এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • মিলিন্দ-পহ্ন

    Abhyu
    বইপত্তর | ০৮ জুলাই ২০১০ | ১৩৯৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Abhyu | 80.22.***.*** | ০৮ জুলাই ২০১০ ১৬:৩৫454267
  • মিলিন্দপঞহো

    মিলিন্দ-প্রশ্ন (বঙ্গানুবাদ)
    পণ্ডিত শ্রীমৎ ধর্মাধার মহাস্থবির কর্তৃক অনুদিত
    প্রাপিস্থান: কলেজ স্ট্রীটের মহাবোধি সোসাইটি
    মূল্য: দেড়শো টাকা

    রবীন্দ্রনাথের উৎসাহ ও প্রেরণায় বাঙলা ভাষায় মিলিন্দপঞহোর অনুবাদ কার্যে প্রথম হাত দেন পণ্ডিত বিধুশেখর শাস্ত্রী। কিন্তু কাজটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এক-তৃতীয়াংশ মাত্র বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে দুখণ্ডে প্রকাশিত হয় আজ থেকে একশ বছর আগে। আধুনিক ভারতীয় ভাষায় এটিই এই গ্রন্থের প্রথম অনুবাদ। এরপর ১৯৩১ খৃষ্টাব্দে রেঙ্গুন থেকে একটি সংক্ষিপ্ত বঙ্গানুবাদ বের হয়। তারপর ১৯৭৭ খৃষ্টাব্দে নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে আমাদের আলোচ্য বইটি প্রকাশিত হয়। দশ বছর পর বইটি পুনর্মুদ্রিত হয়। অবতরণিকায় নালন্দা বিদ্যাভবনের অধ্যক্ষ ধর্মাধার মহাস্থবির একজনের পাঁচশ টাকা অনুদানের সকৃতজ্ঞ উল্লেখ করেছেন। সালটা ১৯৮৭। সে সময়েও পাঁচশ টাকার মূল্য এমন কিছু বেশি ছিল না। কিন্তু এই বইটির প্রকাশের ক্ষেত্রে তার ভূমিকা এতই বেশি যে লেখক তার উল্লেখ করেছেন। গ্রন্থের প্রথম সংস্করণের মুখবন্ধ পড়লেই বোঝা যায় কী পরিমাণ আর্থিক প্রতিকূলতার ভিতর দিয়ে এঁদের যেতে হয়েছে। অথচ পাশের র‌্যাকেই রাখা ছিল মোক্ষমূলারের নামাঙ্কিত উন্নত মানের ইংরেজী প্রকাশন। আশা করি ভবিষ্যতে বাঙলা ভাষায় প্রাচ্যবিদ্যাচর্চা আরো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাবে।

    অনেকের মতে বর্তমান মিলিন্দপঞহো গ্রন্থটি আর একখানি মূল সংস্কৃত গ্রন্থের রূপান্তরমাত্র। কিন্তু এখনো সেই মূল গ্রন্থের কোনো সন্ধান পাওয়া যায় নি। গ্রীক ও প্রাকৃত ভাষায় রাজা মিলিন্দ ও ভিক্ষু নাগসেনের মধ্যে কয়েকটি বৈঠকে যে সব আলাপ আলোচনা হয় সেগুলি সংক্ষিপ্তাকারে কোনো রাজকর্মচারী লেখকের দ্বারা প্রথমে লিপিবদ্ধ হয় (scribe) ও পরবর্তীকালে মাণব (?) নামের এক ব্যক্তি তিন তাকে খণ্ডে পুস্তকাকারে লিপিবদ্ধ করেন। মিলিন্দপঞহের রচনাকাল নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ আছে। কারো কারো মতে এর রচনাকাল খৃষ্টপূর্ব প্রথম শতক, আবার কারো কারো মতে খৃষ্টীয় প্রথম শতক। কালক্রমে এই মূল গ্রন্থটি ভারতবর্ষ থেকে অবলুপ্ত হয়ে যায়। অনেকের অভিমত এটি সিংহলে স্থানান্তরিত হয়। সিংহলী ঐতিহ্যমতে এই দেশের প্রাচীনকালের আচার্য্যগণ (পূব্বাচারিয়া) মাগধী অর্থাৎ পালি ভাষায় মূলের অনুবাদকার্য সম্পন্ন করেন। সেই অনুবাদ গ্রন্থই হচ্ছে পালি মিলিন্দপঞহো। আনুমানিক খৃষ্টীয় তৃতীয় থেকে পঞ্চপ শতাব্দীর মধ্যে গ্রন্থটি একাধিকবার চীনাভাষায় অনূদিত হয়।

    ত্রিপিটক-বহির্ভূত পালি সাহিত্যভাণ্ডারের প্রাচীনতম এই গ্রন্থের দুই নায়ক - রাজা মিলিন্দ ও ভিক্ষু নাগসেন। মিলিন্দ প্রশ্নকর্তা, নাগসেন "আশ্চর্যো বক্তা"। মিলিন্দ হলেন গ্রীক সম্রাট Menander। তিনি বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হন ও একটি বিহার নির্মাণ করেন। ইতিহাসে মেনান্ডারের জীবনী রচনার অনেক উপাদান আছে, কিন্তু মিলিন্দপঞহো ছাড়া নাগসেনের জীবন বৃত্তান্ত সম্বন্ধে অন্য কোনো ঐতিহাসিক সূত্র পাওয়া যায় না। মিলিন্দ ও নাগসেনের মধ্যে গল্পের কথোপকথনের সাহায্যে বৌদ্ধ আগমের বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়গুলির উপর আলোকপাত করাই এই গ্রন্থ-সংকলনের উদ্দেশ্য। এই গ্রন্থে ছয়টি বিভাগের উল্লেখ পাওয়া যায় (১) পূর্বযোগ, (২) মিলিন্দ প্রশ্ন, (৩) লক্ষণ প্রশ্ন, (৪) মেন্ডক প্রশ্ন, (৫) অনুমান প্রশ্ন এবং (৬) উপমাকথা-প্রশ্ন। নানা দৃষ্টান্ত, আখ্যায়িকা, উপমা ইত্যাদির সাহায্যে বুদ্ধ ও বোধিসঙ্কÄগণের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য, বৌদ্ধ অনাত্মবাদ, জন্মান্তর, কর্মবাদ, নির্বাণের স্বরূপ, অর্হঙ্কেÄর লক্ষণ প্রভৃতি নানা গম্ভীর বিষয়ের মনোজ্ঞ আলোচনা রয়েছে এখানে। কথোপকথনের ভঙ্গীতে জটিল তঙ্কÄ¡লোচনা অবশ্য ধর্ম ও দর্শনশাস্ত্রে নতুন নয়। সূত্র পিটকের অনেক সূত্র এই ভঙ্গীতে রচিত। জেন্দ-আবেস্তার তৃতীয়ভাগ 'বন্দিদাদ'ও এই ভাবেই লেখা। দার্শনিক প্লেটোও তাঁর উপদেশাবলী কথোপকথনের রীতিতে প্রকাশ করেছেন। আর আমাদের সবচেয়ে কাছের উদাহরণ হল শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত।

    এই গ্রন্থের প্রথম তিন খন্ড নি:সন্দেহে রাজা মিলিন্দ ও ভিক্ষু নাগসেনের কথোপকথন। পালিগ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডের শেষে রয়েছে "মিলিন্দপঞ্‌হানং পুচ্ছা বিস্‌সজ্জনা সমত্তা।" চীনা অনুবাদেও গ্রন্থখানি এই খানেই শেষ হয়েছে। সুতরাং এটা ধরে নেওয়া সমীচীন যে পরবর্তী তিন পরিচ্ছেদ স্বতন্ত্র গ্রন্থ ও পরবর্তীকালে সংযোজিত। (৪) মেণ্ডক প্রশ্নের উভয়সঙ্কটজনক প্রশ্ন ও তাদের রোমাঞ্চকর সমাধান অতি চমৎকার। (৫) অনুমান প্রশ্নের ধর্মনগরের পরিকল্পনা উচ্চ ধর্মীয় আদর্শের দ্যোতক। (৬) উপমাকথা প্রশ্নের মুমূক্ষু ব্যক্তির শিক্ষণীয় ও গ্রহণীয় গুণাবলী প্রকৃতির রাজ্যে সর্বত্র বিরাজমান। এই গুণাবলী নিজের মধ্যে রূপায়িত হলে মানুষ সহজে বিশুদ্ধ হতে পারে। সম্ভবত: এই পরিচ্ছদগুলি শান্তচিত্ত কোন লেখকের লেখনীপ্রসূত। মেণ্ডক প্রশ্নের একটি উদাহরণ দিই। যদি বুদ্ধ স্বয়ং পূজা গ্রহণ করেন তবে তিনি পরিনির্বাণ লাভ করেন নি। এখনও নিশ্চয়ই তিনি এই সংসারের সঙ্গে সংযুক্ত, সুতরাং তাঁর উদ্দেশ্যে পূজা নিষ্ফল। আর যদি তিনি পরিনির্বাণ লাভ করে থাকেন তাহলে তিনি কিছু গ্রহণ করেন না। সুতরাং তাঁর উদ্দেশ্যে পূজা নিষ্ফল। ভিক্ষু রাজার এই উভয়কোটিক প্রশ্নের সুষ্ঠু মীমাংসা করেছিলেন।

    ধম্মসংগণির অর্থকথা অত্থসালিনী অনুসারে প্রশ্ন পাঁচ প্রকার (১) অদৃষ্ট প্রকাশন (না জানা জিনিস জানার জন্যে), (২) দৃষ্ট সংতুলন (জানা জিনিস যাচাই করার জন্যে), (৩) বিমতিচ্ছেদন (বিমতি বা সংশয় ছেদনের জন্যে), (৪) অনুমোদন ("ভিক্ষুগণ, তোমরা কী মনে কর, রূপস্কন্ধ নিত্য কি অনিত্য?' 'অনিত্য ভন্তে!' "যাহা অনিত্য তাহা দু:খ কি সুখ?" "দু:খ ভন্তে!"), (৫) কথনেচ্ছার প্রশ্ন (জ্ঞাপন করার ইচ্ছায় প্রশ্ন)। সমগ্র মিলিন্দপঞহে এই পাঁচ শ্রেণীর প্রশ্ন আলোচিত হয়েছে।

    ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির আলোচনায় ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক তথ্যে সমৃদ্ধ এই গ্রন্থখানির মূল্য অপরিসীম। তৎকালীন প্রচলিত শিক্ষাদীক্ষা, অস্ত্রচালনা, আয়ুর্বেদশাস্ত্রের উন্নতি সম্পর্কে নানা মূল্যবান তথ্য লিপিবদ্ধ আছে। রাজনৈতিক ইতিহাসের ক্ষেত্রেও মিলিন্দপঞহো গুরুত্বপূর্ণ। আশ্চর্যের বিষয় এই যে সম্রাট অশোকের সমকালীন বা তাঁর অব্যবহিত পরবর্তীকালীন ত্রিপিটক-অন্তর্গত কোনো গ্রন্থে তাঁর নামোল্লেখ পাওয়া যায় না। ত্রিপিটক-বহির্ভূত এই মিলিন্দপঞহো গ্রন্থে সর্বপ্রথম তাঁকে সুস্পষ্টভাষায় ধর্মরাজ বলে অভিহিত করা হয়। ভিক্ষু নাগসেনের দু একটি উক্তি থেকে রাজার মন্ত্রীবর্গ সম্বন্ধে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। রাজসভায় একশত বা দুইশত অমাত্য থাকতে পারে, কিন্তু এঁদের মধ্যে মাত্র ছয় জনই আসল অমাত্য হিসেবে গণ্য হবেন - সেনাপতি, পুরোহিত, বিচারক, কোষাধ্যক্ষ, এবং, ছত্রগ্রাহক ও খড়্‌গগ্রাহক ! আরো জানা যায় যে বিশেষ প্রয়োজনে রাজা সকলের উপর অতিরিক্ত কর ধার্য করলেও বিশিষ্ট কয়েকজন মহামাত্র এই করদান থেকে অব্যাহতি পেতেন। এই গ্রন্থের অবতরণিকায় সাগল নগরের বর্ণনা মেগাস্থিনিসের পাটলিপুত্র নগর-বিবরণকেও হার মানায়। নতুন নগর পত্তনের প্রাক্কালে দক্ষ স্থপতি কী প্রকার নির্মাণ পদ্ধতি অবলম্বণ করতেন তারও একটি মনোজ্ঞ বিবরণ রয়েছে নাগসেনের উক্তিতে। নগরের ক্রমিক উন্নতি ও শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নানা জাতি বর্ণের জনসমাগম হতে থাকে। প্রসঙ্গত: বিভিন্ন শিল্পজীবীদের একটি তালিকা এই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যা থেকে তৎকালীন প্রচলিত বিভিন্ন বৃত্তি সম্বন্ধে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দেয়। অন্যান্য বৌদ্ধ গ্রন্থের মতো এখানেও ক্ষত্রিয়দের পরে ব্রাহ্মণদের উল্লেখ পাওয়া যায় কারণ সেই সময় সামাজিক প্রতিপত্তিতে ক্ষত্রিয়রাই ছিলেন উপরে। উচ্চকোটির সমাজে অন্ত্যজজাতির লোকের কোনো মর্যাদা ছিল না। সমাজে আসুর বিবাহ প্রচলিত ছিল। কোনো এক ব্যক্তি বিয়ের জন্যে অগ্রিম অর্থ দিয়ে একটি ছোট বালিকাকে নির্বাচন করে চলে যায়। ক্রমশ: ঐ বালিকাটি বয়:প্রাপ্তা হলে পাত্রীপক্ষকে পণ দিয়ে অপর এক ব্যক্তি যুবতী মেয়েটির সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হয়। অত:পর ঘটনাটি রাজার বিচার্য বিষয় হয়ে ওঠে। অন্যদিকে বিধবাদের জীবন ছিল দুর্বিষহ। নাগসেন সংসারে দশ প্রকার অবজ্ঞাত, অবহেলিত, অমর্যাদাপ্রাপ্ত লোকের উল্লেখ করতে গিয়ে সর্বপ্রথম বিধবা নারীর কথা স্মরণ করেছেন। ব্যভিচারিণীদের ওপর কঠোর দণ্ডবিধানের ব্যবস্থা ছিল। স্বামী ইচ্ছানুযায়ী তাকে প্রহার বা বধ পর্যন্ত করতে পারত।

    তখনকার দিনেও গণিকাবৃত্তি হীন বলে গণ্য হত। তবুও কোন কোন গণিকা নৈতিক গুণাবলীর জন্যে এমনকি সম্রাটের শ্রদ্ধালাভ করতেন। পাটলিপুত্র নগরে বিন্দুমতী নামে এক গণিকা তাঁর সত্যক্রিয়া-প্রসূত ইচ্ছাশক্তি প্রভাবে গঙ্গাকে ঊর্দ্ধদিকে প্রবাহিত করেন। সম্রাট অশোকের কাছে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন যে ক্ষত্রিয়, ব্রাহ্মণ, বৈশ্য, শূদ্র কিংবা অপর কোনো নীচ জাতির ব্যক্তিকে উচ্চনীচ ভেদাভেদ না করে সমভাবে পরিচর্চা করতেন। কোনো ব্যক্তিবিশেষের প্রতি সনিষ্ঠ অনুরাগ বা ঈশ্বরভক্তি নয়, সকলকে সমভাবে পরিচর্যা করে তিনি অসম্ভবকে সম্ভব করার শক্তি অর্জন করেছিলেন।

    মিলিন্দপঞহে ভারতের বহু প্রাচীন জনপদ নগর, নদী এবং বিদেশেরও অনেকগুলি স্থানের নামোল্লেখ আছে। হিমালয় পর্বত থেকে উৎসারিত নদীগুলির মধ্যে উহা নামের একটি নদীর উল্লেখ অন্য কোনো পালি গ্রন্থে দেখা যায় না। বৈদেশিক ভূমির মধ্যে অলসন্দ (Alexandria) এবং চীন-বিলাত (বিকল্প নাম চিলাত) উল্লেখযোগ্য।

    --------------

    উপরের লেখার অনেকটাই বইটা থেকে হুবহু ঝেড়ে দেওয়া। কোটেশান দিতে গেলে কুলোতো না বলে সে চেষ্টা করি নি। আসছে বছর আবার হবে!

  • ranjan roy | 122.168.***.*** | ০৮ জুলাই ২০১০ ২২:০৭454268
  • অমনি বল্লেই হবে? ভিক্ষু দ্বারা ঐ ডিলেমার সমাধানটি অন্তত: বলে( বা টুকে) দিয়ে যাও। নইলে বইটা কিনবো না!! হ্যাঁ!!
  • Abhyu | 80.22.***.*** | ১১ জুলাই ২০১০ ১৬:৫০454269
  • প্রায় দুপাতা জোড়া ব্যাখ্যা। টুকব বললেই কি আর টোকা যায়? তবে মূল বক্তব্য সেই বিবেকানন্দের রাজার ছবিতে থুতু ফেলার গল্পের মতো। ছবি যেমন রাজা নয়, তেমনি বুদ্ধদেবও পুজো নেন না। কিন্তু তাঁর উদ্দেশ্যে পুজো তাই বলে নিষ্ফল নয়, তাতে পূজারী ভিক্ষুর নিজের উন্নতি হয়।

    আরও বেশ কয়েকটা ব্যাখ্যা আছে। কাঠে আগুন লাগানো হল, কাঠ জ্বলে ছাই হয়ে গেল। তার মানে জগৎ অগ্নিশূন্য নয়। এখানে বুদ্ধত্ব অগ্নির সঙ্গে তুলনীয়। ব্যক্তি বুদ্ধদেব নেই, কিন্তু তাঁর শিক্ষা রয়ে গেছে, সুতরাং তাঁর উদ্দেশ্যে পুজো নিষ্ফল হবে না।

    আরো ধরুন পৃথিবী ইচ্ছে করে না যে তার উপর গাছ হোক, আবার অনিচ্ছেও করে না। কিন্তু গাছ মাটিতে শেকড় প্রবেশ করালে সেটা নিষ্ফল হয় না। তেমনি নির্বাণপ্রাপ্ত তথাগত কিছু ইচ্ছাও করেন না, অনিচ্ছাও করেন না, কিন্তু তাতে তাঁর উদ্দেশ্যে পুজো নিষ্ফল হয় না।

    বইটাতে মজার জিনিসও কম নেই। টুকি?
    (১)
    মহারাজ! মৃত যক্ষদের শরীর দেখা যায়। উহাদের পচা গন্ধও বাহির হয়। মহারাজ! মৃত যক্ষগণের শরীর কীটরূপে দেখা যায়, ক্রিমিরূপে দেখা যায়, পিঁপড়ারূপে দেখা যায়, পতঙ্গরূপে দেখা যায়, সর্পরূপে দেখা যায়, বিছারূপে দেখা যায়, শতপদীরূপে দেখা যায়, পক্ষীরূপে দেখা যায় অথবা পশুরূপে দেখা যায়।
    ভন্তে নাগসেন! আপনার মত বুদ্ধিমান লোক ব্যতীত কে আর এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন!
    (২)
    ভন্তে নাগসেন! এই জল অগ্নিতে তপ্ত হইবার সময় পুট্‌পুট্‌ ভুট্‌ভুট্‌ ইত্যাদি অনেক প্রকার শব্দ করিয়া থাকে। ভন্তে! জল কি তবে জীবিত? ক্রীড়া করিবার সময় শব্দ করে কি? অথবা অন্যের দ্বারা প্রপীড়িত হইয়া শব্দ করে?
  • Rit | 213.***.*** | ১৯ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:৫৩454270
  • বাহ।
  • Abhyu | 34.18.***.*** | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১১:২৩454271
  • আমিও যে সিরিয়াস বই পড়ি সেটা আপনারা খেয়াল করেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে প্রতিক্রিয়া দিন