এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • এবার পুজোর ডায়েরী - অয়িতা পাল

    Ayeeta Paul
    অন্যান্য | ১২ অক্টোবর ২০১০ | ১০৩২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ayeeta Paul | 122.179.***.*** | ১২ অক্টোবর ২০১০ ২২:৪৩459051
  • আজ পঞ্চমী

    পুজো এসে গেলো, সোনালি রোদের আভা কী সব যেন মনে করিয়ে দেয়। প্রবাসে আছি বলে বুকের মাঝে কেমন যেন একটা খালি খালি ভাব। এই কষ্টের মধ্যে মন একটাই বিলাসিতা খুঁজছে কলকাতার স্মৃতি রোমন্থন। অসংখ্য স্মৃতি মনের মধ্যে ভেসে উঠছে বিক্ষিপ্ত ভাবে, বেশির ভাগই স্কূল জীবনের অর্থাৎ শৈশবের বা কৈশোরের। যৌবন আসতেই কেমন যেন যান্ত্রিক হয়ে যাওয়ার দরুন , ভালো লাগার তেমন কোনো স্মৃতিই নেই। মনে পড়ছে স্কুলের সে সব টাস্ক - পুজো এলেই পুজোর ডায়েরি লেখা.... সাধারনত ষষ্ঠী থেকে লিখতে বলতো আমি বেশি লিখব বলে পঞ্চমী থেকে লিখতাম। আজ পঞ্চমী , আর এটা আমার এবারের পুজোর ডায়েরী। স্কুলে অনুশাসন থাকলেও জীবনের এক নিবিড় ছন্দ ছিল, ইচ্ছা জাগত কিছু অন্য রকম - সৃজনশীল কিছু করি। আর যবে থেকে অনুশাসনের বাইরে এসেছি জীবনে ছন্দ পতন ঘটেছে, কি যেন মরীচিকার পিছনে ছুটে বেড়ানো। হয় দুশ্চিন্তা না হলে ব্যস্ততা, নিজেকে নিয়ে চিন্তা করার, নিজের ভালো লাগাকে প্রশ্রয় দেওয়ার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেছি। আজ বড় ইচ্ছা করছে দেবী তো মর্তে আসছে, সবার মনে এতো খুশি আমিও নিজের ভালো লাগা গুলো ফিরিয়ে আনি নিজের মধ্যে।
  • Ayeeta | 122.179.***.*** | ১২ অক্টোবর ২০১০ ২৩:৪৬459053
  • আরো ভালো বাঁচব আরো ভালো থাকবো ভেবে ভেবে, নির্মল বাঁচার স্বাদটাই নিতে ভুলে গিয়েছি। মনে পড়ছে এমনই একদিন পুজোর সকাল দাদুর হাত ধরে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে হঠাৎ ঋতুশ্রীর সাথে দেখা হল। ছুটির মেজাজে স্কুলের বন্ধুর সাথে দেখা! ঊফ সেযে কী আনন্দ বলে বোঝানো যাবে না তাও হঠাৎ করে... সেই তৃপ্তি এখন অনেক প্রিয় বন্ধুর সাথে দেখা হলেও মেলেনা। আমরা সব্বাই কতোটা বিচ্ছিন্ন! দিনরাত অনর্গল কথা বলে চলেছি, হয়ে ফোনে নয় নেটে নয় সাক্ষাতে কিন্তু সেই আন্তরিকতা আজ কোথায়! আমার অন্তরের থেকে আমি নিজেই বিছিন্ন। মনের মাধুরী দিয়ে একে অপরকে টেনে নেব সেই ক্ষমতা ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে। অথবা মন যাতে কারো ওপর ভরসা করে কষ্ট না পায় তাই মন গুলোকে আমরা পাষানে পরিবর্তন করেছি।

    তখন আমার বয়স কত হবে আট কি নয়, দুজনেই হতবাক- আমি আর ঋতুশ্রী একই জামা পরেছি, সেবারের পুজোর নতুন ফ্যাশন হানিকোম্ব করা ফ্রক। আমার ছিল সাদার ওপোর নীল রঙ্গের ছোট্টো ছোট্টো ফুল, নীল সুতোর হানিকোম্ব আর জ্বল জ্বলে দুটো নীল বোতাম বসানো, কি সাংঘাতিক প্রিয় ছিলো সেই জামাটা! ঋতুশ্রীরও ঠিক তাই, শুধু ওরটা ছিল লাল। শৈশবের সাথে সেই প্রিয় পোশাকটা কোথায় গেল?......

    সেইদিনের স্মৃতিগুলো শরতের প্যাঁজা প্যাঁজা রোদের মতো শুধু আজ মনের আকাশে নয় মাঝে মাঝেই ভেসে যায়। তফাত্‌টা হল আজ সেই সময়্‌টা ফিরে পেতে চাই....নাহ আসবে নাহ, শত চাইলেও .....কোনোদিনও কাউকে আমার মতো পুজোর পোশাক পরতে দেখে এতো খুশি হয়েছিলাম বলে আর মনে পড়েনা। এখন বরং রাগ হয়। আমরা সব্বাই এখন exclusive হতে চাই। হায় কি চাওয়া!

    কম্পিউটার নামক জাদুযন্ত্রটি আর ইন্টার্নেট নামক জদুমন্ত্রটি নাকি সব বাতলে দেয় ...কই আজকে আমার বন্ধু ঋতুশ্রীকে তো ও খুঁজে দিতে পারলনা? কই ও হঠাৎ করে পুজোর দিনে আমার দেখা করিয়ে দিলো না তো?

  • Samik | 117.194.***.*** | ১৬ অক্টোবর ২০১০ ০৮:২১459054
  • দিব্যি হচ্ছে তো! চলুক ...
  • aka | 24.42.***.*** | ১৬ অক্টোবর ২০১০ ০৮:৩১459055
  • আরে হবে আর কদিন। লাইভ স্যাটেলাইট ইমেজে ঋতুশ্রী আর অয়ীতার ভার্চুয়াল দেখা, আড্ডা, সবই হবে। এমনকি এই ধরুন এই মুহূর্তে ঋতুশ্রী কি করছে তাও জানতে পারবেন। মুশকিল হল তখন বোধহয় আর সেটা আমরাই চাইব না।
  • ayeeta | 122.179.***.*** | ১৭ অক্টোবর ২০১০ ২১:১৪459056
  • ষষ্ঠীর লেখা:

    ছোটোবেলায় অনেক পুজোই কেটেছে আমার শহর থেকে অনেক দুরে এক গ্রামের বাড়িতে-অদ্ভুত সেই এক পর্যায় আমার জীবনের। নাহ গ্রামের বাড়িতে দুর্গা পুজো হত না, সে ছিল এক প্রকার নির্বাসন-প্রধানত আমার মায়ের। বছরের তিন বার ছুটি হলেই মাকে গ্রামের বাড়িতে ঠাঁই নিতে হত আর আমার ঠাকুমা তখন শহরে ছুটি কাটাতে আসতেন।আমার মায়ের সাথে যাওয়ার কোনো বাধ্য-বাধকতা ছিলো না-কিন্তু তাও গিয়ে কিছুদিনের জন্য থেকে আসতাম সেই নির্জন্‌পুরীতে।

    সেই সময় গ্রামে বিদ্যুতের ব্যাবস্থাও ছিলো না- গা ছম্‌ছম করত রাত হলেই। পাড়ায় পাকাবাড়ি বলতে আমাদের টাই বাকি সব আটচালাগুলো খানিক দুরে দুরে। বাড়ির সামনের বাগানটা যেন রাত হলেই হাত-পা বের করে প্রকান্ড হয়ে উঠত। ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ কি একটা দুটো জোনাকি, অথবা হঠাৎ করে ডেকে ওঠা প্যাঁচা কিম্বা অচেনা কোনো পাখির ডাক-এসব এখন যেন স্বপ্নের মত লাগে। এসবের মাঝে এখন আমরা ছুটি কাটাতে যাই শখ করে-একসময় এগুলো শখ বা ছুটি নয়- কঠিন বাস্তব ছিলো। কতই না জীবনের পরিবর্তন ঘটলো।

  • ayeeta | 122.179.***.*** | ১৭ অক্টোবর ২০১০ ২১:৪০459057
  • পুজোর দিনগুলোয় বহুদুরে ঢাকের আওয়াজ শুনতাম, কিন্তু কাছে একবার-দুইবার গিয়েছি।আমি শহর কলকাতার মেয়ে-শহর এর পুজো আমায় টানত। কলকাতার পুজোর জন্য মনটা হুহু করে উঠত কিন্তু শহরে ফেরার কোনো উপায় ছিলো না, রাতে বাবা গ্রামের বাড়িতে কোনোদিন ফিরতেন কোনোদিন বা ফিরতেন না, থেকে যেতেন শহরের বাড়িতে। মাঝে মাঝে মা আর আমার সাথে দিদিও থাকত, শহরের একান্নবর্তি পরিবারের মধ্যে মা সময় পেতেন না মেয়েদের সাথে সময় কাটানোর-নির্বাসন আমাদের একাত্ম করে দিত।

    আজও পুজোতে আমি বাড়ির বাইরে। ছুটি পাওয়া হল না কর্মস্থানের থেকে তাই আজও পুজোতে আমি কলকাতায় নেই। আজ ভাবি সেই আমি আর আজকের আমি এত মিল-কিন্তু তবুও কি এক? অন্তত মায়ের সান্নিধ্য ছিল। হয়তো আমি যথেষ্ট ভাগ্যবতী যে কনভেন্ট শিক্ষার মাঝেই বাংলার গ্রামকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু কেমন লাগছে এই cospoliton শহর bangalore-সেখানে এইবার পুজোয় আমি নির্বাসিত-সেই global-village এ? শহরটিকে নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ মায়ের কাছে, দুগ্গা মা তুমি তো বাপের বাড়ি এলে, আমায় যেতে দিলে না কেন?
  • til | 210.193.***.*** | ১৮ অক্টোবর ২০১০ ০৪:৪৩459058
  • আকা স্যার (আ তে চন্দ্রবিন্দু দিই নাই),
    ঠিকই কইছেন। মা দুর্গা তো আর সৎ মা নন, তবে কি যেশুদার কথা ধার করে বলতে পারি কিই? God helps those who.......
    --
    নবমীর রাত্রে মাংসভাত বড়ই উপাদেয় হয়েছিল।

  • til | 210.193.***.*** | ১৮ অক্টোবর ২০১০ ০৪:৪৮459059
  • যীশুদা*, কি*
    আর অয়ীতা, সামনের বছর গোড়াতেই ছুটির দরখাস্ত করে দেবেন তো; ঐ ব্যাটাদের বলবেন আয়ূধা পূজাতে বাড়ী না হেলে সমূহ বিপত্তি!
    সবচেয়ে মারণাস্ত্র হল সিক হয়ে যান!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন