@সিএস, "ঈগোর বুস্টিং, হাঁদা পাবলিক, সব কিছুই ম্যানিপুলেটেড - অরিনবাবুর এই তিন বক্তব্য ছিল আমি যা বুঝেছি। ঘোরতর আপত্তি আছে এই কথাগুলোয়, যাকে বলে মিসোজিনিমার্কা কথা এগুলো।"
সিএস, "হাঁদা পাবলিক" কথাটা পলিটিকালি ইনকারেক্ট (বিশেষ করে আজকালকার দিনে), যার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত, আমি বোঝাতে চাইছিলাম "ভারতের সরলমনা সাধারণ নাগরিক" অর্থে, তবে সব কথা সবসময় বলতে নেই, তাতে মানুষের মনে আঘাত লাগতে পারে (অবশ্য আমাকে আহত করলে আমার লাগে টাগে না, কারণ আমার "আমিত্ব" বা ইগোর ব্যাপারটা নেই ) | কথাটার একটা অন্যরকমের ব্যঞ্জনা হয়েছে। নিজগুণে মাফ করে দেবেন।
ইগো বুস্টিং | এই কথাটার ব্যবহার করা নিয়ে আপনার আপত্তি থাকতেই পারে, হয়ত আপনার ধারণা সাধারণ নির্বাচনে মানুষের একটা ইগো বা আত্মাভিমানের বৃদ্ধি হয় না, বা মানুষ "নিজেকে" রাষ্ট্রের কাছে অপরিহার্য মনে করে না | তা সেটা আমার মনে হয় না, এবং ভারতের সাধারণ মানুষ যে নির্বাচক হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে প্রয়োজনীয়, সে কথাটা এই ফোরামেই নানাজনের মন্তব্যে স্পষ্ট, কাজেই নির্বাচনে যদি রাজনৈতিক দলগুলো পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষের ইগোকে (আত্মাভিমানকে) না উসকে দেয় বলে আপনার মনে হয়, তাহলে আমার এবং আপনার ইগো কথাটার ধারণায় নিশ্চয়ই তফাৎ আছে, এবং এক্ষেত্রে আমি আমার ধারণাতেই স্থির থাকব, আপনার "ঘোরতর" আপত্তি মেনে নিয়েই, এবার এই বিষয়ে এখানে যতি টানা অন্তত আমার তরফ থেকে উচিৎ মনে করি।
ভারতের ইলেকশনে ইলেকটোরেট ম্যানিপুলেশন এবং সিস্টেমের manipulation যে কতরকম ভাবে হয়, সেটা এই ফোরামে বিভিন্ন পোস্ট থেকে আমার কাছে অন্তত স্পষ্ট। একটা সামান্য উদাহরণ দিই| এখানে কয়েকদিন ধরে dc তাঁর রাজ্যের নানান উদাহরণ টেনে লিখেছেন যে তাঁদের অঞ্চলে রাজনৈতিক নেতারা নির্বাচনের সময় সাধারণ মানুষের ভোট পাবার জন্য হাতে টাকা দেন, উপঢৌকন দেন, ভোটের বিনিময়ে উন্নয়নের প্রতিস্রুতি দেন। আমরা যারা ভারতের বাইরে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোতে থাকি, আমাদের কাছে রাস্তার উন্নয়ন বা নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য পৌঁছনোর কাজ দেশের সরকারের, তাতে নির্বাচনের সময় পলিটিকাল পার্টির মানুষের সঙ্গে কোনরকম নিগোশিয়েশনের জায়গা থাকে না (dc' ভাষায় লেনদেন), বা "টাকা নিন ভোট দিন" গোছের ব্যাপারও থাকে না | ইলেকশন কমিশন ক্ষমতাসীন পার্টির নেতার সঙ্গে কোড অফ কনডাক্ট বিধি ভাঙার ব্যাপারে একরকম আর অন্য দলের নেতা নেত্রীদের প্রতি কোড ভাঙার জন্য অন্যরকম আচরণ করেন বলেও কখনো এসব দেশে দেখিনি (অবশ্য code ভাঙার ব্যাপারটাও অন্তত আমার দেশে বিরল)। এখানে (আওতেয়ারোয়া নিউজিল্যাণ্ডে) খবরের কাগজগুলো সচরাচর সরকারের ভুল পদক্ষেপের সমালোচনা করতে বা প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করতে পিছপা হয় না, যার জ্ন্য অন্তত নির্বাচনের সময় একটা ব্যালানস্ড ছবি দেখা যায়। যার জন্য প্রার্থীরা যদি টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার টোপ দেন, ইলেকশন কমিশন যদি নিরপেক্ষ অবস্থান না নিতে পারেন, পলিটিকাল পার্টি যদি দেশের সড়ক/ উন্নয়নকে ভোটের শর্ত হিসেবে দাঁড় করান, যেখানে প্রায়ই EVM tampering, ভাঙচুর (
https://www.ndtv.com/india-news/lok-sabha-elections-2024-gunfire-evms-destroyed-anger-in-crisis-hit-manipur-amid-chaotic-voting-5478201 ) এর খবর আসে, সেখানে যদি election manipulated বলে না বিবেচিত হয়, ও তাকে যদি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রথামাফিক নির্বাচন বলে বিবেচনা করা হয়, এবং তার গলদ নিয়ে যদি আলোচনার ক্ষেত্রটি রোধ করে দেয়া হয়, তাহলে কিছু বলার নেই |
যে দেশে নির্ধারিত সময়ে জনগণনা করা হয়ে ওঠে না (
https://www.thehindu.com/news/national/with-announcement-of-new-notification-census-to-be-delayed-till-at-least-october-2024/article67690661.ece ), যে দেশে জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার ডিরেকটরকে সরকারী লাইনে স্বাস্থ্য সমীক্ষার রিপোর্ট আসেনি (জনতার "রায়" এখানে কিন্তু গ্রাহ্য নয়!) ( The timing of James' suspension raises questions, considering the recent release of the National Family Health Survey (NFHS-5) conducted by IIPS. The survey results presented data sets that were inconvenient for the government, contradicting earlier claims made by Prime Minister Narendra Modi. In particular, the NFHS-5 findings revealed that 19% of households in India still practice open defecation, calling into question the claim that India is "free of open defecation" ) বলে নানান অজুহাতে অপসারিত করা হয় (
https://groundreport.in/know-about-iips-director-ks-james-and-controversy-behind-his-suspension/#google_vignette ), যে দেশে "ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়ের" মত করে শিক্ষক শিক্ষিকাদের জীবিকা নিয়ে রাজনীতির কদর্য রূপ বেরিয়ে পড়ে, যেখানে স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী ইলেকশনের স্লোগানে "খেলা হবে" বলেন, সেখানে ইলেকশনই জীবনের সব হতে পারে, তাতে সে যে কোন অবস্থাতেই manipulated নয়, এবং কথাটা উঠলে যদি "ঘোরতর আপত্তি" ওঠে, যদি আলোচককে "ষড়যন্ত্রকারীর" তকমা দাগানো হয়, তাহলে আপত্তিটুকুই থাক। আপনিই জিতে গেলেন!
তাতে অসুবিধে নেই |
আমার গুরুচণ্ডালীতে খুব সম্ভবত এইটাই শেষ পোস্ট |
তার আরো একটা কারণ, মে মাসের পনেরো তারিখ থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত আমি একটি গহণ অরণ্যে silent retreat এর মতন sabbatical এ থাকব, মূলত নিজের গবেষণা আর পড়াশোনার কাজে, এখানে এমনিতেও "আসা হবে না", কারণ সেখানে Internet connection ইচ্ছাকৃতভাবে মেলে না |
( তবে যদি কেউ চান তো আমার ইমেলে ( arin_basu@pm.me ) তে যোগাযোগ করলে আলাপ আলোচনা করা যাবে লাগবে, তবে রিট্রিটে থাকার সময় হয়ত উত্তর দেয়া সম্ভব হবে না। )