এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • একটি শহর , একটি সরণী , অনেক স্মরণীয়

    Somen Dey
    অন্যান্য | ০৩ জুলাই ২০১৪ | ১৬৯০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Somen Dey | 125.187.***.*** | ০৩ জুলাই ২০১৪ ১৭:৩৫648045
  • একটি শহর , একটি সরণী , অনেক স্মরণীয়
    *************************************
    একটা নিজস্ব চরিত্র না থাকলে কোনো একটা শহর সত্যিকারের শহর হয়ে ওঠে না | একটা শহর গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে | তিল তিল করে | কোনো এক স্থপতির কল্পনায় ভর করে রাশি রাশি ইঁট‚ কাঠ ‚ লোহা লক্কড় ‚ চুন বালি ‚ সিমেন্ট কঙ্ক্রীট দিয়ে সুরম্য অট্টালিকা ‚ সুসজ্জিত পথ ঘাট বানিয়ে যা বানানো হয় সেটা দৃষ্টিনন্দন বসত হতে পারে ‚ শহর হয় না |

    শহরের নিজস্ব শিরা উপশিরা থাকে ‚ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থাকে ‚ মুখমন্ডল থাকে এমনকি নিজস্ব স্বভাব থাকে | একটা শহরকে চেনা যায় তার রাজপথ জনপথ দেখে ‚ তার অলি গলি দেখে ‚ আদ্দিকালের ঘরবাড়ি দেখে ‚ ভাঙ্গা চোরা নদীর ঘাটগুলি দেখে ‚ পথে ঘাটে ছড়িয়ে থাকা শিল্পকর্মগুলি দেখে ‚ তার ফেলে আসা সময়ের ছাপ গুলি দেখে আর অজস্র পদাতিক নাগরিকদের জীবন যাপনের শৈলী দেখে |
    ইয়োরোপের বেশিরভাগ শহরের অন্দরমহলে ঘুরে বেড়ালে দেখা যায় দুপাশে গ্রথিক শৈলীর ঘেঁষা-ঘেঁষি বাড়ি ঘর ‚ আর মাঝ দিয়ে অপ্রসস্ত ইঁটপাতা অমসৃন রাস্তা গুলো ‚ মাঝে মাঝে বড় বড় রঙ্গীন ছাতার নিচে খোলা রেস্তোরাঁ ‚ সেখানে বিয়ারের মগ হাতে প্রসন্নবদন নরনারী | সামনে গিটার‚ পিয়ানো একোর্ডিয়ান‚ চেলো হাতে গান তিন চার জনের গাওয়ার দল গান গাইছে ‚ শহরের কেন্দ্রবিন্দুর কাছাকাছি একটা জায়গায় শুধু পায়ে হাঁটা লোকজনদের দের জন্যে একটা খোলা ‚ মেলা বিস্তৃত চত্তর| সেখানে গুচ্ছ গুচ্ছ মানুষ আড্ডা দিচ্ছে | এ সব জায়গায় শহরটির সত্যিকারের হৃৎস্পন্দন অনুভব করা যায় | মনে হয় যেন এখানেই চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন |

    আমাদের এই কলকাতা শহরটাকে কোনো নতুন আগন্তুক যদি চিনতে চায় তাকে একটু বেশি খাটতে হবে | এ শহরের নাড়ি খুঁজে পাওয়া অত সহজ নয় | দমিনিক ল্যাপিয়ের বা গুন্টুর গ্রাস কে দীর্ঘকাল এ শহরে বাস করতে হয়েছে ‚ অলি গলি বস্তিতে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে ‚ পিলখানা থেকে সোনারপুরে বসবাস করতে হয়েছে | ট্রামে বাসে লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করতে হয়েছে | তবু তারা কতটা সঠিক বুঝতে পেরেছে সে সম্মন্ধে মতান্তর থাকতে পারে |

    ১৬৯০ সালের ২৪ শে আগষ্ট এক মেঘলা দিনের ভ্যাপসা গরমের মধ্যে জোব চার্নক নামের যে ইংরেজটি সুতানটীর ঘাটে নৌকো ভিড়িয়েছিলেন তাঁর মনে মসলিন কাপড় আর মশলাপাতির ব্যাবসা করা ছাড়া আর কোনো বাসনা হয়তো ছিল না | কিন্তু তিনি এখানে রয়ে গেলেন ভবিতব্যের নির্দেশে | মাত্র তিন বছর পর তিনি দেহ রাখলেন এখানেই | কিন্তু তার জামাই চার্লস আয়ার সাবর্ন রায়চৌধুরিদের কাছ থেকে তেরোশো টাকা মুল্য দিয়ে আর নবাব কে ষোলো হাজার টাকা নজরানা দিয়ে কিনে নিলেন সুতানটি ‚ গোবিন্দপুর আর কলিকাতা নামের তিনটি মৌজা | ইংরেজদের ব্যাবসা বাড়তে থাকলো আর এ শহরে আসতে লাগলো নানা শ্রেণীর লোকেরা | এসে তারা বাসা বাঁধতে লাগালো একে এক অঞ্চলে | কুমোরটুলিতে কুমোররা ‚ কলুটোলাতে কলুরা‚ মুচিপাড়ায় মুচিরা ‚ জেলেপাড়ায় জেলেরা ‚খালাসি টোলায় খালাসিরা এসে বাসা বাঁধলেন জীবিকার সন্ধানে | এ ছাড়াও আরমেনিয়ানরা ‚ চীনারা ‚ পার্শিরা ‚ নানা সময়ে এলেন এ শহরে |

    এর মাঝে‚ শ্বাপদ সংকুল জংগল ধীরে ধীরে কেটে সাফ হয়ে গেল‚ আবার কালান্তক ঝড় এসে ধংস করলো শহরের অর্ধেক বাড়ি ঘর ‚ চোর ডাকাত বর্গী দের অত্যাচারে মানুষ অতীষ্ঠ হল ‚ মুর্শিদাবাদের নবাব সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের প্রবল যুদ্ধ হল ‚ এই সব পেরিয়ে ইংরেজরা থিতু হয়ে বসলো এ শহরে | তাদের মত করে সাজিয়ে তুললো এ শহর কে | এমন কি এ দেশের রাজধানী ও করলো এ শহর কে | এ শহর ক্রমে বাড়তে লাগলো | শিক্ষায় দীক্ষায় সংস্কৃতিতে এ শহরএর একটা নিজস্ব চরিত্র হয়ে উঠলো |
    ভৌগলিক ভাবে বাংলার মধ্যে হলেও রাজধানী হওয়ার ফলে দেশ বিদেশের লোক এসে এ শহর কে কসমোপলিটান করে তুললো | তার পর ১৮৫৬ সালে আউধের নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ ইংরেজদের দ্বারা সিংহাসনচ্যুত হয়ে চলে এলেন এ শহরে | শুধু এলেন না ‚ নিয়ে এলেন তার লোক লস্কর ‚হাতি ঘোড়া উট ‚ নাচ গানের লোকেদের ‚ এমন কি একটি চিড়িয়াখানা নিয়ে এসে জমিয়ে বসলেন মেটিয়াবুরুজে | এ কলকাতা শহরে খানদানী মুসলিম সংস্কৃতির একটি ধারার পত্তন হল সেই থেকে |

    তাই এ শহরের মধ্যে একটা বিশ্বজনীনতা নেই নেই করেও রয়ে গেছে এখনো |

    এ শহরের ফ্রি স্কুল স্তিট ‚ উড স্ট্রিট ‚কিড স্টিট ‚ লিটিল রাসেল স্টিট এর আশে পাশের গলিতে ঘুরলে এখনো একটা থমকে থাকা কলোনিয়াল গন্ধ নাকে আসবে | কাঠের সিঁড়ি ওয়ালা আবছা আলোর বাড়ির ভিতরে অনেক পার্টিসন তোলা ফ্লাটবাড়ি ‚ পুরোনো পিয়ানো বা গিটারের দোকান ‚ জিন্স আর রংচংয়ে জামা পরা বৃদ্ধ সাইকেলে চেপে চলে যাওয়া ‚ আধা-মেম বুড়িদের জটলা ‚দুর থেকে ভেসে আসা এলভিস ‚ ফ্রান্ক সিনাত্রায় গান| এও কলকাতার একটা মুখ |

    কিংবা যদি রাজাবাজার ‚ খিদিরপুর অঞ্চলে রাস্তা দিয়ে হাঁটলে ‚ লুঙ্গি ও দাড়ির আধিক্য ‚ বিরিয়ানির গন্ধ ‚ টাঙ্গিয়ে রাখা সারি সারি বড়া গোস্ত ‚ চিকনের পাঞ্জাবী ‚ আতর ‚ সুর্মা ‚ জর্দার দোকান ‚ বোরখাপরিহিতাদের বাজার করা এ সব চোখে পড়বে |

    তেমনি ভবানীপুরের কিছু অংশে সরদারজীদের ‚ বড়বাজারের বিস্তীর্ন অঞ্চলে মারোয়াড়-নন্দনদের ‚ টেংরাতে চীনাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িত সব কিছু চোখে পড়বে |

    কিন্তু আছে কি কোথাও একটা রাস্তা যেটা কিনা স্বভাব চরিত্রে বাঙ্গালি ‚ যেখানে এখনো মুছে যায় নি বাঙ্গালিয়ানার ছাপ ‚ বাঙ্গালির ফুরিয়ে যাওয়া উজ্বল দিনের কিছু ক্ষয়িষ্ণু চিন্হ‚ কিছু ইতিহাস কাঁপানো দিকপাল বাঙ্গালিদের চরণরেখা ? একটু খুঁজে দেখা যাক |

    **************

    শ্যামবাজারের পাঁচমাথার মোড় হল বাবু-কালচারের কলকাতার গেটওয়ে | সত্যিকারের শহর কোলকাতা এখান থেকেই শুরু | পাঁচটি রাস্তা এসে মিশেছে একটি বিন্দুতে | দুটি রাস্তা এখান থেকে শুরু করে চলে গেছে শহর থেকে দুরে |
    আর বাকি তিনটি ঢুকেছে শহরের অন্তপুরে | তারই একটির নাম কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট |সেই পঞ্চমুন্ডের আসনস্থল থেকেই শুরু করি আমার পরিক্রমা| এই যেখানে ঘোড়ায় চেপে এক যোদ্ধার রুখে দাঁড়ানোর ভঙ্গীতে দাঁড়িয়ে আছে বাঙ্গালির তথা ভারতের সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ দেশনায়ক |
    ১৯৬৯ সালে এই অতি বৃহৎ মুর্তি এখানে বসানোর সময় অনেক প্রশ্ন উঠেছিল এটির স্থাপত্যের মান নিয়ে | নাগেশ জোগলেকর নামে এক মারাঠি ভাস্কর কে এটি নির্মান করা হয়েছিল | ঘোড়ার ল্যাজের অমন সরল রৈখিক ধরন দেখে অনেকেই আজও সমালোচনা করে থাকেন | আমাদের হাতের কাছে দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরি ‚ শংখ চৌধুরি ‚ সোমনাথ হোড়ের মত ভাস্কররা থাকতে কেন একজন মারাঠী কে এ কাজ দেওয়া হয়েছিল সে এক রহস্য |
    আমরা যে রাস্তা ধরে এগিয়ে যাবো সেটির আদি নাম কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট ‚ পরে হয় বিধান সরণী | যারা এ দেশের স্বাধীনতার আগে জন্মেছেন তার এখনো ঐ রাস্তাটাকে কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট বলেই ডাকেন |
    এই রাস্তা শুরুর মুখে যে উঁচু উঁচু সাবেকী ধরনের বাড়ি গুলি আছে তার একটিতে বাস করতেন বাংলাগানের স্বর্নযুগের এক সঙ্গীত স্রষ্টা - নচিকেতা ঘোষ ‚ ব্যাকরন মেনে বলতে গেলে বলতে হয় ডঃ নচিকেতা ঘোষ্| কোলকাতার প্রখ্যাত চিকিৎসক সনৎ ঘোষ বিধান রায়ের ভাবশিষ্য ছিলেন | ছেলেকেও চেয়েছিলেন ডাক্তার করতে | কিন্তু ডাক্তারি পাশ করার পর নচিকেতা আর গলায় স্টেথো ঝোলান নি | ভাগ্যিস ঝোলান নি | নইলে আধুনিক বাংলা গানের ঐশ্বর্য ভাণ্ডার অনেকটা অংশ খালি থেকে যেত | কে আসেন নি ঐ বাড়িতে মান্না দে ‚ হেমন্ত মুখার্জী ‚ মানবেন্দ্র ‚ শ্যামল মিত্তির থেকে সন্ধা মুখারজী আরতি মুখার্জী সবাই আসতেন গান তুলতে | কারন নচিকেতার ঘোষের সুরে গান হিট হবে না এমন হওয়াটা প্রায় অসম্ভব |

    আর ঐ যে রাস্তার মুখের দোকানটি যার দু দিকের দরজায় দুটো রাস্তা ‚ ওটি হল গোলবাড়ি ‚ যার কষা মাংসের নাম শুনে অনেকেই স্মৃতিমেদুর হয়ে ওঠে |
    আপাতত লোভ সম্বরন করে আমার এগিয়ে যাই রাস্তা ধরে | রাস্তার দু ধারে দোকান বাড়ি | কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি দোকান ‚ মানে বাড়িহীন দোকান | ফুটপাথ উপচে পড়ছে | কী চাইলেন দাদা (বা দিদি )এই ডাক উপেক্ষা করেই এগিয়ে যেতে হবে | ঐ ফুটপাতে বাজার করতে গেলে এক বিশেষ ধরনের স্কিল চাই | দোকানদার যা দাম বলবে খুব নির্মম ও নিরাসক্ত ভাবে অন্তত তার অর্ধেক দাম বলতে হবে | দোকানদার ভাব দেখাবে তার বেচবার কোনো ইচ্ছে নেই ‚ খদ্দের ভাব দেখাবে তার নেওয়ারও কোনো ইচ্ছে নেই | কিন্তু তার মধ্যেই কোথাও একটা রফা হয়ে যাবে |

    একটু এগোলে রাস্তার ডান ফুটে ট্রামডিপো | এখনো সেই আদ্দিকালের চেহারাটাই আছে | সরকার এই জায়গাগুলোকে বেচে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে | তাই হয়ত আর বেশিদিন এই চেহারাটা থাকবে না |
    ১৮৮২ সালে এখান থেকে ঘোড়ায় টানা ট্রামগাড়ি চালু হয় | আর ১৯০২ সালে ট্রাম গাড়ির বিদ্যুতায়ন হয় | ১৯২০ সালে সরকারী বাস রাস্তায় নামে | তার আগে পর্যন্ত এ শহরে এই ট্রাম গাড়িই ছিল কোলকাতার জনগনের যাতায়াতের একমাত্র বাহন| ট্রাম ডিপোটে হটাৎ এখানে এসে পড়লে একটু আশ্চর্য হতে হবে এই ভেবে যে কি করে এরা এখন পর্যন্ত সবরকম ভাবে আধুনিকতার ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে রেখেছে |

    রাস্তার দু পাশে ফুটপাথ বলে কিছু নেই | |সবটাই বাজার | তবু স্বভাবদোষে মানুষ এখনো ফুটপাথই বলে | মধ্যবিত্তের ঘরকন্নার যাবতীয় জিনিষ পাওয়া যাবে |ক্রেতারা অসীম ধৈর্য সহকারে ভীড়ের মধ্যে দিয়ে দক্ষ ফুটবলারের মত ডজ করতে এগিয়ে যাচ্ছে | বেশির ভাগই অবশ্য মধ্যবিত্ত বাঙ্গালি মহিলা |তাদের ঠকানো শিবের অসাধ্যি কাজ| পাঁচ টাকা দাম কমানোর জন্যে একঘণ্টা দরদস্তুর করতে পারে|
    ভীড় ঠেলে খানিক এগোলে একটা ক্রসিং পড়বে |
    বাঁদিকের রাস্তাটি শিবদাস ভাদুড়ি স্টিট| সেই শিবদাস যিনি ১৯১১ সালের গোরাদের ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্ট হারানো মোহনবাগান দলের ক্যাপটেন ছিলেন | ওনার দাদা বিজয়দাস ভাদুড়ি সেই ম্যাচে গোলও করেছিলেন | সে ম্যাচ তো ফুটবল খেলা নয় |স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি অংশ | আমরা সায়েবদের হারাতে পারি - ঐ খেলাটি জেতার পর থেকেই বাঙ্গালির মনে এই বিশ্বাসটি হয়তো অঙ্কুরিত হয়|

    এই শিবদাস ভাদুড়ি স্টিট যেখানে মিশছে কর্নওয়ালিশ স্টিটের সঙ্গে তার দু দিকে ঐতিহ্যবাহী দোকান ফ্রেন্ডস কেবিন আর অমৃত | প্রথমটি পুরোনো দিনের অনেক বিখ্যাত আড্ডার আঁতুড়ঘর ‚ আর দ্বিতীয়টি সম্মন্ধে এটা বলা যায় যে আসল অমৃত খাওয়ার যদের সৌভাগ্য হয় নি তারা এখানকার দই অবশ্যই খেয়ে দেখবেন |

    আর একটু এগিয়ে গেলে পড়বে সিনেমা পাড়া | এককালে এখানে ছিল একসঙ্গে কয়েকশো মিটারের তফাতে সাত সাতটা সিনেমা হল - দর্পনা ‚ মিত্রা ‚ মিনার ‚ রুপবাণী ‚ রাধা ‚ উত্তরা ‚ শ্রী | দুর্গাদাস ‚ প্রমথেশ বড়ুয়া ‚ উত্তম কুমার রা শুক্রুবার সন্ধায় দুরু দুরু বক্ষে তাকিয়ে থাকতো এই পাড়ার দিকে ‚ কেমন ভীড় হল এ পাড়ায় তার উপর নির্ভর করতো তাদের মুক্তি পাওয়া ছবির ভবিষ্যৎ | মা কাকীমারা দিবানিদ্রা ত্যাগ করে পান চিবোতে চিবোতে ম্যাটিনি শোয়ে চলে আসতেন ছবি দেখতে | যে কোনো একটা হলে টিকিট তো পাওয়া যাবেই |
    যুগের হাওয়ায় সিনেমা পাড়া তার ঐতিহ্য হারিয়েছে | উত্তরার বাজার বসেছে ‚ রুপবাণীতে ( রবিঠাকুরের নামকরন করা ) হয়ে গেছে ফ্লাট বাড়ি |বাকি গুলো ও যায় যায় |
    আর একটু এগোলে এই রাস্তার দ্বিতীয় ক্রসিং -গ্রে স্ট্রিট‚ এখন নাম অরবিন্দ সরণী| | ক্রসিংএর মুখেই হাতিবাগান বাজার | মুর্শিদাবাদের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা ১৭৫৬ সালে যখন ইংরাজদের কোলকাতা থেকে হাটিয়ে দেবার জন্যে আক্রমন করেছিলেন তখন তাঁর সৈন্যবাহিনীর হাতি গুলি রাখা হয়েছিল এখানের একটি বাগানে | সেই থেকে নাম হাতিবাগান | এ গল্পের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এ বাজারের বয়স একশোর উপর হয়ে গেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই | এই হাতিবাগানের কাছাকাছি কোনো জায়গায় জাপানীরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমা ফেলেছিলো | সৌভাগ্যক্রমে সে বোমা ফাটেনি | কিন্তু বোমার ভয়ে কোলকাতার বাঙ্গালিরা নাকি দলে দলে পালিয়েছিলেন পশ্চিম ভারতের নানা শহরে | যশিডি ‚ মধুপুর তাদের মধ্যে অন্যতম |

    হাতি বাগান বাজারের উল্টোদিকে সারি সারি পুতুল দারওয়ান বসানো একটি বাড়ির নাম দত্তবাড়ি | ও বাড়ির লোকেরা শুধু তাদের আভিজাত্যের জন্যই নয় জ্ঞানী গুনী বলেও বিখ্যাত ছিলেন | দার্শনিক হীরেন দত্ত ‚ থিয়েটারের যুবরাজ অমর দত্ত এবং কবি সুধীন দত্ত তাদের মধ্যে অন্যতম | কল্পনা করতে অসুবিধা নেই ও বাড়ির কোন একটি ঘরে বসে ভোর বেলায় রাজেশ্বরী বাসুদেব দত্ত গাইছেন - এ মোহ আবরন ......।| আর ঠিক তখনি সুধীন দত্ত ঐ বাড়ির কোনো একটি ঘরে বসে লিখে ফেললেন শাশ্বতী কবিতাটি |

    গ্রে স্ট্রিট পার করলেই সেই ঐতিহাসিক স্টার থিয়েটার | বাংলার বানিজ্যিক থিয়েটারের মক্কা বলা যায় | তিনকড়ি চক্রবর্তী‚ অহীন্দ্র চৌধুরি ‚ দুর্গাদাস বন্দোপাধ্যায় ‚ গিরিশ চন্দ্র ঘোষ‚ অর্ধেন্দু শেখর মুস্তাফি ‚ নরেশ মিত্র ‚ নটী বিনোদিনী ‚ প্রভা দেবী এঁরা সবাই এই স্টার থিয়েটার কে গৌরবান্বিত করেছেন|এখানে পায়ের ধুলো দিয়েছেন । বিদ্যাসাগর ‚ রবীন্দ্রনাথ ‚ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ আরো অনেকে | শ্রী রামকৃষ্ণ এখানেই নটী বিনোদিনীর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন |

    এর আশে পাশে সেই সময় ছিল বাংলা থিয়েটারের রমরমা |
    একটু দুরেই বিডন স্টিটের উপর বেঙ্গল থিয়েটার ‚ ন্যাশেন্যাল থিয়েটার ‚ মিনার্ভা থিয়েটার এদের একে অপরের সঙ্গে খুব রেশারেশি চলত | বাবু বিবিরা জুড়ি গাড়ি চেপে বিনোদনের জন্যে এই অঞ্চলে চলে আসতেন থেটার দেখতে |
    আর দু পা দুরে বঙ্কিম চ্যাটারজি স্ট্রিটে ইউনিভারটি ইন্স্টিটিউটে হলে শিশির ভাদুড়ি এনেছিলেন বাংলা থিয়েটারে আধুনিকতার ছোঁয়া|

    থিয়েটার পাড়া ছাড়িয়ে এবার এগিয়ে যাই সেই এলাকায় যেখানে এখনো ছড়িয়ে আছে বাংলার নবজাগরনের উজ্বল প্রস্তরফলকগুলি | বাঁ হাতে পড়বে একটি সরু রাস্তা | নজরে পড়ার মত কোনো বিশেষত্ব নেই | তার নাম সাহিত্য পরিষদ স্ট্রিট | ঐ রাস্তায় ঢুকলেই আছে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের শতাব্দী প্রাচীন বাড়িটি | এখন ওখানে টিম টিম করে একটি লাইব্রেরি চলে | কিন্তু ঐ প্রতিষ্ঠানটি জন্ম হয় ১৮৯৩ সালে | ১৮৯৪ সালে ঐ প্রতিষ্ঠনের প্রেসিডেন্ট হন রমেশ চন্দ্র দত্ত আর ভাইস প্রেসিডেন্ট হন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর নবীন চন্দ্র সেন | ওখান থেকে যে জারনাল প্রকাশিত হত তাতে তৎকালীন সুধী সমাজের দিকপালদের অতি মূল্যবান সব লেখা থাকতো |

    আরো একটু এগিয়ে বিডন স্টিটে ঢুকতেই পড়বে স্কটিশ চার্চ কলেজ | ১৮৩০ সালে স্কটিশ মিসনারির হয়ে আলেকজেনডার ডাফ এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন | রাজা রাম মোহন রায় তাঁকে প্রচুর সাহাজ্য করেন | এই কলেজের প্রাক্তনীদের তালিকা দেখলে চমক লাগে | স্বামী বিবেকানন্দ ‚ সুভাস চন্দ্র বোস ‚ থেকে শিশির ভাদুড়ি ‚ বিরেন্দ্র কৃষ্ঞ ভদ্র ‚ সুচিত্রা মিত্র ‚ মান্না দে এবং আরো অনেকে |

    স্কটিশচার্চ কলেজেরপাশেই হেদুয়া নামের সেই ডিম্বাকৃতি জলাশয় | গরমকালের বিকেল বেলায় ঐ পার্কটি একটি উত্তর কলকাতার ওয়েশিস হয়ে যায় | এক কালে ওখানে পার্কের বেঞ্চে বসে চীনাবাদাম সহ সুশীতল হাওয়া খেতে খেতে অনেক প্রেমের ফুল ফুটতো | এখন অবশ্য প্রেমিক প্রেমিকাদের আর একটি একটি করে চীনা বাদামের খোসা ছাড়াবার মত ধৈর্য নেই|
    আর এক জায়গায় এই হেদুয়ার অনেক অবদান আছে | সে হল সাঁতার | অনেক বিখ্যাত বাঙ্গালি সাঁতারুর সাঁতারে হাতে খড়ি এখান থেকেই হয় |
    হেদুয়ার ওপারে বেথুন কলেজ | ভারতের প্রথম মহিলা কলেজ |তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অফ এডুকেশন কাউনসিল জন এলিয়ট ড্রিন্ক ওয়াটার বেথুন দ্বারা ১৮৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই কলেজ | তাঁকে সাহাজ্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর মশাই ‚ রাজা দক্ষিনারঞ্জন মুখার্জী ‚ রাম গোপাল ঘোষ এরাঁ |

    এখান থেকে যে সব উজ্বল মহিলা রত্নরা পাশ করে বেরিছেন তাঁদের মধ্যে - সরলা দেবী চৌধুরানী ‚ সীতা দেবী ‚ কামিনী রায় ‚লীলা রায় ‚ দিপ্তী ত্রিপাঠী ‚ অসীমা চ্যাটরজী এদেঁর মত বিরাট বিরাট নাম আছে |
    প্রীতিলতা ওয়াদদেদর ‚বিণা ভৌমিক ‚ কল্পনা দত্ত ( জোশি ) ‚ ইলা মিত্র ‚ এঁদের মত সংগ্রামী মহিলারাও আছেন |

    কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট ধরে একটু এগিয়ে গেলে ডান দিকে একটা সরু রাস্তা পড়বে | গৌরমোহন মুখার্জী স্ট্রিট | ঐ রাস্তার তিন নংবর বাড়িটি ছিল বৃটিশ সরকারের হাই কোর্টের এটর্নী বিশ্বনাথ দত্তর বাড়ি | বিশ্বনাথ দত্ত আর ভুবনেশ্বরী দেবীর নটি সন্তানের একটির নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত |ডাক নাম বিলে | তাঁকে আর পরিচয় করানোর প্রয়োজন নেই | শুধু ভাবলে গায়ে কাঁটা দেয় একসময়ে ঐ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নরেন দত্ত হেঁটে এই কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট ধরে যেতেন দু পা দুরে স্কটিশচার্চ কলেজ | কলেজের লাইব্রেরি তে বসে আত্নস্থ করতেন ইমানুয়েল কান্ট ‚ সোপেনহাওয়ার ‚ হেগেল ‚ চারল্স ডারউইন ‚স্টুয়ার্ট মিল হারবার্ট স্পেনসার ‚ একদিন সারা দুনিয়া কে কাঁপিয়ে দেবেন বলে | যে বাড়িটা এ দেশের একটি তীর্থ ক্ষেত্রের মর্যাদা পাওয়া উচিত ছিল সেটা বহুকাল অনাদরে অবহেলায় পড়ে ছিল । ঈদানিং রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্যোগে ওখানে একটি বিবেকানন্দ মিউজিয়াম গড়ে উঠেছে ।

    শ্রীমানি মারকেট কে ডানদিকে রেখে আরো একটু এগিয়ে গেলে বাঁ দিকে পড়বে বিদ্যাসাগর কলেজ ‚ যার একদা নাম ছিল মেট্রোপলিটান ইনস্টিটুশান | ১৮৭২ সালে শুরু হয় এই প্রতিষ্ঠান | বিদ্যাসাগর মশাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে কলেজটিকে সে যুগের একটি উচ্চ মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রুপ দেন| তাঁর মৃত্যুর পরে এই কলেজের নাম সঙ্গত কারনেই হয়ে যায় বিদ্যাসাগর কলেজ | এই কলেজের প্রাক্তনীদের মধ্যে কয়েকটি নাম কেশব চন্দ্র সেন‚ যতীন্দ্রনাথ দাস ‚ প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ‚ রাম মনোহর লোহিয়ার |
    এই কলেজের উল্টো দিকের বাড়িটি হল সাধারন ব্রাহ্মসমাজ |যে সব মানুষরা এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাতে এটি একটিকে পীঠস্থান বলাই ভালো |

    ১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নানা সময়ে জড়িয়ে ছিলেন আনন্দ মোহন বোস ‚ উমেশ চন্দ্র দত্ত ‚ শিবনাথ শাশ্ত্রী ‚ দেবেন্দ্র নাথ ঠাকুর ‚এস এন ব্যানার্জি ‚ বিপিন চন্দ্র পালের এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত উজ্বল জোতিষ্করা |

    পরবর্তী কালে যখন তরুনতর প্রজন্ম ‚ যার মধ্যে ছিলেন কালিদাস নাগ ‚ প্রশান্ত মহালনবিশ‚ সুকুমার রায়ের মত মানুষেরা‚ এই সংস্থার দায়িত্ব নেন তখন নানা কারনে তখন শিবনাথ শাস্ত্রীর এই প্রতিষ্ঠান কে নিয়ে একটি সমালোচনামূলক প্রবন্ধে এই সংস্থা ঘিরে কিছুটা টাল মাটাল অবস্থা তৈরী হয় | এঁরা প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাবার জন্যে একটি প্যাম ফ্লেট ছেপে সদস্যদের মধ্যে বিলি করেন | প্যাম ফ্লেট টির শীর্ষক ছিল - কেন রবীন্দ্রনাথ কে চাই |
    এর পর ১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে এই সংস্থার সাম্মানিক সদস্য পদ দেওয়া হয় |

    আমরা আমাদের এই বহু বিশিষ্ট মানুষের পায়ের চিণ্হ নিয়ে পড়ে থাকা পথ পরিক্রমার শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেচি | সাধারন ব্রাহ্ম সমাজ পার হয়ে কিছুদুর এগোলেই একটি রাস্তা আড়া আড়ি ভাবে এই কর্নওয়ালিশ স্ট্রিটটিকে ক্রস করেছে ‚ সে রাস্তাটির নাম কেশব চন্দ্র সেন স্ট্রিট | এই চৌরাস্তার ওপারে আমাদের রাস্তাটির নাম বদলে হয়ে গেছে কলেজ স্ট্রিট | ও পাড়ার খাঁজে খাঁজে ও অনেক ইতিহাস|
    কিন্তু আজ আমরা এখানেই থামছি | হয়তো অন্য আর এক দিন এখান থেকে ফের পরিক্রমা শুরু করবো |

    ******************************
  • kiki | 127.194.***.*** | ০৪ জুলাই ২০১৪ ০০:১০648046
  • উত্তরের্পর্দক্ষিনহয়েপশ্চিমকিআসবেনা? সখেরবাজারসাবর্ণরায়চৌধুরিরামানেব্যায়লা!
  • avi | 111.22.***.*** | ০৪ জুলাই ২০১৪ ১৬:৫৩648047
  • জ্যোতিরিন্দ্র বিনোদিনী অর্ধেন্দু যে স্টার থিয়েটারে আসতেন, সেটা কি এই জায়গাতেই ছিল?
  • সিকি | 131.24.***.*** | ০৪ জুলাই ২০১৪ ১৭:১৫648048
  • ছিল কেন? স্টার থিয়েটার তো এখনও আছে। এইই সেই স্টার থিয়েটার।
  • Pramit | 213.207.***.*** | ০৪ জুলাই ২০১৪ ১৭:৩৪648049
  • খুব-ই উপভোগ্য লাগছে। একটা ছোটো মন্তব্য করতে ইছে হল। একটু পিছিয়ে বাগবাজার থেকে শুরু করলে আরও কিছু মণিমুক্তোর (যেমন, গিরীশ, বলরাম বসু, শ্রীমা) সন্ধান পাওয়া যেত।
  • Somen Dey | 53.252.***.*** | ০৪ জুলাই ২০১৪ ১৭:৪৪648050
  • কিকি ,

    ইচ্ছে রইল অন্য কোনো রাস্তায় হাঁটার ।

    প্রমিত ,

    একটা রাস্তাতেই থাকতে চেয়েছি আপাতত । বাগবাজার তো একটা আলাদা চ্যাপটার ।
  • avi | 111.22.***.*** | ০৪ জুলাই ২০১৪ ১৯:০৩648051
  • যাব্বাবা! ওনাদের স্টার বীডন স্ট্রীটে ছিল, পরে কর্নওয়ালিশ স্ট্রীটে নতুন বাড়ি হয়, এসব তাহলে কখনকার ঘটনা?
  • nima | 80.215.***.*** | ০৪ জুলাই ২০১৪ ১৯:১৪648052
  • সোমেনবাবু
    আপনার সঙ্গে ঘুরছি জানছি --- থামবেন না--খুব ভাল লাগছে
  • nina | 80.215.***.*** | ০৪ জুলাই ২০১৪ ১৯:৩৪648053
  • ইস! নিজের নাম ভুল করে কেউঃ-( ওটা নিমা হোয়েছে বোকা ফোনের দৌলতে
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন