এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • তারে জমিন পর (স্পেশাল নীডস চিলড্রেন)

    Su
    অন্যান্য | ২২ আগস্ট ২০১১ | ৬৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Su | 86.16.***.*** | ২২ আগস্ট ২০১১ ১৪:১৯492037
  • জানিনা এখানে আগে আলোচনা হয়েছে কিনা তবু .....
    রায়টের দড়িতে শুধু কষ্টের কথা রাগের কথা লিখেছি- এখানে কিছু ভালোবাসার কথাও থাক! নানারকম স্পেশাল নীডস এর কথা আলোচনা হোক -

    তারে জমিন পর ছবিতে ঈশানকে দেখে নিজের অজান্তে চোখের পাতা ভারী হয়ে যায়নি এমন দর্শক খুব কমই আছে। আমার শিক্ষক জীবনের পাতা জুড়ে এমন ঈশানরাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে.... এদিক ওদিক এতাল বেতাল... শরতের মেজাজী আকাশের মত... কখনো ঘন বাদল, কখনো বা রোদলা আদরে ঢাকা। এমন ঈশানদের নিয়েই আমার আজকের গল্প।
    আসুন আপনাদের লন্ডনের শহরতলির একটি সরকারী হাইস্কুলে নিয়ে যাই। আলাপ করিয়ে দেবো একে একে অনেক ঈশানদের সাথে। বাস্তব যে গল্পের চেয়ে অনেক বেশি অচেনা সেটা এই কচিকাঁচাদের না দেখলে বিশ্বাস হয়না! এরা প্রত্যেকে যেন এক একটা রূপকথা। প্রতিটি এমন ঈশানকে নিয়েই গল্প লেখা যায়, মেগা বাজেটের হিট ছবি করা যায়!

    জর্ডনের কথা----

    ধরা যাক ছেলেটার নাম জর্ডন। ফুটফুটে ছেলেটার মাথায় একরাশ সোনালি চুল, নীল রঙের ভাসা ভাসা দুটো চোখ। দিদিমার হাত ধরে এসেছিলো প্রথমদিন সেকেন্ডারী স্কুলে... তখন ১১ বছর বয়স। সরল পবিত্র দেবশিশু যেন। কিছুদিন পর থেকে দেখতাম জর্ডন ক্লাসে বসে একটা লাইন বার বার লিখে যাচ্ছে, কিছুতেই মনোমত হচ্ছেনা, আবার লিখছে, মুছছে, লিখছে , আবার আবার আবার!!
    জর্ডন প্রায়ই হঠাৎ হঠাৎ খুব অস্থির হয়ে বলতো মিস আমাকে বাড়ি যেতে হবে। আমাদের ওপরে নির্দেশ ছিলো বুঝিয়ে বলার , একান্ত না শুনলে স্পেশাল নীডস ডিপার্টমেন্টে খবর দেওয়ার তারা এসে নিয়ে যাবে ক্লাস থেকে এবং যা ব্যবস্থা করার করবে। জর্ডনের অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার -- একই জিনিষ বার বার করা মনোমতো না হওয়া অবধি। বাড়ি থেকে একাই আসতো সে স্কুলে হেঁটে হেঁটে , প্রায়ই স্কুল শুরু হবার দু ঘন্টা পরে এসে পৌঁছোতো ছেলেটা। বাড়ির দরজা, জানলা বন্ধ করা আর তার শেষ হয়না! দরজা জানলা বন্ধ , কলের নল , ইলেকট্রিকের সুইচ ঐ ছোট্টো ছেলেটাকে তাড়া করে বেড়াতো। স্কুলে এসেও আবার দৌড়োতে হত দরজা বন্ধ আছে কিনা দেখার জন্যে। জর্ডনের অবসেশান চরমে উঠতো কোনো কোনো সংখ্যা নিয়ে। কোনো কিছু লিখলে তাকে ৭ বার ধরে বোলানো, সাতবার ধরে সুইচ অন অফ করা, সাতবার ধরে চোখের পাতা পিটপিট করতো। এই চরম অবসেশানের সময় জর্ডন মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে ফেলতো.... মাথার মধ্যে যেন হাজার স্তুপাকার বারুদ, তার মধ্যে আগুনের ফুলকি .... কয়েক মুহুর্ত্ত পরে চারিদিক অন্ধকার! কেউ যেন ভেতর থেকে ফিসফিস করে বলতো জর্ডন ডোন্ট বি সিলি!! এরকম আবার কেউ করে নাকি! পাগল হয়েছো তুমি??? কিন্তু পাশেই যেন কেউ বলতো জর্ডন তুমি এরকম না করলে কিন্তু তোমার মায়ের খুব বিপদ হবে!! মা মা মা .... এই একাক্ষরী শব্দটা শুনলেই ওর চোখ ছাপিয়ে জল আসে। জর্ডন এখন দিদিমার সঙ্গে থাকে। মায়ের সঙ্গে আর দেখা করা যায়না। জর্ডনের বাবা কে সে তার নিজের মা'ও জানেনা। ২১শ শতকের জাবাল সত্যকাম। গণিকা মার গর্ভে সত্যকূলজাত বালক জর্ডন... নিষ্পাপ, নিষ্কলঙ্ক শিশু ভোলানাথ। মা গণিকাবৃত্তি ছেড়ে দিলেও পুরোপুরি অ্যালকোহলিক , তাই তাকে মাঝেমাঝেই রিহ্যাবিলিটেশান সেন্টারে থাকতে হয়, তাছাড়া এমন মায়ের হাতে শিশুকে রাখা নিরাপদ নয় বলে এদেশের সোশ্যাল সার্ভিস জর্ডন কে তার দিদিমার কাছে গচ্ছিত রেখেছে। স্কুলের স্পেশাল নীডস ডিপার্টমেন্টের কেস হিস্ট্রি বলে ছোটো ছেলেটি নাকি চোখের সামনে সব দেখেছে দিনের পর দিন, মায়ের সঙ্গে তার ক্লায়েন্টদের ব্যবহার, টাকপয়সা নিয়ে বচসা, গালিগালাজ, সিগারেটের ধোঁয়াশার অন্ধকারে মদের ফোয়ারা, অল্পবিস্তর ধস্তাধস্তি মারপিট ... এসবের মধ্যে ছোটোবেলার ঐ কয়েকটা বছরে তৈরি হয়েছে দিনে দিনে এক অসম্ভব নিরাপত্তাহীনতার বোধ। তাই জর্ডনের সব সময়ে মনে হত সাত বার ধরে দরজা বন্ধ না করলে সেই দরজা ভেঙে যে কেউ চলে আসবে। সাতবার সুইচ অফ না করলে বাড়িতে আগুন লেগে যাবে.... অদ্ভুত মনস্তঙ্কÄ! আত্মবিশ্বাস শূণ্য এই ছেলেটির একমাত্র আশ্রয় তার স্কুল, বন্ধুরা এবং টিচারেরা। সেইসব অন্ধকারের দিন কেটে মেঘমুক্ততার আবহ তৈরি হয় ধীরে ধীরে, ডাক্তার, কাউন্সেলার, স্পেশাল নীডস কোঅর্ডিনেটর, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টেরা এবং সর্বোপরি জর্ডনের নিজের মনের জোর.... সব মিলিয়ে ইচ্ছেডানায় রোদের সোনালি আলো লাগে... কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে.... জর্ডন ভুলে যায় দু:খী অতীতটাকে... এগিয়ে চলে সুর্য্যপথকে পাখির চোখ করে.... আজ জর্ডন অনেকটাই সুস্থ। স্কুলে তার অনেক বন্ধু----- আর পাঁচটা ছেলের থেকে তাকে কেউ আলাদা করতে পারবেনা। অঙ্কে আর মিউজিকের স্পেশাল প্রাইজ নিয়ে যখন সে স্টেজ থেকে নেমে আসছিলো তখন স্নেহময়ী দিদিমার মুখের ভাঁজে হাজার বলিরেখায় যেন হাজার সুর্য্যের আলো ঠিকরে পড়ছে .... কানায় কানায় ভরা হলঘরে প্রতিটা মানুষের চোখে টলটলে জল----

    এমিলির কথা----

    এমিলি তখন ১৩ , ক্লাস নাইনের শুরু! অন্য মেয়েদের শরীরে যখন বয়:সন্ধির ছোঁয়া লেগেছে, নিষ্পাপ বালিকার শরীর খানি ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে পুরণমাসের চাঁদের মত, সদ্যোতাত নারীত্বে লাজুক জ্যোছনার রঙ লাগতে সব শুরু করেছে! সেই সময়ে এমিলি যেন শীতের বরফছোঁয়া পাতা ঝরানো মেপল গাছটার মত রিক্ত শীর্ণ দীনতার প্রতিমুর্ত্তি। এমিলির ধারণা সে মোটা হয়ে যাচ্ছে। তাই খাওয়া কমাতে কমাতে খাবার ইচ্ছেটুকুও অদৃশ্য হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে এমন হয় যে প্রায় দু তিন দিন এমিলি কিছুই খায়না .... ধীরে ধীরে সুন্দরী হবার ইচ্ছেটা বদলে গিয়ে হয় পৃথিবী থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে। যতো কম জায়গা দখল করে রাখা যায় .... কমাতে কমাতে যাতে ক্রমশ: অদৃশ্য হতে পারে এমিলি তাই এই কৃচ্ছসাধনা! এমিলির এই অসুখের মনস্তাঙ্কিÄক নাম হল অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা । এমিলির সঙ্গে বাইরের রঙিন পৃথিবীটার যেন কোনো যোগাযোগ ই নেই। এমিলির সাথে আমার প্রথম দেখা কিন্তু খুব স্বাভাবিক একটা স্মৃতি হয়ে আছে ... ওকে কিছু আলাদা মনে হয়নি। ক্রয়ডন অ্যাডভার্টাইজার বলে ক্রয়ডনের খবরের কাগজে এমিলির নামটা দেখেছিলাম টিন এজ মডেল কম্পিটিশানে প্রথম প্রাইজ পেয়েছে ও । আমি তো উচ্ছসিত হয়ে ওকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম তাহলে বলো এবারে আমিও ফেমাস হয়ে যাবো এমন ফেমাস ছাত্রী যার! একটু অবাক হয়ে গেলাম এমিলি খুব গম্ভীর হয়ে গিয়েছিলো কথাটা শুনে। পরে স্টাফ মিটিং এ শুনলাম এমিলি এই নিয়ে কারোর সাথে কোনো কথা বলতে চায়না। আর তার পরে ও আর এলোনা অনেকদিন অনেকদিন। শুনলাম সেই গল্প এমিলির গল্প... ওর নিজের মুখেই শুনুন!
    'আমি একটা মুখোশ পরে নিলাম-- বাইরের পৃথিবী থেকে যাতে আমাকে দেখলে কেউ চিনতে না পারে। আমার সাদাকালো জীবনে যে একফোঁটাও রঙ নেই সেটা যেন একটুও ধরা না যায়! কিন্তু আমি তো জানি আমি কতো একা! স্কুলে বাড়িতে পাড়ায় আমার কোনো বন্ধু নেই আমি একা একা ভীষণ একা! একাকীত্বের আতঙ্ক, ভয় , শীতলতা আমাকে কুরে কুরে খায়! একাকীত্ব থেকে বাঁচতে যখন ঘুমের আশ্রয় নিই তখন তন্দ্রাঘোরে স্বপ্ন দেখি পাহাড় চূড়া থেকে যেন আমি গভীর খাদে গড়িয়ে পড়ছি। আর সেই গড়িয়ে পড়ার যে ব্যথা তা যেন স্বপ্নে নয় সত্যি, সত্যি গায়ে বিঁধছে! আমি মরতে চাই মরতে চাই মরতে চাই.... এই কথা গুলো আকাশ বাতাস প্রান্তরে প্রতিধ্বনিত হয় বার বার বার বার! '

    মেয়েটা আর ইস্কুলে ফেরেনি। হসপিটালে ছিলো কিছুদিন --- তারপরের খবর আর জানিনা কারণ আমরাও তখন লন্ডনের পাট গুটিয়ে চলে গিয়েছিলাম ডার্লিংটনে নর্থ ইস্ট ইংল্যান্ডের একটা ছোট্টো স্বপ্ন শহরে। বড় শহরের চেয়ে শিশু মনস্তঙ্কেÄর বিকার এখানে অনেক কম। কারণ ভাঙা সংসার ও যে অনেক কম! মানুষের লাগামছাড়া স্বার্থপরতাই এই সব শিশুদের কষ্টের কারণ। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে অন্তত নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করার কোনো ইচ্ছেই নেই বাবা মায়েদের। এভাবে ঘর ভাঙে, ঘর ভাঙলে যে দেশ ও ভাঙে। তাই এদেশে আজ বেশির ভাগ ঘরই ভাঙা, হাহাকার শুনি ছোট্টো শিশুদের..... অসহ্য আর্ত্তনাদ শুনে মনটা কেমন যেন অবশ হয়ে আসে , সাপেকাটা অঙ্গের মত নীল নিথর মনটাকে নিয়ে দৌড়োতে থাকি ছায়াপথ দিয়ে ..... চিৎকার করে বলতে চাই ওগো অমৃতের পুত্র ... পাপের থেকে পুণ্যে উত্তরণ করো , আঁধার থেকে আলোয়, অসত থেকে সতে... মৃত্যু থেকে অমৃতে নিয়ে চল এই সব শিশু ভোলানাথদের...

    সব শেষে পিটারের কথা------
    পিটারকে দেখেছিলাম প্রথম দিন হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায়। সদ্য বাঁধা ব্যান্ডেজ থেকে কাঁচা রক্তের দাগ যেন তখনো উঁকি মারছে। কিন্তু অদ্ভুত ভাবলেশহীন মুখ, যেন কিছুই হয়নি। জিজ্ঞেস করাতে বললো ও নাকি দেওয়ালে ঘুঁষি মেরেছিলো তাই এমনই হয়েছে। আর ওর বন্ধুরাও সবাই সমস্বরেই জানালো এরকম নাকি প্রায়ই হয়ে থাকে। আমি নতুন বলে অবাক হচ্ছি। কয়েকদিন পরে আমিও আর অবাক হবোনা। তবুও আমার অবাক চোখ আশ্বস্ত হয়নি। ফুটফুটে সুন্দর বারো বছরের এই ছেলেটার দিকে তাকিয়ে নিজের ছেলেটার মুখ ই মনে পড়ে গেছিলো। কিসের এতো অভাব? কিসের এতো হতাশা? এই ধরনের মানসিকতাকে বলে সেলফ হার্ম। কৌতুহলের বশে শুধু নয়, প্রফেশ্যন্যাল দায়িঙ্কেÄর কারণে স্পেশাল নীডস রেজিস্টারে গিয়ে পিটারের কাহিনী পড়ে অবাক হইনি আর , কারণ ততদিনে এসবের সঙ্গে আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। পিটার প্রথম হেলফ হার্ম শুরু করে একটা সুঁচ দিয়ে। সুঁচটাকে শক্ত করে তার পাতলা সাদা চামড়ার ওপর দিয়ে চালিয়েছিলো সেদিন পিটার। টকটকে লাল রক্ত রেখার আঁকিবুঁকির আবোলতাবোল বুদ্বুদে বাতাস ভরে উঠেছিলো, কিন্তু পিটার আশ্বস্ত হয়েছিলো.... তার মনে হয়েছিলো সে বেঁচে আছে --- একথাটাই যেন তার কাছে একটা বড় আবিষ্কার! আর সে যে এতোদিন ধরে একটা দৈত্যকে খুঁজে বেড়াচ্ছে, সেই দৈত্যটাকে সে এবারে ঠিক খুঁজে বার করতে পারবে। চামড়ার মধ্যে থেকে রক্ত ফুঁড়ে বেরোলে দৈত্য টা আর লুকোবার জায়গা পাবেনা! তাহলে সে সহজেই সেই অশুভ আত্মাকে মেরে ফেলতে পারবে। পিটারের বদ্ধমূল ধারণা যে তার ভিতরে একটা অশুভ আত্মা বাস করে তার জন্যেই আজ পিটারকে তার বাবা ছেড়ে চলে গেছে! বাবার ওপরে অসীম ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে থাকলেও রাতে যখন নীল আলোটা জ্বলে, অন্ধকার ঘরে পিটার একলা শুয়ে ভাবে তার ও যদি বাবা থাকতো! স্বপ্নের মাঝে একে একে আসতে থাকে লায়ন কিং এর সিম্বা অথবা নিমো ছবিতে মাছটার বাবাকে খোঁজার গল্পে মিশে যায় পিটার। দুচোখ দিয়ে টুপটুপে মুক্তোদানা গড়িয়ে পড়তে থাকে। পাশের ঘরে মা আর তার নতুন বয়ফ্রেন্ড --- হাস্যলাস্যের তরল শব্দটা একবিন্দু জল হয়ে স্থির হয়ে যায় চোখের কোলে।
    পিটার চুপিচুপি মায়ের ঘরে ঢুকে অ্যাশট্রে থেকে জ্বলা সিগারেট টা তুলে নেয়। ভিতরের দৈত্যটাকে শাস্তি দেবার জন্যে ছ্যাঁকার পর ছ্যাঁকা দিতে থাকে। পুড়তে থাকে সমাজ সংসার ব্যাভিচার স্বার্থপরতা! সমাজে স্বাধীনতার নামে নেমে আসে এ এক অদ্ভুত পরাধীনতা..... নতি স্বীকার মানুষের মনের কাছে। মানসিক ব্যাধির চূড়ান্ত বহিপ্রকাশ এই সব শিশুদের মাঝে!
    দাও ফিরে সে অরণ্য লহ এ নগর!!!! বিধাতাকে আর্ত্তনাদ করে ডাকি ওগো বিধাতা চাইনে আমার নারী স্বাধীনতা.... মানুষকে সহনশক্তি দাও। যাতে পিটারের মত শিশুরা বাবা মা দুজনকেই সাথে পায় পথ চলতে! পিটার দেওয়ালে মাথা ঠুকতে থাকে, সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়ে যায়, দরজার ফাঁকে নিজের হাত চেপে দেয়.... শরীরের যন্ত্রণা দিয়ে মনের যন্ত্রণা জয় করতে চায়। এক অসম্ভব মানসিক শক্তি ভর করে ওর ওপরে --- নিজের শরীর ছিঁড়ে বার করে দিতে ইচ্ছে করে এই অশুভ দৈত্যটাকে.... প্রতিটি ক্ষত যেন কত বার্ত্তা বয়ে নিয়ে আসে, মুক্তির বার্ত্তা, এই ক্ষতগুলোকে একসঙ্গে করে একটা গল্প লেখা যায়, উপন্যাস লেখা যায়! আমরা কাঁদি, পিটার কাঁদতে পারেনা। তার শরীর ই কাঁদে এই সব ক্ষতচিহ্ন দিয়ে...
    পরের দিন স্কুলে আসে পিটার ব্যান্ডেজ বেঁধে, সোহাগে আঙুল ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করে শিশুটার ক্ষতচিহ্নে , আমিও যে মা! কেমন করে সন্তানের কান্না না ছুঁয়ে থাকতে পারি!

    দিনের বেলায় আকাশটা মেঘলা হয়ে আসে, মনখারাপের গন্ধ ছড়ায়, পাইনগাছের চূড়ায় বরফের ছোঁয়া লাগে! নিথর নীরব একাকী পিটার, এমিলি, জর্ডন এমন আরো কতো শিশুরা যেন ফিনিক্স, রবিন , সীগাল হয়ে আকাশে উড়ে যায়! অ্যাসেম্বলি হল থেকে গানের আওয়াজ ভেসে আসে ডীপ ইন মাই হার্ট , আই ডু বিলিভ, উই শ্যাল ওভার কাম সাম ডে! ....

  • Nina | 12.149.***.*** | ২২ আগস্ট ২০১১ ২০:৪৬492038
  • সু, খুব মন দিয়ে পড়লাম। মানুষের মন বড় রহস্যময়--কোথায় যে তার অবস্থান শরীরে, কি তার সাইজ, ওজন, রঙ --বড় জানতে ইচ্ছে করে----বৈজ্ঞানিকেরা কবে যে এটা ধরে ফেলতে পারবেন--সে আশায় দিন গুনি।
    তোর আরও অভিজ্ঞতা শেয়ার করিস প্লিজ।
  • byaang | 122.167.***.*** | ২২ আগস্ট ২০১১ ২১:৪০492039
  • সু, খুব মন দিয়ে পড়ছি তোমার লেখাটা। আরো লিখবে প্লিজ? অপেক্ষায় থাকব।
  • byaang | 122.167.***.*** | ২৩ আগস্ট ২০১১ ১২:৪৯492040
  • সু-কে একটু তাড়া দিয়ে গেলাম।
  • kiki | 59.93.***.*** | ২৩ আগস্ট ২০১১ ১৯:২৭492041
  • কই গেলে?
  • Nina | 12.149.***.*** | ২৩ আগস্ট ২০১১ ১৯:৫৮492042
  • সুচে, এই সব মানুষগুলির কথা ছড়িয়ে দে হাত খুলে--কত কত বাবা মা ভাই বোন যে উপকৃত হবে।
    মনের গলি ঘুঁজি বড় কঠিন---রাস্তা যারা হারায় তাদের জন্য এগুলো বড় কাজ দেয় রে---আমি যে তদেরই একজন, তাই বলছি।
  • Su | 86.16.***.*** | ২৪ আগস্ট ২০১১ ০১:৩৩492043
  • স্পেশাল এজুকেশান নীড নিয়ে ভারতবর্ষে কতোটা কি কাজ হয় জানিনা- কেউ লিখলে খুব ভালো হয়। এখানে এটা একটা বিশাল এরিয়া- আমি কয়েকটা ঘটনার কথা লিখেছি - এরা তিনজনেই খুব জটিল মনস্তঙ্কেÄর শিকার।
    আসলে এই বয়:সন্ধিটাই এমন- ছুটি গল্পের ফটিককে দেখে কি আর এমনি মনে হয় এদের মুখে আধো কথা ন্যাকামি পাকা কথা জ্যাঠামি।
    সত্যি সত্যি ই আমার এক একটা ছাত্র রূপকথা কোনো গল্পের হ্যাপিলি এভার আফটার আছে , কোনো গল্পে নেই- তবু ওদের মন আছে - ওরা শিশুই!
    কোনো গল্পের শেষ খুব কষ্টের - তবু এক এক করে মনে করার চেষ্টা করবো- ওদের কথা কখনো বলাই হয়নি তেমন করে- নানা রকম শারীরিক কারন মানসিক কারন মাঝে মাঝে দুই ই মিশে যায় - আমার গল্পেও তাই একূল ওকূল দুকুল ভেসে যাক! সাগরের এক একটা বুদ্বুদের গপ্পো লিখতে বসে কোনোটা ভাঙা কোনোটায় আবার সুর্য্যের পুর্ণ প্রতিফলন-
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন