*যে দিন ২৮ শূন্য কেস রেজিস্টার করলে*
যখন পর পর ২৮ দিন শূন্য কেস রেজিস্টার্ড হবে ।
@a: "এখন অরিনবাবু কি বলেন এখন যা অবস্থা কড়া লকডাউনে লাভ হবে?"
দেখুন আসলে সব দেশ তো এক নয়, প্রতিটি দেশের সমস্যা নিজেদের। তাছাড়া, শুধু লকডাউনে তো পুরোটা কন্ট্রোল করা যায় না, লকডাউন কিন্তু যা দেখা যাচ্ছে, প্রথমবারই যা করার করতে হয়, লকডাউনের মূল উদ্দেশ্য মানুষজনকে এবং ক্লাসটারগুলোকে যতটা সম্ভর আলাদা করে রেখে ট্রানসমিশনের রেট-টাকে প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনা (যাতে করে ক্রমাগত টেসট করেও দেখা যাবে যে ০ নতুন কেস রেজিসটারড হচ্ছে) । লকডাউন অনির্দিষ্ট কালের জন্য তো কখনোই করা সম্ভব নয়, শুধু সেইটুকু সময়ের জন্যই করতে পারেন যতদিন সেই অবস্থায় পৌঁছন যায়। যেহেতু করোনাভাইরাস ক্লাসটার ধরে ধরে হয়, ক্লাসটারগুলোকে ধরে ধরে কেসের সংখ্যা কমিয়ে নিয়ে আসা যায়। যার জন্য লকডাউনের সঙ্গে প্রচুর প্রচুর টেসট আর কনট্যাকট ট্রেসিং এর ক্ষমতা বাড়িয়ে নিতে হয়, আর তার সঙ্গে দ্রুত isolation করে ফেলার ক্ষমতাও । এখন অবধি নিউজিল্যাণ্ড-ই পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে লকডাউন উঠিয়ে দেবার পর জনসমাজে আর একটিও নতুন কেস ধরা পড়েনি, যদিও টেসটিং-এর পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গেছে। এখন যদি নতুন ক্লাসটার দেখা দেয়ও, নিউজিল্যাণ্ড খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে। কাজেই আমাদের এখানে Second Wave হবার সম্ভাবনা খুব কম (আজকালকার দিনে বলা সম্ভব নয় কখনোই হবে না) । আসলে লক-ডাউন কখন তুলে নিতে হয়, সেটিও মডেলিং আর তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে করাই ভাল, না হলে দুমদাম করে লকডাউন বসালে আর তুলে নিলে কাজ হবে না। করলে ১০০% করুন, (পারলে), জনতাকে বোঝান, তারপর বার বার করে মডেল আর ডাটা পর্যালোচনা করতে করতে স্থির করুন যে দিন ২৮ শূন্য কেস রেজিস্টার করলে তুলে নিন। আজ লকডাউন, কাল খুলে দিলাম, এভাবে হয় না, :-) | তার ওপরে করোনিল, Hydroxychloroquine, "এই ভ্যাকসিন এল বলে", যত এসব হাবিজাবি জিনিসে মাতবেন, তত কেস হাতের বাইরে যাবে।
লকডাউনে ইকোনমি ধাক্কা খেয়েছে এ নিয়ে সন্দেহ নেই । কিন্তু সেটা সারা পৃথিবীতেই, শুধু নিউজিল্যাণ্ড বলে নয়। বাইরের দেশের ট্যুরিস্ট আসা কমে যাবে/গেছে, কিন্তু এখানকার জনতা সেই অভাব পুষিয়ে দিয়েছে। একটা উদাহরণ দিই: আমরা প্রতি বছর এই সময়টায় কাছাকাছি একটা স্লোপে শীতকালটায় স্কি করতে যাই। প্রতি বছর এই সময়টায় নিউজিল্যাণ্ডে ইউরোপীয়দের ভিড় লেগে থাকে, স্কি রিসর্টগুলোতে জায়গা পাওয়া যায় না। তাহলেও সকাল সাতটা নাগাদ গেলে স্কি স্লোপের পার্কিং-এ জায়গা পাবেন, স্কি ফিল্ডটায় পার্কিং পাওয়া যায়। এ বছর সে জায়গায় না রিসর্টগুলোতে জায়গা পাওয়া গেল, শুধু তাই নয়, সকাল ছ-টা সাড়ে ছ-টায় স্কিফিল্ডের পার্কিং ভর্তি, সারা সিজন উপছে পড়া ভিড়, স্কি স্লোপের ম্যানেজমেন্ট ভাবতে পারেনি। একই ব্যাপার অন্যান্য বেড়াবার জায়গা গুলোতেও, হোটেল-মোটেলগুলোতে থাকার জায়গা পাওয়া যায় না। কয়েকদিন আগে টিভির খবরে বলছিল ছোটখাট ব্যবসাগুলো এখন ভাল রিকভার করেছে।
বড় ব্যবসা মার খেয়েছে, প্রচুর কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, অবশ্য সেসব লকডাউন হবার আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল (যেমন এয়ার নিউজিল্যাণ্ড ফেব্রুয়ারী মাস থেকে গান গাইছিল Downsizing নিয়ে )। কাজেই কোথায় যে কি হয় বলা মুশকিল।
ভ্যাক্সিন বা এআই যা আপনাকে স্থায়ী আভোগ দেবে না তা নিয়ে আপনি কী করবেন?
কী করবেন। সবই জেবনের অস্থায়ী আভোগ।