এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে : ন্যাশনাল পার্কস অফ অ্যামেরিকা

    Shuchismita
    অন্যান্য | ০৫ জুন ২০১০ | ২২০৭৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • hu | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ০৭:৪৯456823
  • কিইইই ভালো!
  • dc | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ০৯:০৭456824
  • আমারও একবারে বেশী জায়গা না ঘুরে কয়েকটা জায়গা ভালো করে ঘুরতে ভাল্লাগে। সেজন্য চেষ্টা করি কয়েকটা ভালো জায়গা খুঁজে বার করতে যেগুলোতে নানান কিছু দেখার বা করার আছে। আর এই টুর প্ল্যানিং করতেও আমার খুব ভাল্লাগে। ইউটুব দেখে, ম্যাপ দেখে, সেসব জায়গার লোকাল ওয়েবসাইট দেখে, নানান কিছু করে টুর প্ল্যান বানানোটা বেশ মজার।
  • | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ১০:১০456825
  • আরে ট্যুরের আদ্ধেক মজাই হল ট্যুরপ্ল্যানে। পাশাপাশি চার পাঁচটা উইন্ডোয় বিবিধ জিনিষ খুলে সে এক হুল্লাট জমজমাট ব্যপার।
  • ন্যাড়া | ১৮ জুলাই ২০১৯ ১১:৪৪456826
  • পুপেরা কি অ্যামট্র্যাকে গেলে? কত খরচা পড়ল?
  • lcm | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ১১:৫৫456827
  • ন্যাড়া,
    পড়ে যা মনে হচ্ছে পুপেরা ট্রেনে কিছুটা গেছে।

    স্যান হোসে - স্টকটন (বাস) ৭৫ মাইল
    স্টকটন - মার্সেড (অ্যামট্র্যাক ট্রেন) ৭০ মাইল
    মার্সেড - ইয়োসিমিটি সেন্টার (বাস) ৮০ মাইল

    অ্যামট্র্যাকের বাস-ট্রেনের কম্বাইন্ড টিকিট কেটে থাকতে পারে।

    অ্যামট্র্যাক ট্রেনেতো স্যাক্রামেন্টো-রেনো সিনিক রুট ভালো, বিশেষ করে শীতকালে, বরফে ঢাকা সিয়েরা নেভাডা মাউন্টেনের ওপর দিয়ে, ডনার লেক পেরিয়ে -
  • ন্যাড়া | ১৮ জুলাই ২০১৯ ১২:৩৯456828
  • আমি এখনও অ্যামট্র্যাকে চড়িনি। একবার চড়ব। গেল শীতে নিউ ইয়র্ক থেকে বস্টন যাব ভাবলাম, কিন্তু টিকিটের কী দাম রে ভাই! একজনের টিকিটে তিনদিনের কার রেন্টাল হয়ে যায়।
  • পুপে | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ২০:৪০456829
  • বেড়ানোর প্ল্যান করা তো পুরো নেশার মত। অন্য কোন কাজ করতে ইচ্ছে করে না।

    @ন্যাড়া দা, lcm দা, আমরা বাস ট্রেনের কম্বাইন্ড টিকিট কেটেছিলাম। একই আইটিনেরারিতে সব কিছু। একজনের রাউন্ডট্রিপ 70 ডলার। ট্রেনজার্নি এমন কিছু সিনিক না। আমাদের ওদিকের বর্ধমান লাইনের মত, দিগন্ত বিস্তৃত চাষের জমি। আর দূরের ক্ষীণ পাহাড়ের লাইন।

    পরে এইটা চাপার ইচ্ছে আছে - https://m.amtrak.com/h5/r/www.amtrak.com/coast-starlight-train
  • test | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ২৩:০০456830
  • test | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ২৩:১৭456833
  • পুপে | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ২৩:১৯456834
  • অবশেষে! ছবির লিঙ্কের শেষে ?.jpg যোগ করতে হত। এতক্ষণ ধরে স্প্যাম করার জন্য দুঃখিত :-(
  • পুপে | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ২৩:২৬456835














  • পুপে | ***:*** | ২০ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩১456836
  • এখানে খুব ভাল্লুকের উৎপাত, অবশ্যি উৎপাত বলাটা ভুল হল, আমরাই তাদের জায়গায় এসে উৎপাত করছি বটে। পইপই করে বারণ করা আছে সব জায়গায় যে বনের জীবজন্তুকে খাবার দেবেন না, খাবার সমস্ত ভারী লোহার এইসা বড় লকারে সবসময় ছিটিকিনি আটকে রাখবেন, যারা গাড়ি এনেছেন তারা গাড়িতে খাবার রাখবেন না ইত্যাদি। পার্কের ভিজিটর সেন্টারে টিভিতে ভিডিও চালিয়ে রেখেছে গাড়ির খোলা জানলা দিয়ে ভাল্লুক ঢুকে পাঁউরুটির প্যাকেট হাতিয়ে পালাচ্ছে। এই ভাল্লুকেরা আমেরিকার কালো ভাল্লুক, গ্রিজলি ভাল্লুক নয়। ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের পতাকায় যে বিশাল গ্রিজলি বিয়ারের ছবি আছে, তারা এখন নিশ্চিহ্ন। ইউরোপ থেকে লোকজন যখন আঠেরোর শতকে এই অঞ্চলে এসে থাকতে শুরু করে, তখন প্রায় ১০০০০ গ্রিজলি ছিল। বিশাল মাপের গ্রিজলিরা মানুষের চাষ আবাদে পশু পালনে ব্যাগড়া দেবে এই ভয়ে একে একে তাদের মেরে ফেলা শুরু হয়, এমনকি শুধুই মজা লুটতে ভাল্লুকের সাথে ষাঁড় লড়িয়ে দেয়ার চল হয়। তারপর একদিন খবর মেলে যে সিয়েরা নেভাদা থেকে সমতলে নেমে আসা এক নদীর তীরে সোনা পাওয়া গেছে। শুরু হয় গোল্ড রাশ- হইহই করে লোকে ক্যালিফোর্নিয়া পাড়ি জমায়, নদীপথে নৌকো-জাহাজ এসে ভেড়ে, আবার ওদিকে মাইলের পর মাইল দুর্গম বনজঙ্গল পেরিয়েও লোক আসতে থাকে। লোভে লোভে তারা পাহাড় ঢুঁড়ে ফেলতে পা বাড়ায়, শয়ে শয়ে গ্রিজলি মেরে ফেলে, ৪০০০ বছরের আদি বাসিন্দাদের তাড়িয়ে, নির্বিচারে খুন করে তাদের জায়গা দখল করে - ইয়োসেমিতির আওয়ানিচিদের (এদের নামেই আওয়ানি হোটেল) বাস্তুভিটে হারানোর এক বড় কারণ এই গোল্ড মাইনাররা। গোল্ডরাশের আর ৭৫ বছরের মধ্যেই সব ক্যালিফোর্নিয়ান গ্রিজলি উধাও, ১৯২০ সালে শেষের সবেধন নীলমণিটি গুলি খেয়ে মারা পড়ে।

    গ্রিজলিরা চলে গেলেও কালো ভাল্লুক এখনো ইয়সেমিতিতে গোটা ৪০০-৫০০ আছে, এদের ঘ্রাণশক্তি নাকি কুকুরের চেয়েও তীক্ষ্ণ। তাই যে কোন গন্ধওয়ালা জিনিস যেমন টুথপেস্ট, লিপ-বাম ইত্যাদি এবং সবরকম খাবার আর উচ্ছিষ্ট বিয়ার লকারে ভরে রাখা নিয়ম। যাতে এরা মানুষের খাবারে অভ্যস্ত হয়ে গিয়ে নিজের স্বাভাবিক আচরণ না হারিয়ে ফেলে। রোজ রোজ আমাদের খাবার পেতে থাকলে ভাল্লুকেরা নাকি অনেকসময় হিংস্র হয়ে ওঠে, তখন আমাদেরই সুরক্ষার তাগিদে ওদের মেরে ফেলে রেঞ্জাররা! আমরা সমস্ত কড়াকড়ির জিনিস একটাই ব্যাগে রেখেছিলাম, সে ব্যাগ লকারে ভরে আর ব্যাকপ্যাকে অল্প কিছু খাবার আর জল নিয়ে আমাদের প্রথম গন্তব্য - লোয়ার ইয়োসেমিতি ফলস।

    ভ্যালির উত্তর পূর্বে মাউন্ট হফম্যানের গোড়ায় কিছু লেক আছে। সেখান থেকে শীতকালের জমা বরফ গরমের সময় গলে ইয়সেমিতি ক্রিক দিয়ে বয়ে এসে ঈগল পীক আর ইয়োসেমিতি পয়েন্ট নামক বিরাট বিরাট গ্র্যানাইটের চাঁইয়ের মাঝখানে ফাঁক পেয়ে লাফিয়েছে ২৪২৫ ফুট নিচে। মাঝে কটা ধাপ, ধাপের ওপরে ১৪০০ ফুটের আপার ফলস, ধাপের নিচে ৩০০ ফুটের লোয়ার ফলস, মাঝের বাকিটা পাথরের খাঁজে ঢাকা। সব বরফ গলে গেলে ফক্কা, কোথাও কিচ্ছু নেই। আবার যেই না একদিন হাঁকডাক দিয়ে অন্ধকার মেঘ করবে, বৃষ্টি ধোয়া ভ্যালিতে তর্জন গর্জন করতে করতে "কই হে, সব গেলে কোথায়?" হেঁকে সবার চোখ টেনে নেবে নিজের দিকে। ভিউপয়েন্টের ব্রিজে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে অ-বাবুর শান্তি হল না, পাথর টপকে টপকে যাওয়া হল একেবারে ঝর্নার গোড়ায়। কুট্টি কুট্টি বাচ্চাগুলো অবধি টপাটপ পাথর বেয়ে উঠে পড়ছে, আর আমরা পারবো না!







    ঝাঁঝরি করে জল দেবার মত আমাদের ভিজিয়ে দিয়েছে ইয়সেমিতি ফলস, ছবি তুলে তুলে আর আশ মেটে না। ওই করতে গিয়ে বেশ দেরি হয়ে গেল। এল ক্যাপিটানের শাটল বিকেলে ৫ টা অবধি চলে, আর তখনই বাজে ৪-৩০ টে। তাই ওদিকে যাবার আশা কাটিয়ে পাড়ি দিলাম মিরর লেকের দিকে, এদিকের শাটল চলবে রাত ১০টা অবধি, কাজেই চাপ নেই। মিরর লেক ট্রেলহেড থেকে ১ মাইল গেলেই লেক। এটাও অস্থায়ী লেক, পুর্বদিকে আপার সিয়েরার বরফগলা ছোট নদী টেনায়া লেক হয়ে তেনায়া ক্রিক। তারপর উত্তরে নর্থ ডোম আর দক্ষিণে হাফ ডোমের মাঝের তেনায়া ক্যানিয়ন হয়ে চলতে চলতে একটা সোজা সাপটা সমতল জায়গা পেয়ে একটু রয়ে সয়ে বিরাম নিয়ে তৈরী করেছে মিরর লেক, তারপর আরও কিছুদূর গিয়ে মিশেছে মার্সেদ নদীতে। তিরটির করে কাঁপছে হ্রদের জল, জলে আশেপাশের শৃঙ্গ গুলোর প্রতিবিম্ব। জল কম, পলি পড়ে পড়ে সবুজ ঘাস, বুনো বুনো গন্ধের ফুল, কালো ঝুঁটি নীল লেজু পাখিরা, গুচ্ছ প্রজাপতি- প্রাণ ঠাণ্ডা করা একফালি স্বর্গ।



    আমাদের সব ছবি মোবাইলের ক্যামেরায় তোলা, পাখির কোন ভালো ছবি ওঠেনি, ইন্টারনেট থেকে পাখির ছবিটা দিলাম। এই পাখি ইয়োসেমিতির সর্বত্র পেয়েছি। এর নাম নাকি স্টেলার জে।


    টলটলে স্বচ্ছ জল দেখে আর থাকা গেল না, হাতে জুতো ঝুলিয়ে নেমে পড়লাম ছপছপিয়ে, জলের তলার নুড়ি পাথরের দলাই মলাইতে সারাদিনের হাঁটাহাঁটিতে ঝিমিয়ে পড়া পেশীরা আবার চনমনে হয়ে উঠলো। পাহাড়ের গায়ে শেষ বিকেলের সোনালী রোদ পড়তে শুরু করেছে। একটু পরেই গলানো সোনার মত ঝিকিয়ে উঠে আস্তে আস্তে ম্লান গোলাপি হয়ে চাঁদের রুপোর ছোঁয়া পাবার সময় হয়ে যাবে। ভাবলাম এখানেই বসে থাকি সূর্য ডুবে যাওয়া পর্যন্ত। এদিকে খিদেও পেয়েছে, ক্যাম্পে ফিরে একটু খেয়ে দেয়ে সাড়ে নটায় হাজিরা দিতে হবে ইয়সেমিতি লজের সামনে, মুনলাইট ট্যুর। শীতলপাটির মত ঠাণ্ডা হাওয়ায় সারাদিনের ক্লান্তিটুকু মুছে ফেলে দিয়ে গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে ফিরে এলাম।



    ফেরার পথে আর ক্যাম্পের বীচ থেকে তোলা কিছু ছবি।



  • hu | ***:*** | ২০ জুলাই ২০১৯ ০৭:৫৬456837
  • লেখাটা খুব ভাল হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রিজলির কথা ওঠায় বড়ই নষ্টলজি বোধ করলাম।
  • pi | ***:*** | ২০ জুলাই ২০১৯ ২১:১৬456838
  • খাসা হচ্ছে!

    দ্রির সেই গ্রিজলিকাব্য কেউ দিক এখানে!
  • পুপে | ***:*** | ২৪ জুলাই ২০১৯ ১২:৪০456839
  • পাহাড়ে সূর্য ডুবে গেলেই কেমন ঝুপ করে অন্ধকার নেমে আসে। ভ্যালী শাটলে করে যখন ইয়োসেমিতি লজে পৌঁছলাম, ততক্ষণে ছায়া ছায়া তালঢ্যাঙা গাছেদের অবয়ব রুপোলী আকাশ আড়াল করে ভূতের মত দাঁড়িয়ে পড়েছে। তারও পিছনে গুরুগম্ভীর কঠিন পাথরের দেয়াল, উত্তরের দেয়াল চাঁদের আলোয় চিকচিকে, দক্ষিণে নিকষ কালো নিরেট, দুই দেয়ালের মাঝে ভ্যালিতে আটক আমরা। মুনলাইট ট্যুরের গাড়ি এসে পড়লো - ছাদখোলা, সারি সারি প্রায় ৪০-৪৫ জনের বসার জায়গা- এক সারিতে জনাপাঁচেক, সামনের দিকে একটা উঁচু সীটে গাইডের বসার ব্যবস্থা যাত্রীদের দিকে মুখ করে। একজনের ফোবিয়া আছে- পাছে কোথাও দেরি হয়ে যায় পৌঁছতে, যদি ট্রেন-বাস ছেড়ে চলে যায়, যদি মাইনে কাটা যায়, যদি মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে- এমন হাজারো “যদি”-রা সেই লোকের মাথায় মাছির মত ভনভন করে চলে সর্বদা। আর ভাগ্যের দোষে প্রায়শই সেই লোকের কাছেপিঠে থাকায়, কানের গোড়ায় বকে বকে সেই লোক প্রায় সদা সর্বদাই বাধ্য করায় যে কোন জায়গায় নির্ধারিত সময়ের বহু-উ-উ আগে চলে যেতে। তবে সেই কারণে লাইনের গোড়ার দিকে থাকায় আমরা মাঝেসাঝে (বা, বলা ভালো প্রায়ই) গাড়িতে ধারের দিকে ভালো সীটও পাই।

    ট্যুর শুরু হল, চাঁদের আলোয় ধুয়ে যাচ্ছে ভ্যালি। পূর্ণিমা আরও তিনদিন পরে, কিন্তু তিনপোয়া চাঁদের আলোরই এমন জোর যে দিব্যি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে সবকিছু- ওই দ্যাখো ইয়োসেমিতি ফলস - রাতে সে তার অন্য রূপ। আরেকটু এগিয়ে দেখতে পাচ্ছ এল ক্যাপিটান? “দ্য ক্যাপ্টেন”, স্প্যানিশ ভাষায় এল ক্যাপিটান। মনোলিথিক, মানে একটাই বিশাল গ্র্যানাইট পাথরের এই চাঙড় তোমার অপেক্ষায় থাকে ইয়োসেমিতি ঢোকার ঠিক মুখে, নতুনকে ডেকে ১০ কোটি বছরের প্রাচীনের সাথে আলাপ করিয়ে দেবার জন্য। ইয়োসেমিতিকে আলাদা করে চিনিয়ে দেয় এল ক্যাপিটান আর হাফ ডোম, যার সাথে ছবিতে আগেই পরিচয় হয়েছে। প্রকৃতির খেয়ালে বিশেষ আকৃতিতে তৈরী এই দুই চূড়া এক সময়ে ছিল রক ক্লাইম্বারদের স্বপ্ন। ১৯৫৭ তে ওয়ারেন হার্ডিং তার দলবল নিয়ে হাফ ডোম বিজয়ে গিয়ে আবিষ্কার করেন রবিনস ঠিক তার দুদিন আগে পৌঁছে গেছেন হাফ ডোমের চূড়ায়; ওয়ারেনের হাতছাড়া প্রথমের গৌরব! বিজয়ীকে অভিনন্দন জানিয়ে, হতাশা ঝেড়ে ফেলে পরিকল্পনা শুরু করে দেন এল ক্যাপিটান চড়ার। গোড়া থেকে সোজা ৩০০০ ফুট উঁচু এল ক্যাপিটানের মাঝ বরাবর বেরিয়ে আছে একটা নাকের মত অংশ - “The nose”, ওই পথেই ক্লাইম্বিং শুরু করেন হার্ডিং। ১৯৫৭ তে শুরু হয় এই প্রোজেক্ট, খাড়াই পাথরে দড়ি লাগাতে লাগাতে ওঠা, যতদূর চড়া যায় চড়া হল, তারপর হয় দলের কারোর পা ভাঙ্গে বা দলের একজন কেউ আর যেতে চায় না বা ট্যুরিস্ট সিজন শুরু হয়, নেমে আসতে হয় সেবারের মত, আবার পরের সুযোগে আগের চেকপয়েন্ট ছাড়িয়ে আরও খানিকদূর এগিয়ে যাওয়া। এই করে দেড় বছর ধরে চার বারের চেষ্টায় ১৯৫৮ এর নভেম্বর মাসে এল ক্যাপিটান মাথা নোয়ায় হার্ডিং-এর কাছে। চার বার মিলিয়ে মোট ৪৭ দিন পাথরের গায়ে কাটিয়েছেন তাঁরা, শেষ বার একটানা ১২ দিন।

    হার্ডিং-এর টীম এইড ক্লাইম্বিং করেছিলেন, মানে দড়ি দড়া নাট বলটু নিয়ে পাহাড়ের গায়ে পেরেক পুঁতে পথ বানাতে বানাতে চলা। পরের দিকে যখন পাহাড়-চড়িয়েরা দেখল যে এভাবে প্রায় যে কোন পাহাড়েই উঠে পড়া সম্ভব, তখন তারা আরও ঝুঁকি নিয়ে শুরু করল ফ্রি ক্লাইম্বিং। মানে দড়ি ইত্যাদি থাকতেও পারে, তবে কেবল পা পিছলে পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে, ওপরে ওঠার জন্য শুধুই হাত- পা লাগাও! সবথেকে সাংঘাতিক হল ফ্রি সোলো ক্লাইম্বিং - একা একা শক্তপোক্ত পেশীর সহায়তায় বুদ্ধি আর ধৈর্য সম্বল করে পাহাড়ে ওঠা, পড়ে গেলেই…। হার্ডিং-এর পর আরও অনেককে হাতছানি দিয়েছে ইয়োসেমিতির কিনারায় অপেক্ষারত ক্যাপ্টেন। এ বলে আমায় দ্যাখ তো ও বলে আমায় - কত কম সময়ে, কত কম যন্ত্রপাতির সাহায্য নিয়ে ক্যাপ্টেনের নাক বেয়ে উঠে পড়তে পারে লোকজন, তার প্রতিযোগিতা! ২০১৭ সালে অ্যালেক্স হনল্ড শুধুমাত্র হাতের ঘাম শুকনোর জন্য চকের গুঁড়োভর্তি ব্যাগ নিয়ে চার ঘন্টার-ও কম সময়ে উঠে পড়েন ক্যাপের মাথায়! এই গোটা ব্যাপারটা খুব সাবধানে রেকর্ড করা হয়, যাতে অ্যালেক্সের মনঃসংযোগে একটুও ব্যাঘাত না ঘটে, বানানো হয় ডকুমেন্টারি সিনেমা - “ফ্রি সোলো”। ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়! তার পড়ের বছরই আবার টমি ক্যাল্ডয়েলকে পার্টনার জুটিয়ে দ্রুততম আরোহণের (২ ঘণ্টার) কম রেকর্ডও ঝুলিতে পুরেছে এই দস্যি ছেলে, বয়স যার এখনো ৩৪ পুরে ৩৫- এ পড়েনি! এল ক্যাপিটানের গল্প শোনাবো আর শীলা স্নীটারের কথা বলবো না, তাও কি হয়? ১০ বছরের এই পুঁটে মেয়েটা এ বছর জুন মাসে বাবার সাথে এল ক্যাপিটান উঠেছে!

    গাইড রেঞ্জার একের পড় এক এমন লোম খাড়া করা গল্প বলে চলেছে, আলো আঁধারিতে অশরীরীর মত স্থাণু এল ক্যাপিটান, তার গায়ে আনাচে কানাচে আলোর ফুটকি, ওগুলি নাকি ক্লাইম্বার দের টর্চের আলো, দিনের বেলায় পাথর তেতে আগুন হয় বলে রাতে ঠাণ্ডায় ঠাণ্ডায় যতদূর পারে এগিয়ে নিচ্ছে তারা। চোখের পাতা ফেলতে বুঝি আমি ভুলে গেছি, পাশের জন কাঁধে টোকা দিয়ে ডেকে বললো - "ওদের নিশ্চয় দারুণ চেহারা হয় বল? এইসা হাত পায়ের গুলি? আমার মত সরু সরু হাত পা আর ভুঁড়িওয়ালা নয়। ধুর।"
  • Titir | ***:*** | ২৬ জুলাই ২০১৯ ০০:১৫456840
  • মুগ্ধ হয়ে গেলাম পড়তে পড়তে। অ বাবুর তাড়াতাড়ি যাওয়ার অভ্যেসটি খুব ভালো। তাতে ভালো সিট ও মেলে আর কোন কিছু হাতছাড়াও হয় না।
    আমার ছোট কন্যাটি কদিন আগেই ইয়োসমিতি ঘুরে এসেছে। সেও বলল এর অপরূপ সৌন্দর্য্যের কথা।
  • পুপে | ***:*** | ২৬ জুলাই ২০১৯ ০৯:২৫456841
  • ** আগের পর্বে দুই আর তিন নম্বর প্যারায় কিছু তথ্য মিস গেছিল, সেগুলো যোগ করে দিলাম -

    হার্ডিং-কে দিয়ে শুরু, এর পর আরও অনেককে হাতছানি দিয়েছে ইয়োসেমিতির কিনারায় অপেক্ষারত ক্যাপ্টেন। এ বলে আমায় দ্যাখ তো ও বলে আমায় - কত কম সময়ে, কত কম যন্ত্রপাতির সাহায্য নিয়ে ক্যাপ্টেনের নাক বেয়ে উঠে পড়তে পারে লোকজন, তার প্রতিযোগিতা!

    হার্ডিং-এর টীম এইড ক্লাইম্বিং করেছিল, মানে ওপরে ওঠার জন্য নিজের মগজ আর হাত পা ছাড়াও অন্য কলাকৌশল ব্যবহার করা - তার মধ্যে পড়তে পারে পাহাড়ের গা ভেঙ্গে ধাপ বানিয়ে নেয়া, বা দড়ির আগায় ফাঁস বানিয়ে ল্যাসো ছোঁড়ার মত করে পাহাড়ের কোন খাঁজে তাকে আটকে তারপর সেই দড়ি বেয়ে ওঠা, বা পাহাড়ের গায়ে নাট বল্টু পেরেক গেঁথে দড়ির মই ঝুলিয়ে ওঠা- এমন আরও হাজার উপায়। পরের দিকে যখন পাহাড়-চড়িয়েরা দেখল যে এভাবে প্রায় যে কোন পাহাড়েই দড়ি দড়া নাট বলটু নিয়ে উঠে পড়া সম্ভব, তখন সত্তরের দশকে জনপ্রিয় হতে শুরু করল ফ্রি ক্লাইম্বিং। একজন লিডার দড়িশুদ্ধু হার্নেস পড়ে উঠতে থাকে, নিচে থাকে একজন “বিলেয়ার” যে দড়ির অপর প্রান্ত লাটাইয়ের সুতোর মত ছাড়তে থাকে। লিডার কেবল পেশীশক্তির সাহায্যে উপরে উঠবে। দড়ি ধরে টেনে নিজেকে তুললে হল না, তুমি তখন দুয়ো। তবে ওঠার সময় জায়গায় জায়গায় কোমরের দড়িটা ক্লিপ দিয়ে পাহাড়ের গায়ে হুকে লাগাতে লাগাতে যেতে পারো, যাতে পা পিছলে গেলে সটান নীচে না পড়ে তুমি শেষের হুক থেকে ঝুলতে থাকো; চিন্তা কোরো না, দড়ির নিচের প্রান্ত ততক্ষণে তোমার পার্টনার লক করে দিয়েছে! এই পদ্ধতিতে তিরানব্বই সালে প্রথমবার এল ক্যাপিটানকে পেড়ে ফেলেন লিন হিল, আমেরিকার এক দস্যি মেয়ে।

    সবথেকে সাংঘাতিক হল ফ্রি সোলো ক্লাইম্বিং - একা একা কোন দড়ি, কোন যন্ত্রপাতি ছাড়া শুধু সাহস বুদ্ধি আর ধৈর্য সম্বল করে পাহাড়ে ওঠা, পড়ে গেলেই…। ২০১৭ সালে অ্যালেক্স হনল্ড শুধুমাত্র হাতের ঘাম শুকনোর জন্য চকের গুঁড়োভর্তি ব্যাগ নিয়ে চার ঘন্টার-ও কম সময়ে উঠে পড়েন ক্যাপের মাথায়! এই গোটা ব্যাপারটা খুব সাবধানে রেকর্ড করে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের টিম , যাতে অ্যালেক্সের মনঃসংযোগে একটুও ব্যাঘাত না ঘটে, বানানো হয় ডকুমেন্টারি সিনেমা - “ফ্রি সোলো”। ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়! তার পরের বছরই আবার টমি ক্যাল্ডয়েলকে পার্টনার জুটিয়ে দ্রুততম আরোহণের (২ ঘণ্টার কম) রেকর্ডও ঝুলিতে পুরেছে দুর্দান্ত অ্যালেক্স, বয়স যার এখনো ৩৪ পুরে ৩৫- এ পড়েনি! এল ক্যাপিটানের গল্প শোনাবো আর শীলা স্নীটারের কথা বলবো না, তাও কি হয়? ১০ বছরের এই পুঁটে মেয়েটা এ বছর জুন মাসে বাবার সাথে চড়েছে এল ক্যাপ।

    তবে সব গল্পই বুকের ধুকপুকুনি বাড়িয়ে দেবার সাথে সাথে শেষে ঠোঁটের কোণে হাসি এনে দেয়না, কিছু গল্পের শেষে কালো ছায়া নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ম্লান মৃত্যু। তিরিশের-ও বেশি লোক এল ক্যাপিটান থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন, গত পাঁচ বছরে পাঁচ জন। মূহুর্তের অসতর্কতা? শুধু তা নয়, প্রকৃতির মেজাজমর্জিও বটে। সিয়েরা নেভাদাতে এখনো চলছে ভাঙ্গাগড়া, সে এখনো উচ্চতায় বেড়ে চলেছে, আবহবিকারের ফলে ভূপ্রকৃতিও নিয়ত পরিবর্তনশীল। তাপমাত্রার কমাবাড়ায় এল ক্যাপিটানের গা থেকে পেঁয়াজের খোসার মত পাথরের চোকলা খুলে এসে ভেঙ্গে পড়ে যায়, সাথে করে অকালে নিয়ে যায় পাহাড়চূড়ার স্বপ্ন দেখা তাজা ছেলেমেয়ে দের।
  • | ***:*** | ২৬ জুলাই ২০১৯ ১২:৪৬456843
  • আহা চমৎকার লেখা
  • hu | ***:*** | ২৭ জুলাই ২০১৯ ০৯:১৮456844
  • খুব ভাল হচ্ছে লেখা। পাহাড়ে চলার গল্পগুলো এবং ডকুমেন্টারির হদিস পাঠকের অতিরিক্ত পাওনা।
  • পুপে | ***:*** | ০৩ আগস্ট ২০১৯ ০৪:৩৬456845
  • গাড়ি দাঁড়ালো টানেল ভিউ পয়েন্টে। দিনের বেলায় এখানে ফটোগ্রাফারদের ভিড় থাকে ইয়া ইয়া লেন্স বাগিয়ে, বাঁয়ে এল ক্যাপিটান, ডানদিকে ব্রাইডালভেল ফলস, আর মাঝে ঐ দূরে দেখা যায় হাফ ডোম - এ মানে ইয়োসেমিতির সিগনেচার ছবি। যারা মারিপোসা গ্রোভের রেডউড দেখে তারপর গুটি গুটি ওয়াওনা রোড ধরে ইয়োসেমিতির দিকে আসে, তারা একটা দেড় কিলোমিটার লম্বা অন্ধকার ঘুরঘুট্টি টানেল থেকে বেরিয়েই চোখের সামনে পায় এই দারুণ ভিউ - গোটা ইয়সেমিতি ভ্যালির একটা সুন্দর সারসংক্ষেপ; তাই এর নাম টানেল ভিউ। আমরা এসেছি রাতের বেলায়, তায় ভালো ক্যামেরা নেই, অগত্যা খানিক এদিক ওদিক পায়চারি করে আর ট্যুরের সাথে ফ্রি হট চকোলেট খেয়েই সন্তুষ্ট। পরের স্টপ স্যুইঙ্গিং ব্রিজ। ইতিমধ্যে রেঞ্জার ভালো গল্পের ঝুলি গুটিয়ে আজুগুবি ওয়্যার-উল্ফের গল্প শুরু করেছে। সেদিকে আর মন দিচ্ছি না, চোখ দিয়ে শুষে নিচ্ছি রুপোলী প্রকৃতি। চাঁদের প্রকোপে তারারা অনেকটাই ম্লান, তবু বেশ চেনা যাচ্ছে সপ্তর্ষিমন্ডল, তার মাথা বরাবর লাইন টেনে ধ্রুবতারা। ইশকুল বয়েসে পড়া পাতাগুলো থেকে আবার মিলিয়ে নিতে চেষ্টা করি। আমার চোখে ধ্রুবতারাকে দেখায় একটা কেটে যাওয়া ঘুড়ির লেজের শেষের তারাটির মত, দিব্যি ঝুলছে - ঘুড়িটা লঘু সপ্তর্ষিমন্ডল। ইশকুলের বইতে কিসের মত দেখতে লেখা ছিল সে আর মনে নেই, গাইড বলে ওটা নাকি একটা ছানা ভল্লুক, আমেরিকান ইশকুলে সপ্তর্ষিমন্ডল-ও আসলে জিজ্ঞাসাচিহ্ন নয়, মা ভাল্লুক - গ্রীস লোকগাথা। গ্রীক গল্পে দেবতাদের ডজন ডজন মানুষ প্রেমিক-প্রেমিকা আর হাপ-মানুষ বাচ্চাকাচ্চা স্বর্গ মর্ত্য পাতালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। এই গল্পটা এরকম যে- গ্রীকদের দেবাদিদেব জিউস মর্ত্যে এসে ক্যালিস্তোর সাথে প্রেম-ট্রেম করে, তাদের একটি ছেলে হয় - আর্কাস। জিউসের বৌ দেবী হেরা রেগে আগুন হয়ে ক্যালিস্তোকে ভাল্লুক বানিয়ে দেয় - কে না জানে মেয়েদেরই সব দোষ? আর হেরা করবেই বা কি, ওদের তো আর ডিভোর্সের সুযোগ ছিল না! তো সেই ছেলে চারপেয়ে মাকে চিনতে না পেরে বর্শা উঁচিয়ে যেই না তেড়ে গেছে, জিউস ওপর থেকে মাতৃহত্যার এই অনাচার সহ্য না করতে পেরে ছেলেকেও ভাল্লুকে পরিণত করে মা-ছেলে দুজনকেই আকাশে পাঠিয়ে দিল! এ কি ধরনের বিচার ব্যাটা জিউস নিজেই জানে!!

    কাঠের ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে রেঞ্জারের লেজার টর্চের লাল রেখা বরাবর দৃষ্টি মেলে দি, চিনে নিই আরো অন্য অন্য তারা, শুনে নিই মানুষ আর কি গল্প বুনেছে আকাশপানে তাকিয়ে। হঠাত হইহই চেঁচামেচি- হয়েছে কি এই স্যুইঙ্গিং ব্রিজের পাশেই একটা ঘাসজমি মত জায়গা আছে। নদীর ধারে চাঁদের আলোয় কিছু ছেলেমেয়ে সেখানে গল্পগাছা করছিল বুঝি, তাদের গায়ে কারা যেন ইচ্ছে করে টর্চের আলো ফেলছে বার বার - অসভ্য অকাজের লোকেদের কমতি কোথাওই নেই! ট্যুর শেষে তাঁবুতে ফিরেই ঘুম - অন্ধকারে ঠাহর করে কোনমতে রাস্তা চিনে ফেরার সময় যে অন্য লোকের তাবুতে ঢুকে পড়িনি এই ভাগ্যি। কাল সকাল সকাল উঠে আমরা বেরিয়ে পড়বো এক বেশ বড়সড় হাইকে, সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ মাইল - অন্তত সেরকমই প্ল্যান। দেখা যাক কদ্দুর কি হয় শেষ অবধি।
  • পুপে | ***:*** | ০৩ আগস্ট ২০১৯ ০৬:০৭456846
  • হ্যাপি আইলস স্টপে নেমে আমাদের পায়ে চলা শুরু, প্রথম থেকেই রাস্তা চড়াই- উঠতে শুরু করেছে, পাশ দিয়ে গর্জন করতে করতে বইছে মার্সেড, ক্যাম্পের গা দিয়ে বয়ে যাওয়া শান্তশিষ্ট তার রূপটি চেনাই এখানে দুষ্কর। পরিশ্রম করা অভ্যেস নেই, হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করি না, জিমে যাই না- শুরুর থেকেই এসব না-বাচক শব্দগুলো হাড়ে হাড়ে টের পাইয়ে দিচ্ছে মজাটা। গতকাল মিরর লেকের রাস্তায় পড়ে থাকা একটা গাছের ডাল তুলে এনেছিল অ-বাবু, দাঁতখিঁচুনি সহ্য করেও। সেইটে সে আজও বগলে করে এনেছে, ১৪ মাইলের কখনো না কখনো ওইটি ধার চাইতে যে হবেই তাতে কোন সন্দেহ নেই। দিব্যি ফিট বাচ্চা-বুড়ো-টিনেজার-মধ্যবয়স্ক আমাকে পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে যাচ্ছে। অ-বাবুও ভালোই ফিট, সে মুগুর টুগুর ভাঁজে, ডনবৈঠক দেয় - তাকে বলা আছে যে ইচ্ছে হলে এগিয়ে যেতে- সাথে সাথেই যেতে হবে এমন নয় - তবে সেটা মুখের বলা, সত্যি করে পেছনে ফেলে অনেক এগিয়ে গেলে আমার দাঁতগুলো আপনা থেকেই কিড়মিড় করতে থাকে।

    এই পথেই হাফডোম যাবারও রাস্তা, ভিড় বেশি। অনেকে দেখি পিঠে রুকস্যাক আর দু হাতে হাইকিং স্টিক নিয়ে হনহনিয়ে এগোচ্ছে- এরা ব্যাকপ্যাকার - পিঠে তাঁবু আর রসদ নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছে- সুবিধেমত জায়গায় তাঁবু খাটিয়ে রাত্রিবাস, তারপর আবার চলা। লোকজন আর চারপাশ দেখতে দেখতে দিব্যি টুকটুক করে হেঁটে পৌঁছে গেলাম ভার্নাল ফলস ব্রিজে। মার্সেড নদী সিয়েরা নেভাডার ক্লার্ক রেঞ্জের কোল থেকে তৈরী হয়েছে, প্রায় আড়াই হাজার মিটার উচ্চতায়, আর প্রচণ্ড খাড়া “দৈত্যাকার সিঁড়ি” বেয়ে ভ্যালিতে নেমে এসেছে। ২০০ মিটারের নেভাডা ফলস আর আরো নিচে মেরেকেটে ১০০ মিটারের ভার্নাল ফলস হল সেই দৈত্যাকার সিঁড়ির দুই ধাপ। ভার্নাল ফলস ব্রিজ এদিকের পাহাড় থেকে নিয়ে আমাদের তুলে দিল ওদিকের পাহাড়ের গায়ে। এখান থেকে পাহাড়ের গায়ে ধাপ কেটে বানানো সিঁড়ি একদম ঝর্নার পাশ দিয়ে আমাদের নিয়ে যাবে তার মাথায়। জলে ভিজে কালো গ্র্যানাইট চকচক করে, কোথাও কোথাও সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসে জলের ধারা, ঝিরঝিরে বৃষ্টির মত জলের রোঁয়ারা ত্বকের মধ্যে মিশে যায়, জলের ধোঁয়ায় সূর্যের আলোয় আঁকা হয় রামধনু- এ রাস্তার নাম “মিস্ট ট্রেইল”- কুয়াশা ভেজা পথ। শুনতে যতই রোমান্টিক লাগুক, দেখতে যতই বাক্যি হরে যাক, পা ফেলতে গিয়ে দেখতে পাবে পাথরের খোঁদল, শ্যাওলা, জলে পিচ্ছিল, আর অগতির গতি এক ফঙ্গবেনে মরচে পড়া রেলিং, তা-ও সব জায়গায় নেই। তার মধ্যে অবিরত শুনতে পাচ্ছি - “এবার থেকে ফিরে গিয়ে ব্যায়াম করবি রোজ, কি অবস্থা করেছে চেহারার, একটুও ফিটনেস নেই, এদিকে বেড়াতে যাবার সখ, খালি প্ল্যানই করিস তুই, প্ল্যানটা এক্সিকিউট করার জন্য প্রিপেয়ার কিছুই করিস না, এটুকুতেই হাঁপাচ্ছিস, এখনো অনেক রাস্তা বাকি”- কমা দিলে যেটুকু থামতে হয়, ঠিক সেইটুকু থেমে থেমে বলে চলেছে এসব। লম্বা চলার পথে উৎসাহ দেবারই যে কথা, মনের জোর নষ্ট করা উচিত নয় সে কথা সাতজন্মে বেড়াতে যাবার নাম নিজে থেকে যে করে না, যে কোনোদিন জেগে বা ঘুমিয়ে পাহাড়ের স্বপ্ন দেখে না- তাকে আর কি বোঝাবো? “এসব বলিস না, অসুবিধে হচ্ছে” এটুকু বলেই থেমে গেলাম। আরো মাথা গরম হল যখন রুট সম্পর্কে কিচ্ছু না জেনেই, রাস্তা দু'ভাগ হয়েছে এরম একখানে এসে বলতে লাগল - "এই তো এইদিকেরটায় যাই চল, অনেক কিছু দেখতে পাবো, ওদিকের রাস্তা বেশি তো কি হয়েছে" অমুক তমুক। আমার কথায় বিশ্বাস নেই। নেহাত পাশ দিয়ে যেতে যেতে একজন বলে গেল যে "ওদিকে যেও না, এদিকেই রাস্তা কম, আর ভিউও ভাল"- তাই উনি শান্ত হলেন। দিয়ে খানিক পর রামধনু দেখতে পাওয়ায় এ কান থেকে ওকান অবধি হাসি বেরল যখন, তখন মাথায় গাঁট্টা মারার ইচ্ছেটা অতি কষ্টে সংবরণ করলাম।
  • !@#$%^& | 162.158.***.*** | ০৪ মে ২০২০ ২২:৫১731125
  • এই যে।
  • পুপে | 67.166.***.*** | ২৩ মে ২০২২ ১১:৩১737030
  • আগেরটা শেষ করিনি। তবুও অকুতোভয়ে নতুন সর্ষে লিখি। 
    সেই কবে থেকে আশায় আশায় বসে আছি বেড়াতে যাবো ইয়োলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক - পৃথিবীর প্রথম জাতীয় উদ্যান। আগের বছর সমস্ত প্ল্যান করে হোটেল ক্যাম্পগ্রাউন্ড ইত্যাদি বুক করে ফেললাম- এমনকি মিঠুন্দা একখানা দূরবীন অবধি কিনে পাঠিয়ে দিল জীবজন্তু দেখার জন্য। কিন্তু শেষ অবধি যাওয়া গেল ভেস্তে আর মেজাজ গেল বিগড়ে। সেই থেকে তক্কে তক্কে আছি কবে টুক করে ঘুরে নেয়া যায় সেই সুপ্রাচীন আগ্নেয়গিরির দেশ। কথায় বলে সবুরে মেওয়া ফলে। আগের প্ল্যানটা ছিল যারপরনাই ঊর্ধ্বশ্বাসে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরা। এই বছর একটু রয়ে সয়ে সময় নিয়ে বানিয়ে ফেলা গেল ইয়োলোস্টোন আর গ্র্যান্ড টিটন পার্কের ভ্রমণসূচী - পাঁচ দিনের রোডট্রিপ আর টেন্ট ক্যাম্পিং। ইয়েলোস্টোনের বেশ ক'টা সিগনেচার ছবি দিয়ে অ্যালবাম শুরু করলাম - সময় সুযোগ মত টুকটাক গল্প লিখে রাখবো।
     
    ইয়েলোস্টোন পার্কটা বিরাট জায়গা জুড়ে বিছিয়ে রয়েছে - তিনটি রাজ্য মিলিয়ে- আইডাহো, মন্টানা আর ওয়াইয়োমিং, যদিও বেশীটাই ওয়াইয়োমিং- এ। পার্কে ঢোকার পাঁচটা দরজা- উত্তর, উত্তরপূর্ব, পুব, পশ্চিম, দক্ষিণ। আমরা যেখানে আছি, মানে বোল্ডার শহর মোটামুটি এই পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে - কাজেই দক্ষিণ বা পূর্ব দিক দিয়েই ঢোকা হবে সবথেকে সহজ। সহজ বলতে ওই ধরা যাক এক ঘণ্টা কম সময় গাড়ি চালাতে হবে আর কি! কিন্তু বেরনোর দিন যতোই এগিয়ে আসে, ততই দেখি ইয়োলোস্টোনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বরফঝড়ের সম্ভাবনা বাড়ে। একজন সান্ত্বনা দেয় যে পাহাড়ে তো এই রোদ, এই বৃষ্টি, হয়তো ঝড় অন্যদিকে সরে যাবে। কিন্তু এই করে করে যাত্রার ঠিক দুইদিন আগে থেকে শুরু হল স্নোস্টর্ম - তার চোটে পার্কের পুব আর "দখিন দুয়ার খোলা" না থেকে গেল বন্ধ হয়ে। কাজেই পশ্চিমে ম্যাডিসনের দিক দিয়ে ঢুকতে হবে বলে রাত থাকতে থাকতেই ১৩ই মে পৌনে তিনটের সময় আমরা রওনা দিলাম- প্রায় ১১ ঘণ্টার ওপর রাস্তা। মোটামুটি দুপুর দুপুর পৌঁছে গেলে তবুও কিছু ঘুরে দেখা যাবে।

    ইয়োলোস্টোন গোটা শীতকাল স্তূপ স্তূপ বরফে ঢাকা থাকে - স্নোমোবিলে চেপে ঘুরতে হয় - সেও হয়তো যাওয়া হবে বা হবে না কোন একদিন। তবে নিজের গাড়ি নিয়ে ঘুরতে যাবার সময় ওই মোটামুটি এপ্রিলের শেষ থেকে ওদিকে অক্টোবরের শুরু। মে মাসে পার্কের ভেতরের সব রাস্তা খোলে না, আবহাওয়াও খামখেয়ালি - কখন যে দুম করে এক ফুট বরফ পড়ে যাবে তার ঠিক নেই। তবু এই সময়েই পার্ক থাকে সামান্য ফাঁকা; নয়তো আরও গরম পড়লে মাসে প্রায় দশ লক্ষ লোক এসে হাজির হয় এখানে। আর ইশকুল কলেজও ক'দিন ছুটি গ্রীষ্মকালীন কর্মব্যস্ততা শুরু হবার আগে। এই যে নানা জায়গায় ঘুরতে যাই আমরা থাকি তাঁবু খাটিয়ে- পার্কের ক্যাম্পগ্রাউন্ডে। এক তো এতে একদম পার্কের ভেতরে থাকা যায় আর খরচ বাঁচে। আর তাছাড়াও ইয়োলোস্টোনের মত জনপ্রিয় গন্তব্যে হোটেলপত্তর বহু আগে - প্রায় ৬-৭ মাস আগে থেকে বুক হয়ে গেলেও ক্যাম্পসাইট ১-২ মাস আগেও পাওয়া যায়। আমরা ট্রিপ প্ল্যান করেছি মার্চে।

    আমাদের ১১ ঘণ্টার যাত্রাপথে দেখলাম এক বিশাল মুজ হাইওয়ের ওপারে একটা জলাশয়ে সক্কাল সক্কাল স্নান সেরে নিচ্ছে। তার শিঙের আকারই প্রায় চার-পাঁচ হাত হবে। কিন্তু তখন ঘন্টাপ্রতি ৭৫-৮০ মাইল বেগে গাড়ি ছুটছে, চট করে দাঁড় করানোর প্রশ্ন তো নেইই আর চলন্ত গাড়ি থেকে ফোনে ভালো ছবিও আসবে না। এই হল এইবারের বেড়ানোর প্রথম আক্ষেপ! তবে ঘাবড়াও মাত, ইয়োলোস্টোন ঢুকতে না ঢুকতেই নদীর পাশে রাস্তার পাশে ঝোপে বনে জলে জংগলে দলে দলে বাইসন দেখা দিতে লাগলেন। তাদের ছোট্ট ছোট্ট রাঙা বাছুরের মত ছানা - দেখলে যতোই শখ হোক না কেন যে গিয়ে একটু আদর করে দি, বড় বাপ-মা বাইসনের চেহারা দেখলে সে শখ জানলা দিয়ে উড়ে পালাবে। এই ছানা বাছুরেরা আবার যাবে ভাল্লুকের গুবলু গাবলু ছানাদের পেটে - প্রকৃতির নিয়ম!

    ক্যাম্পসাইটে নামঠিকানা ইত্যাদি নথিভুক্ত করে আমরা চটপট বেড়িয়ে পড়লাম গ্র্যান্ড প্রিজম্যাটিক স্প্রিং- এর উদ্দেশ্যে। ইন্টারনেটে চোখ ঝলসানো ছবি দেখেছি এর - প্রায় ২০০-৩০০ ফুট ব্যাস জুড়ে গাঢ় নীল সবজে জল, চারপাশে হলদে কমলা লাল বর্ডার আর গলগল করে ধোঁয়া উঠছে গরম জল থেকে - এই হল হটস্প্রিং। কিন্তু এই এত গরম জল আসছে কোথা থেকে? আসলে ইয়োলোস্টোন পার্কের কেন্দ্রের এক তৃতীয়াংশই হল এক বিরাট সুপ্ত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ বা ক্যালডেরা (৭০ কিমি বাই ৪৫ কিমি)। যে আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ এত বড় তাকে নাম দেয়া হয়েছে সুপারভলক্যানো - ২১, ১৩, ৬.৪ লক্ষ বছর আগে বার তিনেকের বিশাল অগ্ন্যুত্‌পাতে তৈরী ইয়েলোস্টোন। তারপরেও খান আশি ছোটোখাটো লাভা উদ্গীরণ হয়েছে - শেষেরটা প্রায় ৭০ হাজার বছর আগে। সেইজন্যেই ইয়োলোস্টোন সদা পরিবর্তনশীল, রহস্যময়- এখানে ভূস্তরের মাত্র ৩-১২ মাইল নিচেই শুরু ম্যাগমার স্তর। সেই ম্যাগমার তাপেই ভূগর্ভের আর ভূস্তরের জল গরম হয় - বড় বড় ফাটল বেয়ে ওপরে উঠে আসে, উপরের ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া জল পালায় নিচে, আবার গরম হয়। এই ঘুরপাক চলতেই থাকে আর তৈরী হয় হট স্প্রিং বা উষ্ণ প্রস্রবণ - যেন বিরাট একখানা গরম জলের পুকুর, কোথাও জল বুরবুরি কাটছে, কোথাও ভকভক করে ধোঁয়া উঠছে, গরমের লোভে লোভে এসে জোটে কিছু ব্যাকটেরিয়া। প্রস্রবণের মধ্যিখানের সব সবথেকে গরম (প্রায় ৮৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস), যতো কিনারার দিকে যাওয়া যাবে জলের তাপমাত্রা আস্তে আস্তে কমবে - এবার যে ব্যাকটেরিয়ার যেমন গরম পছন্দ সে সেইখানে দল বেঁধে তৈরী করে নানা রঙের বলয় - আর আমাদের চোখের সামনে ফুটে ওঠে প্রিজমের মত রঙের বিচ্ছুরণ।

    গ্র্যান্ড প্রিজম্যাটিক স্প্রিং হল মিডওয়ে গিজার বেসিন অঞ্চলের অংশ- ইয়োলোস্টোনের সবথেকে উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোর একটা। এবার প্রস্রবণের একদম ধারে গিয়ে পড়লে অতো বিশাল পুকুরের ভালো ছবি তো উঠবে না, যত বেশী উঁচু জায়গা থেকে ছবি তোলা যাবে তত সুন্দর ছবি উঠবে - তাই আমরা এগোলাম সামনের পাহাড়ের দিকে। পাহাড়ের গায়ের ট্রেল বেয়ে খানিক উঠলে এক ভিউপয়েন্ট থেকে অসামান্য ছবি ওঠে গ্র্যান্ড প্রিজমাটিকের। কিন্তু বিধি বাম - এখন শীতঘুম ভেঙ্গে গ্রিজলিদের জেগে ওঠার সময় আর জেগে উঠলে তারা সামনে নাকি যা পায় তাই খায় - অতএব ট্রেইল বন্ধ- কিছুদিন পর খুলবে, জুন মাসে। মে মাসে ইয়েলোস্টোন আসার এই এক অসুবিধে - ভিড় কম হলেও বেশ কিছু জায়গা তখনো জনসাধারণের জন্য খোলা নয়।
     
     
    লামার ভ্যালী - বন্যপ্রাণী দেখার আর ছবি তোলার জন্য দারুণ জায়গা। ক্রমশ এগিয়ে আসতে থাকা বাইসনের দলের ছবি তুলতে জনৈক এমনই মশগুল যে ট্রাইপড সমেত সে উঠে গেছে রাস্তায়। গাড়ির হোক বা বাইসন- কারোর ঢুঁসোকেই পরোয়া নেই!
     
    শুধু পায়ের ছাপ দেখেই ফিরতে হবে ভেবে যখন একটু মুষড়ে পড়েছি, ঠিক তখন গাড়িতে বসে দেখলাম পাশের পাহাড় থেকে ইনি হেলতে দুলতে নেমে এসে ঘাসজমিতে ইতিউতি কিছু শোঁকাশুঁকি করে নিরাশ হয়ে উলটোদিকের পাহাড়ে রওনা দিলেন। পিঠের অল্প কুঁজ থেকে বোধ করি ইনি হয়তোবা একজন গ্রিজলি ভালুক।
     
    আর্টিস্ট পয়েন্ট - ইয়েলোস্টন নদীর খাত আর জলপ্রপাত।
     
    কাদায় ভাল্লুকের পায়ের ছাপ। এ আবার যেমন তেমন কাদা নয়- ভূগর্ভের তাপে গলে যাওয়া শিলাস্তর।
     
    গ্র্যান্ড প্রিজমাটিক স্প্রিং - বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম উষ্ণ প্রস্রবণ। গরম জলে ব্যাকটেরিয়ার রমরমায় এমন অপূর্ব রং।
     
    মিডওয়ে গীজার বেসিন চত্বরে গ্র্যান্ড প্রিজম্যাটিকের মত বড় না হলেও এমন ছোট ছোট অজস্র রঙিন ডোবায় ভর্তি।
     
    বাইসন পরিবার ম্যাডিসন নদীর ধারে।
     
    ওল্ড ফেইথফুল গীজার। ঘণ্টায় ঘণ্টায় ভূগর্ভের তাপে টগবগিয়ে ফুটতে থাকা জল আর বাষ্প ফোয়ারার মত উঠে আসে ফাটল বেয়ে।
     
    ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে ঠিক করে জলটাই দেখা যাচ্ছে না।
     
  • aranya | 2601:84:4600:5410:91bb:a861:e37d:***:*** | ২৪ মে ২০২২ ০৯:৩৩737087
  • খুব ভাল লাগছে , লেখা + ছবি @পুপে 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন