এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পথ নিয়ে

    jol_dip
    অন্যান্য | ১০ নভেম্বর ২০১৪ | ১২৩৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • jol_dip | 233.29.***.*** | ১০ নভেম্বর ২০১৪ ১৬:০৫653085
  • পথ নিয়ে

    *******

    সোম থেকে শনির ব্যস্ত রুটিনে শহরের ব্যস্ততম পথ হল ক্যানিং স্ট্রীট‚ বাগরী মার্কেট | জগন্যতমও বটে | প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যে এই পথে আগমন ঘটে শত শত লোকের | দিনের কোনসময়ই পথটিতে যে জ্যাম থাকে না এমন ঘটনা বিরল | আট থেকে আশি সবার সবরকম প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজেনীয় জিনিস এখানে পাওয়া যায় | এককথায় বলতে গেলে আলপিন তো এলিফ্যান্ট সবকিছু এখানে পাওয়া যায় |

    ছোটবেলায় আলাদা করে বাজীবাজার ছিল কিনা আমার জানা নেই | কালীপূজো মানেই কাকার হাত ধরে কলুটোলা ধরে চলে যেতাম ক্যানিং স্ট্রীট | রাস্তা জুড়ে সার সার বাজীর অস্থায়ী দোকান | আর তার সাথে প্রচন্ড ভিড় | তখন ভাবতাম এখানে বুঝি বারোমাসই বাজী পাওয়া যায় | পরে বুঝেছি স্থায়ী দোকানগুলো বাদ দিলে অস্থায়ী দোকানগুলো হল সিজনাল শপ | এতগুলো বছরে ক্যানিং স্ট্রীট একই রকম আছে | আজকাল বাজী বাজার হওয়াতে আর পুলিশী ধড়পাকড় বাড়ায় এখানে আগের মত জমজমাট বাজীর বাজার বসে না বটে‚ তবে বাজীর বাজার অল্পবিস্তর বসেই প্রতিবছর |

    ক্যানিং স্ট্রীটের অস্থায়ী দোকানগুলো সিজন অনুযায়ী তাদের পসরা সাজায় | যেমন দোলের সময় রঙ-পিচকারী‚ ক্রিশমাসের সময় ক্রিশমাস ট্রী-সান্টাক্লাস-ভেনাস স্টার‚ দিয়ালির সময় মোমবাতি-দিয়া বা প্রদীপ-শুভলাভ জাতীয় ঘর সাজাবার বস্তু | প্রতিটা সিজনেই মারকাটারী ভিড় | কারণ এখানে একটু সস্তায় পাওয়া যায় জিনিসপত্র | পরিমাণ ভালো হলে পাইকারী দরও পাওয়া যায় |

    এখানে শুধু যে অস্থায়ী দোকানের সবগুলি সিজনাল তা নয় | যেমন ব্যাগের কিছু দোকান‚ প্ল্যাস্টিকের জিনিসপত্রের দোকান‚ ন্যাপথা বা খেজুর-কিশমিসের দোকান এগুলো ফুটপাতের ওপর সারাবছরই একই পণ্য নিয়ে বসে |

    ফুটপাত যে আছে পথচারীদের পক্ষে বোঝাই মুশকিল এখানে | সেগুলো বুঝি আমার জন্মের আগে থাকতেই দোকানদারদের অধিকারভুক্ত | রাস্তার ভীড় থেকে বাঁচতে কেউ যদি ভুলেও ফুটপাতে উঠে পড়ে তো সাড়ে সর্বোনাশ | বেড়োবার পথ খুঁজে পাওয়া মুশকিল | সার সার প্র্ত্যেকটা বাড়িতেই ছোট বড় প্রচুর কোম্পানী | কাজ করতে আসা মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম না |

    তুলনায় বাগরী মার্কেটে স্থায়ী দোকান বেশি | চুড়ি-মাথার ক্লিপ-হাড়-দুল এসবের পাশাপাশি প্ল্যাস্টিকের বালতী-গামলা‚ স্টীলের বাসনের দোকান সবই এখানে পাইকারী | এরা খুব ভালো বুঝতে পারে কারা পাইকারী ক্রেটা কারা ফ্লাইং কাস্টমার | কাস্টমার অনুযায়ী জিনিসের দামের হেরফের ও হয় | পোষালে কেন না পোষালে চলে যাও | অবশ্য চলে যাব বললেই কি আর যাওয়া যায় | শেষ কি দেবেন বলে যান‚ আর দশটা টাকা বাড়ান এসবের মায়া কাটিয়ে বেড়োনো সহজ না |

    বর্ষাকালে এ রাস্তা নরকগুলজার | একদিন আগে বৃষ্টি হয়ে সূর্যের প্রখর শিখায় চারদিক শুকিয়ে খটখটে হয়ে যাক না কেন‚ এখানে স্থানে স্থানে থকথকে কাদা জামে থাকবেই | এ পথ যত না পথচারীদের তার থেকে অনেক বেশী দোকানদারদের | আজন্ম এ পথের প্রতি ব্যবহারিক আধিপত্য এদের | তাই বোতলে জল বাসী হয়ে গেছে‚ তো কৈ পরোয়া নেই ঢেলে দাও রাস্তায় | হোক কাদা | মুখে জমেছে পান পরাগ বা পানের পিক বা খৈনীর থুতু আরে রাস্তা আছে না ফেকো ভাই‚ রাস্তে মে | শুধু ফেল্লেই হবে না ফেলাটা হতে হবে যথেষ্ট শৈল্পিক | মুখটাকে সরু করে ফোয়ারার মত বার করতে হবে মুখমধ্যস্থ সেইসব অসাধারণ জিনিস | বললে হবে‚ এলেম আছে বাবা | তাতে তোমার পাজামা‚ প্যান্ট বা শরীর কিম্বা পা রঙীন হয়ে যাক না কেন‚ কুছ বলনে কা নেহি |

    চুরির দোকানের নিত্য একটা সমস্যা হল কাঁচের চুড়ি ভেঙ্গে যাওয়া | তা রাস্তা তো আছে না রঙীন ফুলের মত ছড়িয়ে দাও | দেখতেও সুন্দর লাগবে | খিদে পেয়েছে তো খাও না পসন্দ না হলে ফেলে দাও রাস্তায় | এখানে নিয়াম এরাই বানায়‚ এরাই ভাঙ্গে | কিছু বলার নেই | এদের একতা দেখলে অবাক হতে লাগে |

    কলকাতা শহরে এমন পথের সংখ্যা আরও আছে | সে নিয়ে পরে না হয় লিখব |
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন