খারাপ খবরটা অনেক দেরিতে, মানে আজকে সকালে, চোখে পড়ল। 'স্যাটানিক ভার্সেস" এর লেখক সলমান রুশদির উপর প্রাণঘাতী হামলার তীব্র নিন্দা করছি।
নিন্দা করছি দুটো কারণেঃ
এক, ইসলাম কথাটির শাব্দিক অর্থ যদি "শান্তি" হয়ে থাকে তাহলে এই আক্রমণ ইসলামের আদর্শের বিরোধী ।
দুই, এই হামলা লেখক শিল্পীর উপর চাপিয়ে দেওয়া ফতোয়া, যা সৃষ্টিশীলতার পরিপন্থী।
ভারত উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিভিন্ন বিরোধী মতাদর্শকে একই সাথে স্থান দেয়, সুস্থ বিতর্কের পরিবেশ তৈরি করে। এই ঐতিহ্য চার্বাক, সাংখ্য, পূর্ব মীমাংসা, বৌদ্ধ দর্শনের মত নাস্তিক্য মতবাদকেও দর্শনের সম্মান দেয়।
রুশদির লেখায় কোন ধর্মের প্রতি অনাবশ্যক বিদ্বেষ বা শিল্পের বদলে গা-জোয়ারি কুৎসা করার অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলেও তাঁর উপর এই হামলাকে সমর্থন করা যায় না। মতভেদের পালটা জবাব শারীরিক আক্রমণ নয়, বরং লিখে এবং চর্চা করে রুশদিকে ভুল প্রতিপন্ন করা।
এই ধরণের আক্রমণ এবং বাংলাদেশে অভিজিত রায়দেরমত মুক্তমনার ব্লগারদের উপর আক্রমণ শুধু নিন্দনীয় নয়, সেলফ-ডিফিটিং ও বটে! এই অন্ধ ভক্তকুল কাদের হাত শক্ত করছেন? সম্ভবতঃ এঁরা না রুশদি পড়েছেন, না অভিজিত রায়।
আগুন দিয়ে আগুন নেভানো যায় না।
একইভাবে ভারতে গৌরী লঙ্কেশ , নরেন্দ্র দাভোলকর, গোবিন্দ পানসারেদের উপর প্রাণঘাতী হামলা নিন্দনীয়।
যাঁরা করেছেন তাঁরা হিন্দুধর্মের কিছুই জানেন না। তাঁরা না উপনিষদ পড়েছেন , না শতপথ ব্রাহ্মণ । বেদান্ত আদি ষড়দর্শনের কথা ছেড়েই দিলাম।
মানুষের চিন্তা এক জায়গায় থেমে থাকে না। কিছু লোক কিছু সময়ের জন্যে ভয় পেতে পারে। ঐটুকুই।
শেষমেষ গ্যালিলিওর চিন্তা জয়ী হয়, রোমান ইনকুইজিশনের নায়কেরা ইতিহাসের ফুটনোটে জায়গা পান।