আমি একবার একটা অদ্ভুত বিয়েবাড়িতে গিয়ে দিন তিনেক কাটাতে বাধ্য হই। বিশেষ কাউকে চিনতাম না, কোনো কাজ নেই, প্রাক-মোবাইল জমানা। একটি চলন্তিকা আবিষ্কার করে টপ টু বটম পড়েছিলাম। একেও ডিকশনারি পড়া বলা যেতে পারে। অবিশ্যি আমি গীতা পড়ার ক্ষেত্রেও থালায় ভাগ বসাব।
ভাবছিলাম কেসি এলে কিছু ফার্স্ট হ্যান্ড ফান্ডা পাওয়া যেতে পারে। যা বুঝলাম কেসি আর b-বাবু গীতা পড়েছেন। রঞ্জনদা পড়ছেন। ভাষ্য বা ইতিহাস নয়, গীতা - সে যাঁরই অনুবাদ হোক - আর কে কে পড়েছেন টপ টু বটম? সবার জন্যে এক থালা ডাম্পুলি।
অরিন ১১ঃ৪১ - ক। এইভাবেই মায়াপ্রপঞ্চ নির্মাণ হয়ে চলে আমাদের চারিপাশে নিরন্তর। এই পাশপোর্ট-ভোটার আইডি - আধার - প্যান কার্ড - এসবই আসলে "আপনি" - আপনার মধ্যে যে আসল আপনিটা ছিল সে নিজেও এখন বিশ্বাস করে সে ই নকল, এগুলোই আসল।
যেমন ধরো বস্তুপিণ্ড সূক্ষ্ম হতে স্থূলেতে
অর্থাৎ কিনা লাগছে ঠেলা পঞ্চভূতের মূলেতে
এই হল গে জীবন কালি দা
আর দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গীতাপাঠ'।
b বাউ, স্বামী রঙ্গনাথানন্দ'র টার পাতা উল্টোবেন একবার, তিন খণ্ডে। পছন্দ হবে, গ্যারান্টি।
"হোমলোন দেওয়া ব্যাংক, ডেলিভারি চাওয়া ম্যানেজার, ব্যবসার উন্নতি চাওয়া ক্লায়েন্ট, ট্যাক্সো চাওয়া সরকার, ভিজিট চাওয়া হাসপাতাল - ওরা এসব মানতে চায় না, অবিশ্বাসীর দল।"
হা হা, পুরো ব্যাপারটাই মায়া মশাই।
ধরুণ হোমলোন।
"ব্যাংক কাকে লোন দিয়েছে? ওরা জানছে কি করে "যা"কে দিয়েছে "সে"ই আপনি। "
"সে কি মশাই, বললাম তো চার কপি পাসপোরট ফটো, আই ডি প্রুফ জমা দিলাম ম্যানেজার কে, তার পরেও বলছেন "যাকে দিয়েছে", আজব ব্যাপার!"
"ঠিক আছে, তাহলে বলুন, কি ধরণের আই ডি প্রুফ জমা দিয়েছেন? নিজে গিয়ে বললেন, আমিই অমুক, মেনে নিল?"
"তা আবার হয় নাকি? পাসপোর্টের কপি জমা দিয়েছি, আরো অনেক হ্যাপা, এবার বলুন"
"আপনার পাসপোর্টে কার সিগনেচার আছে?"
"জানি না, ভারত সরকারের জনৈক প্রতিনিধির, তাতে কি?"
"তাতে আর কিছু না, তার মানে আপনার কোন অস্তিত্ব নেই, কে আপনি "নিজে" বললে, নিজে নিজেকে চেনালে কেউ মানবে না, অথচ দেখুন এমন একজন যাঁকে "আপনি" চেনেন না, যে আপনাকে কোনদিন দেখেনি, সে "আপনাকে" সার্টিফাই করছে আপনি সত্যিকারের আপনি বলে, বাকীরা মেনে নিচ্ছে, ঠিক কি না?"
@aka: "পৃথিবীতে একমাত্র জিনিষ যা আমি বদলাতে পারি তাহল নিজেকে এবঙ্গ শুধু নিজেকেই, কোনটা নিজের নিয়্ন্ত্রণে
সেই লক্ষণরেখা খুবই সূক্ষ্ম, সারাজীবন ধরে সেই রেখার ওপরে ট্রাপিজের খেলা খেলতে শেখাই হল জীবন যুদ্ধ।"
হবেই তো, আসলে পুরোটাই ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ কিনা।
"নিজ"/"আমি বলে আলাদা করে কিছু নেই, কোনদিন ছিল না। স্বতন্ত্র অস্তিত্ব একটা অসম্ভব অবাস্তব ব্যাপার, পুরোটাই একটা মায়া, illusion, জাপানী kaniza shape র মতন। ত্রিকোণ গুলোকে, চতুষ্কোণগুলোকে মর্মচক্ষে দেখতে পাচ্ছেন, অথচ সেগুলো আসলে অস্তিত্বহীন।
ওকে। হাইস্টেক পোকার, অপশন ট্রেডিং, লক্ষ্ণনরেখার ওপর ট্রাপিজ খেলা। তারপরেই গীতা বোঝা যাবে বলছেন, না আরও কিছু আছে?
@Apu: " ফলের আশা না করে কাজ করে যাও " - পাতি বার খাওয়ানো!!
মানে তুমি আপিসে প্রানপাণ এফোর্ট দাও বস, কিন্তু ইনক্রিমেন্ট ভুলে যাও।"
আমি যেভাবে দেখি, একে তুমি প্রসেস ়ফোকাসড হয়ে কাজ করার কথা বলা হচ্ছে এভাবেও ভাবা যেতে পারে ।
শ্লোকটাতে কিন্তু কোথাও আশা/নিরাশার কথা বলা হয়নি, বলা হয়েছে অধিকারের কথা। তোমার কাজে কম্মে কোন ব্যাপারটা তোমার অধিকার বা কোন জায়গাটা তোমার নিয়ন্ত্রণ করার । আসলে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই ছোট বড় "ফলাফল"/আউটকাম stochastic তো, এত ফ্যাকটরের ওপর নির্ভর করে যে শুধু তোমার "এফোর্ট" তার মধ্যে একটা মাত্র, একটা "node" | মনে কর একটা প্রকাণ্ড DAG (Directed Acyclic Graph), তার বহু node, বহু শাখাপ্রশাখা, তাদের মধ্যে শুধু একটা তোমার effort |
"বলা যায় কৈবল্যদশা প্রাপ্ত হবে"
আর কৈবল্যদশা!
ওই কৈবল্যদশা প্রাপ্তির সন্ধানেই তো এক জীবন কেটে গেল Atoz!
"মানুষে মানুষে নানারকম ভাবগত, আদর্শগত, বস্তুগত সংঘাত যদি না হয়, তাহলে পুরো সিস্টেমটাই তো অচল, নির্জীব হয়ে যাবে। বলা যায় কৈবল্যদশা প্রাপ্ত হবে। "
ভাবগত সংঘাত ভাবের সংঘাত, মানুষে মানুষে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের জায়গাটা কোথায়? আপনার থিওরি আমার ভাল না লাগতেই পারে, ভাল না লাগাটা _আমার_ সমস্যা, আপনার তো নয়।
আর ধরুন আমার যদি আলাদা অস্তিত্ব না থাকে, ল্যাঠা চুকে গেল।
ইকুইলিব্রিয়ামে পৌঁছে যাবে যেখানে গেলে আর পরিবর্তন নেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। এগোতে গেলে, বিবর্তিত হতে গেলে কনফ্লিক্ট অবশ্য প্রয়োজন। প্রেরণা ও তাড়না না থাকলে অগ্রসর হবার কোনো কারণই তো থাকে না।"
বাকীটা লিখছি। :-)