এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • দীন মুহম্মদের গপ্প

    achintyarup
    অন্যান্য | ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৮৪৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • achintyarup | 69.93.***.*** | ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ ২১:৪৬624939
  • Rগিব অসন
    ডেেম্বের ৮ · দিতেদ ·

    দীন মুহাম্মদের শ্যাম্পু স্নানাগার

    শ্যাম্পু শব্দটি আজ ইংরেজি ভাষার একেবারে নিজের শব্দের মতো বনে গেছে। সানসিল্ক কিংবা আরো দামি নানা শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপণে ভর্তি থাকা টিভি/পত্রিকা দেখে কিন্তু বোঝার অবকাশ নাই, এই শ্যাম্পুর সাথে শেখ সাহেব আর বাংলার সম্পর্কটা কী। চলুন ফেরা যাক আজ থেকে আড়াইশ বছর আগের ভারতবর্ষে, যেখানে শেখ সাহেবের মাত্র জন্ম হয়েছে।

    শেখ দীন মুহাম্মদের জন্ম ১৭৫৯ সালে, "বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা"র নবাবী আমল তখন মাত্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আর লর্ড ক্লাইভের হাতে ধরাশায়ী। এক বাঙালি মুসলিম পরিবারে দীন মুহাম্মদের জন্ম, নিবাস ছিলো পাটনায়, যা এখন বিহারে পড়েছে। দীন মুহাম্মদের আত্মজীবনী অনুসারে তার পূর্বপুরুষেরা মুগল সম্রাটদের প্রশাসনে কাজ করতেন, আর বাংলার নবাব পরিবারের সাথেও তাদের ছিলো লতায় পাতায় আত্মীয়তা।

    দীন মুহাম্মদের যখন জন্ম, নবাবী আমল প্রায় শেষ, মীর জাফর, মীর কাসিম এরা নামে মাত্র নবাব বনে আছেন। মুগল সম্রাটও প্রায় ক্ষমতাহীন। বড় হতে হতে দীন মুহাম্মদ শিখে ফেললেন মুগল আমলের সব রসায়ন বিদ্যা, সাবান, সুগন্ধি, তেল সবকিছু বানাবার কৌশল। সাথে উপরি হিসাবে কিছু চিকিৎসাবিদ্যাও। নবাবী আমলও নেই, দরবারও নেই, তাই দীন মুহাম্মদ যোগ দিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ফৌজে, শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হিসাবে। খুব অল্প বয়সেই যোগ দিয়েছিলেন, আর ইঙ্গ-আইরিশ অফিসার ক্যাপ্টেন গডফ্রি ইভান বেকারের সাথে কাজ করতেন। ১৭৮২ সালে ক্যাপ্টেন বেকার সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করেন, কেউ কেউ বলে করতে বাধ্য হন, আর ফিরে যান ব্রিটেনে। দীন মুহাম্মদ তার এই ক্যাপ্টেন সাহেবের সাথে সাথে চলে আসেন বিলেতে। বেকার পরিবারের সাথেই তিনি ১৭৮৪ সালে চলে যান আয়ারল্যান্ডের কর্কে। ইংরেজি শেখার জন্য ভর্তি হন স্কুলে, সেখানে পরিচয় আইরিশ কিশোরী জেইন ডেলির সাথে। সুন্দরী জেইনের প্রেমে পড়ে যান দীন মুহাম্মদ, কিন্টু জেইনের পরিবার অমত করায় পালিয়ে যান দুজনে পাশের শহরে ১৭৮৬ সালে, বিয়ে করেন। ততোদিনে দীন মুহাম্মদ খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা নিয়েছেন।

    নানাদেশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে নিয়ে দীন মুহাম্মদ ১৭৯৪ সালে ঠে ট্রভেল্স ওফ ডেঅন অহোমেত বা দীন মুহাম্মদের সফর নামা নামের বই লিখেন। ভারতবর্ষ নিয়ে ইউরোপে তখন কৌতুহলের কমতি নেই, তাই বইটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

    দীন মুহাম্মদের গল্পের পরের অধ্যায় লন্ডনে। ১৮১০ সালে সেখানে মুহাম্মদের পরিবার চলে আসার পরে একটা রেস্তোরা খুলেন দীন মুহাম্মদ। এটাই ছিলো ইংল্যান্ডের প্রথম ভারতীয় খাবার দাবারের রেস্তোরা। লন্ডনের জর্জ স্ট্রিটে খোলা হিন্দুস্তান কফি হাউজ নামের এই দোকানটি অবশ্য খুব ভালো চলেনি, অল্পদিন পরেই লোকসানের চোটে বন্ধ হয়ে যায়। দুশো বছর পরে ভারতীয় তথা বাঙালি খাবারের কী জয়জয়কার হবে ইংল্যান্ডে, শেখ দীন মুহাম্মদ জানতে পারেননি, লালবাতি জ্বেলে রেস্তোরার ব্যবসা বাদ দিয়ে লন্ডন ছেড়ে চলে যান।

    লন্ডনে রেস্তোরার ব্যবসাতে সাফল্য না পেলেও দীন মুহাম্মদের ভাগ্য ফিরে যায় ব্রাইটনে। ১৮১৪ সালে সপরিবারে এই শহরে বসতি স্থাপনের পর দীন মুহাম্মদ খুলে বসেন তার স্নানাগার। সেসময়কার একটি স্থানীয় পত্রিকায় তার দোকানের বিজ্ঞাপন দেয়া হয় এভাবে -

    [qউওতে]ঠে ঈন্দিঅন এদিতেদ অপৌর অথ (ত্য়্পে ওফ টুর্কিশ বথ), অ ুরে তো মন্য দিসেঅসেস অন্দ গিভিঙ্গ ফুল্ল রেলিএফ ্হেন এভের‌্য থিঙ্গ ফইল্স; পর্তিুলর্ল্য R্হেউমতি অন্দ পরল্য়্তি, গৌত, স্তিফ্ফ জৈন্ত্স, ওল্দ স্প্রইন্স, লমে লেস্স, অচেস অন্দ পইন্স ইন থে জৈন্ত্স[/qউওতে]

    এই সুগন্ধি স্নানাগারে খদ্দেররা পেতেন দীন মুহাম্মদের তৈরী করা মাথার চুলে মাখাবার তেল -- সেই তেল দিয়ে খদ্দেরদের চুলে মাথায় মালিশ করে দেয়া হতো। তেল মালিশের এই কাজটাকে হিন্দুস্তানী ভাষায় বলায় হতো চ্যাম্পু করা, আর সেই শব্দটিই সাগর পেরিয়ে মুহাম্মদের স্নানাগারে গিয়ে হয়ে যায় শ্যাম্পু।

    ইংরেজদের কাছে এই শ্যাম্পুর দোকান অভিনব ঠেকেছিলো, তাই দীন মুহাম্মদের দোকান অহোমেদ'স তেঅম অন্দ অপৌর এঅ অতের এদিতেদ অথ্স ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় উনবিংশ শতকের ইংল্যান্ডে। দূর দূরান্ত থেকে লোকজন কেবল দীন মুহাম্মদের দোকানে শ্যাম্পু করাতে ছুটে আসতো। শ্যাম্পু করে রোগবালাই দূর হয়, এই বিশ্বাসে হাসপাতাল থেকে রোগীদের পাঠানো হতো ব্রাইটনে। আর তেল মালিশ করে করেই দীন মুহাম্মদ পেয়ে যান ডঃ ব্রাইটন খেতাব। জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছে যাওয়া এই মালিশ-চিকিৎসার সুবাদে খোদ ইংল্যান্ডের রাজা ৪র্থ জর্জ ও ৪র্থ উইলিয়ামের "শ্যাম্পু সার্জন" হিসাবে মুহাম্মদ নিয়োগ পান। ১৮৫০ এর পরে তেলের বদলে সুগন্ধি সাবান দিয়ে চুল ধোয়ার রীতি চালু হয়, কিন্তু রয়ে যায় শ্যাম্পু নামটি।

    দীন মুহাম্মদ মারা যান ১৮৫১ সালে, নব্বইয়ের কোঠায় পৌছে। জেইনের সাথে দীন মুহাম্মদের সংসারে এসেছিলো ছয়টি সন্তান - রোসানা, হেনরি, হোরেশিও, ফ্রেডেরিক, অ্যামেলিয়া, ও আর্থার। এর মাঝে ফ্রেডেরিক বাপের পেশায় যোগ দেন। ফ্রেডেরিকের ছেলে ফ্রেডেরিক হেনরি হোরেশিও আকবর মুহাম্মদ (বাপরে, বাপ দাদা সবার নামের সমাস!!) চিকিৎসক হিসাবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। লন্ডনের গাইস হাসপাতালে কাজ করার সময়ে উচ্চ রক্তচাপের উপরে গবেষণা করে আবিষ্কার করেন অনেক নতুন তথ্য।

    দীন মুহাম্মদের কথা ইতিহাস ভুলে যায় ধীরে ধীরে। বিস্মৃতির আড়ালে একশো বছর কাটাবার পরে সত্তর ও আশির দশকে আস্তে আস্তে ঐতিহাসিকরা আবার খুজে পান শেখ দীন মুহাম্মদের সেই কাহিনী, বাংলা থেকে ব্রাইটন অবধি এই বঙ্গসন্তানের অভিনব জীবনগাঁথা। ইংরেজদের ভারতীয় খাবার ধরাতে দীন মুহাম্মদ পারেননি, দেউলিয়া হয়ে গেছিলেন, কিন্তু আজ দুশো বছর পরে সেই খাবার ছড়িয়ে গেছে সেখানে। আর শ্যাম্পু? শেখ সাহেবের সেই শ্যাম্পুর দোকান থেকে শুরু হওয়া শ্যাম্পু করার ধারা ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়েই।

    আর এই ছিলো সেই শেখ সাহেবের গপ্পো ।।।

    হ্ত্ত্প্সঃ//্ব।ফেবূক।োম/ফোতো।ফ্প?ফ্বিদ=১০১৫২০২৩০৬৯৮০৩৬৭০&সেত=অ।১০১৫২০
    ১৬০৬৫০৯৩৬৭০।১০৭৩৭৪১৮৩৮।৫১৩৬১৮৬৬৯&ত্য়্পে=১
  • achintyarup | 69.93.***.*** | ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ ২১:৪৭624940
  • ভুল জায়গায় পেস্ট করলুম :(
  • achintyarup | 69.93.***.*** | ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ ২১:৪৮624941
  • Ragib Hasan
    December 8 · Edited ·

    দীন মুহাম্মদের শ্যাম্পু স্নানাগার

    শ্যাম্পু শব্দটি আজ ইংরেজি ভাষার একেবারে নিজের শব্দের মতো বনে গেছে। সানসিল্ক কিংবা আরো দামি নানা শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপণে ভর্তি থাকা টিভি/পত্রিকা দেখে কিন্তু বোঝার অবকাশ নাই, এই শ্যাম্পুর সাথে শেখ সাহেব আর বাংলার সম্পর্কটা কী। চলুন ফেরা যাক আজ থেকে আড়াইশ বছর আগের ভারতবর্ষে, যেখানে শেখ সাহেবের মাত্র জন্ম হয়েছে।

    শেখ দীন মুহাম্মদের জন্ম ১৭৫৯ সালে, "বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা"র নবাবী আমল তখন মাত্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আর লর্ড ক্লাইভের হাতে ধরাশায়ী। এক বাঙালি মুসলিম পরিবারে দীন মুহাম্মদের জন্ম, নিবাস ছিলো পাটনায়, যা এখন বিহারে পড়েছে। দীন মুহাম্মদের আত্মজীবনী অনুসারে তার পূর্বপুরুষেরা মুগল সম্রাটদের প্রশাসনে কাজ করতেন, আর বাংলার নবাব পরিবারের সাথেও তাদের ছিলো লতায় পাতায় আত্মীয়তা।

    দীন মুহাম্মদের যখন জন্ম, নবাবী আমল প্রায় শেষ, মীর জাফর, মীর কাসিম এরা নামে মাত্র নবাব বনে আছেন। মুগল সম্রাটও প্রায় ক্ষমতাহীন। বড় হতে হতে দীন মুহাম্মদ শিখে ফেললেন মুগল আমলের সব রসায়ন বিদ্যা, সাবান, সুগন্ধি, তেল সবকিছু বানাবার কৌশল। সাথে উপরি হিসাবে কিছু চিকিৎসাবিদ্যাও। নবাবী আমলও নেই, দরবারও নেই, তাই দীন মুহাম্মদ যোগ দিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ফৌজে, শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হিসাবে। খুব অল্প বয়সেই যোগ দিয়েছিলেন, আর ইঙ্গ-আইরিশ অফিসার ক্যাপ্টেন গডফ্রি ইভান বেকারের সাথে কাজ করতেন। ১৭৮২ সালে ক্যাপ্টেন বেকার সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করেন, কেউ কেউ বলে করতে বাধ্য হন, আর ফিরে যান ব্রিটেনে। দীন মুহাম্মদ তার এই ক্যাপ্টেন সাহেবের সাথে সাথে চলে আসেন বিলেতে। বেকার পরিবারের সাথেই তিনি ১৭৮৪ সালে চলে যান আয়ারল্যান্ডের কর্কে। ইংরেজি শেখার জন্য ভর্তি হন স্কুলে, সেখানে পরিচয় আইরিশ কিশোরী জেইন ডেলির সাথে। সুন্দরী জেইনের প্রেমে পড়ে যান দীন মুহাম্মদ, কিন্টু জেইনের পরিবার অমত করায় পালিয়ে যান দুজনে পাশের শহরে ১৭৮৬ সালে, বিয়ে করেন। ততোদিনে দীন মুহাম্মদ খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা নিয়েছেন।

    নানাদেশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে নিয়ে দীন মুহাম্মদ ১৭৯৪ সালে The Travels of Dean Mahomet বা দীন মুহাম্মদের সফর নামা নামের বই লিখেন। ভারতবর্ষ নিয়ে ইউরোপে তখন কৌতুহলের কমতি নেই, তাই বইটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

    দীন মুহাম্মদের গল্পের পরের অধ্যায় লন্ডনে। ১৮১০ সালে সেখানে মুহাম্মদের পরিবার চলে আসার পরে একটা রেস্তোরা খুলেন দীন মুহাম্মদ। এটাই ছিলো ইংল্যান্ডের প্রথম ভারতীয় খাবার দাবারের রেস্তোরা। লন্ডনের জর্জ স্ট্রিটে খোলা হিন্দুস্তান কফি হাউজ নামের এই দোকানটি অবশ্য খুব ভালো চলেনি, অল্পদিন পরেই লোকসানের চোটে বন্ধ হয়ে যায়। দুশো বছর পরে ভারতীয় তথা বাঙালি খাবারের কী জয়জয়কার হবে ইংল্যান্ডে, শেখ দীন মুহাম্মদ জানতে পারেননি, লালবাতি জ্বেলে রেস্তোরার ব্যবসা বাদ দিয়ে লন্ডন ছেড়ে চলে যান।

    লন্ডনে রেস্তোরার ব্যবসাতে সাফল্য না পেলেও দীন মুহাম্মদের ভাগ্য ফিরে যায় ব্রাইটনে। ১৮১৪ সালে সপরিবারে এই শহরে বসতি স্থাপনের পর দীন মুহাম্মদ খুলে বসেন তার স্নানাগার। সেসময়কার একটি স্থানীয় পত্রিকায় তার দোকানের বিজ্ঞাপন দেয়া হয় এভাবে -

    [quote]The Indian Medicated Vapour Bath (type of Turkish bath), a cure to many diseases and giving full relief when every thing fails; particularly Rheumatic and paralytic, gout, stiff joints, old sprains, lame less, aches and pains in the joints[/quote]

    এই সুগন্ধি স্নানাগারে খদ্দেররা পেতেন দীন মুহাম্মদের তৈরী করা মাথার চুলে মাখাবার তেল -- সেই তেল দিয়ে খদ্দেরদের চুলে মাথায় মালিশ করে দেয়া হতো। তেল মালিশের এই কাজটাকে হিন্দুস্তানী ভাষায় বলায় হতো চ্যাম্পু করা, আর সেই শব্দটিই সাগর পেরিয়ে মুহাম্মদের স্নানাগারে গিয়ে হয়ে যায় শ্যাম্পু।

    ইংরেজদের কাছে এই শ্যাম্পুর দোকান অভিনব ঠেকেছিলো, তাই দীন মুহাম্মদের দোকান Mahomed's Steam and Vapour Sea Water Medicated Baths ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় উনবিংশ শতকের ইংল্যান্ডে। দূর দূরান্ত থেকে লোকজন কেবল দীন মুহাম্মদের দোকানে শ্যাম্পু করাতে ছুটে আসতো। শ্যাম্পু করে রোগবালাই দূর হয়, এই বিশ্বাসে হাসপাতাল থেকে রোগীদের পাঠানো হতো ব্রাইটনে। আর তেল মালিশ করে করেই দীন মুহাম্মদ পেয়ে যান ড: ব্রাইটন খেতাব। জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছে যাওয়া এই মালিশ-চিকিৎসার সুবাদে খোদ ইংল্যান্ডের রাজা ৪র্থ জর্জ ও ৪র্থ উইলিয়ামের "শ্যাম্পু সার্জন" হিসাবে মুহাম্মদ নিয়োগ পান। ১৮৫০ এর পরে তেলের বদলে সুগন্ধি সাবান দিয়ে চুল ধোয়ার রীতি চালু হয়, কিন্তু রয়ে যায় শ্যাম্পু নামটি।

    দীন মুহাম্মদ মারা যান ১৮৫১ সালে, নব্বইয়ের কোঠায় পৌছে। জেইনের সাথে দীন মুহাম্মদের সংসারে এসেছিলো ছয়টি সন্তান - রোসানা, হেনরি, হোরেশিও, ফ্রেডেরিক, অ্যামেলিয়া, ও আর্থার। এর মাঝে ফ্রেডেরিক বাপের পেশায় যোগ দেন। ফ্রেডেরিকের ছেলে ফ্রেডেরিক হেনরি হোরেশিও আকবর মুহাম্মদ (বাপরে, বাপ দাদা সবার নামের সমাস!!) চিকিৎসক হিসাবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। লন্ডনের গাইস হাসপাতালে কাজ করার সময়ে উচ্চ রক্তচাপের উপরে গবেষণা করে আবিষ্কার করেন অনেক নতুন তথ্য।

    দীন মুহাম্মদের কথা ইতিহাস ভুলে যায় ধীরে ধীরে। বিস্মৃতির আড়ালে একশো বছর কাটাবার পরে সত্তর ও আশির দশকে আস্তে আস্তে ঐতিহাসিকরা আবার খুজে পান শেখ দীন মুহাম্মদের সেই কাহিনী, বাংলা থেকে ব্রাইটন অবধি এই বঙ্গসন্তানের অভিনব জীবনগাঁথা। ইংরেজদের ভারতীয় খাবার ধরাতে দীন মুহাম্মদ পারেননি, দেউলিয়া হয়ে গেছিলেন, কিন্তু আজ দুশো বছর পরে সেই খাবার ছড়িয়ে গেছে সেখানে। আর শ্যাম্পু? শেখ সাহেবের সেই শ্যাম্পুর দোকান থেকে শুরু হওয়া শ্যাম্পু করার ধারা ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়েই।

    আর এই ছিলো সেই শেখ সাহেবের গপ্পো ...

    https://www.facebook.com/photo.php?fbid=10152023069803670&set=a.101520
    16065093670.1073741838.513618669&type=1
  • achintyarup | 69.93.***.*** | ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ ২১:৫৬624942
  • দীন মুহম্মদের জীবন কাহিনী কিন্তু, বাংলায় যাকে বলে এক্কেবারে ফ্যাসিনেটিং। যেমন লেখা আছে ওপরে, শ্যাম্পুর দোকান শুধু নয়, লন্ডন শহরের প্রথম ইন্ডিয়ান কারি হাউস খুলেছিলেন এই দীন মুহম্মদ। হিন্দুস্তান কফি হাউস না, সে দোকানের নাম ছিল হিন্দোস্তানি কফি হাউস। সেই কারি হাউসে এক খরিদ্দারের অকালমৃত্যুর পর এমনকি খানিক গোয়েন্দাগিরিও করেছিলেন একবার। সময় সুযোগ পেলে লেখা যাবে সে সব।

    দীন মুহম্মদের স্ত্রী জেনের একটা কুকবুকও ছিল। তার নাম এক্ষুনি মনে পড়ছে না। একটু গুগল ঘাঁটলেই বেরিয়ে যাবে।
  • শঙ্খ | 169.53.***.*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৯:৫১624943
  • বাঃ, ইন্টারেস্টিং!
  • sosen | 125.242.***.*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ২০:৪৭624944
  • চিন্টুবাবুর সময়-সুযোগ।

    যেন নিমগাছে থোপা থোপা জামরুল।
    যেন মাতলায় আইসবার্গ ।
    যেন বতিন্দার লেখা রহস্য-উপন্যাস।
  • | ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ২০:৫১624945
  • :-)))
  • সিকি | ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ২১:২৩624946
  • হাহাহা :-)
  • san | 133.63.***.*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩ ২১:৪২624947
  • ইশ, ক্ষী হ্যাটা !
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন