এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে: কানকুন

    Zzzz
    অন্যান্য | ২১ এপ্রিল ২০১২ | ৭৮৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Zzzz | 99.228.***.*** | ২১ এপ্রিল ২০১২ ০৯:৩৫543464
  • উঠল বাই তো কানকুন যাই

    বাঙ্গালিদের মধ্যে কথাই আছে 'উঠল বাই তো কটক যাই' - আমাদের ক্ষেত্রে সেটা হয়ে দাঁড়ালো 'উঠল বাই তো কানকুন যাই'। কথা ছিল এবারে দেশে যাওয়ার কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেটা কোনও কারনে বাতিল হওয়ায় ঠিক করা হল দিন সাতেকের জন্য কোথাও যাওয়ার। কিন্তু সেটা অফিসের কল্যানে সাত দিন কেটে হল পাঁচ দিন। এবারে শুরু হোল খোঁজার পালা পাঁচ দিনের জন্য কোথায় যাওয়া যায় যেখানে আমরা একটু রিল্যাক্স করতে পারব আর ছানা দুটো মজা করতে পারবে। আবার পকেটের দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে যাতে এখন বেশী খসে পরে হাতে হারিকেন না হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, আবার লং ফ্লাইট হলেও হবে না কারণ ছানাদুটো তাহলে ঝামেলা শুরু করবে। তো দেখা গেলো মোটামুটি এই সব ক্রাইটেরিয়া মিট করে মোটামুটি হাতে গোনা কয়েকটা জায়গা। এবারে খোঁজার পালা অল ইনক্লুসিভ ডিলের - মানে যেটাতে পকেটও বাঁচবে আবার মোটামুটি একটা পুষ্টিকর ছুটিও হবে। তো এই সময়ে আবার একটা বোমা - অফিসে মিটিং, ফিরতে হবে ৭ই ডিসেম্বরের আগে - আর এটা জানা গেল কখন? না ২৯শে নভেম্বর! বোমার রেজাল্ট দাঁড়ালো এই যে আমাদের ১ তারিখেই বেরোতে হবে। অতএব পুউউরো 'রান ফরেস্ট রান'-এর কায়দায় সার্চ শুরু হল আর থামলো ৩০ তারিখ দুপুরে বুকিং শেষে। আর গোছগাছের কথা যত কম বলা যায় তত ভালো - মানে গোছানো হল শুধু বাচ্ছাদের ব্যাগ আর আমাদের জিনিষপত্র কোনোরকমে দলা পাকিয়ে ব্যাগের এক কোনায় ছুঁড়ে ফেলা। সব কিছুর শেষে রাত ১১টার সময় আবিষ্কৃত হল মেয়ে তখনও ঘুমতে যাননি - অবিশ্যি সেটা নতুন কিছু নয়। যাই হোক, পরের দিন যেহেতু ভোরবেলায় উঠতে হবে তাই কোনোরকমে বাবা-বাছা করে, দেখ ভাই কখন ঘুমিয়ে পড়েছে - এই সব টুপিটাপা দিয়ে তেনাকে শোয়ানো হল যখন তখন অলরেডি ঘড়ির কাঁটা ১২টার ঘর ছাড়িয়ে গেছে।

    ১ তারিখ সকাল ৬টায় অ্যালার্ম লাগিয়ে সাড়ে সাতটায় উঠে ছানাদুটোকে রেডি করে কোনোরকমে তাড়াহুড়ো করে বেরনো হল যখন তখন ঘড়ির কাঁটা সাড়ে আটটা দেখাচ্ছে - ফ্লাইট দশটায়। যাই হোক, ন'টার মধ্যে ভ্যালে পার্কিং-য়ে গাড়ি রেখে এয়ারপোর্টে পৌঁছে লাগেজ জমা করে, সিকিউরিটির ঝামেলা মিটিয়ে একটু যখন দম নিতে পারলাম, দেখলাম ফ্লাইটে বসে আছি। ভাবলাম তিন-সাড়ে তিন ঘন্টার ফ্লাইট, ঐটুকু জায়গার মধ্যে ছানাদুটো কত আর দুষ্টুমি করবে, একটু পরে বোর হয়ে ঘুমিয়ে পড়বে - তখন আমরা দুজনেও টুক করে একটু চোখ বুঁজিয়ে নেব। কিন্তু ঐ যে অভাগা যেদিকে যায়, হা হতোস্মি ইত্যাদি প্রভৃতি। দুটোতে মিলে যে বদমায়েশি শুরু করল আর তার সঙ্গে আরো বাকি বাচ্ছাদের ক্যালোরব্যালোর মিলে প্লেনের মধ্যেই যে সার্কাস শুরু হল তাতে মনে হচ্ছিল আর কানকুন গিয়ে কাজ নেই, মাঝপাথেই পিঠে প্যারাসুট বেঁধে ঝাঁপ মারি। একটু পরে এল শ্যাম্পেন, মুখে দিয়ে মনে হল সস্তার হোয়াইট ওয়াইন, পাশের জনকে বলতে শোনা হল যে টাকা দিয়ে যাচ্ছি তাতে জল দিলেও সেটাকে শ্যাম্পেন মনে করে পেটে চালান করা উচিৎ। অগত্যা। সব মিলিয়ে যখন মোটামুটি ঠিক করেই ফেলেছি কেবিন ক্রু-দের কাছে প্যারাসুট চেয়েই ফেলব এবার, দৈববাণীর মত অ্যানাউন্সমেন্ট হল আর আধঘন্টার মধ্যে প্লেন কানকুন এয়ারপোর্টে নামবে। ওহ! কি শান্তি। আর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হল কিছু যাত্রীর জামাকাপড় বদলানোর ধুম। মনে হচ্ছিল প্লেনের ল্যান্ডিং গীয়ারের সঙ্গেই তেনারা ক্যারিবিয়ানে ঝাঁপ মারবেন, আর পোর্টে ল্যান্ড করবেন না। যাইহোক কোনোরকমে ইমিগ্রেশন সেরে বাইরে বেরতেই সুন্দর হাওয়ায় প্রাণ জুড়িয়ে গেল। কোথায় -১৫ আর কোথায় ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আপাতত অপেক্ষার পালা। ট্যুর অপারেটর নাম আর হোটেল মিলিয়ে মিলিয়ে প্রত্যেককে নির্দিষ্ট বাস বা গাড়িতে তুলতে শুরু করল। আমরা ৬ মাসের বাচ্ছাসহ অন্য একটা পরিবারের সঙ্গে গাড়ি শেয়ার করলাম যেহেতু আমাদের গন্তব্য একই হোটেল। সেখানে পৌঁছে আর এক কেলো (এ আর নতুন কি)। যেহেতু আমরা লাস্ট মিনিট বুকিং করেছি, হোটেলে এখনো আমাদের বুকিং কনফার্মেশন এসে পৌঁছায়নি। আধঘন্টা পরে সেসব ঝামেলা মিটিয়ে ঘরে ঢুকে ব্যালকনি থেকে ক্যারিবিয়ানের নীল জল দেখে দুচোখ জুড়িয়ে গেল। আহা এত কষ্ট করে আসা সার্থক।
  • kiki | 59.93.***.*** | ২১ এপ্রিল ২০১২ ১২:৩২543471
  • আহা!!!!
  • Nim | 72.89.***.*** | ২৪ এপ্রিল ২০১২ ০৫:৫৪543473
  • :P
  • Nim | 72.89.***.*** | ২৪ এপ্রিল ২০১২ ০৫:৫৪543472
  • লোকজন সবার সামনেই জামাকাপড় ছাড়তে শুরু করলো, হেবি আধুনিক তো!
  • Biplab Pal | 68.33.***.*** | ২৮ এপ্রিল ২০১২ ১০:১১543474
  • তিন বছর আগে গিয়েছিলাম। সব থেকে ভাল লাগত সমুদ্রের লাগোয়া সুইমিংপুলের বার। গরমে, সাতার কেটে পুলেই বার। জলে গলা ডুবিয়ে যত খুশী মাল খাও। আর বিকিনি পড়া সখীদের দেখ। সন্ধ্যাতে বিচে বারবিকিউ পার্টি। তারপরে স্থানীয় লোকনৃত্য। যেটা সব থেকে ভাল লেগেছিল সেটা হচ্ছে সরকারি আইনে স্থানীয় লোকেদের ফাইভ স্টার হোটেলে ঢুকে বেচতে দেওয়ার অধিকার। ঐ সব ফাইভ স্টার রিসর্টে স্থানীয় লোকেরা একটা জায়গাতে পসরা নিয়ে বসতে পারে। স্থানীয় কুটির শিল্প বিক্রী করে। সরকারি আইন। আমাদের দেশে এসব কেনযে করে না। সবাই নাকি গরীবের সরকার-সব শালা মেকি বামপন্থী। সেই দিক দিয়ে মেক্সিকো একটা সত্যিকারের বামপন্থী রাষ্ট্র। টুর বাসগুলো কোয়াপরেটিভ চালায়। গাইড নিতে হয় কোয়াপরেটিভ থেকে। অনেক কিছুই দেখেছিলাম, যা ভারতে দিব্যি চালানো যায়।

    ভাবছি আবার যাব এবছর। টাইম পেলেই।
  • pi | 72.83.***.*** | ২৮ এপ্রিল ২০১২ ১৯:২৪543475
  • Zzzz কি ঘুমিয়ে পড়ল ?
  • সোসেন | 24.139.***.*** | ০৮ মে ২০১২ ১৬:০৮543476
  • তাপ্পর, তাপ্পর?
  • kiki | 69.93.***.*** | ০৯ মে ২০১২ ০৭:১১543477
  • জ্জ্জ্জ্জ কি আর লিখবো না? হাঁ করে বসে আছি তো!
  • Zzzz | 109.227.***.*** | ১১ মে ২০১২ ০০:৫৫543478
  • প্রথম দেখার ভালোলাগার ঘোর কাটতে বুঝতে পারলাম জলের নীল রঙ দেখে যত না চোখ জুড়িয়ে আসছিল তার থেকে অনেক বেশী জুড়িয়ে আসছিল ঘুমে। যেহেতু সকাল থেকে পেটে বিশেষ কিছু পড়েনি (প্লেনে পাস্তা দিয়েছিল কিন্তু খাওয়া

    যায়নি)তাই তাড়াতাড়ি সবার জন্য ফাহিতা নিয়ে বারান্দায় বসা গেল। সত্যি কথা বলতে কি বসতে ইচ্ছে একেবারেই করছিল না কিন্তু ছানাদুটো একটু ঘুমোতে দিলে তো!! যাই হোক, জামাকাপড় বদলে নীচে নামলাম রেসর্টটা ঘুরে দেখতে। ওহ

    যেটা বলতে ভুলে গেছিলাম, রেসর্টে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েলকাম ড্রিংক দেয় কিন্তু সঙ্গের লোকটি না বলায় আমাকেও হাতে অরেঞ্জ জ্যুস ধরিয়ে দিয়েছিল। তো নিচে নেমে প্রথমেই সেটাকে পুষিয়ে দেওয়া গেল। আসার আগে ট্রিপঅ্যাডভাইসারের

    সাইটে দেখেছিলাম যে এই রেসর্টটা যারা বাচ্ছা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য খুবই ভালো। হোটেল কনসিয়ার্জ-কে বাচ্ছাদের জন্য কি আছে জিজ্ঞেস করায় বলল চার বছর পর্যন্ত বাচ্ছাদের জন্য ডে কেয়ার আছে আর চার বছরের ওপরে আছে

    কিডস্‌ জোন। গেলাম ডে কেয়ার দেখতে। তা ভালোই ব্যবস্থা। ছানাদুটো আরো বাচ্ছাকাচ্ছা আর তার চেয়েও বেশী খেলনা দেখে সেঁটে গেল সেখানে। এদের একটা জিনিষ ভাল লাগলো, বাচ্ছা ডে কেয়ারে থাকলে সেখান থেকে হাতে একটা পেজার

    ধরিয়ে দেওয়া হয় যাতে বাচ্ছার কোনো অসুবিধে হলে বা বেশী কান্নাকাটি করলে বাবা-মাকে সঙ্গে সঙ্গে ডাকতে পারে। এর জন্য বাচ্ছা যতক্ষণ ডে কেয়ারে থাকবে, বাবা মা রেসর্টের বাইরে বেরতে পারবে না। তা ভালো। আমরা দুজনে এট্টুস

    ঝাড়া হাত-পা হয়ে রুমে এসে জামাকাপড় ছেড়ে পুলের ধারে দেহ রাখলাম। বর গেল পুল সাইড বার থেকে কিছু স্ন্যাক্সের জোগাড় করতে। এই সময় এক দেশীয় বাবুর আবির্ভাব। ফুল শার্ট, প্যান্ট, বুটজুতো - অফিস যাওয়ার জন্য তৈরি।

    চারিদিকের লোকজনের প্রতি তাচ্ছিল্যের দৃষ্টি হানতে হানতে চলে গেলেন - স্যুইম স্যুট পরা আমা হেন দেশীয় বালিকার প্রতি দৃষ্টিটা যে একটু বেশিই তাচ্ছিল্যের ছিল তা বলাই বাহুল্য। এরকম আর এক বাবুকে পরের দিন পেয়েছিলাম যিনি পুলের

    ধারে গুছিয়ে বই-খাতাপত্র নিয়ে বসে পড়াশুনো করছিলেন (তা করুন, আপত্তি নেই - কিন্তু তার জন্য পুলের ধারে কেন? ঘরে বসে বা আরো ভাল ল্যাব বা লাইব্রেরীতে বসে করলেই হয়)। সমুদ্র থেকে আসা সুন্দর হাওয়া, ভরা পেট - সব

    মিলিয়ে চোখ বন্ধ হয়ে এল। প্রথম দিন বলে বাচ্ছাদের আর পুলে নামালাম না, নিজেরাই নামলাম। কিছুক্ষণ সাঁতার কেটে যখন খিদেটা বেশ জাঁকিয়ে এসেছে, তখন গেলাম ছানাদের নিয়ে লাঞ্চ করতে। বাফে লাঞ্চ, যার যা ইচ্ছে, যত ইচ্ছে খাও।

    এই একটা সুবিধে অল ইনক্লুসিভ ডিলের - যত খুশী খাও, পান কর পকেটের চিন্তা না করে। আমাদের দুজনের কেউ-ই পানাসক্ত না হলেও (আমার মাঝে সাঝে যাও বা চলে অন্য জন তো একেবারেই না না) ভোজনাসক্ত তো বটেই। চুটিয়ে

    লাঞ্চ করে গেলাম সমুদ্রের ধারে। ইচ্ছে ছিল জলে নামার কিন্তু ছানাদুটোই ঢেউ দেখেই এত ভয় পেয়ে গেল যে আর নামা হল না। নীল জল আর সাদা বালি - প্রাণ মন ভরিয়ে দেয়। মনে হয় এখানেই বসে থাকি অনন্তকাল ধরে সব কিছু ভুলে।
  • Zzzz | 109.227.***.*** | ১১ মে ২০১২ ০০:৫৬543466
  • প্রথম দেখার ভালোলাগার ঘোর কাটতে বুঝতে পারলাম জলের নীল রঙ দেখে যত না চোখ জুড়িয়ে আসছিল তার থেকে অনেক বেশী জুড়িয়ে আসছিল ঘুমে। যেহেতু সকাল থেকে পেটে বিশেষ কিছু পড়েনি (প্লেনে পাস্তা দিয়েছিল কিন্তু খাওয়া

    যায়নি)তাই তাড়াতাড়ি সবার জন্য ফাহিতা নিয়ে বারান্দায় বসা গেল। সত্যি কথা বলতে কি বসতে ইচ্ছে একেবারেই করছিল না কিন্তু ছানাদুটো একটু ঘুমোতে দিলে তো!! যাই হোক, জামাকাপড় বদলে নীচে নামলাম রেসর্টটা ঘুরে দেখতে। ওহ

    যেটা বলতে ভুলে গেছিলাম, রেসর্টে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েলকাম ড্রিংক দেয় কিন্তু সঙ্গের লোকটি না বলায় আমাকেও হাতে অরেঞ্জ জ্যুস ধরিয়ে দিয়েছিল। তো নিচে নেমে প্রথমেই সেটাকে পুষিয়ে দেওয়া গেল। আসার আগে ট্রিপঅ্যাডভাইসারের

    সাইটে দেখেছিলাম যে এই রেসর্টটা যারা বাচ্ছা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য খুবই ভালো। হোটেল কনসিয়ার্জ-কে বাচ্ছাদের জন্য কি আছে জিজ্ঞেস করায় বলল চার বছর পর্যন্ত বাচ্ছাদের জন্য ডে কেয়ার আছে আর চার বছরের ওপরে আছে

    কিডস্‌ জোন। গেলাম ডে কেয়ার দেখতে। তা ভালোই ব্যবস্থা। ছানাদুটো আরো বাচ্ছাকাচ্ছা আর তার চেয়েও বেশী খেলনা দেখে সেঁটে গেল সেখানে। এদের একটা জিনিষ ভাল লাগলো, বাচ্ছা ডে কেয়ারে থাকলে সেখান থেকে হাতে একটা পেজার

    ধরিয়ে দেওয়া হয় যাতে বাচ্ছার কোনো অসুবিধে হলে বা বেশী কান্নাকাটি করলে বাবা-মাকে সঙ্গে সঙ্গে ডাকতে পারে। এর জন্য বাচ্ছা যতক্ষণ ডে কেয়ারে থাকবে, বাবা মা রেসর্টের বাইরে বেরতে পারবে না। তা ভালো। আমরা দুজনে এট্টুস

    ঝাড়া হাত-পা হয়ে রুমে এসে জামাকাপড় ছেড়ে পুলের ধারে দেহ রাখলাম। বর গেল পুল সাইড বার থেকে কিছু স্ন্যাক্সের জোগাড় করতে। এই সময় এক দেশীয় বাবুর আবির্ভাব। ফুল শার্ট, প্যান্ট, বুটজুতো - অফিস যাওয়ার জন্য তৈরি।

    চারিদিকের লোকজনের প্রতি তাচ্ছিল্যের দৃষ্টি হানতে হানতে চলে গেলেন - স্যুইম স্যুট পরা আমা হেন দেশীয় বালিকার প্রতি দৃষ্টিটা যে একটু বেশিই তাচ্ছিল্যের ছিল তা বলাই বাহুল্য। এরকম আর এক বাবুকে পরের দিন পেয়েছিলাম যিনি পুলের

    ধারে গুছিয়ে বই-খাতাপত্র নিয়ে বসে পড়াশুনো করছিলেন (তা করুন, আপত্তি নেই - কিন্তু তার জন্য পুলের ধারে কেন? ঘরে বসে বা আরো ভাল ল্যাব বা লাইব্রেরীতে বসে করলেই হয়)। সমুদ্র থেকে আসা সুন্দর হাওয়া, ভরা পেট - সব

    মিলিয়ে চোখ বন্ধ হয়ে এল। প্রথম দিন বলে বাচ্ছাদের আর পুলে নামালাম না, নিজেরাই নামলাম। কিছুক্ষণ সাঁতার কেটে যখন খিদেটা বেশ জাঁকিয়ে এসেছে, তখন গেলাম ছানাদের নিয়ে লাঞ্চ করতে। বাফে লাঞ্চ, যার যা ইচ্ছে, যত ইচ্ছে খাও।

    এই একটা সুবিধে অল ইনক্লুসিভ ডিলের - যত খুশী খাও, পান কর পকেটের চিন্তা না করে। আমাদের দুজনের কেউ-ই পানাসক্ত না হলেও (আমার মাঝে সাঝে যাও বা চলে অন্য জন তো একেবারেই না না) ভোজনাসক্ত তো বটেই। চুটিয়ে

    লাঞ্চ করে গেলাম সমুদ্রের ধারে। ইচ্ছে ছিল জলে নামার কিন্তু ছানাদুটোই ঢেউ দেখেই এত ভয় পেয়ে গেল যে আর নামা হল না। নীল জল আর সাদা বালি - প্রাণ মন ভরিয়ে দেয়। মনে হয় এখানেই বসে থাকি অনন্তকাল ধরে সব কিছু ভুলে।
  • Zzzz | 109.227.***.*** | ১১ মে ২০১২ ০০:৫৬543465
  • যা কপি পেস্ট করতে এরকম হয়ে গেল কেন????
  • Zzzz | 109.227.***.*** | ১১ মে ২০১২ ০০:৫৮543468
  • প্রথম দেখার ভালোলাগার ঘোর কাটতে বুঝতে পারলাম জলের নীল রঙ দেখে যত না চোখ জুড়িয়ে আসছিল তার থেকে অনেক বেশী জুড়িয়ে আসছিল ঘুমে। যেহেতু সকাল থেকে পেটে বিশেষ কিছু পড়েনি (প্লেনে পাস্তা দিয়েছিল কিন্তু খাওয়া যায়নি)তাই তাড়াতাড়ি সবার জন্য ফাহিতা নিয়ে বারান্দায় বসা গেল। সত্যি কথা বলতে কি বসতে ইচ্ছে একেবারেই করছিল না কিন্তু ছানাদুটো একটু ঘুমোতে দিলে তো!! যাই হোক, জামাকাপড় বদলে নীচে নামলাম রেসর্টটা ঘুরে দেখতে। ওহ যেটা বলতে ভুলে গেছিলাম, রেসর্টে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েলকাম ড্রিংক দেয় কিন্তু সঙ্গের লোকটি না বলায় আমাকেও হাতে অরেঞ্জ জ্যুস ধরিয়ে দিয়েছিল। তো নিচে নেমে প্রথমেই সেটাকে পুষিয়ে দেওয়া গেল। আসার আগে ট্রিপঅ্যাডভাইসারের সাইটে দেখেছিলাম যে এই রেসর্টটা যারা বাচ্ছা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য খুবই ভালো। হোটেল কনসিয়ার্জ-কে বাচ্ছাদের জন্য কি আছে জিজ্ঞেস করায় বলল চার বছর পর্যন্ত বাচ্ছাদের জন্য ডে কেয়ার আছে আর চার বছরের ওপরে আছে কিডস্‌ জোন। গেলাম ডে কেয়ার দেখতে। তা ভালোই ব্যবস্থা। ছানাদুটো আরো বাচ্ছাকাচ্ছা আর তার চেয়েও বেশী খেলনা দেখে সেঁটে গেল সেখানে। এদের একটা জিনিষ ভাল লাগলো, বাচ্ছা ডে কেয়ারে থাকলে সেখান থেকে হাতে একটা পেজার ধরিয়ে দেওয়া হয় যাতে বাচ্ছার কোনো অসুবিধে হলে বা বেশী কান্নাকাটি করলে বাবা-মাকে সঙ্গে সঙ্গে ডাকতে পারে। এর জন্য বাচ্ছা যতক্ষণ ডে কেয়ারে থাকবে, বাবা মা রেসর্টের বাইরে বেরতে পারবে না। তা ভালো। আমরা দুজনে এট্টুস ঝাড়া হাত-পা হয়ে রুমে এসে জামাকাপড় ছেড়ে পুলের ধারে দেহ রাখলাম। বর গেল পুল সাইড বার থেকে কিছু স্ন্যাক্সের জোগাড় করতে। এই সময় এক দেশীয় বাবুর আবির্ভাব। ফুল শার্ট, প্যান্ট, বুটজুতো - অফিস যাওয়ার জন্য তৈরি। চারিদিকের লোকজনের প্রতি তাচ্ছিল্যের দৃষ্টি হানতে হানতে চলে গেলেন - স্যুইম স্যুট পরা আমা হেন দেশীয় বালিকার প্রতি দৃষ্টিটা যে একটু বেশিই তাচ্ছিল্যের ছিল তা বলাই বাহুল্য। এরকম আর এক বাবুকে পরের দিন পেয়েছিলাম যিনি পুলের ধারে গুছিয়ে বই-খাতাপত্র নিয়ে বসে পড়াশুনো করছিলেন (তা করুন, আপত্তি নেই - কিন্তু তার জন্য পুলের ধারে কেন? ঘরে বসে বা আরো ভাল ল্যাব বা লাইব্রেরীতে বসে করলেই হয়)। সমুদ্র থেকে আসা সুন্দর হাওয়া, ভরা পেট - সব মিলিয়ে চোখ বন্ধ হয়ে এল। প্রথম দিন বলে বাচ্ছাদের আর পুলে নামালাম না, নিজেরাই নামলাম। কিছুক্ষণ সাঁতার কেটে যখন খিদেটা বেশ জাঁকিয়ে এসেছে, তখন গেলাম ছানাদের নিয়ে লাঞ্চ করতে। বাফে লাঞ্চ, যার যা ইচ্ছে, যত ইচ্ছে খাও। এই একটা সুবিধে অল ইনক্লুসিভ ডিলের - যত খুশী খাও, পান কর পকেটের চিন্তা না করে। আমাদের দুজনের কেউ-ই পানাসক্ত না হলেও (আমার মাঝে সাঝে যাও বা চলে অন্য জন তো একেবারেই না না) ভোজনাসক্ত তো বটেই। চুটিয়ে লাঞ্চ করে গেলাম সমুদ্রের ধারে। ইচ্ছে ছিল জলে নামার কিন্তু ছানাদুটোই ঢেউ দেখেই এত ভয় পেয়ে গেল যে আর নামা হল না। নীল জল আর সাদা বালি - প্রাণ মন ভরিয়ে দেয়। মনে হয় এখানেই বসে থাকি অনন্তকাল ধরে সব কিছু ভুলে।
  • Zzzz | 109.227.***.*** | ১১ মে ২০১২ ০০:৫৮543467
  • ধুসসসসসসসসসসসস
  • kiki | 69.94.***.*** | ১১ মে ২০১২ ০৭:৫৫543469
  • হুম্ম! তা ভালো।ঃ)
  • sosen | 125.24.***.*** | ১২ মে ২০১২ ০৭:৪০543470
  • :)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন