যাক এতক্ষণে আপনার মুখ থেকে বেদ বাক্য বের হলো,ইংরেজ রা আমাদের বিজ্ঞান শেখায় নি, শেখালেও অনেক পরে শিখিয়েছে।তার মানে আধুনিক বিজ্ঞান আগে বা পরে আসুক ইংরেজ দের হাত ধরেই এসেছে তো?
বেশ,ইটন নিয়ে লাফাচ্ছে ন কেন?অঙ্ক যদি ঐচ্ছিক হয়,আপনার আপত্তি কোথায়?সপ্তদশ শতাব্দী থেকে ব্রিটিশ অঙ্কবিদ দের নামের লিস্ট দিলে তো একটা পাতায় কুলোবে না।ওনারা কি কি ভিসা নিয়ে অন্যত্র অঙ্ক শিখে আসতো।
দুই,ইতিহাস নিয়ে চর্চা করলে,একটু পড়াশোনা করতে হয়। সোম প্রকাশ পত্রিকার রিপোর্ট থেকে কিছু ই বোঝা যাচ্ছে না। চাকরির বাজার নিয়ে হতাশা আছে,স্পষ্ট।১৮৩৫ সালের আসে পাশে তিনটি মেডিকেল কলেজ চালু করা নিশ্চয় অস্বীকার করবেন না।
১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ রাজ কায়েম হয়।তার আগে ছিল কোম্পানির রুল।পার্থক্য নিশ্চয় বোঝা যাচ্ছে। তিনটি মেডিকেল কলেজ এর আগেই স্থাপিত হয়েছে। প্রথম ডাক্তার মধুসূদন গুপ্ত।তার সঙ্গে আরও চারজন শব ব্যবচ্ছেদ করেন ১৮৩৬ সালে।
প্রথম বিজ্ঞান শেখার কলেজ এলফিনস্টন কলেজ মুম্বাই। কলিকাতা,মাদ্রাজ,পাঞ্জাব ইউনি স্থাপিত হয়,১৮৫৮ এর কয়েক বছরের মধ্যে।
আপনার কোন জায়গায় অসুবিধে হচ্ছে? সত্যেন বোস,মেঘনাদ সাহা,সিভি রামন, রামানুজম কাদের থেকে অঙ্ক ও বিজ্ঞান শিখলেন?জন্ম থেকেই শিখে এসেছিলেন? ভারতে আধুনিক বিজ্ঞান চর্চা,চিকিৎসা শাস্ত্র কোত্থেকে আমদানি হলো?? চায়না থেকে?
এসেম, আমার কথা খুব স্পষ্ট। ইটনের সিলেবাস ভুল কি না জানান। যারা নিজেদের দেশের ছেলেপিলেদেরই অঙ্ক শেখাচ্ছে না, তারা ভারতীয়দের বিজ্ঞান শেখাচ্ছে এটা কষ্টকল্পনা। বেকার বড় বড় নাম নিয়ে কোনও লাভ নেই। ওই বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞানচর্চায় ভারতীয়দের কোনও লাভ হয়নি। প্রেসিডেন্সিতে বিজ্ঞান শাখা কবে খোলা হয় খোঁজ নিন। সেই কলেজে কত শতাংশ ভারতীয় বিজ্ঞান শিখেছিল? যারা শিখেছিল তাদের কী হাল হয়েছিল তার উদাহরণ হিসেবে বিদ্যাসাগর-প্রতিষ্ঠিত সোমপ্রকাশ থেকে একটা সম্পাদকীয়র খানিক অংশ তুলে দিচ্ছি।
"গবর্ণমেন্টও কৃষি অথবা শিল্পের কার্যে আমাদের বিশেষ একটা ভরসা দিতেছে না। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষার্থিগণ আর কোনও প্রত্যাশা করিতে পারে না, চিকিৎসা বিভাগে প্রকৃতপক্ষে আর একজনের স্থান হয় না, স্বাস্থ্যবিভাগ বলিয়া যে স্বতন্ত্র একটা বিভাগ আছে এবং তাহা হইতে অর্থোপার্জন হয় ইহা আমাদের দেশের লোকে এখনও কিছুই বুঝিতে পারেন নাই। ধর্মযাজন কার্যে গবর্ণমেন্টের সহায়তা লাভ করিবার প্রয়াস বাতুলতা মাত্র। কৃষি কার্যেও যে গবর্ণমেন্ট সহায়তা দেখাইবেন তাহাও নহে। যাঁহারা বহুল অর্থ শ্রাদ্ধ করিয়া সিরেণ সেস্টার কলেজ [Cirencester College] হইতে কৃষি বিদ্যায় উপাধি লাভ করিয়া আসিলেন, তাঁহাদের গ্রাসাচ্ছাদনের উপায় পর্যন্ত হইয়া উঠিতেছে না।" ১৭ চৈত্র ১২৯২। এই হাল ১৮৮৬ সালের। চাকরির এই হাহাকার পরে আরও বাড়বে। মেট্রোপলিটন তখনও ঘিষিপিটি ইংরেজি, দর্শন, ইতিহাস আর ল পড়াচ্ছে।
পিটিস্যার, প্রফুল্ল রায়ের কেমিস্ট্রিতে উৎসাহের সৃষ্টি আর এডিনবরায় তার পাঠের মধ্যে আকাশপাতাল ফারাক। ইংরেজরা আমাদের বিজ্ঞান শেখায়নি, শেখালেও অনেক পরে শিখিয়েছে। অথচ তার প্রতিশ্রুতি ছিল ১৮৩৫-এই। এটাই আমার মোদ্দা বক্তব্য।
ওহ,আর একটা কথা বলে দি।১৮৩৫ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ তৈরী হয়।ভারতীয়রা ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পায়।রেজিস্ট্রেশন মিলতে থাকে খোদ বিলেত থেকে। সালটা কিন্তু ক্ষেয়াল করবেন,১৮৩৫।এর কিছু পরপরই,মাদ্রাজ,মুম্বাই এ মেডিকেল কলেজ স্থাপন হয়।
১৮৩৫ এর আগে থেকেই কিন্তু ভারতীয় দের নিজ ভাষায় আধুনিক বিলিতি মেডিকেল শিক্ষা দেওয়া হতো। কয়েক বছর পর,লর্ড বেন্টিংক মেডিকেল কলেজ স্থাপন করে পুরো কোর্স ইংলিশে চালু করেন।
এলেবেলে,স্রেফ ভুলভাল বলে চলেছেন।আধুনিক অঙ্ক শাস্ত্রের ক্যালকুলাস,সেট থিওরী, ট্রিগণামেট্রি,লগারিদম, প্রব্যবলিটি, এগুলো পলাশীর যুদ্ধের সময় পাঠক্রমে থাকতো??নাকি সব কিছুই ব্যাদে আছিলো?
আমি বুঝতে পারছি না,আপনি কি নিয়ে তর্ক করছেন?
ভোলটা,ফ্যারাডে এঁরা সপ্তদশ শতাব্দীতে ইলেকট্রিসিটি নিয়ে কাজ করছেন, ব্যাটারি তৈরী করছেন, জেমস ওয়াট (১৭৭৬) স্টিম ইঞ্জিন তৈরী করছেন, ল্যাভয় শিয়র অক্সিজেন ল্যাবে বার করছেন,জলের স্ট্রাকচার কি অনুমান করছেন, লিউএন হুক মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কার করেছেন,
এর পরের শতাব্দীতে আসছেন,গ্রাহাম বেল,ম্যাক্স ওয়েল,লুই পাস্তুর,রবার্ট কখ,জন স্নো,মেন্ডেল,মেন্দেলিভ,ডাল্টন, অ্যাডা লভলেস,ডারউইন আরো কতো কতো লোক।
তার পরের শতাব্দী আর টানলাম না।
কাদের মাধ্যমে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এঁদের সঙ্গে পরিচিত হলো?নাকি শুভঙ্করী,আর চরক সুশ্রুত দিয়েই বাজিমাত করে দিতো?
এল সি এম,
গতবছর দিল্লির একটি মলে বাথরুম যাব বলে স্টাফকে বল্লাম--ওয়াশরুম? ওরা যেদিকে আঙুল দেখালো সেখানে গিয়ে বড় করে রেস্টরুম লেখা দেখে ফিরে এলাম। ওরা আবার টেবল টেনিসের বলের মত ফেরৎ পাঠালো। আমি ওয়াশরুম খুঁজে পেলাম না--একেবারে এখন -তখন অবস্থা। মেয়েকে বলায় হাত ধরে নিয়ে গিয়ে সেই রেস্টরুমেই ঢুকিয়ে দিল।
ইদানীং শিখেছি-- ছেলেদের মানিব্যাগ হল ওয়ালেট, মেয়েদের পার্স। কোনটা ঠিক খোদায় জানেন।
দাদু শিখিয়েছিলেন -- তর্জনী হইল বিষ আঙুল, দাঁত মাজবা মধ্যমা দিয়া। আঙটি পরবা অনামিকায়।
এখন মিডল ফিংগার দেখিয়ে কথা বললে আমার মেয়েরা ছি-ছি করে ওঠে। যাই কোথায়!
পিটিস্যার, আমার ইন্টারপ্রিটেশন কেন হবে? প্রফুল্ল রায় কি আপনার মতো লোক উইকি থেকে জানাবেন? আমার জানা মতে উনি প্রেসিডেন্সিতে বি এ ক্লাসে ভর্তি হন, বি এসসি নয়। ভুল হলে বলবেন। মেনে নেব। ৫০ বছর আসল মেকলের ঘোষণা ১৮৩৫ আর তাঁর প্রেসিডেন্সি থেকে পাশ ১৮৮৫। আমার অঙ্ক জ্ঞান অনুযায়ী ৫০ই হচ্ছে।
এসেম, নিউটন ছাড়ুন না। ইটনের সিলেবাস ভুল কি না জানান। যারা নিজেদের দেশের ছেলেপিলেদেরই অঙ্ক শেখাচ্ছে না, তারা ভারতীয়দের বিজ্ঞান শেখাচ্ছে এটা কষ্টকল্পনা। আর টিপু সুলতান ব্রিটিশদের বিজ্ঞানের বারোটা বাজিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন। ভারতীয় বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে গেলে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির টমাস মুনরোর শিক্ষা রিপোর্ট সম্পর্কে জানকারি থাকতে হবে। আছে? না দিতে হবে? ইরফান হাবিব মধ্যযুগে ভারতীয়দের বিজ্ঞানচর্চা নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। পড়ে দেখেছেন?
অঙ্ক চর্চা (পাঠশালায়) নিয়ে শিবনাথ শাস্ত্রী লিখে গেছেন। জানা আছে? নাকি সেটাও কোট করতে হবে?
@এতোজ,
মারধোর! না না। আমাদের রিফিউজি একান্নবর্তী পরিবারে ফ্যামিলি ফিলিং খুব স্ট্রং ছিল । আর আমি ছিলাম বাড়ির কর্তার (দাদুর) আইলাইদ্যা বড় নাতি। আমাকে কেউ কিছু বললে এসে দাঁড়াতেন দাদু। এই প্রটেকশনিজম আমার ক্ষতি করেছে। বেড়ে উঠেছি আনডিউ অ্যাডভান্টেজ নিয়ে সেলফ কনশাস নার্সিসিস্ট হয়ে । সেই দোষ পুরোপুরি মুছে যায় নি।
বাড়ি ছেড়েছিলাম সেসময়ের অকাল-বৈশাখী ঝড়ে, দুনিয়া পালটে দেব, ন্যায়ের রাজত্ব স্থাপন করব --এই সব স্বপ্ন দেখে।
এখন আমার প্রত্যয়-- ১ দুনিয়া পাল্টানোর আগে নিজেকে পালটানো হয়ত দরকার ছিল । তাহলে চারপাশে কিছু বদল হয়তো হত । ২ শুধু হিংসার পথে স্থায়ী বা মৌলিক পরিবর্তন সম্ভব নয় ।
উপন্যাস? "ফেরারী ফৌজ" বলে একটা লিখেছি-- সেই সময়কে আজকের চোখে দেখা। ঋতবাক প্রকাশন থেকে গত ৩১শে আগস্টে প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞান ও চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়েও লিখবেন।পলাশী যুদ্ধের আগে ও পরে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ভারতীয়রা কি রকম জায়গায় ছিলো।আধুনিক বিজ্ঞান কি ভাবে রপ্ত করলো?
আরে সি এস মহাশয়,দুদিন আগে বেরিয়েছিল পুটিন এর মেয়ে মারা গেছে ভ্যাক্সিন নিয়ে। সব হলো গিয়ে পশ্চিমি ফেক।
পুটিন তেজষ্ক্রিয় চা আগে অনেক কে খাইয়েছে।তাই বলেছিলাম কি রাশিয়ান চা,আর পশ্চিমি ফেক থেকে সাবধানে থাকবেন।দুটোই খুব খারাপ জিনিষ আছে।
অরিন, পিটিস্যার এবং এসেম - আপনাদের তিনজনকেই ধন্যবাদ। চৈতন্যের পরে আমাকে আমার মাঠে খেলতে দেওয়ার জন্য! একমত না হতে পারেন, কিন্তু ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরতে অসুবিধা কোথায়? তো এই নিয়ে আমার ফুটো পয়সা।
অরিন লিখেছেন - //তা হবে আপনি যেকালে বলছেন, তবে খানিক মিল শেখালেও তো ন্যূনতম জন স্টুয়ার্ট মিলের System of Logic পড়াতে হয়। উনবিংশ শতাব্দীর ভারতে বিজ্ঞান শিক্ষায় এইটেই বা কম কিসে?//
কিন্তু কাঁটা তো বেছে খেলে চলবে না! তার আগে জন স্টুয়ার্ট মিলে্র পূজনীয় পিতৃদেব জেমস মিল লিখে ফেলেছেন The History of British India (১৮১৭)। তারও আগে চার্লস গ্র্যান্ট Observations on the State of Society among Asiatic Subjects of Great Britain (১৭৯২)। এই দুই ইভ্যাঞ্জেলিকাল মক্কেল ততদিনে ভারতে শিক্ষার ভিত্তিভূমি রচনা করে দিয়েছেন। যে দৃঢ় সৌধের ওপর দাঁড়িয়ে আরেক ইভ্যাঞ্জেলিকালিস্ট চার্লস ট্রেভেলিয়ান ঘোষণা করছেন We have nothing to give to the Natives but our superior knowledge. Every thing else we take from them. আর তার কিছু দিন পরে ১৮৩৬ সালের ১২ অক্টোবর টমাস মেকলে পিতা জ্যাকারি মেকলেকে চিঠিতে লিখবেন -
It is my firm belief that, if our plans of education are followed up, there will not be a single idolater among the respectable classes in Bengal thirty years hence. And this will be effected without any efforts to proselytise, without the smallest interference with religious liberty, merely by the natural operation of knowledge and reflection.
ইংরেজি সাহিত্যকে কীভাবে উপনিবেশ বৃদ্ধি ও খ্রিস্টধর্ম প্রচারের কাজে লাগিয়েছিল, এই ইভ্যাঞ্জেলিকালদের কথায় ও কাজে তা স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে ইয়ং বেঙ্গলের তরুণ তুর্কিরা কিছুদিন ওই মিলের লজিক পড়ে কেরেস্তান হল, রাজনারায়ণ বসু পিতার সঙ্গে মদ্যপান করলেন। তারপর ওয়ান ফাইন মর্নিং হিন্দুধর্মের শ্রেষ্ঠতা লিখলেন। বাকিরা কেউ টিকি রেখে বাউন সাজল, কেউ বা ফের পুনরুত্থানবাদীদের দলে নাম লেখাল। ভূদেব মুখোপাধ্যায় তার শ্রেষ্ঠ প্রমাণ। এতে বিজ্ঞানের কোন অগ্রগতিটা হল এদেশে? আর বেকন তো অ্যারিস্টটলকে schoolmen's dictator বলেছিলেন। ইংরেজি সাহিত্যের কতগুলো হতভাগা ছাত্র ছাড়া ও ছাতার বেকন আর কেউ পড়ে-টড়ে? বেন্থাম পড়া বঙ্কিম লিখলেন ধর্মতত্ত্ব! চমৎকার কম্বিনেশন!!
পিটিস্যার লিখেছেন - //মেট্রোপলিটান কলেজের পাঠ্যসূচীতে বিজ্ঞান ছিলনা কিন্তু হিন্দু কলেজে ছিল। প্রফুল্লচন্দ্র সেখানে কেমিস্ট্রি আর ফিসিক্সের ক্লাস করতে যেতেন।//
আপনি কেমিস্ট্রির মাহির ব্যক্তি। তো হিন্দু কলেজের 'সোডা স্যার' সম্পর্কে অন্তত আপনাকে কিছু বলার ধৃষ্টতা দেখাব না। কিন্তু প্রফুল্ল রায় মেট্রোপলিটনে এফ এ পড়েছেন। এডিনবরায় বিজ্ঞান। এবং তাঁর সময়কাল জ্ঞানবিজ্ঞান প্রসার করার প্রতিশ্রুতির অন্তত পঞ্চাশ বছর পরে। বাকি সময়টা ফক্কা! সেই ইংরেজি, ইতিহাস, দর্শন এবং আইন। ফুঃ।
শেষে এসেম, পুরো 'এবং উত্তমকুমার' স্টাইলে! আপনি লিখেছেন - //আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে ভারতবাসীর পরিচয় করালো কারা?এই সব বিজ্ঞানী,ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার তৈরী হতো কি করে?ফারসি পড়ে না টোলে সংস্কৃত পড়ে?? আজব কথা বলছেন?//
সত্যি মাইরি কী ভালো আছেন! কোনও প্রশ্ন নেই, শুধু নির্বিবাদে সাহেবদের ভার্সন মেনে নেওয়া আছে! তো ১৮৫০ নাগাদ খোদ লন্ডনে কী পড়ানো হত জানেন-টানেন? এই নিন রেফারেন্স। A. E. Dobbs জানিয়েছেন ...the average length of school life rises on a favourable estimate from about one year in 1835 to about two years in 1851। আর অ্যাডামসন ইটনের মতো নামকরা স্কুলের চিত্র জানিয়ে বলেছেন:
In public schools like Eton, teaching consisted of writing and arithmetic (a number of English and Latin books were studied); while those in the fifth form also learnt ancient Geography, or Algebra. আর যারা সেখানে বেশ কিছুদিন পড়ার সুযোগ পেত, তারা এর বাইরে অতিরিক্ত শিখত ‘part of Euclid’। তবে ‘not till 1851 that Mathematics became a part of the regular school work’।
অন্যদিকে বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার সমীক্ষা করে স্বয়ং উইলিয়াম অ্যাডাম তাঁর দ্বিতীয় প্রতিবেদনে লিখেছিলেন - My recollections of the village schools of Scotland do not enable me to pronounce that the instruction given in them has a more direct bearing upon the daily interests of life than that which I find given, or professed to be given, in the humbler village schools of Bengal. ইনিও সায়েব কিন্তু!
নিন, এবার হেঁচকি তুলতে থাকুন। আর ইংরেজি সাহিত্যের গুণগান গাইবার আগে গৌরী বিশ্বনাথন-এর Masks of Conquest পড়ে নেবেন। বুঝে যাবেন ব্রিটিশরা কী চিজ!!!
কলেজ একটা মিনিয়েচার ইউনিভার্সিটি, আর ইউনিভার্সিটি একটা ফেডারেশন অফ কলেজ।
যেমন সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্ক, বা স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্ক । কত্তো কলেজ, গুণে শেষ করা যায় না।
আর 'স্কুল' ইউনিতে থাকলে ওটা 'প্রফেশনাল' ডিসিপ্লিন। যেমন মেডিসিন, ল, জার্নালিজম, এঞ্জিনিয়ারিং, এজুকেশন।
হা, হা,হা।অরিন ঠিক বলেছেন।ভ্যাকসিন নিলেই কিন্তু হাত ধোয়া থেকে মুক্তি নয়।একজন ব্রিটিশ সায়েন্টিস্ট এর মতে,পুরো করোনা থেকে মুক্তি পেতে বছর দুই মতোন লাগবে।মানে কয়েকটি ভ্যাকসিন এর বুস্টার ডোজ নিতে হবে। ততোদিন অবধি ছুঁচি বায় হয়ে চালাতে হবে।
তবে,আমার ব্যক্তিগত মত ফেজ থ্রি কে কিছুটা ছাড় দিতেই হবে। নিয়ম্ কানুন কিছুটা হলেও লঘু করতে হবে। এই লক ডাউন ফেজ বেশি দিন টানা অন্তত ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়।
"আমারো না....এই মুখোশ আর ক্রমাগত হাত ধোয়া পোষাচ্ছে না। "
ভ্যাকসিন এলেই যে মুখোশ আর হাত ধোয়ার হাত থেকে মুক্তি পাবেন, সেটা কিন্তু এখনই বলা যাচ্ছে না।
আর ফেজ থ্রী যত অপছন্দই হোক, যতদিন না সম্পূর্ণ হচ্ছে, কেউ "বৈজ্ঞানিক" ছাড়পত্র দেবে না।
"ইউনি বা পোস্ট গ্রুজুয়েশন করার ইনস্টিটিউট গুলোকে ব্রিটিশ রাও স্কুল বলে,অনেক সময়।"
আছে তো, বলাও হয়। তাহলেও ইউনি আর কলেজ/স্কুলের একটা তফাৎ থেকে যায়। সেটাই আমার বলার এখানে।
"আমাদের দেশেই আছে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন। এই সেম ইনস্টিটিউট একই নামে লন্ডনে ও আছে। এছাড়াও আছে লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস।"
লণ্ডনের স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনের ডিগ্রি দেয় লণ্ডন ইউনিভারসিটি | এটা লণ্ডন ইউনিভারসিটির অধীনে একটি কলেজ বলে ধরতে পারেন।
লণ্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস ২০০৮ সাল থেকে ইউনিভারসিটির মর্যাদা প্রাপ্ত হয়েছে, তার আগে সে লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে "ইশকুল"ই ছিল, :-)
@S: "আবারও বলছি কলেজ আর ইউনিকে স্কুল বলা যেতেই পারে। কারণ যেখানে শিক্ষা দেওয়া হয়, সেটাই স্কুল।"
আরে, ইউনিভারসিটিকে আপনি সেই অর্থে স্কুল কেন, কলেজও বলতে পারেন, কারণ ইউনিভারসিটি কতগুলো কলেজের সমষ্টি, আর কলেজ কতগুলো স্কুলের | সেদিক থেকে ইউনি ইশকুল তো বটেই |
তাহলেও ইউনিভারসিটি আর ইশকুল কলেজ এক ব্যাপার নয়। তার সবচেয়ে বড় কারণ ইউনিভারসিটির কাজ কিন্তু শুধুই পড়ানো নয়, বরং তার মুখ্য কাজ সমাজের কঠোর সমালোচনা, আর তার সঙ্গে সমাজের বিবেকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার একটা দায় থাকে, তবে না সে "বিশ্ব" বিদ্যালয়! "ইশকুল/কলেজ" সে "দায়" থেকে মুক্ত।
@এলেবেলে: "বিজ্ঞান তো শেখায়নি ব্যাটারা, ওই খানিক মিলটন-বায়রন আর লক-বেন্থাম-মিল।"
তা হবে আপনি যেকালে বলছেন, তবে খানিক মিল শেখালেও তো ন্যূনতম জন স্টুয়ার্ট মিলের System of Logic পড়াতে হয়। উনবিংশ শতাব্দীর ভারতে বিজ্ঞান শিক্ষায় এইটেই বা কম কিসে?
আরে পিটি,এই ফেজ থ্রি নিয়ে ক্যালোর ব্যালোর ভালো লাগে না। আমেরিকানরা চাইছে,বাজারে তাদের ভ্যাকসিন আগে আসুক।নীয়ম মাফিক কোন ভ্যাক্সিন ই নেক্সট ইয়ার এর মাঝামাঝি বাজারে আনতে পারবে না।সুতরাং কাট ছাঁট সবাইকে করতে হবে। নয়তো মিস্টার হার্ড ইমিউনিটি নামক ভদ্রলোকের আশায় বসে থাকতে হবে।দেখাযাক, মহাপ্রভু কি ডিসিশন নেন।
----
ইউনি বা পোস্ট গ্রুজুয়েশন করার ইনস্টিটিউট গুলোকে ব্রিটিশ রাও স্কুল বলে,অনেক সময়।
আমাদের দেশেই আছে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন। এই সেম ইনস্টিটিউট একই নামে লন্ডনে ও আছে। এছাড়াও আছে লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস।
কি মুশকিল।একটা কুসংস্কারে ও অবিজ্ঞানে ভরা দেশে মেডিকেল স্কুল,বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন,ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন এগুলো ওই দেশের লোকজন কে বিজ্ঞান মনষ্ক করার উদ্দেশ্য নয় বলছেন? আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে ভারতবাসীর পরিচয় করালো কারা?এই সব বিজ্ঞানী,ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার তৈরী হতো কি করে?ফারসি পড়ে না টোলে সংস্কৃত পড়ে?? আজব কথা বলছেন?
আর আপনি বোধ হয়,ন্যাড়া বলেছিল মৃণাল সেন সাকুল্যে আড়াই টা ভালো সিনেমা করেছে,তাই খুব ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন।
এখন আপনি বলছেন সাহিত্যের ছাত্র হয়ে,ইংরেজি সাহিত্যে পাতে দেওয়ার মতোন ব্রিটিশ কবি বা সাহিত্যিক সাকুল্যে তিন চার জন!প্রভু আপনাকে মার্জনা করিবেন।
এসেম, সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে আমাকে মাস্টার্সে ইংরেজি সাহিত্য ছাড়াও আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও গ্রীসের সাহিত্য পড়তে হয়েছে। পড়তে হয়েছে অর্থে ওই সাহিত্যগুলো আমি নিজে বেছে নিয়েছিলাম স্পেশাল পেপার হিসেবে। (আমাদের আমলে আফ্রিকা বা লাতিন আমেরিকার সাহিত্য পড়ানোর চল ছিল না।) কাজেই সে সব সাহিত্য না পড়ে বেকার বেকার সাড়ে চার কি পৌনে পাঁচজনের কথা বলিনি।
মেডিক্যাল আর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সস্তার কারিগর সাপ্লাই দেওয়ার জন্য ভারতীয়দের নেওয়া হত। আর প্রফুল্ল রায়-জগদীশ বোস-মেঘনাদ সাহার আমলটা মাথায় রাখবেন দয়া করে। বিদ্যাসাগরের মেট্রোপলিটান কলেজের পাঠ্যসূচীতে বিজ্ঞান ছিল কি না জানাবেন তো। শিখে নেব তাহলে! অথচ বলা হয়েছিল পাশ্চাত্য জ্ঞানবিজ্ঞানের কথা!
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় (School, College, University) এরা এক নয় |
এদের মধ্যে স্কুল (School) ই একমাত্র "শিক্ষা" জায়গা ("বিদ্যালয়") । বাকী দুটো একেক ধরণের গিল্ড বা সংঘ।
কলেজ (যার উৎস: Collegium) একটা Guild, যেখানে নানা শ্রেণীর মানুষ একত্র হতে পারেন, তবে তাঁদের একটি মুখ্য উদ্দেশ্য থাকবে, এঁরা কোন একটি বিষয়ে পারদর্শী । যেমন ধরুন Royal College of Surgeons , সার্জেনদের গিল্ড, সংঘ, বা Collegium Ramazzini, যাঁরা Occupational Health/Medicine নিয়ে চর্চা করেন, তাঁদের "কলেজ"।
University অন্যরকম - এও গিল্ড, তবে এর দুটি বিশেষত্ব: চিন্তার স্বাধীনতা (মানে যে যা খুশী চর্চা করতে পারবেন), এবং এই সংঘে সবাই শিক্ষক ও পণ্ডিত, এটি শিক্ষক ও পণ্ডিতদের সংঘ - ও এইটেই তাঁদের মুখ্য পরিচয়, তাই "বিশ্ব"/universitas | যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ উপাধি PhD (Philosophiae Doctor) , দর্শনের শিক্ষক (ডক্টর কথাটা ল্যাটিন ডুসের থেকে এসেছে, শিক্ষক), এই "দর্শণ" এখানে ইউনিফাইং |
এই সব কারণে কলেজ বড়জোর মাস্টার ডিগ্রি দিতে পারে (মাস্টার == ওস্তাদ, কোন শিল্পে বা কোন কাজে) | কিন্তু যে মানুষের নামের পাশে ডক্টর উপাধি জুড়েছে, তিনি প্রাথমিক পরিচয় তিনি শিক্ষক, এইটি তাঁর প্রথম ও প্রধান পরিচয়। আর যে সংঘের তিনি সদস্য, সেটি একটি ইউনিভারসিটি |
ইউনিভারসিটির অধীনে কলেজ, কলেজের অধীনে স্কুল থাকে। আবার কখনো কখনো স্কুলকেও কলেজ বলা যেতে পারে, যখন স্কুল একটা সংঘের মতন হয়ে যায়।