোষাক মধ্যপ্রাচ্যে প্রচলিত ছিলো ? কিন্তু আজ এতোশত বছর পরে এটা অনেক ক্ষেত্রেই তার নিজস্ব হয়ে গিয়েছে, হয়ে গিয়েছে তারই এক মুখ। যেমন ধুতি পাঞ্জাবীকে ইংরেজের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে আমরা ছেড়েছি , আজ সেটা কোনো সরকরী অফিসারের পোষাক হিসেবে ভাবাই যায়না। তুষার তালুকদারের এক স্মৃতিকথায় পড়েছিলাম, ধূতি পড়ে interview দিয়ে চাকরি পাওয়ার স্বাভিমান তাকে ছাড়তে হয়েছিলো।

    সরকারের অধিকার থাকতেই পারে ধর্মচিহ্ন বর্জন করতে নির্দ্দেশ দেবার ( ধর্ম চিহ্ন রাখার নির্দেশের সাথেও অনেক সময় জড়িয়ে থাকে সরকারী আদেশ, এযুগেই হোক বা গতযুগে )কারন সরকারী কর্মচারী সরকারের প্রতিভু ,সরকারের উচিত মানুষকে সমান চোখে দেখার এবং ধর্মচিহ্নগুলো তাদের আর ও একটা বিশেষ পরিচয় (যদিও আগেই বলেছি, কিভাবে বলা যে কোনটা ধর্মের চিহ্ন আর কোনটা সংস্কৃতির, আমরা তো কমবয়সে ক্রুশচিহ্ন পরতাম স্রেফ লকেট হিসেবে ) সামনে নিয়ে আসে। এবং বহুক্ষেত্রেই, পোষাকের সাথে ধর্মের সরাসরি যোগ নেই , যোগ আছে সেই সময়ের, সেই পরিস্থিতির, সেই সংস্কৃতির যেটা এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বদলানোর কথা ভাবাও যেতে পারে।
    কিন্তু এই ছাড়তে হওয়াটা সমান হবে না সবার জন্যে, ইতিহাসের আলোয়। বিজয়ীর সব রয়ে যাবে হ্যাট থেকে জুতো, আর পরাজিতের ?
    থাকবে না তার কিছু -- সে নিরাবরন চিত্রিত দেহই হোক, না পাখির পালকের শিরস্ত্রানই হোক, নয় আপাদমস্তক ঢাকা বোরখা ।
  • kallol | 220.226.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১০:৪৯669442
  • শমিক - বিশেষ কোনো পোষক বা চিহ্ন দেখে কিছু মনে এসে যাওয়া তো ব্যক্তির উপরে নানা প্রকার সামাজিক চাপের ফসল। এই যে মুসলমান চিহ্ন দেখলে কারুর সন্ত্রাস মনে পড়ে, সে তো মাত্র কদিন আগেকার ব্যাপার। চল্লিশ কি পঞ্চশ বছর আগে কারুর হয়তো দেশ-ভাগের কথা মনে হতো। আবার ঐ মুসলমান চিহ্নই - ধরো ফেজ টুপি, শেরওয়ানি বা চিকনের পাঞ্জাবী আর চুড়িদার পাজামা দেখলে তো শের-শায়রী-গজলের কথাও মনে আসে।
    মাথায় তিলক আর গেরুয়া দেখলে যেমন গুজরাট আর অযোধ্যা মনে পড়ে, বাউল দেখলে তো তা মনে পড়ে না। বাউলও তো মাথায় তিলক আর গেরুয়া। আবার তরোয়াল হাতে "হিন্দু" যুবকের ছবির সাথে যেমন গুজরাট জড়িয়ে গেছে, চল্লিশ কি পঞ্চশ বছর আগে এই ছবি দেখেই কারুর হয়তো শিবাজী বা রাণা প্রতাপের কথা মনে পড়তো। আবার এখন শিবাজী বা রাণা প্রতাপের ছবি দেখলে আমার তো নরেন্দ্র মোদীর/বালাসাহেব ঠাকরের কথা মনে হয়।

    র - ১) মুখ না দেখে কথা বলা, এমনিতে বেশ অস্বস্তিকর। মুজতবা আলি সায়েবের নিদানে - আড্ডায় মুখ না দেখতে পেলে গুষ্টিসুখ হয় না। কিন্তু সামনা-সামনি কথা ছড়াও তো কথা হয় - টেলিফোনে (আহা মনিদা বড্ডো ভালো পদটা বেঁধেছিলো গো - কখন তোমার আসবে টেলিফোন)। কিংবা ধরো এই যে সুতোয় জড়ানো - এও তো কথাই। কই দিব্যি তো পান-মন দে ভাটানো যায়।
    ২) কোথায় পড়াচ্ছেন ?
    ইসলামী পরিবেশের পঠন পাঠনের জায়গা হলে হয়তো অসুবিধা হয় না। হয়তো বললাম কারন আমার কোন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নেই। অন্য পরিবেশে হলে নিশ্চই হয়।
    ৩) ধর্ম নিতান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কোনো রকম হস্তক্ষেপই কাম্য নয়। বিশেষ ক্ষেত্রে এর অন্যথা ঘটতেও পারে। কেউ যদি বোরখার আড়ালটাকে অন্য কারুর ক্ষতির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে, কেউ যদি কৃপাণকে ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহার করে। তবুও রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বিষয়টা বেশ জটিল হয়ে দাঁড়ায়।
    ৪) রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতা একদম নেহেরুভিয়ান উদ্ভাবন। ""সেকুলার"" রাষ্ট্র মানে ১৯৪৭-এর আগে ছিলো : ক) রাষ্ট্রের কোন ধর্মীয় পরিচয় না থাকা, খ) সব ধর্ম থেকে সমান দূরত্ব বজায় রাখা, গ) রাষ্ট্রের অনুষ্ঠানে কোনো ধর্মীয় আচার পালন না করা। ১৯৪৭-এর পর সেটা গিয়ে দাঁড়ালো ""সর্বধর্মসমন্নয়""। নারকেলও ভাঙ্গো, ইফ্‌তারেও যাও, বড়দিনও মানাও। এই যে, রাষ্ট্র কোনো ধম্মেই থাকবে না থেকে, রাষ্ট্র সগ্গল ধম্মেই আছে, এইটা করতে গেলেই খুব স্বাভাবিক ভাবে বড়ভাইয়ের ধর্মীয় আচার প্রাধান্য পেয়ে যায়। তখনই মেজো,সেজো,ছোটো ব্যাঁকা কথা বলে। সেটাকে ঠেকাতে চলে ""ভারসাম্য"" বজায় রাখার সার্কাস - রাস্তা বন্ধ করে নামাজ/আরতি/পূজো/মিছিল/ভাসান/মাইকে আজান ইত্যাদি ইত্যাদি।
  • b | 59.145.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১১:১৫669443
  • এই কল্লোলের পোস্ট টা পড়ে সকালটা দিব্য হয়ে গেল।

    তবে ৪ নং সম্পর্কে মন্তব্য, রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র কেসটা সম্ভবত নেহরু র উদভাবন নয়। এইটেকে নিয়ে আমরা ১৭৮৯ অবদি পেছোতে পারি।ফরাসি বিপ্লব। আর oligarchy গুলো ধরলে আরো পেছনে। এ সম্পর্কে যারা ইতিহাসের ছাত্র আর পড়ুয়া তারা বলতে পারবেন।

    তবে এটা হয়তো আপনি শুধু আমাদের দেশ সম্পর্কে বলেছেন।
  • kallol | 220.226.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১১:২৯669444
  • ব - ফরাসি বিপ্লব, অলিগর্কি ও সব ""সেকুলার"" রাষ্ট্র ভাবনা। ""সেকুলার"" আর ""ধর্মনিরপেক্ষ"" এক বস্তু নয়। একটা NO ধম্মো, অন্যটা সব্বধম্মো। এই যে ""ধম্মো"" এবং ""জিরাফ""-এও থাকা এইডাই নেহেরুভিয়ান উদ্ভাবন।
  • b | 59.145.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১২:৫০669418
  • point taken. আমি আসলে ভেবেছিলাম, ধর্ম আর রাষ্ট্রের delineation অর্থে বলেছেন।
  • r | 61.95.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৩:৫৫669419
  • স্কুলের প্রসঙ্গে আসি।

    এইখানে ইংলন্ডের যে স্কুলটির কথা হচ্ছে, সেইখানে মূলত: ভারতীয়, পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশি শিশুরা পড়ে। বেশির ভাগ নিম্নবিত্ত ঘরের ছেলেপুলে। স্কুলটির পারফোরমেন্স খুবই খারাপ। বেশির ভাগ ছেলেই অকৃতকার্য হয়। আর একটা বিশাল সমস্যা ইংরিজি ভাষা শেখার। স্কুলটি কোনো ইসলামীয় স্কুল নয়। খবরের কাগজে বা টি ভিতে যা পড়েছি ও দেখেছি তাই বলছি। এই স্কুলের একজন শিক্ষিকা বোরখায় মুখ ঢেকে আসতে শুরু করেন। প্রসঙ্গত: উল্লেখযোগ্য, স্কুলের চাকরির ইন্টারভিউর সময়ে তিনি বোরখায় মুখ ঢেকে আসেন নি। স্কুলের কর্তৃপক্ষ মনে করে যে ভদ্রমহিলা মুখ ঢেকে পড়ানোয় ছাত্রদের পড়া অনুসরণ করতে অসুবিধা হচ্ছে। তাই ভদ্রমহিলাকে অনুরোধ করা হয় মুখের আবরণ খুলে স্কুলে আসতে। ভদ্রমহিলা সেই অনুরোধ শোনেন নি। তাই ভদ্রমহিলাকে চাকরি থেকে বহিষ্কৃত করা হয়।

    এইবার প্রশ্ন: আপনি স্কুল কর্তৃপক্ষ হলে কি করতেন?
  • Arjit | 128.24.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৪:০২669420
  • জমে গেছে। ঠিক এটাই ইচ্ছে ছিলো। আরো জমবে - গুরু আপডেট হোক:-))
  • Arjit | 128.24.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৪:৫১669421
  • ইন্টারভিউয়ে মুখ ঢেকে আসেননি পাক্কা? আমি এটা কোথাও খুঁজে পাইনি। তবে কাল কোর্টে ঢোকার সময় পুরো ঢাকাই ছিলো। কোর্টে রেসিয়াল হ্যারাসমেন্টের কেস টেঁকেনি...

    এর সঙ্গে গত বছরের ঘটনাটাও জুড়তে পারো - সাবিনা বেগম, চোদ্দ বছর ইউনিফর্ম পরে ইস্কুলে আসার পর হঠাৎ একদিন মনে হল হিজাব না পরলে সে ধর্মভ্রষ্ট হবে...সেটাতে প্রথমে স্কুল হেরে গেলেও পরে আপিলস কোর্ট স্কুলের পক্ষেই রায় দেয়।
  • kallol | 220.226.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:২৬669422
  • র - এই লাইনটা মারাত্মক - ""স্কুলের কর্তৃপক্ষ মনে করে যে ভদ্রমহিলা মুখ ঢেকে পড়ানোয় ছাত্রদের পড়া অনুসরণ করতে অসুবিধা হচ্ছে""।

    স্কুল কর্তৃপক্ষ কিভাবে এই ""মনে করা""য় পৌঁছালেন ? (বিলিতি স্কুল কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে আমার জ্ঞান অবশ্য একদম শূণ্য)।
    ১) যদি ছাত্র-ছাত্রীরা এরকম অভিযোগ করে থাকে, তবে - স্কুল কর্তৃপক্ষ একশোবার ঠিক।
    ২) যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ ভাবেন - সাধারণ ভাবে বেশীরভাগ স্কুলে শিক্ষিকাদের মুখ দেখা যায় , তাই এই স্কুলেও সেটাই হতে হবে, তবে - স্কুল কর্তৃপক্ষ একশোবার ভুল।
    ৩) যে স্কুলের একজন শিক্ষিকা বোরখা পড়ে এলে গোটা স্কুলের পড়াশোনার মান গোল্লায় যায় - সেই স্কুলের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনা কেনো ?
    ৪) ঐ শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করার পর ঐ স্কুলের ফলাফল কেমন ?

    আমি কি করতাম।
    ১) ঐ শিক্ষিকা যে যে ক্লাসে পড়ান সেইসব ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে ঐ শিক্ষিকাকে নিয়ে কথা বলতাম। ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করতাম, শিক্ষিকাকেও বোঝানোর চেষ্টা করতাম। সমস্যাটা বোরখায় হলে এবং শিক্ষিকা বোরখা ছাড়তে না চাইলে - বরখাস্ত। সমস্যাটা অন্যকিছুতে হলে, তার সমাধান খুঁজতাম।

  • r | 61.95.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:৪৩669423
  • জানি না ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেছিল কিনা। জানি না শিক্ষিকার সাথে স্কুল কর্তৃপক্ষের বোঝাপড়ার প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছিল। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে ইংলন্ডে চাকুরিচ্যুত করার যে প্রক্রিয়া দেখেছি, তাতে মনে হয় না কাউকে হুট করে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা যায়। কিন্তু একদম গোড়ার প্রশ্ন হল:

    পেশাগত দায়ের সাথে ব্যক্তিগত ধর্মাচরণের সংঘাত হলে কোনটা অগ্রাধিকার পাবে?

    অন্যভাবে বলতে গেলে,

    জীবনের অধিকারের মতো প্রকাশ্যে ব্যক্তিগত ধর্মাচরণের অধিকারও কি inalienable right?

    প্রসঙ্গত:, শাস্ত্রানুসারে ইসলামে বোরখা পরিধানের কোনো নির্দেশ নেই।
  • Arjit | 128.24.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:৪৮669424
  • বহিষ্কার হয়নি, সাসপেনশন হয়েছে। এবং লেবার পার্টির এক এমপি বহিষ্কারের দাবি করেছেন - সেদিন থেকে তক্কোটা আরো বড় হয়ে গেছে। ঘটনাটাতো হালফিলের - এখনই কি করে জানা যাবে এর পর স্কুলের ফলাফল কেমন - অফস্টেড স্কুল ইনস্পেকশন করে দু বছরে একবার।
  • kallol | 220.226.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৬:২৪669425
  • অর্জিত - এমনিতে ২য় ঘটনাটা ঠিক আছে। স্কুলে বা সেই অর্থে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে, যদি ইউনিফর্ম পড়ার নিয়ম থাকে, তবে তুমি সেই প্রতিষ্ঠানের ভিতর থাকলে, তোমায় নিয়ম মানতে হবে। তার কোনো নিয়ম যদি তোমার না মানার মতো হয়, তবে তোমার সেখানে থাকা উচিত নয়।
    কিন্তু ঘটনা হলো - কোনো শিখ ছাত্র যদি পাগড়ী পরে আসে ? বা কোনো ব্রাহ্মণ ছাত্র যদি মাথা মুড়িয়ে টিকি রাখে ?
    তুমি বলবে - ইউনিফর্ম মানে তো উর্দ্ধাঙ্গের আর নিম্নাঙ্গের পোষাক। সেটা ঠিক রেখে কে পাগড়ি পড়ল, কে ফেজ পড়ল, কে টিকি রাখলো, কে টেরী কাটলো তাতে কার বাবার কি ? ঠিক, একদম ঠিক।
    আশা করি তোমরা ""হিজাব"" আর ""বোরখা""র ফারাকটা জানো। হিজাব হলো মুখ ঢেকে রাখার পাতলা নিমস্বচ্ছ রুমাল সাইজের বস্ত্রখন্ড। এটা পাগড়ী বা টিকির মতো ইউনিফর্ম পরেও পরা যায়। আমার যদ্দুর মনে আছে ওটা বোরখা নয় হিজাবই ছিলো। সেক্ষেত্রে আদালত ভুল।
    আদালতের রায় মানেই পবিত্র গাভী এমন মনে করার কোনো কারন নেই। আদালত তো দেখে-শোনে কালো কোটেদের বকলমে। খারাপ উকিল - ভালো উকিল বলে কিছু হয় তো। ভালো উকিল থাকলে ঘরের বৌকে খুন করে, টুকরো করে কেটে ট্রাঙ্কে পুরে, তিন দিন ধরে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা চালিয়ে, লোকের যাবজ্জীবন জেল হয় (বণিক পরিবারের বধূ হত্যা)..... দুজন মহিলাকে লকআপে অকথ্য অত্যাচার করে, তা প্রমাণিত হওয়ার পর মাত্র এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড হয় (রুনুগুহ নিয়োগী-অর্চনা গুহ/লতিকা গুহ কেস)..... আর শুধুমাত্র পারিপার্শিক প্রমানের উপর দাঁড়িয়ে খুন ও ধর্ষণের দায়ে লোকের ফাঁসী হয়ে যায়।
    তাই বলছিলাম..................
  • Arjit | 128.24.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৬:৩০669426
  • সাবিনা বেগমকে আমি সমর্থন করি না, কেন সে কথা পরে। সেই ঘটনাটার লিংক - http://news.bbc.co.uk/1/hi/education/3808755.stm। আর নিকাব/হিজাবের পার্থক্য নিয়ে বিবিসি কতগুলো ছবি দিয়েছিলো - সেতা আছে এখানে - http://news.bbc.co.uk/1/hi/world/middle_east/5411320.stm
  • Arjit | 128.24.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০০৬ ১৬:৩২669427
  • সরি, সাবিনা বেগমের কেসটা "জিলবাব" নিয়ে।
  • Arjit | 82.39.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০০৬ ০১:৪৫669429
  • র - Dispatches debate দেখলে কি? এট্টু আগে চ্যানেল ফোরে হল, Muslims and free speech - আশা করি এক দুই দিনের মধ্যে ভিডিও লিংক পেয়ে যাবো, পেলে পোস্ট করে দেবো। মোদ্দা প্রশ্ন - ফ্রী স্পীচের ফলে কি কোন বিশেষ সম্প্রদায় (এক্ষেত্রে মুসলিম সম্প্রদায়) সিঙ্গলড আউট হয়ে বেশি করে আক্রান্ত? ভালো ডিবেট হল, শেষে দর্শকদের মধ্যে ভোট - "are muslims against free speech? ইয়েস ৪৮%, নো ৫২%। ফ্রী স্পীচ থাকবে, কিন্তু দায়িত্বশীলভাবে - গোছের মনোভাব...
  • r | 61.95.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০০৬ ১৪:০৬669430
  • দেখেছি। তবে আমার মনে হয় প্রশ্নটা ছিল- বাক্‌স্বাধীনতার ক্ষেত্রে মুসলিম সম্প্রদায়ের স্পর্শকাতরতা কি বাধা?
  • Arjit | 128.24.***.*** | ২৪ অক্টোবর ২০০৬ ১৪:৩৭669431
  • ট্রান্সলেশন বড় কঠিন কাজ:-)
  • shyamal | 24.117.***.*** | ১৩ মার্চ ২০০৯ ০৩:৪৫669432
  • জানিনা ঠিক টপিকে দিলাম কিনা।
    যাই হোক, হিন্দু মুসলিম অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চায় নিজের জাতের মধ্যে বিয়ে করতে। সেটা কিছুটা জু, ব্যাপটিস্ট, ক্যাথলিকদের মধ্যেও খাটে।

    কিন্তু একটা জিনিষ লক্ষণীয়, আমি অন্তত: যতগুলো হিন্দু-মুসলিম বিয়ের ঘটনা জানি ( কটাই বা জানি) যেমন পতৌদি-শর্মিলা, আবু সৈয়দ আইউব-গৌরী, শাহরুখ-গৌরী, আমীর খান সব ক্ষেত্রেই ছেলে মুসলিম, মেয়ে হিন্দু অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্ম মুসলিম হবে। উল্টোটা দেখেছেন কি?
    পাকিস্তানি মুভি খুদা কে লিয়ে তে লন্ডনে প্রবাসী পাকিস্তানিকে তার মেয়ে বলছে, আমি ব্রিটিশ ছেলেকে বিয়ে করব। তুমিও তো ব্রিটিশ মহিলার সাথে লিভ টুগেদার করছ। সেই বাবা তখন মেয়েকে বলছে, কোরানে বলা আছে মুসলিম ছেলে অন্য জাতের মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে, কিন্তু উল্টোটা হল গুনাহ। কোরান কি তাই বলে?

    মনে পড়ল উল্টো একটা কেস, সুনীল দত্ত-নার্গিস। মহেশ ভাটের মাও বোধ হয় মুসলিম ছিলেন।
  • vikram | 193.12.***.*** | ১৩ মার্চ ২০০৯ ২২:১২669433
  • আব্দুল করিম খাঁর মেয়ে হীরাবাঈ বড়োদেকর ও হয়তো একটা উদা হবে।এবং তাঁর ভাই সুরেশবাবু মানে।

    বিক্রম
  • Binary | 198.169.***.*** | ১৩ মার্চ ২০০৯ ২২:২৪669434
  • পন্ডিত রবিশঙ্কর - অন্নপূর্না দেবী
  • Binary | 198.169.***.*** | ১৩ মার্চ ২০০৯ ২২:৩৩669435
  • আর সব সময় সেলিব্রিটি কেন ? আমার-ই দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু, ভাস্কর-ইয়াসমিন, দিব্যেন্দু-ফরিদা (নাম পরিবর্তিত)। হিন্দুদের (ছেলদের) ভালবাসা-বিয়ে মুসলমান মেয়েদের সাথে হয়না, তার কারণ শ্যামলবাবু যেটা বললেন তার চেয়ে অনেক বশী গোঁড়ামি হিন্দু সমাজের জন্য, 'হায় হায় আমার ছেলে মুসলমান বিয়ে করল ?' এর জন্য। এখনো, বাড়ীতে জাহানারা বা আয়েষা নামে কজের লোক রাখলে তাদের নাম পরিবর্তন করে বিন্দু কিম্বা প্রতিমা রাখা হয়, প্রতিবেশীদের জানতে না দেওয়ার জন্য।
  • Binary | 198.169.***.*** | ১৪ মার্চ ২০০৯ ০৩:১৩669436
  • হেডস্যার - ১
    ------------
    আমাদের হেডস্যার ছিলেন সত্যনবাবু। আর আমাদের কেলাসে ছিলো ঘাসু। ঘাসু-র আসল নামে যে কি, অনেক চেষ্টা করেও মনে কত্তে পারলাম না। তো, ঘাসু ফি শুক্কুরবার স্কুলে আসত না। মানে বাড়ী থেকে বেরোতো কিন্তু স্কুলে আসতো না। ফি শুক্কুরবার জয়া মিনি জয়া কিম্বা শেলী সিনেমা। তো, এক শুক্কুরবার ঘাসু স্কুলে এসেছে। মানে তার একটা স্পেসাল কারণ ছিলো, সেই শুক্কুরবার সুদক্ষিনা-দি, মহাপাত্র স্যারকে বিয়ে করে প্রথম স্কুলে এসেছে। সারা স্কুল জুড়ে ফিসফাস হইহই। স্কুলে মঝে একটা উঠোন ছিলো, সেখানে প্রার্থনা হতো। তো সেদিন ক্লাস শুরুর আগে সেই উঠেনে ভীড়ে ভীরাক্কার। সক্কলে, সুদক্ষিণাদি কে দেখবে, মানে বিয়ে করে এসেছে, তাও আবার মহাপাত্র স্যারকে। তো ঘাসু-ও দেখতে এসেছে, মানে ধান্দাটা ক্লাশ শুরুর আগে কেটে যাবে।এরমধ্যে সত্যেন বাবু ভয়ানক রেগেগিয়ে (মানে সক্কাল সক্কাল এত ক্যাও কেন ?) বাইরে এসে 'যাও সক্কলে ক্লাশে যাও' বলে চিল্লচ্ছেন। ঘাসু বোধহয় প্রথমটা শুনতে পায়নি (বচ্চনের মতো কান ঢাকা চুল ছিলো কিনা), তারপর পেছন ফিরে আচমকা সত্যেন্বাবুকে দেখে, 'ওরে হেডুউউউ রে এ এ এ' বলে দৌড়ে ক্লাশে। তো ওর 'হেডু' টা সত্যনবাবুর কানে গেছে, এমনিতে অন্যদিন হামেসাই হেডু শুনতেন, তো সেদিন মেজাজ বিগড়ে ছিলো মনে হয়, ক্লাশে ঢুকে ঘাসুর দুই কান পাকড়ে ধরলেন, তারপার :
    -- 'হেডু অ্যাঁ হেডু ????' দুয় থাপ্পড়
    -- 'বাড়ীতে বাবা কে কি বলিস ???' আবার দুই থাপ্পড়
    -- 'কাকু বলিস অ্যাঁ ?? কাকু ???' আবার দুই থাপ্পড়
    -- 'দুর হয়ে যা ক্লশ থেকে !!! দুর হ !!!' আবার দুই থাপ্পড়
    -- 'কাল বাবাকে ডেকে আনবি !!' আবার দুই থাপ্পড়

    এরপর ঘাসু স্কুল থেকে বেরিয়ে গিয়ে, যথরিতি নিজের রুটিন মতো জয়াতে চলে গেলো।

    হেডস্যার - ২
    ------------
    স্কুলের সামনে আরেকটা জালঘেরা উঠোন ছিলো। সেখানে একটা কল ছিলো, সারাদিন ছ্যাড়ছ্যাড় করে জল পড়তো। আর উঠোনের ঘাসগুলো উঠে গিয়ে সারাক্ষণ কাদার লেই হয়ে থাকত, ফাইব-সিক্সের ছেলেরা সিলিপ কেটে কাদা মাখতো। তো একবার সরকারি কোনো আমলা/মন্ত্রী স্কুল ভিজিটে আসবে, তো দুই সপ্তাহ আগে কলটা উঠিয়ে ফেলা হল। তারপর, উচ্চশ্রেনীর ঘাস বসানো হল, সারাদিন রাজবংশী-দা পাহাড়ায় দাঁড়িয়ে, কেউ যেন সিলিপ কাটতে যেতে না পারে।
    এরমধ্যে একদিন জয়ন্তর বাবা হেডস্যারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে, তো ঘাস দেখে, জয়ন্তর বাবা হেডস্যারকে,
    -- 'বা: নতুন ঘাস লাগালেন বুঝি ?'
    -- 'হ্যাঁ, ঐ লাগানো হল'
    -- 'ভাল, ভাল'
    -- 'ভাল-ই তো, মিনিস্টার আসবে, দেখবে, খাবে'।
  • Binary | 198.169.***.*** | ১৪ মার্চ ২০০৯ ০৩:১৫669437
  • এ: সরি, মিস্টেক মিস্টেক।

    এই পোস্টটা 'স্ম্‌তি মেদুরতা' সুতোয় যাবে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন