ওটাই প্রবলেম।পুঁথিগত বিদ্যা,আর সিলেবাসের চাপে এসব কোনদিন শেখানো হয় না।খালি ফর্মুলা বলে দেয় টিচাররা,আর সেটা থেকে প্রচুর অঙ্ক কষতে বলে।
আমার ছাত্র জীবনে,ক্লাস টুএলভ অবধি কেউ বললোনা,buoyancy বা প্লবতায় ফ্লুইড ওপর দিকে ধাক্কা দেয় (upward thrust) কেন?
সম্রাট আকবর,তানসেন এর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে,বীরবল কে বললেন,যাও গিয়ে তানসেন কে বলো,আমাকে গীত শিক্ষা দিতে।আমি তানসেন এর চাইতে ভালো গায়ক হতে চাই।
বীরবল বিলক্ষণ জানতেন,আকবরের কোকিল পুড়ানো গলা।সুর সেখানে তালগোল পাকায়। কিছুক্ষণ নীরব থেকে বীরবল আকবর কে বললেন,জাঁহাপনা,একটি গল্প শুনুন --
কয়েক শত বছর আগে,মহারাজ বিক্রমাদিত্যের এক অসি শিক্ষা গুরু ছিলেন।নাম ছিল,অসিরাম। ওনার অনেক শিষ্য ছিলো।তাঁদের মধ্যে একজনের নাম গণ্ডমূর্খ।
একদিন গণ্ডমূর্খ,বিক্রমাদিত্য কে বললো,আমি অসিরামের চাইতে ভালো অসি চালনা করতে পারি।আমাকেই গুরু নিয়োগ করা হোক।
মহারাজ বললেন,বেশ তো।পরীক্ষা প্রার্থনীয়।আগামী সপ্তাহেই দ্বৈরথ হবে।
গণ্ডমূর্খ দুদিন খুব প্র্যাকটিস করলো।তারপর ভাবলো যাই গিয়ে দেখে আসি গুরু অসিরাম কি করছে। অসিরামের বাড়ির জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখে,বিরাট তিন হাত লম্বা একটা তলোয়ারের খাপ!
ওহ,এই ব্যাপার!দেখাচ্ছি মজা।বলেই কামার এর বাড়ী গিয়ে বললো,আমাকে চার হাত লম্বা,একটা তলোয়ারের বানিয়ে দাও।
যথা সময়ে,রাজ ক্রীড়াঙ্গনে অসিরাম ও গণ্ড মূর্খ উপস্থিত। অসিরাম তিন হাত লম্বা খাপ আর গণ্ড মূর্খের চার হাত লম্বা!
হুইসেল বাজার সঙ্গে সঙ্গে, গণ্ডমূর্খ তলোয়ার বার করতে গেলো ;কিন্তু হাত উঁচিয়ে বার করতেই পারে না।ওদিকে অসিরাম, তিনহাত লম্বা খাপ থেকে একহাত লম্বা একটা তলোয়ার বার করে গণ্ডমূর্খ এর বুকে চেপে ধরলো।
আর মৃদু হেঁসে বললো,"যতোই সার জল দাও, আমড়া গাছে কোনদিন আম ফলবে না"
এই বলে বীরবল তার কাহিনী শেষ করলো।আকবর বললো,আমার পেট কামড়াচ্ছে,আমি ব্যাহ্যে যাচ্ছি।
আর্যভট্ট
এবার বুঝতে কষ্ট হচ্ছে না,কেন গুণীজন বলে গেছেন যতো সার জল ই দেওয়া হোক না কেন, আমড়া গাছে কোন দিন আম ফলবে না।
কথা হচ্ছিলো,কেন স্টুডেন্টদের অঙ্কে ফল খারাপ হয় বা ভীতি আসে।ওই প্রসঙ্গেই এসেছে এরিথমেটিক হলো, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ঐকিক নিয়ম।ভালো করে এটুকু শিখলেই ফল ভালো করা যায়।
কোথা থেকে কতো হাবি জাবি , জঞ্জাল এনে জড়ো করা হলো।
এর অর্থ কি?ভালো করে ক্লাসে টিচার রা সব বুঝিয়ে দেয়?সব দোষ স্টুডেন্ট দের? আর দোষ টা টিচার দের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়?আদ্যন্ত রাবিশ!
আপনার বোঝানো টাই হলো গিয়ে বোঝা!ওটাই টিচাররা করে থাকে সচরাচর।নিজেরা না বুঝলে, তখন বিষয় টিকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।
তখন ভুলভাল আওড়াতে থাকে। ক্লাসে নিউটনের সেকেন্ড ল, বয়ান্সি ,ক্যালকুলাস সবকিছুই বোঝানো হইয়া থাকে লাও,কি করবে করো!
অতো বুঝিয়ে কাজ নেই।ওই বেশি বোঝার চাইতে ঐকিক নিয়ম টি ভালো করে শিখলে, এরিথমেটিক এর অঙ্ক কষা যায়,এটুকু বুঝি। স্টুডেন্টরা ঐটি ভালো করে বুঝে রপ্ত করতে পারলেই হলো।
ফিজিক্সের ক্ষেত্রে ও তাই।একটু ভালো করে বুঝিয়ে দিলে নিরস থাকে না।
বাই দ্যা বাই।একটু ছোট করে buoyancy (বয়েন্সি) বুঝিয়ে বলতে পারবেন ?
তাহলে কি স্মার্ট উত্তর এলো!? নাম্বার।নাম্বার দিয়ে কি বোঝা গেলো?অঙ্ক মানেই তো নাম্বার। তা ,নাম্বার দিয়ে নিশ্চয় এরিথ মেটিকএর অঙ্ক কষবো?সেগুলো কষতে গেলে নিশ্চয় ওই ঐকিক নিয়ম ই ঘুরে ফিরে আসে। ক্লিয়ার। বিরাট কোন ব্যাপার না। না বুঝলে,বুঝতে হবে মস্তিষ্কে জোলাপ লাগবে। হা,হা।
এরিথমেটিক তাহলে কি? কোন গুহ্য ব্যাপার স্যপার না কি?
বোঝানো হয়?আমার দেখা নব্বই শতাংশ ছাত্র নিউটনের সেকেন্ড ল জাস্ট বোঝে না।জানেনা ক্যালকুলাস এর এপ্লিকেশন কি? ইভন টরিসেল্লির এক্সপেরিমেন্ট ঠিক কি বোঝায়?
এগুলো বোঝানোর খামতি।সাবজেক্ট নিরস করে দেয়।
একটা সামান্য কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট এর অঙ্ক দিলে ফর্মুলা বসিয়ে এক মিনিটে সলভ করে দেয়।কিন্তু যখন বলা হয় ছ হাজার টাকা ৯পার্সেন্ট ইন্টারেস্ট হিসাবে তিন বছরে কতো হবে,ফর্মুলা না দিয়ে করে দেখাও।ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায়।