দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান গ্রেনেড আনতে চীন যেতে চাইছেন?
বোঝো। আমি লোকটাকে কি ভালই না ভাবতাম। আর লোকটা কিনা এইরকম।
রংটা এরকম হল কেন আকা?
লেখকের একটু ওইদিকে ঝোঁক ছিল। ঐতিহাসিক গল্পেও নতুন বা ইন্টারেস্টিং টেকনোলজি দেখিয়েছেন। স্কন্দগুপ্ত বাঁশের বর্শা ব্যবহার করতে চাইছেন, দীপঙ্কর গ্রেনেড আনতে চীন যেতে চাইছেন, বিজয়নগরের রাজা মেশিনগান বানানোর ইচ্ছে দেখাচ্ছেন ইত্যাদি। সেটা ভালোই। তবে এগুলোয় তথ্য বা ধারণাগত ভুলভ্রান্তি বেশিরভাগ সাহিত্যিকই দেখিয়েছেন, প্রেমেন মিত্তির আর কজন হন। এখন এই ইন্টারনেটের যুগেই লেখকেরা আবোলতাবোল লিখে মাত করে দিচ্ছেন।
ফেলুদার সিনেমাতেও দেখেছি। প্রায় ৫০-৬০ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ডক্টর হ্যাজরার হাতের বন্দুক ফেলে দিচ্ছে ফেলুদা গুলি করে। তাও পাতি রিভলভার দিয়ে।
'শায়েনশ'হিসেবে লোকে পড়বে এমনটা বোধহয় লেখক ভাবেন নি:-) উপস্হাপনার জাদুতেই সবাই কাত।
তাই হবে অভি। স্মৃতি থেকে বললাম, কাল আবার পড়ার ইচ্ছে আছে।
ব্যোমকেশের গল্প মানেই কেমিকাল লোচা। আর সজারুর কাঁটা, সাইকেলের পিন এগুলো জাস্ট হাস্যকর। সবকিছুতেই শায়েনশ না ঢোকালে আবার ইস্মার্ট বাঙালীদের হজম হয়না।
তুলসী যখন কলম চুরি করে রমাপতিকে দেয়, তাতে বিষ ছিল না, এমন কথা কোথাও বলা হয়নি। ব্যোমকেশ বলেছিল, বিষ ছিল কিনা জানি না তবে কলম নিয়ে মনিলালের দুর্বলতা স্বাভাবিক। মনিলাল স্ত্রীকে কেন খুন করে, তার কারণ হিসেবেও ব্যোমকেশ অনুমান করে হয়ত সে কলমে বিষ ভরার প্রক্রিয়া দেখে ফেলেছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। বিষের প্রাপ্তি বা সংরক্ষণ নিয়ে আর কোনো কথাই হয়নি গল্পে। মোডাস অপারেন্ডি ছেড়ে মূলত মোটিভ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এইটুকু না থাকলে দুর্গরহস্য অসাধারণ কাহিনী হয়।
" ওদিকেও সোনা " - ব্যোমকেশের ছেলে হবার সময়।
@ অরিন,
ভদ্রলোক , ইংরিজিতে বলতে গেলে, touched my life. মাতামাতির দরকার নেই, কিন্তু অকালে কিছু হলে দুঃখ থাকবে। সেলেব্রিটি হোন বা না হোন।
ওটা আবার কোন গল্প ব্রতীন? দুর্গ রহস্যতেই তো ব্যোমকেশকে তুলসী দুর্গের মডেল উপহার দিলো।
শরদিন্দু টুউউ গুড।
মণিলাল বিষ মনে হয় শিশিতে সংগ্রহ করে রেখেছিলো:-)
ঈশানবাবু আর সন্ন্যাসী পরপর মারা গেছেন- আর রমাপতি কে তুলসী জামাইবাবুর একটা কলম দিয়েছিলো, তখন তাতে বিষ ভরা ছিলো না বলে উল্লেখ আছে
বিদেশী গল্পের ছায়া, গল্পের গরু গাছে ওঠা , পিতৃতান্ত্রিকতা, হিন্দু মৌলবাদ - বহু অভিযোগ আছে সঙ্গত কারণেই, তবে ভদ্রলোক গল্প লিখতে পারতেন। শক্তিশালী কলম
সেটা অন্য গল্প তো । দুর্গ রহস্য । যেটা সোনার তৈরী দুর্গ উপহার পাবেন । আর "ওদিকেও "সোনা "
বেদে টা আসল গল্পে বোধহয় যাযাবর বা gypsy ছিল
অদ্ভুত অদ্ভুত গল্প সন্দেহ নেই, কিন্ত বেশির ভাগই বিদেশি গল্পের ছায়ায় তৈরি।
এবং সেই বেদেরা এলাকা ছেড়ে চলে গেছে অনেক বছর আগে। মনিলালের স্ত্রীর মৃত্যুর পরেই। মনিলালের ঝর্ণাকলমে বিষ কিন্তু গল্পের শেষ দিন অব্দি সক্রিয়, বিষের সরবরাহও অফুরান।
ফাউন্টেন পেনে সাপের বিষ তো বেদেদের কাছ থেকে পাওয়া না? সেই যারা দুর্গের পাশে বাস করছিলো
শরদিন্দু খুন করার সব অদ্ভুতুড়ে উপায় আমদানি করতেন। সেটা খুবই চমকপ্রদ হত নিঃসন্দেহে, তবে মাঝে মাঝেই গরু গাছে উঠে পড়ত। ফাউন্টেন পেনের মধ্যে সাপের বিষ বছরের পর বছর একইরকম সক্রিয় থেকে যেত, গ্রেজ অ্যানাটমির মতো একটা পেল্লায় বই একটু উল্টেপাল্টে দেখলেই মাত্র একটা লাইনে লাল দাগ খুঁজে পাওয়া যেত। সঙ্গে ওঁর গল্পের আরেক বিশেষত্ব ছিল অত্যন্ত অতিমানবীয় ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির উপস্থিতি, একাধিক গল্পেই। কেউ সাইকেলের বেল থেকে পিন প্রতিবার হৃৎপিণ্ডে পাঠায়, কেউ শব্দ শুনে অব্যর্থ গুলি চালায়, কেউ গল্পে শুনেই এককোপে থাইরয়েড কার্টিলেজ ভেঙে ফেলে, কেউ স্ক্র্যাচ থেকে মারণ কেমিক্যাল বানিয়ে নেয় ইত্যাদি। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত প্যাকেজ।
কার যে কোন উপকার হয়, সেতো মিডিয়াকে জিজ্ঞেস করা দরকার। এরাই তো মাতামাতিটা তৈরী করে।
আজকের বিজয়ীরাই যাতে কালকেও জিততেই থাকে, তার জন্যই তো নেপোটিজম, ক্রোনি ক্যাপিটালিজম, স্টেটাস কুও।
"তাতে তো কিছু আসে যায় না। 'আজ যে রাজা কাল সে ফকীর', এই প্রবাদ হাজার হাজার বছর ধরে চলছে। কিন্তু মেইনলি 'রাজা'দের নিয়েই মাতামাতি,"
এইসব রাজাগজাগুলোকে দিয়ে মাতামাতি করে কার কোন উপকারটা হয়?
এমনকি দরিদ্রদের বা সমাজে নানাভাবে প্রপীড়িতদের নিয়ে যারা সিনেমা টিনেমা বানায়, নানা আলোচনাসভা টভা করে, বেশিরভাগই তারাও করে ওই 'উইনার' স্পনসরদের টাকায়ই। তাদেরই দেওয়া শিরোপা টিরোপাও নেয়, তাদেরই আর্থিক দাক্ষিণ্যে এদিক সেদিক উড়েও বেড়ায়।
তাতে তো কিছু আসে যায় না। 'আজ যে রাজা কাল সে ফকীর', এই প্রবাদ হাজার হাজার বছর ধরে চলছে। কিন্তু মেইনলি 'রাজা'দের নিয়েই মাতামাতি, 'ফকীর' হয়ে গেলেই ঝেড়ে ফেলে দিল সিস্টেম। হাজার বছর আগেও, এখনও।
এই বিজয়ী, পরাজিত, সবটাই পেছনের দিকে তাকিয়ে। আজকের পরিপ্রেক্ষিতে কাল কে হারবে কেউ জানে না।
এটা কিন্তু ক্যাপিটালিজমের অন্যতম সমস্যা। শুধুমাত্র উইনারদের নিয়েই কথা হয়। যারা হেরে গেল, তাদেরকে ঝেড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। সিস্টেমটাই এমনভাবে তৈরী যেখানে একজনকে উইনার বানাতে একশজনকে হারতেই হবে।
প্রচন্ড দুর্নীতিগ্রস্ত ধনী বণিকদের বিয়ে নিয়েও মিডিয়ায় যা চলে, ভাবা যায় না।
ভারতের মিডিয়া দেখলে মনে হয় শুধু বিত্তশালী আর প্রতিপত্তিশালীদেরই মানুষ বলে গণ্য করা হয়। বাকীরা সংখ্যামাত্র। আসে যায়, জন্মায় মরে, "বন্যার যেন জল"।
গত একমাসের অধিক সময় ধরে দিল্লির বর্ডারে কৃষকরা এই শীতে অবস্থান করে আন্দোলন করছেন, কমবেশী পঞ্চাশ জন মানুষ মারা গেছেন। সেই মানুষগুলোর মৃত্যু নিয়ে কাউকে, এমনকি মাননীয়াকে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে আক্ষেপ করতে দেখেছেন? আমি দেখিনি।
কেন?
এই মানুষগুলো expendable, তাই না? প্রাণের দাম শুধু সেলিব্রিটিদেরই। তাই না?
আমার মনে হয় সেলিব্রিটিদের নিয়ে এই বাড়াবাড়িগুলো উপেক্ষা করাটাই সুপ্রযুক্ত। দেখে ভাল লাগল যে অন্তত এই একটা ব্যাপারে গুরুতে সেভাবে পোস্ট পড়ল না, বা পাত্তা দেওয়া হল না।