এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • হাটহাজারী, সাতক্ষীরা, চিরিবন্দরের পরে এবার রামু (কক্সবাজার)

    জলধি
    অন্যান্য | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ | ৬৫০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 190.149.***.*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২১:৫৮575802
  • শনিবার রাতের ঘটনা:

    বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকম থেকে

    ''ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবসতিতে হামলা চালিয়ে রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে র্ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা।

    শনিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলা এই হামলায় রামু উপজেলার ৭টি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে।

    কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোববার সকাল থেকে রামুতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও শিল্পী মন্ত্রী দীলিপ বড়–য়া রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসছেন বলে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান।

    স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কোরআন শরিফ অবমাননা করে ছবি সংযুক্ত করার অভিযোগ এনে একটি ইসলামী দলের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করা হয় শনিবার রাত ১০টার দিকে।

    মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, রামু উপজেলার বৌদ্ধ পাড়ার উত্তম বড়ুয়া নামের এক যুবকের ফেইসবুক একাউন্টে কোরআন অবমাননাকর ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। ওই যুবককে আটকেরও দাবি জানান বক্তারা।

    সমাবেশ শেষে কিছুক্ষণ পর আবারো একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামুর বড়ুয়া পাড়ায় পৌঁছানোর পর কয়েকজন যুবক স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়।

    এরপর ওই এলাকার অন্তত ১৫টি বাড়ি, তিনটি বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙচুর হয় শতাধিক বাড়ি।

    রাত সাড়ে ৩টার দিকে হামলা হয় রামু সদর উপজেলা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে রামু মিঠাছড়ির বনবিহারে ও কয়েকটি বাড়িতে।

    সেখানে বিহারটি পুড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে নির্মাণাধীন শতফুট উচু বুদ্ধ মুর্তিটিও ভাংচুর করা হয় বলে রামু উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নিতিশ বড়ুয়া জানান।

    কক্সবাজারের ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলে কক্সবাজার জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন জিকু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঝিলংজার বিভিন্ন সংখ্যালঘু পল্লী ঘিরে রাতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের জড়ো হওয়া খবর পেয়ে তিনি গিয়ে তাদের সরিয়ে দেন। পুলিশকেও তিনি বিষয়টি অবহিত করেন বলে দাবি করেন।

    রাত দেড়টার দিকে স্থানীয় এক সাংবাদিক আক্রান্ত এলাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে টেলিফোনে জানান, তার বাড়ির পাশের চেরাংঘাটা বড়ক্যাং মন্দিরেও আগুন দেয়া হয়েছে।

    রামু উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, রাতভার হামলায় রামুর ‘সাদা চিং’, ‘লাল চিং’, রামু মেত্রী বিহার, সীনা বিহার, জাদী পাড়া বৌদ্ধ বিহার, বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র ও মিঠাছড়ি বনবিহারে অগ্নি সংযোগ করা হয়। এর আগে প্রতিটি মন্দিরেই ভাংচুর ও লুটতরাজ চলে। চৌমুহনী-চেরাংঘাটা সড়ক, মিঠাছড়ি ও বড়–য়া পাড়ার প্রায় ৩০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়।

    কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) সেলিম মো. জাহাঙ্গীর বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও বিজিবিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ভোর ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চলছে। বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসব এলাকায় বিজিবি সদস্যরাও টহল দিচ্ছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। ''
  • | 190.149.***.*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:০১575813
  • রবিবারের ঘটনা:

    বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকম থেকে

    '' রামুর পর এবার পটিয়ায় হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা চালিয়েছে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা।

    পটিয়া থানার ওসি আমিনুর রশিদ জানান, রোববার বেলা ১২ টা থেকে দেড়টার মধ্যে এই হামলায় দুটি হিন্দু মন্দির ও দুটি বৌদ্ধ মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

    স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, বেলা ১২টার দিকে কয়েকশ লোক মিছিল করে লাখাড়া অভয় বৌদ্ধ বিহারে হামলা চালায় এবং আগুন দেয়।

    এরপর কোলাগাঁও রতœাঙ্কুর বৌদ্ধ বিহার, কোলাগাঁও নবারুণ সংঘ দুর্গা মন্দির ও জেলে পাড়া মাতৃ মন্দিরেও হামলা হয়।

    অভয় বৌদ্ধ বিহারের প্রাচীন বুদ্ধ মূর্তি ভাংচুর এবং নবারুণ সংঘ দুর্গা মন্দিরে দুর্গা প্রতিমাতেও আগুন দেয় হামলাকারীরা।

    ওসি বলেন, “মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (স.) অবমাননার অজুহাতে উগ্রপন্থীরা এ হামলা চালিয়েছে।

    ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

    এদিকে ঘটনাস্থলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সাংসদ শামসুল হক চৌধুরীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

    ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে শনিবার রাতে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবসতিতে হামলা চালিয়ে রাতভর তাণ্ডব চালায় র্ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা।

    রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলা এই হামলায় রামু উপজেলার ৭টি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয় আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে। ''
  • | 190.149.***.*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:০৬575817
  • রবিবার সন্ধ্যার ঘটনা

    বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকম থেকে

    ''কক্সবাজারে রামুতে বৌদ্ধ বসতিতে মন্দির ও ঘরবাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের পর উখিয়ার একটি বৌদ্ধ বিহারেও হামলা চালানো হয়েছে।

    রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উখিয়া উপজেলার কোটবাজার এলাকায় পশ্চিমরতœা সুদর্শন বৌদ্ধ বিহারের একটি মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।

    কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার সেলিম মো. জাহাঙ্গীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৌদ্ধ বিহারে পুলিশ ও র‌্যাবের ফোর্স পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান। ''
  • a x | 118.195.***.*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:১৭575820
  • জঘন্য ব্যাপার। একেবারে। এই সিনেমাটার পরেও তো বেশ ঝামেলা হয়েছিল বাংলাদেশে। ২০ বছর আগেও এরকম ছিল কী? কী বদলাচ্ছে?
  • sosen | 126.203.***.*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:৩৫575821
  • কেন? কেন? কোরান পোড়ানোর ছবি (যাহা কিনা আফগানিস্তানে, বেশ কিছুদিন পূর্বে ঘটিয়াছিল) তা কেউ ফেসবুকে লাগিয়েছিল। সে কক্সবাজারের একটি বৌদ্ধ ছেলে।
    তা এতে সেনসিটিভিটি তে আঘাত তো লেগেছেই। ফলে উক্ত মারপিট করার অধিকারও জন্মেছে।
    জায়েজ।
  • Blank | 69.93.***.*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:৪০575822
  • আপাতত এই অজুহাতে ভারতের কোথাও মার ধর শুরু হলে সার্কলটা পুরো শেষ হবে আর কি।
  • sosen | 126.203.***.*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২২:৪৯575823
  • হ্যা, কেন নয়? ধর্ম ধর্ম করে নাচানাচি করে , আর কোন ধর্মের কোন নরম জায়গায় কখন ছ্যাঁকা লাগছে এই ভেবে যদি সকলে দিন কাটায় তাহলে এর চেয়ে ভালো কিছু তো হবার কথাও নয়।
  • মৌ | 233.223.***.*** | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ ২৩:০৪575803
  • ফেসবুকে কোরান অপমান করায়ে কিছু, আধ্যাত্মিক চেতনা উপচে পরা, অত্যন্ত নিরীহ অতিসংবেদনশীল ধর্মানুভূতি যুক্ত, স্বর্গে যাওয়ার পাক্কা ভিজা প্রাপ্ত শান্তিপ্রিয় ব্যেক্তিরা বৌদ্ধ ধর্ম অবলম্বীদের উপর তাণ্ডব করলো। তবে যাদের উপর তাণ্ডবটি করা হল মনে হয় না সেই গরিব লোকগুলি নেট ব্যাবহার করে। তবে তা বড় কথা না। নবী'কে নিয়ে ব্যাঙ্গ হয় আমেরিকায়ে, আর আগুন জ্বলে বাড়ির পাশে।
    মাঝে মধ্যে ভাবি এই শান্তি প্রিয় মানুষগুলি যারা আগুন জ্বালিয়ে, কুপিয়ে-পুড়িয়ে শান্তি স্থাপনে উদ্যোগী, কখন, কোন সময় তাদের ব্যাটারি চার্জ হয় বোঝা মুশকিল তারাকি কোন দিন 'মুক্তমনা', 'সামু', 'নাগরিক' বা 'ধর্মকারী'তে ঢুকেছে! হয়তো ঢুকেছে। যখন ঢুকেছে তখন বোধহয় ব্যাটারিতে চার্জ ছিল না, নাকি দিন রাত বিভিন্ন বই পড়ে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে আঙুল দিয়ে টাইপ করার বদলে কাটারি চালানো বেশী সহজ...।
  • | 24.99.***.*** | ০১ অক্টোবর ২০১২ ০৭:৫০575804
  • অন্তত সচলে ঢুকেছে, ধোকার চেষ্টা করে --- এটা দেখেছি। সচলে মডারেশান খুব কড়া, তাই খুব বেশীদুর এগোতে পারে নি। উগ্র পোস্টগুলোও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
  • siki | 24.14.***.*** | ০১ অক্টোবর ২০১২ ১১:২৫575805
  • আফগানিস্তান অবধি যেতে হবে না। এই সেপ্টেম্বরের গোড়াতেই গাজিয়াবাদে সেম ঘটনা ঘটে গেছে। গাজিয়াবাদের যে অংশটা গ্রেটার নয়ডার সাথে লাগানো সেইখানে কোনও এক স্টেশনের লাইনের ধারে খিস্তি লেখা কোরানের পাতা পাওয়া যায়। নিতান্তই বেওয়ারিশ পাতা; তাই নিয়ে কদিন গাজিয়াবাদের ইন্টিরিয়র গ্রামে খুব মারমার কাটকাট হল। কার্ফু হল, গুলি চলল, ন্যাশনাল হাইওয়েতে গাড়িটাড়ি পুড়ল। কাগজে ভেতরের পাতায় রেগুলার ফলোআপ ছিল, প্রথাম পাতায় আসে নি খবরটা।
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.***.*** | ০৬ অক্টোবর ২০১২ ২০:২৮575806
  • রাঙামাটি, রামু, পটিয়া, টেকনাফ… এরপর?
    --বিপ্লব রহমান

    রাঙামাটি সহিংসতার জের মিটতে না মিটতেই কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী রাখাইন আদিবাসী অধ‌্যুষিত অঞ্চলে মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা তাণ্ডবলীলা চালিয়ে ধ্বংস করেছে অন্তত সাতটি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকানে। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকান-পাটে। হিংসার অনলে পুড়ে ছাই হয়েছে অহিংস বাণীর প্রচারক সাধু গৌতম বুদ্ধের বিহার। ভীত, সন্ত্রস্ত এখন রাখাইন জনপদ।

    ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবসতিতে হামলা চালিয়ে রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে র্ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা।

    "শনিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলা এই হামলায় রামু উপজেলার ৭টি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে।

    কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোববার সকাল থেকে রামুতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও শিল্পী মন্ত্রী দীলিপ বড়–য়া রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসছেন বলে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান।

    স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কোরআন শরিফ অবমাননা করে ছবি সংযুক্ত করার অভিযোগ এনে একটি ইসলামী দলের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করা হয় শনিবার রাত ১০টার দিকে।

    মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, রামু উপজেলার বৌদ্ধ পাড়ার উত্তম বড়ুয়া নামের এক যুবকের ফেইসবুক একাউন্টে কোরআন অবমাননাকর ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। ওই যুবককে আটকেরও দাবি জানান বক্তারা।

    সমাবেশ শেষে কিছুক্ষণ পর আবারো একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামুর বড়ুয়া পাড়ায় পৌঁছানোর পর কয়েকজন যুবক স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়।

    এরপর ওই এলাকার অন্তত ১৫টি বাড়ি, তিনটি বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙচুর হয় শতাধিক বাড়ি।''

    [লিংক- http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?id=206403&cid=2]

    ঘটনাস্থল থেকে রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজারের রাখাইন এক তরুণ বন্ধু টেলিফোনে এই লেখককে বলেন, দাদা, পুরো রাখাইন পাড়া এখন আগুনে জ্বলছে। হামলার খবর পেয়ে আমরা কয়েক বন্ধু মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে এসেছি। চারিদিকে শুধু আগুন, ধোঁয়া আর চিৎকার। …এই মাত্র চোখের সামনে রামু বৌদ্ধ মন্দিরে আগুন দেওয়া হলো।…

    জবাবে রাখাইন বন্ধুটিকে সাবধানে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া আর তেমন কিছুই বলা যায়নি। পরে এই বন্ধুটিই আগুন নিভে আসলে ধ্বংসযজ্ঞের কিছু ছবি ইমেইল করেন। মনে পড়ে যায়, এ বছর জানুয়ারিতেই টেকনাফের প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন হ্নীলা বৌদ্ধবিহার (সেনপ্রু ক্যাং) দখলের বিষয়ে সংবাদপত্রে একটি সরেজমিন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করা হয়েছিলো। সে সময়ও রাখাইন বন্ধুরা তথ্যদিয়ে যথেষ্ট সহায়তা করেছিলেন। …

    [দ্র. টেকনাফের প্রাচীন বৌদ্ধবিহার নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে- http://www.kalerkantho.com/index.php?view=details&type=gold&data=Airline&pub_no=776&cat_id=1&menu_id=14&news_type_id=1&index=3&archiev=yes&arch_date=29-01-2012]

    সকাল হতে না হতেই টিভি, অনলাইন, ফেবু ছেয়ে যায় রামু’র সংবাদে। রাখাইন বন্ধুরা ইমেইল করে পাঠান ঘটনাস্থলের কিছু তাজা ছবি। একটি ছবিতে দেখা যায়, পাথুরে ধ্যানী বুদ্ধ সৌম্য চেহারায় অবিচল। তাকে ঘিরে রেখেছিলো যে, টিনের মন্দির, সেটি অবশ্য আগুনে পুড়ে ছাই। এখনো পোড়া খুঁটি, দুমরে যাওয়া টিনের বান্ডিল থেকে ধোঁয়া উঠছে। …

    খবরে প্রকাশ রামুর ঘটনার সূত্র ধরেই হামলা হয়, চট্টগ্রামের পটিয়াতেও। সে বিষয়ে খবরে বলা হয়:

    "রামুর পর এবার পটিয়ায় হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা চালিয়েছে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা।

    পটিয়া থানার ওসি আমিনুর রশিদ জানান, রোববার বেলা ১২ টা থেকে দেড়টার মধ্যে এই হামলায় দুটি হিন্দু মন্দির ও দুটি বৌদ্ধ মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

    স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, বেলা ১২টার দিকে কয়েকশ লোক মিছিল করে লাখাড়া অভয় বৌদ্ধ বিহারে হামলা চালায় এবং আগুন দেয়।

    এরপর কোলাগাঁও রতœাঙ্কুর বৌদ্ধ বিহার, কোলাগাঁও নবারুণ সংঘ দুর্গা মন্দির ও জেলে পাড়া মাতৃ মন্দিরেও হামলা হয়।

    অভয় বৌদ্ধ বিহারের প্রাচীন বুদ্ধ মূর্তি ভাংচুর এবং নবারুণ সংঘ দুর্গা মন্দিরে দুর্গা প্রতিমাতেও আগুন দেয় হামলাকারীরা।

    ওসি বলেন, “মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (স.) অবমাননার অজুহাতে উগ্রপন্থীরা এ হামলা চালিয়েছে।

    ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।"

    [লিংক- http://bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=206420&hb=1]

    টেকনাফ থেকে রাখাইন বন্ধুরা টেলিফোনে জানান, সেখানের রাখাইনপল্লী এলাকাতেও রবিবার রাতে হামলা চালানো হয়। বৌদ্ধ মন্দিরগুলোই সন্ত্রাসী হামলার প্রধান শিকার। …সবশেষ খবরে সাম্প্রদায়ীক সন্ত্রাসের রাজনৈতিক যোগসূত্রটি স্পষ্ট ধরা পড়ে। এতে বলা হয়:

    "কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ বসতিতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ইন্ধন এবং রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ ছিল বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

    তারা বলছেন, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক জাতিগত সংঘর্ষের ঘটনায় রোহিঙ্গাদের ক্ষোভকে কাজে লগিয়েছে একটি মহল। যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের কণ্ঠে শোনা গেছে ‘নারায়ে তকবির’ শ্লোগান।"

    [লিংক - http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=206485&hb=5]

    দৃশ্যত:ই রাঙামাটির সঙ্গে রামু’র সহিংসতার প্রেক্ষাপট ও ধরণ ভিন্ন। আবার দর্শনগত দিক তলিয়ে দেখলে এর মূল ইন্ধনদাতা রাজনৈতিক শক্তি/আস্কারাটি রসুনের গোঁড়ায় অভিন্ন। মোটাদাগে, পাহাড় ও সমতলে ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর প্রশাসনিক আস্কারায় সেনা-সেটেলার-মোল্লারা এ ধরণের সহিংস আক্রমণের সাহস পাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির বিচার নেই, ভোটের মোকাম ঝলমলে রাখতেই একে জিইয়ে রাখা হয়েছে, বিএনপি/আওয়ামী লীগ/জামাত যুথবন্দী এ প্রশ্নে ["লা ইলাহা ইল্লা, নৌকার মালিক তুই আল্লাহ"]। এই আগ্রাসী জাতীয়তবাদা/মৌলবাদ আস্কারার ভিঁতটি অনেক গভীরে।

    ১৯৭২ এ সংবিধান রচনার কালে ঐতিহাসিক মুজিবীয় ["তোরা সব বাঙালি হইয়া যা"] উক্তিটি স্মরণ করা যাক। এটি উগ্র জাতীয়তাবাদী দর্শনকে ধারণ করে, যার শেকড় ফ্যাসিবাদ তথা মৌলবাদে গাঁথা [মুক্তি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে মুজিবের দুঃশাসন এবং পরবর্তী শাসকগোষ্ঠিগুলো এখনো এই দর্শনটিকেই ধারণ করে]। এর নীট ফলাফলে পাহাড় ও সমতলে ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলে গত চার দশক ধরে রক্ত ঝরছেই, আগুন জ্বলছেই।…

    মুজিবীয় উক্তিটি একই সঙ্গে অস্বীকার করে ১৯৭১ এর অসাম্প্রদায়ীক- বৈষম্যহীন দেশগড়ার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা; যে চেতনায় ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘু – সংখ্যাগুরু, আদিবাসী ও বাঙালি স্বাধীকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, বাংলা নামক ভূখন্ডের সবচেয়ে গৌরব গাঁথা মুক্তিযুদ্ধটিকেই। একারণে সে সময়ই কিংবদন্তী পাহাড়ি নেতা এমএ নলারমা বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান রচনার কালে সেখান থেকে আদিবাসী/উপজাতিদের বাদ দিয়ে শুধু “বাঙালি” জাতীয়তাবাদী ঝান্ডা ওড়ানোর প্রতিবাদ করেন। [গেরিলা নেতা এমএন লারমা http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=7209] লেখা থেকে কিছু প্রাসঙ্গিক অংশ তুলে দিলে বিষয়টি বরং আরো খানিকটা পরিস্কার হয়:

    বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের কাছে 'পাহাড়ে আঞ্চলিক স্বায়ত্ত্বশাসনের' চার দফা দাবি তুলে ধরেন। সে সময় শেখ মুজিব ঘৃণাভরে এই দাবি উপেক্ষা করেন। একই বছর ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভাষাগত সংখ্যালঘু পাহাড়িদের 'বাঙালি' বাঙালি হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রতিবাদে তিনি গণপরিষদ অধিবেশন বর্জন করেন। এ সময় এমএন লারমা তার ভাষণে বলেছিলেন:

    "বাংলাদেশের কোটি কোটি জনগণের সঙ্গে আমরা জড়িত। সবদিক দিয়েই আমরা একসঙ্গে বাস করছি। কিন্তু আমি একজন চাকমা। আমার বাপ, দাদা, চৌদ্দ পুরুষ, কেউ বলেন নাই, আমি বাঙালি!…"

    বাংলাদেশ নামক বাংলা ভাষাভাষীর রাষ্ট্রর জন্মলগ্নেই এমএন লারমা বুঝেছিলেন, আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন ছাড়া ভাষাগত সংখ্যালঘু পাহাড়ি আদিবাসীর মুক্তি নেই। তাই তিনি সেই ’৭৩ সালেই স্বতন্ত্র সাংসদ ও জনসংহতি সমিতির আহ্বায়ক হিসেবে সংসদ অধিবেশনে তুলে ধরেছিলেন পাঁচ দফা দাবি নামা। এগুলো হচ্ছে:

    … ক. আমরা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা সমেত পৃথক অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পেতে চাই। খ. আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার থাকবে, এ রকম শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন চাই। গ. আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষিত হবে, এমন শাসন ব্যবস্থা আমরা পেতে চাই। ঘ. আমাদের জমি স্বত্ব জুম চাষের জমি ও কর্ষণ যোগ্য সমতল জমির স্বত্ব সংরক্ষিত হয়, এমন শাস ব্যবস্থা আমরা পেতে চাই। ঙ. বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল হতে এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে যেনো কেহ বসতি স্থাপন করতে না পারে, তজ্জন্য শাসনতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার প্রবর্তন চাই।…"

    এ সব দাবিনামার স্বপক্ষে এমএন লারমা সংসদের তার ভাষণে বলেছিলেন:

    "…আমাদের দাবি ন্যায় সঙ্গত দাবি। বছরকে বছরকে ধরে ইহা একটি অবহেলিত শাসিত অঞ্চল ছিলো। এখন আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ পার্বত্য চট্টগ্রামকে পৃথক শাসিত অঞ্চল, অর্থাৎ আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসিত অঞ্চলে বাস্তবে পেতে চাই।…"

    কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, এমএন লারমার দাবি সে সময় চরম অবজ্ঞা করে শেখ মুজিব সরকার।

    আগেই যেমন বলা হয়েছে, মুজিবীয় ["তোরা সব বাঙালি হইয়া যা"] উক্তিটি উগ্র জাতীয়তাবাদী দর্শনটিকে ধারণ করে, যার শেকড় ফ্যাসিবাদ তথা মৌলবাদে গাঁথা [মুক্তি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে মুজিবের দুঃশাসন এবং পরবর্তী শাসকগোষ্ঠিগুলো এখনো এই দর্শনটিকেই ধারণ করে]।

    এরই জের ধরে অতি অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধটিকে বাঙালি-আদিবাসীর যৌথ মুক্তি সংগ্রামকে অস্বীকার এবং ১৯৭২ এর সংবিধানে আদিবাসী/উপজাতিকে উপেক্ষা করে; পরবর্তী সবগুলো সরকার এরই যোগসূত্রে পাহাড়ে সেনা-সেটেলার সমাবেশ ঘটায়, শান্তিবাহিনী-সেনা বাহিনী দুই দশকের বেশী সময় ধরে রক্তক্ষয়ী বন্দুক যুদ্ধ অব্যহত রাখে, পাহাড়ে অসংখ্য গণহত্যা, গণধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াও-লুন্ঠন সংগঠিত হয়, প্রায় ৬০ হাজার পাহাড়ি শরণার্থী হিসেবে ত্রিপুরায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় [দ্র. কল্পনা চাকমা : পাপ মোচনের দায় http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=16798], শান্তিচুক্তির মৌলিক শর্তসমূহ [যেমন, ভূমি সমস্যার সমাধান] বাস্তবায়িত না হওয়ায় চুক্তির পরে পার্বত্য সমস্যা আরো জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে, পাহাড়ি-বাঙালি অবিশ্বাসজনিত সংঘাত চলতে থাকে [প্রধানত ভূমিকে কেন্দ্র করেই, দ্র. পাহাড়ে কেন এত সহিংসতা? http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=5455 ]। …

    অন্যদিকে, জমিজমা-ব্যবসা-বাণিজ্য হারিয়ে এক সময়ের সমৃদ্ধশালী রাখাইনরা হতে থাকেন দেশান্তরী। [দ্র. রাখাইনরা কেন দেশ ছেড়ে যান? http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=16211 ] উত্তর বঙ্গে সাঁওতাল আদিবাসী পল্লীর মানুষজন দখলদারদের থাবায় নিঃস্ব থেকে নিঃস্বতর হন। শুধু দিনাজপুরেই প্রায় পাঁচ লাখ আদিবাসী সাঁওতাল বহু বছর ধরে এমনিভাবে জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হতে বসেছে। সবখানেই যেন চলছে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়ার মহোৎসব! এমনকি জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে সেখানে খুন, গণধর্ষণ ও সাঁওতাল নারীকে বিবস্ত্র করার একাধিক ঘটনাও ঘটেছে। আদিবাসী নেতারা এসব ঘটনার প্রতিকার দাবি করে বিভিন্ন সময় সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, ঘেরাও কর্মসূচিও পালন করেছেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। কেউ এসে দাঁড়ায়নি অসহায় মানুষগুলোর পক্ষে। [দ্র. দখলদারদের থাবায় আদিবাসীদের জমি http://www.dailykalerkantho.com/index.php?view=details&archiev=yes&arch_date=22-08-2010&type=gold&data=University&pub_no=262&cat_id=1&menu_id=14&news_type_id=1&index=1#.UHBFxZjA9Ga] অন্যদিকে, শ্রীমঙ্গলের খাসিয়া পাহাড়ে বন উজাড় করে চলে আদিবাসী উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। …

    বটম লাইনে: আদিবাসী-বাঙালি বিষয়ক সাম্প্রতিক সাংবিধানিক বিতর্কে শাসকগোষ্ঠির কাছে আপাত আদিবাসী সংগঠনগুলোর হার হওয়ায় এবং “এ দেশে কোনো আদিবাসী নেই, বাঙালিরাই আদিবাসী, উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠির মানুষেরা বহিরাগত” — হীরকরাণী ও ফুপুমনির এমন বেসামাল সরকারি কথাবার্তায়/প্রসাশানিক আস্কারায় বাঙালিদের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে আদিবাসীদের দাঁড় করানো হয়েছে। এ কারণে এখন আদিবাসীদের কাছে যে সামান্য সম্পদ, যেমন জমি, জলা, বন বা পাহাড় আছে, সেটুকুও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং আরো হবে।…
    _______________________________
    [ মূল লেখাটি মুক্তমনা ডটকম-এ প্রকাশিত। লিংক- http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=30090]
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.***.*** | ০৬ অক্টোবর ২০১২ ২০:৩৭575807
  • মুক্তমনা ডটকম-এর আরো তিনটি লেখা:
    _______________________________

    ০১. আমাদের ধর্মান্ধতা/ ম্যাক্স ইথার

    http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=30164

    ০২. ধ্বংসের মাঝে শান্তির খোঁজ/ রাজেশ তালুকদার

    http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=30107

    ০৩. বাংলাদেশ কি তবে বাংলাস্তান হতে চলল?/ সবুজ পাহাড়ের রাজা
    http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=30089
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.***.*** | ০৭ অক্টোবর ২০১২ ১৬:০০575808
  • রামুর ঘটনায় আল-জাজিরার প্রতিবেদন...
    http://www.facebook.com/photo.php?v=4642155099057
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.***.*** | ০৮ অক্টোবর ২০১২ ১৯:১৪575809
  • রামুর আগুন এবং কয়েকজন মানুষ ও মৃদু-মানুষের নড়াচড়া/ কুলদা রায়
    [লেখাটি মন্তব্যগুলো লক্ষনীয়]

    http://t.co/smB3kW3O
  • aranya | 78.38.***.*** | ০৯ অক্টোবর ২০১২ ০৭:৪৩575810
  • বাংলাদেশে পরপর দাঙ্গা-র ঘটনায় হতাশ লাগছিল খুব। মুক্তমনা-র কিছু লেখা আর মন্তব্য পড়ে একটু ভাল লাগছে - হেরে যাওয়া লড়াই, তাও যে কিছু মানুষ লড়ছেন, এইটা কোথাও একটা আশার আলো জ্বালিয়ে রাখে।

    বিপ্লব রহমান, কুলদা রায়, মুক্তমনা-র আরও সব ভাইবোনেরা, অচেনা কিন্তু বড় আপন মনে হয় যাদের - সবাইকে ভালবাসা ধর্মান্ধতা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হওয়ার জন্য।
  • aranya | 78.38.***.*** | ০৯ অক্টোবর ২০১২ ০৮:১৫575811
  • বাংলাদেশ-কে কেন এত আপন, এত বুকের কাছাকাছি মনে হয়; দাঙ্গায় একটি ঘর পুড়লে, একটি মানুষের মৃত্যু হলে মনে হয় ৭১-এ পাক মিলিটারীর বুট পরা পা আমার হৃদয়-কে থেঁতলে দিচ্ছে - এ এক রহস্য বটে। হয়ত কখনো না দেখা আমার পূর্বপুরুষের দেশ বলে, হয়ত বাংলা ভাষার জন্য, মুক্তিযুদ্ধের জন্য।

    মুক্তমনায় শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন আজাদের এই কবিতাটার উল্লেখ দেখলাম -

    যখন আমরা বসি মুখোমুখি, আমাদের দশটি আঙুল হৃৎপিন্ডের মতো কাঁপতে থাকে
    দশটি আঙুলে, আমাদের ঠোঁটের গোলাপ ভিজে ওঠে আরক্ত শিশিরে,
    যখন আমরা আশ্চর্য আঙুলে জ্বলি, যখন আমরাই পরষ্পরের স্বাধীন স্বদেশ,
    তখন ভুলেও কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা জিজ্ঞেস করো না;
    আমি তা মূহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, -তার অনেক কারণ রয়েছে।
    তোমাকে মিনতি করি কখনো আমাকে তুমি বাঙলাদেশের কথা তুলে কষ্ট দিয়ো না।
    জানতে চেয়ো না তুমি নষ্টভ্রষ্ট ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের কথা, তার রাজনীতি,
    অর্থনীতি, ধর্ম, পাপ, মিথ্যাচার, পালে পালে মনুষ্যমন্ডলি, জীবনযাপন, হত্যা, ধর্ষণ,
    মধ্যযুগের দিকে অন্ধের মতোন যাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন ক’রে আমাকে পীড়ন কোরো না;

    তার ধানক্ষেত এখনো সবুজ, নারীরা এখনো রমনীয়, গাভীরা এখনো দুগ্ধবতী,
    কিন্তু প্রিয়তমা, বাঙলাদেশের কথা তুমি কখনো আমার কাছে জানতে চেয়ো না;
    আমি তা মুহূর্তেও সহ্য করতে পারি না, তার অনেক কারণ রয়েছে।
  • aranya | 78.38.***.*** | ০৯ অক্টোবর ২০১২ ০৮:৩১575814
  • গত কাল 'গেরিলা' সিনেমাটা দেখলাম - এক নারী মুক্তিযোদ্ধার কাহিনী, অসাধারণ। ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন; অবর্ণনীয় অত্যাচার, হত্যা, ধর্ষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন দেশের সাধারণ মানুষ; হিন্দু-মুসলমান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে লড়েছিলেন ধর্মের নামে পাশবিক পীড়নের বিরুদ্ধে - যে লড়াই থেকে জন্ম নিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ।
    তাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমাদের সীমাহীন প্রত্যাশা ..
  • aranya | 78.38.***.*** | ০৯ অক্টোবর ২০১২ ০৮:৫১575815
  • দ, আপনার লিঙ্ক থেকে সচলায়তনের প্রথম দুটো লেখা পড়লাম - হাসান মুর্শেদ আর অরফিয়াসের। অরফিয়াস ঠিকই বলেছেন - বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের উদাহরণ, দাঙ্গা নয়।
    এই লেখাগুলো পড়লে আশা জাগে, এখনও হয়ত সব শেষ হয়ে যায় নি।
    মুক্তমনা, সচলায়তন -এর মত সাইটগুলো আমাদের গর্ব।
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.***.*** | ১৯ অক্টোবর ২০১২ ১৮:০৮575816
  • ভূতেরাই এখন সর্ষের চাষ করছে!
    বিপ্লব রহমান
    __________________________________
    ০১. যতোই দিন যাচ্ছে বেরিয়ে আসছে কেঁচো, সাপ এবং অ্যানাকোন্ডা। দৃশ্যত:ই রাঙামাটির সঙ্গে রামু’র সহিংসতার প্রেক্ষাপট ও ধরণ ভিন্ন। আবার দর্শনগত দিক তলিয়ে দেখলে এর মূল ইন্ধনদাতা রাজনৈতিক শক্তি/আস্কারাটির রসুনের গোঁড়া অভিন্ন।

    খবরে প্রকাশ, রামুর বৌদ্ধ জনপদে হামলায় জোরালো ও মূল ভূমিকা রাখে জামায়াতে ইসলামী। তারা কৌশলে ব্যবহার করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। আর ওই তাণ্ডব চালাতে টাকাপয়সার জোগান দেয় রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরএসওসহ কয়েকটি এনজিও। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনার পূর্বাভাস পেলেও তাতে গুরুত্ব দেয়নি। পুলিশসহ বিভিন্ন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিল সমন্বয়ের মারাত্মক অভাব। গোয়েন্দারাও ছিলেন চুপচাপ। দলগুলোর কেন্দ্রীয় ঘোষণাপত্রে/নির্বচনী প্রতিশ্রুতি অসাম্প্রদায়ীক/বৈষম্যহীন/সকল ধর্মের সমান অধিকার প্রভৃতি যতো ভালো ভালো কথাই লেখা থাকুক না কেনো, রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় তৃণমূলে ঠিকই ধরা পড়েছে অন্তদর্শনের ভয়াল দন্ত-নখর। [দ্র. দৈনিক কালের কণ্ঠ, ১৯ অক্টোবর ২০১২]

    আবার রাঙামাটিতে আদিবাসী পাহাড়িদের ওপর সহিংস হামলাটি সরাসরি সেনা-পুলিশ উপস্থিতিতে অভিবাসিত বাঙালি সেটেলার হামলা হয়েছে। সে সময় দলমত নির্বিশেষে "বাঙালি" পরিচয়ে গর্বিত সংখ্যাগুরুরাই হামলা পরিচালনা করে ও নেতৃত্ব দেয়। হামলাকারীদের অন্যসব রাজনৈতিক পরিচয় মুছে গিয়ে একটি পরিচয়ই প্রধান হয়ে দাঁড়ায় -- "বাঙালি" ও "মুসলমান" [নারায়ে তাকবির!]

    সংক্ষেপে, পাহাড় ও সমতলে ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর প্রশাসনিক আস্কারায় দলমত মিলেমিশে সন্ত্রাসী চেহারায় এ ধরণের সহিংস আক্রমণের সাহস পাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে বটে, কিন্তু ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির বিচার নেই; ভোটের মোকাম ঝলমলে রাখতেই একে জিইয়ে রাখা হয়েছে, বিএনপি/আওয়ামী লীগ/জামাত যুথবন্দী এ সব গুরুতর হামলা এবং এ সংক্রান্ত ঐক্যের প্রশ্নে ["লা ইলাহা ইল্লা, নৌকার মালিক তুই আল্লাহ"]।

    এই আগ্রাসী উগ্র জাতীয়তবাদ/মৌলবাদ আস্কারার ভিঁতটি অনেক গভীরে। এই দর্শন বলেই সবক’টি বড় রাজনৈতিক দল [এবং তাদের গঠিত সরকারসমূহ] ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পীড়ন করে, কখনো "বৈষম্যহীন" বা "অসাম্প্রদায়িক" গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি ["ভাবমূর্তি" কথাটি এদের খুবই প্রিয়] ঠিক রাখতে তারা আবার নির্যাতীতর মাথায় হাত্ও বুলায়; বৌদ্ধ পুরোহিতদের চিবর দান করে বা মন্দিরে ছদকা দেয় বা দূগোৎসবে হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেয় টিভিতে-খবরের কাগজে বা “এ সরকারের সময়েই শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে [ইনশাল্লাহ]” জাতীয় বোলচাল দিতে থাকে অহরাত্র ।…

    ০২. ১৯৭২ এ সংবিধান রচনার কালে ঐতিহাসিক মুজিবীয় ["তোরা সব বাঙালি হইয়া যা"] উক্তিটি স্মরণ করা যাক। এটি উগ্র জাতীয়তাবাদী দর্শনকে ধারণ করে, যার শেকড় ফ্যাসিবাদ তথা মৌলবাদে গাঁথা [মুক্তি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে মুজিবের দুঃশাসন এবং পরবর্তী শাসকগোষ্ঠিগুলো এখনো এই দর্শনটিকেই ধারণ করে]।

    মুজিবীয় ওই উক্তিটি আবার একই সঙ্গে অস্বীকার করে ১৯৭১ এর অসাম্প্রদায়ীক- বৈষম্যহীন দেশগড়ার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা; যে চেতনায় ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘু – সংখ্যাগুরু, আদিবাসী ও বাঙালি স্বাধীকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, বাংলা নামক ভূখন্ডের সবচেয়ে গৌরব গাঁথা মুক্তিযুদ্ধটিকেই। এ কারণে সে সময়ই কিংবদন্তী পাহাড়ি নেতা এমএ নলারমা বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান রচনার কালে সেখান থেকে আদিবাসী/উপজাতিদের বাদ দিয়ে শুধু "বাঙালি" জাতীয়তাবাদী ঝান্ডা ওড়ানোর প্রতিবাদ করেন।

    ৬০ দশকে কাপ্তাই জলবিদ্যুত নির্মাণে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পানিতে তলিয়ে দিয়ে ও প্রায় এক লাখ মানুষকে উদ্বাস্তু বানানো, ১৯৭১-৭২ সালে কতিপয় বিপথগামী মুক্তিযোদ্ধা ও বিডিআর-এর পাহাড়ে চালানো হত্যাযজ্ঞ [এখন বিজিবি] এবং মুজিবের ["তোরা সব বাঙালি হইয়া যা"] নাকচের পর এমএন লারমা বাকশালে যোগদানের ঐতিহাসিক ভুলটুকু শুধরে নিয়ে বাকশাল সরকারের চরম স্বৈর শাসনের বিরুদ্ধেই সংগঠিত করেন গেরিলা গ্রুপ শান্তি বাহিনী; এই গ্রুপের গেরিলা যুদ্ধ চলে প্রায় আড়াই দশক। [সংবিধানে "বাঙালি" জনিত প্রেক্ষাপটটি এখনো অব্যহত থাকায় ভিন্ন মাত্রায় প্রতিবাদটি চলছেই]।

    ["তোরা সব বাঙালি হইয়া যা"] দর্শন বলেই জে. জিয়া পাহাড়ে সেটেলার বন্যার খোয়াব দেখেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বানান -- আ ল্যান্ড অব দা প্যারেড গ্রাউন্ড ["মানি ইজ নো প্রবলেম"], এরশাদ এবং খালেদা-হাসিনা-খালেদা-মইন/ফখরুদ্দীন-হাসিনা একই ধারাবাহিকতায় খোয়াবের সফল বাস্তবায়ন করে চলেন। এর নীট ফলাফল অতি অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধটিকে বাঙালি-আদিবাসীর যৌথ মুক্তি সংগ্রামকে অস্বীকার, ১৯৭২ এর সংবিধানে আদিবাসী/উপজাতিকে উপেক্ষা [দ্র. গেরিলা নেতা এমএন লারমা ], জেনারেল জিয়া-এরশাদ-খালেদা-হাসিনা-খালেদা-মইন+ফখরুদ্দীন-হাসিনার সরকার আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে সেটেলার বাঙালি-সামরিক জান্তার পাকিপনার ভূখন্ডে পরিনত করা; তারই জের টেনে শান্তিচুক্তি পূর্ব পাহাড়ি জনপদে অন্তত ১৩ টি বড় ধরণের গণহত্যা, বাস্তভিটা থেকে উচ্ছেদ করে প্রায় ৬০ হাজার পাহাড়ি শরণার্থীকে এবং শান্তিচুক্তি পরবর্তীতে গত দেড় দশকে সংগঠিত হয় অন্তত ১৪ টি সহিংস হামলা [আলোচ্য রাঙামাটি সহিংসতার ঘটনাও কী তার সাক্ষ্য দেয় না?] এই প্রেক্ষাপটেই পাহাড় ও সমতলে ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলে গত চার দশক ধরে রক্ত ঝরছেই, আগুন জ্বলছেই। অন্যদিকে, ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়ীক চেতনা [এমনকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পাইহারি বিক্রেতা আ'লীগের] সংশোধিত সংবিধান এখন পরিনত হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা+বিসমিল্লাহসহ গজকচ্ছপ সুন্নাহর দলিলে। …

    ০৩. পাহাড়ে এমএন লারমার [পরে সন্তু লারমা] আড়াই দশক শান্তিবাহীর গেরিলা যুদ্ধ চালানোর পরে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি হয়। তবে দৃশ্যত শান্তিচুক্তির মৌলিক শর্তসমূহ [যেমন, ভূমির বিরোধ নিস্পত্তি, পার্বত্য জেলা ও আঞ্চলিক পরিষদকে শক্তিশালীকরণ, অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন] বাস্তাবায়িত না হওয়ার সুযোগে এবং ইতিহাসের লীলায় সেখানে সেনা – অভিবাসিত বাঙালি [সেটেলার] রাজ্য শান্তিচুক্তি-পূর্ব অবস্থার মতোই চলতে থাকে। সংখ্যাগুরুর ভোটের হিসেব ঠিক রাখতে সরকারগুলোর প্রত্যক্ষ আস্কারায় পাহাড়ে সেনা-সেটেলার পাকিপনা জেঁকে বসে; সেখানে গড়ে ওঠে রাষ্ট্রের ভেতর আরেক সেনা-সেটেলার-সম অধিকারের [আসলে সংখ্যাগুরু জাতীয়তবাদ ও মৌলবাদে সেনা-বিএনপি/জামাত/এমন কি আ'লীগেরও] তালেবানী রাষ্ট্র।…

    ০৪. " সাজেদা চৌধুরীর দাবি, আগে পাহাড়িরা ভালো ছিল। তেমন কিছু বুঝত না। ওদের টাকা দিয়ে, নানা প্রলোভন দেখাচ্ছে বিদেশিরা।" [দ্র. বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ২ অক্টোবর ২০১২]

    উগ্র জাত্যাভিমানের ঝাণ্ডাধারী আওয়ামী স্কুলিং-এর আচরণগত বহিঃপ্রকাশ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর এই কাণ্ডজ্ঞানহীন অশালীন উক্তি [তোরা সবাই বাঙালি হইয়া যা: শেখ মুজিব, ১৯৭২। বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই/বাঙালিরাই আদিবাসী/উপজাতিরা বহিরাগত: দীপু মনি, ২০১১; দ্র. বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ২৬ জুলাই ২০১১]।

    স্মরণ করা ভালো, বিগত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সরাসরি অবস্থান নিয়েছিলেন আদিবাসীদের বিপক্ষে। ২০০৩-০৪ সালে গণবিরোধী ইকো-পার্ক প্রতিরোধ আন্দোলনে গর্জে উঠেছিলো মধুপুরের শালবন এবং মৌলভীবাজার-কুলাউড়ার খাসিয়া পাহাড়। সে সময় আদিবাসীর প্রাণের দাবি উপেক্ষা করে সৈয়দা সাজেদা খাসিয়া পাহাড়ে ইকো-পার্ক প্রকল্প উদ্বোধন করতে চাইলে আদিবাসীরা তাকে কালো পতাকা দেখিয়ে ধাওয়া করে। পিরেন স্নালের তাজা রক্তে রুখে দেওয়া হয় ইকো-পার্ক।

    ইতিহাসের লীলায় আদিবাসীদের গণশত্রু সৈয়দা সাজেদাই এখন আবার পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক! তিনিও আওয়ামী-ছেলে ভুলানো বুলিটি অহরাত্র আউড়ে চলেছেন: "সরকার পার্বত্য এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকার যে কোনো মূল্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা চুক্তি বাস্তবায়নের সকল বাধা দূর করতে চাই।"

    এ যেনো নরুণ পড়েছে বানরের হাতে! অথবা ভুতেরাই এখন সর্ষের চাষ করছে!

    ০৫. বটম লাইনে: এ অবস্থায় রাজনৈতিক শক্তির উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধমীয় মৌলবাদী চেতনার জরুরি অস্ত্রপচার ছাড়া ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘুর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান আদৌ সম্ভব নয়; এটিই হচ্ছে প্রকৃত বাস্তবতা ["আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম"]। একে অস্বীকার করার অর্থ হবে “চোখ বুজে চড়ুই ধরার” মতোই একটি নিস্ফল চেষ্টা মাত্র, যা প্রকৃত সত্যকে অনেকাংশেই আড়াল করে, দীর্ঘ বিভ্রান্তিতে আচ্ছন্ন করে আম-জনতাকে। রাজনৈতিক শক্তিমত্তার এ হেন হীন উগ্র/মৌলবাদীতার বাইরেই বাঙালি-আদিবাসী-বাংলাদেশী এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-মুসলিম হাজার হাজার বছর ধরে সহাবস্থান করছে, [পাক সার জমিন সাদ বাদের] প্রবল আপত্তি স্বত্ত্বেও। ...

    http://unmochon.net/node/1851
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন