এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • লা টোমাটিনা থেকে টোম্যাটেরা -- এক অপচয়ী উল্লাস

    Somnath mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ২১ মে ২০২৫ | ২৯৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • লা টোমাটিনা থেকে টোম্যাটেরা…এক অপচয়ী উল্লাস।
     
    আজ সকালেই বিকাশের কাছ থেকে ১ কিলোগ্রাম টম্যাটো কিনেছি ৪০ টাকায়। বিকাশ আমাদের সবজি দেয়। করোনা মহামারীর সময় থেকেই ভ্যান রিক্সায় সবজির পশরা নিয়ে ফেরি করে বিক্রির চল হয়েছে। সবজি বিক্রেতাদের অনেকেই কাজ হারিয়েছে মহামারীর সময়। সেই কাল উৎরে গেলেও পুরনো কাজে আর ফিরে যাওয়া হয়নি বিকাশের মতো আরও অনেকের। পাল্লায় খানিকটা বেশি টম্যাটো তোলা হয়ে গিয়েছিল। সেই অতিরিক্ত বোঝা নামাতে নামাতে বিকাশ তার চেনা ঢঙে বলে – “কাকা ! দেড় কিলো দিয়ে দেবো? এরপর কিন্তু দাম আরও বাড়বে।”
     
    দাম যে বাড়বে তাতে সন্দেহ নেই। গত সপ্তাহে কিনেছিলাম এক কিলো ২০ টাকায়, তার দু সপ্তাহ আগে পেয়েছিলাম ১৫ টাকায় দু কিলোগ্রাম টম্যাটো। কাঁচা আনাজের দর এমনটাই ওঠানামা করে। এটাই নিয়ম। চাহিদা আর জোগানের আশ্চর্য লীলাভূমি হলো আমাদের বাজার ও বিপণন ব্যবস্থা। মন্দিরের পরিবর্তে হিমঘর তৈরি করা হলে কৃষিজীবী মানুষদের বেশ খানিকটা স্বস্তি মেলে। অতিরিক্ত ফসল হিমঘরে রেখে বাড়তি কিছু পয়সা ঘরে তুলতে পারে তারা। তবে সেসব আশা সুদূর পরাহত। যাইহোক এসব নিয়ে কথা বলার বিপদ আছে, ওৎ পেতে থাকা ভাষা সন্ত্রাসীদের মিসাইল আক্রমণের শিকার হতে হবে। তবে এখন‌ই টম্যাটো ছেড়ে নড়ছিনা।
     
    টম্যাটো - বেরি জাতীয় এক গাছের ফল যা গোটা দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় সবজি। লাল টুকটুকে টমেটো বিশ্বময় হেঁসেলের বিশ্বস্ততম সঙ্গী। এর বিজ্ঞানসম্মত পোষাকী নাম Solanum lycopersicum. দক্ষিণ আমেরিকার আদি নিবাস ছেড়ে সারা দুনিয়ায় টম্যাটোর ছড়িয়ে পড়ার পেছনে রয়েছে ঔপনিবেশিক স্পেনের বড়ো ভূমিকা। ষোড়শ শতকে পৃথিবীর যেখানে যেখানে স্পেনীয়রা পৌঁছেছে , সেখানেই পৌঁছে দিয়েছে টম্যাটোকে, শুভেচ্ছার স্মারক হিসেবে। এভাবেই  
    বিশ্বময় টম্যাটোর ছড়িয়ে পড়া এবং সরাসরি রান্নাঘরে সেঁধিয়ে যাওয়া। আমাদের দেশেও এভাবেই টম্যাটোর গৌরবময় অনুপ্রবেশ এবং রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠা।
     
    উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে আমাদের দেশের অধিকাংশ অঞ্চলেই টম্যাটো একটি শীতকালীন ফসল। উত্তরের পার্বত্য জেলাগুলোতে অবশ্য সারাবছরই টমেটো চাষ করা যায়। বাজারদর ভালো থাকায় বহু মানুষ‌ই এই বছর টম্যাটো চাষ করেছিলেন। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর ফলন হয়েছে খুব ভালো, যাকে বলে বাম্পার ফলন। কিন্তু সেই অনুপাতে চাহিদা না থাকায় এবং বাজারে অত্যধিক জোগানের কারণে দাম একেবারে তলানিতে ঠেকেছিল। শেষ পর্যন্ত কৃষকেরা ক্ষেত থেকে টমেটো তোলার আগ্রহ না দেখানোর কারণে মাঠের ফসল মাঠেই শুকিয়ে গেছে। সংবাদপত্রের পাতায় এমন খবর পড়েছি আমরা। এ দেশের কৃষকেরা এমন অনিশ্চয়তার শিকার হন বারংবার।
     
    রান্নাঘরের অপরিহার্য এই সবজিটি আবার লোক বিনোদনের অন্যতম উপকরণ‌ও বটে। টম্যাটোকে জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে স্পেনীয় পর্যটকদের একটা বড়ো ভূমিকা ছিল।সে ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখেই স্পেন দেশের বুনল শহরে আয়োজিত হয় La Tomatina নামের টম্যাটো উৎসব। জাঁকজমক ও নাগরিকদের অংশগ্রহণের বিচারে লা টোমাটিনাঔ হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো ফুড ফাইট বা খাদ্য লড়াই। একেবারে গোড়ার দিকে এই উৎসব ছিল নেহাতই একান্ত বন্ধুদের মধ্যে টম্যাটো ছোড়াছুড়ির খেলা। দোলের সময় আমাদের এখানেও মাঝে মাঝে নরম হয়ে যাওয়া টম্যাটো নিয়ে খেলা হয় বটে,তবে তা কখনোই তেমন ব্যাপকতা লাভ করেনি। কিন্তু স্পেনের টম্যাটো ছোড়াছুড়ির খেলার ব্যাপকতা অনেক অনেক বেশি। প্রতিবছর দেশবিদেশের বহুসংখ্যক পর্যটক এই লা টোমাটিনা উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য আগস্ট মাসের শেষ বুধবারে এসে হাজির হয় বুনল শহরে। নিয়মমতো ঐ দিনটিই নির্ধারিত হয়ে আসছে টম্যাটো ছোড়াছুড়ির খেলার জন্য। কেন এমন উৎসবের আয়োজন? কী তার ইতিহাস? সংক্ষেপে তা নিয়ে কয়েকটি কথা বলে নেওয়া যাক্।
     
    লা টোমাটিনা উৎসবের সূচনা হয়েছিলো আজ থেকে ঠিক নয় দশক আগে ১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসের শেষ বুধবার। স্পেন দেশের একটা বহু প্রাচীন পারম্পরিক উৎসব হলো বড়ো বড়ো পুতুল চরিত্রদের নিয়ে অনুষ্ঠেয় Giants and Big- Heads figures parade. এই বার্ষিক অনুষ্ঠানের আনন্দ নিতে বেশ কিছু তরুণ হাজির হয়েছে শহরের টাইম স্কোয়ারে। এদিকে হলো এক হুলস্থুল কাণ্ড! শরীরের সঙ্গে বেঁধে রাখা বড়ো বড়ো পুতুলগুলোর ওজন তো নেহাৎ কম নয়! ‌গড়পড়তা প্রায় ৪০-৬০ কিলোগ্রাম। এমন‌ই এক ভারী পুতুল আচমকা ভেঙে পড়লে হুড়োহুড়িতো হবেই। সেবার দুর্ভাগ্যক্রমে তেমন‌ই ঘটলো। একজনের মাথার ওপরে পুতুলের মাথা ভেঙে পড়তেই তৈরি হলো এক চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির। হাতাহাতি শুরু হয়ে গেল দুদলের মধ্যে। প্রথমে হাতাহাতি,ঘুষোঘুষি । খানিক পরেই তা বদলে গেল বাজারের এক সবজিওয়ালার ঝুঁড়ি থেকে লাল টুকটুকে টম্যাটো তুলে নিয়ে পরস্পর পরস্পরের দিকে ছোড়াছুড়ির লড়াইয়ে। প্যারেড মাথায় উঠলো। গোটা এলাকা টম্যাটোতে লালে লাল। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
     
    সে বছরের মতো ব্যাপারটা মিটে গেলো বটে তবে ঠিক পরের বছর কিছু অত্যুৎসাহী মানুষ, আগেভাগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঝগড়ার মিথ্যে আয়োজন করলো। আগেভাগেই তারা সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলো পাকা টম্যাটো। অভিপ্রায় ছিলো কপট লড়াই করে কিছু বাড়তি মজা লোটা। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এমন উদ্দেশ্য টের পেয়ে তা ভেস্তে দিলো তৎপরতার সঙ্গে। কিন্তু এভাবে টম্যাটো ছোড়াছুড়ির মজাটা মন থেকে মুছে ফেলতে পারলো না। তাই পরের বছর আবার স্থানীয় লোকজন পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে জমায়েত করে সেই একই খেলায় মেতে উঠলো। এভাবে পাকা টম্যাটো ছোড়াছুড়ি করে নষ্ট করে ফেলাকে খুব ভালো চোখে দেখেনি প্রশাসন।
     
    ১৯৫০ সালে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর পক্ষ থেকে। নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলা হলো এই অনুষ্ঠানের মধ্যে কোনো ধর্মীয় তাৎপর্য নেই। সুতরাং এভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী নষ্ট করা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। লোকজন তা মানবে কেন? এমন সাংবাৎসরিক হুজুগে হুল্লোড়বাজি ছাড়া যায়! লড়াইয়ের স্মৃতিকে আড়ালে রেখে তারা তখন মজার স্বাদ পেয়েছে। নতুন লড়াইয়ের জন্য আরও বহু মানুষ এসে হাজির হলো। ১৯৫৭ সালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। এর প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা এক বড়োসড়ো টম্যাটোকে কফিনে পুরে, ফুল মালা দিয়ে সাজিয়ে এক প্রতীকী শবযাত্রায় সামিল হলো। এইসব কাণ্ড দেখে সরকার বাধ্য হয়ে নিষেধাজ্ঞা বাতিল বলে ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। La Tomatina এক পারম্পরিক উৎসবের স্বীকৃতি পেল স্পেনের বুনল শহরের নিজস্ব ধারার উৎসব হিসেবে। সেই থেকে প্রতিবছর আগস্ট মাসের শেষ বুধবার এই লড়াইয়ে সামিল হচ্ছেন স্পেন সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নানা প্রান্তের মানুষজনেরা। La Tomatina এখন স্পেনের অন্যতম আলোচিত উৎসব। 
     
    বুনল শহরের এই উৎসবের ঢেউ এবার এসে পৌঁছেছে আমাদের দেশে। ২০১১ সালে কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু ও মহীশূর শহরে একযোগে লা টোমাটিনা উৎসবের আয়োজন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় কিছু অসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। সেবার রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডি. ভি. সদানন্দ গৌড়া এই পরিকল্পনা বাতিল করে দেন। ভারতের মতো একটি বিশাল দেশে যেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষ খাদ্য সংকটের শিকার সেখানে এভাবে নিছক মজা লোটার জন্য টম্যাটোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় একটি সবজিকে নষ্ট করার অনুমতি দেওয়া যায়না। এভাবে খাদ্যসামগ্রীর অপচয় দেশীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী। দেশের রাজধানী দিল্লিতেও কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এমন অনুষ্ঠান উদযাপনের –উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা পর্যাপ্তসংখ্যক মানুষের আগ্রহের অভাবে বাতিল করা হয়। 
     
    ইদানিং আমাদের দেশে এক নব্য সাংস্কৃতিক ধারা একটু একটু করে বেগবতী হতে শুরু করেছে যাকে বিশেষজ্ঞরা চিহ্নিত করছেন ফ্লোটিং কালচার বা ভাসমান সংস্কৃতি নামে। এই ব্যবস্থা সাবেকি ব্যবস্থার মতো ধীর পরিবর্তনশীল নয় বরং বলা যায় প্রতিদিন বদলে যাওয়াটাই এমন যাপন সংস্কৃতির একান্ত বৈশিষ্ট্য। এই সময়ের কাল্ট হলো কেবলমাত্র বর্তমানের কথা ভাবা। তাই এঁদের কাছে অতীত ভাবনা অপ্রয়োজনীয়। ভবিষ্যতের কথা ভেবে এঁরা এই সময়ের আনন্দকে নষ্ট করতে চায় না। এঁদের কাছে আনন্দ হয়েছে মস্তি । সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই যেন লঘু হয়ে যাচ্ছে।
     
    মানুষের মানসিকতার এই পরিবর্তন সম্পর্কে বেওসায়িরা বিলকুল সচেতন। আর তাই বিনোদন পার্ক, উইক এন্ড অ্যামিউজমেন্ট ইত্যাদি গালভরা নামের আড়ালে চলছে মানানসই দেশীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী পশ্চিমা উল্লাস আয়োজন। সাবেকি নিজামী শহর হায়দ্রাবাদে গত ১১ মে ২০২৫ রবিবার আয়োজন করা হয়েছিল ভারতের প্রথম টম্যাটো ছোড়াছুড়ির উৎসব TOMATERRA স্পেনের সনাতনী টম্যাটো উৎসব লা টোমাটিনার ভারতীয় সংস্করণ। 
     
    অনূষ্ঠানের উদ্যোক্তা প্রিজম আউটডোরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তাঁরা স্পেনের পাশাপাশি বলিউডের সাম্প্রতিক জনপ্রিয় ফিল্ম ‘জিন্দেগী না মিলেগি দোবারা’র  একটি জনপ্রিয় নাচের দৃশ্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই এমন অভিনব উৎসব আয়োজনের কথা ভেবেছে। অনুপ্রেরণা লাভের এতো বিচিত্র উপকরণ চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁরা এমন অপচয়ী হুল্লোড়ের অনুষ্ঠানকেই বেছে নিলো তা বুঝতে বোধহয় কারোর অসুবিধা হবেনা। সেই বিনোদন বেওসার চিরকালের মহিমা। যেহেতু ফিল্ম দ্বারা প্রাণিত সেহেতু ফিল্মি তারকারাও ভিড় টানতে হাজির ছিলেন শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ঢাউস সাইজের ব্যানারে এবং সশরীরে। তারকাদের সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে এমন রসালো আয়োজনে উপস্থিত থাকার দুর্লভ সুযোগ কেউ সহজে হাতছাড়া করতে চায় ? সুতরাং মধুর লোভে যেমন মৌমাছিরা, মস্তির লোভে তেমনি ভিড় জমিয়েছিল বিপুল মানুষ এক্সপেরিয়াম ইকো পার্কের আঙিনায়। সকাল ১০’টা থেকে রাত ৮’টা পর্যন্ত চলা এই টোম্যাটেরা অনুষ্ঠানে যোগদানের ন্যূনতম দক্ষিণা ছিল মাত্র ৪৯৯ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩৪৯৯ টাকা। এমন বিস্তারিত প্রবেশ মূল্য থেকে এটা পরিষ্কার যে প্রবেশমূল্যের নিরিখে দর্শকদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাটির যথেষ্ট পার্থক্য ছিল।
     
    উদ্যোক্তাদের মতে– হায়দ্রাবাদ এই টোম্যাটেরা উৎসবের মধ্য দিয়ে গোটা দেশের ভবিষ্যৎ বিনোদনের এক রূপরেখা তুলে ধরেছে। টোম্যাটেরা নবীন প্রজন্মের ভারতীয়দের জন্য আগামী শতকের উৎসব। দেশ বদলাচ্ছে, ভাবনা বদলাচ্ছে। এই অবস্থায় এমন আয়োজন অত্যন্ত যুগোপযোগী প্রয়াস।
     
    এ পর্যন্ত ঠিকঠাক আছে। রাতে আলো জ্বালিয়ে মসলা ক্রিকেট খেলা যদি মান্যতা পায় তাহলে এই টম্যাটো ছোড়াছুড়ির খেলায় আপত্তিল কিছু নেই। তবে কেবলমাত্র মস্তির খাতিরে এই দুর্মূল্যের দিনে এভাবে কৃষকের শ্রম আর ঘামের বিনিময়ে ফলানো ফসলের অপচয় কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসন কেন নীরবতা পালন করলো তা বিস্ময়কর।
     
    **
    শেষ করবো একটি ইতর রসিকতা দিয়ে।
    উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে , সারাদিনের বিনোদন সমাবেশে উপস্থিত মস্তিবাজদের ধাষ্টামোর ফলে পিষ্ট টম্যাটো মণ্ড দিয়ে জৈব সার তৈরি করা হবে যা আগামী দিনে স্যসটেনেবল ডেভেলপমেন্টের আদর্শ উদাহরণ হয়ে উঠবে।
    সত্যি মা যোগেশ্বরী, কি বিচিত্র এই দেশ!!!
     
    এই বিষয়ে লেখার উৎসাহ পেয়েছি এখানেই।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সৌমেন রায় | 2409:40e2:b:959c:8000::***:*** | ২১ মে ২০২৫ ১৯:৫৩731544
  • সেই তো! ফ্লোটিং সংস্কৃতি শিখে নিতে হবে। মন্দির, কৃষকের শ্রম, রাতে আলো জ্বালিয়ে ক্রিকেট বা অকারণে ঠান্ডা হাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললে আপনি, আমি সব অপাংক্তেয়! 
  • Somnath mukhopadhyay | ২১ মে ২০২৫ ২০:০৮731545
  • তবুও প্রশ্ন তুলে যেতে হবে। টম্যাটো ছোড়াছুড়ির আসর থেকে আওয়াজ উঠেছে - আসছে বছর আবার হবে। বাধা না পেলে এই খেলা চলতেই থাকবে।
  • মিহির মাইতি | 2405:201:8000:b11b:2c38:33a:73e2:***:*** | ২১ মে ২০২৫ ২২:১৬731546
  • প্রয়োজনীয় সতর্কীকরণ জারি করলেন লেখক। টম্যাটো উৎসব একটি অপচয় ছাড়া অন্য কিছু নয়। দেশের একশ্রেণীর মানুষ এই ধরনের কাজের পৃষ্ঠপোষকতা করছে, যারফলে তথাকথিত বেওসায়িরা উৎসাহ পাচ্ছে এমন কাজ করতে। লেখকের সঙ্গে সহমত পোষণ করেই বলছি -- কি বিচিত্র এই দেশ !
  • শর্মিষ্ঠা লাহিড়ী | 2405:201:8016:6b:9e52:e70e:fadd:***:*** | ২২ মে ২০২৫ ০৮:১৯731553
  • টম্যাটো সত্যিই এখন আমাদের হেঁসেলের একটি অতি প্রয়োজনীয়  উপকরন  হয়ে উঠেছে। নতুন ফসল ওঠার পর কিছুদিন দাম কম থাকলেও আস্তেআস্তে তার মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।বাস্তবিক পক্ষে মন্দির, মসজিদ বিনোদন পার্ক তৈরির তুলনায় ফল ও সবজি সংরক্ষনের প্রয়োজনীয় হিমঘর তৈরী র প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি বলার অপেক্ষা রাখেনা।  নিছক বিনোদনের জন্য টম্যাটো কে ব্যবহার করার উৎসব আমাদের মতো দেশে না আনার চেষ্টা করাই বাঞ্ছনীয় 
  • r2h | 165.***.*** | ২২ মে ২০২৫ ১৯:৫৮731566
  • খাবার জিনিস অপচয়ের ব্যাপারটা সংস্কৃতি হিসেবেই খুব খারাপ। যদিও অপচয় একটা খুব বিস্তৃত বিষয়, সভ্য মানুষ যা করে তার বেশিটাই অপচয়, নগর সভ্যতা ব্যাপারটার সঙ্গে উদ্বৃত্ব, অপচয় -এইসব জড়িয়ে। যেকোনও রকম বিলাস ব্যাসন শৌখিনতার সঙ্গে কিছুটা বা অনেকটা করে অপচয় জড়িয়ে, অন্যদিকে একটা অজগর সাপ বা একপাল হায়না কিছুই অপচয় করে না।
    তবে সে অনেকটা এক্স্ট্রাপোলেশন।

    এমনিতে, এমন একটা ব্যাপার যে বড় করে ভারতে হয় তা জানতামই না, কী কান্ড, হিন্দি সিনেমা যে কত কী করলো, সন্তোষী মা, কড়োয়া চৌথ, টম্যাটো উৎসব।

    এই উৎসব নিয়ে প্র‌্যাকটিকেল ক্ষতি গুলি কী? টম্যাটো চাষি বা টম্যাটো ব্যবসায়ীরা কী বলেন? বছরের একটা সময় এমন টম্যাটোর চাহিদা অনেক বাড়ছে যা খুব সুস্বাদু না হলেও চলে - এতে কী টম্যাটো চাষি ও পাইকারদের লাভ হচ্ছে কিছু, না উল্টোটা? উল্টোটা হলে কেন?
    আর লাভ যদি হয়, তাহলে ক্ষতিটা কোন দিকে, মানে, টম্যাটো চাষীর কাছে, ভালো দাম পেলে, টম্যাটো দিয়ে স্যালাড খাওয়া হচ্ছে, না পিউরি বানানো হচ্ছে, না গায়ে মাখা হচ্ছে - তাতে খুব বেশি তফাত হওয়ার কথা না - তাহলে কি শুধু খাওয়ার জিনিস নিয়ে খেলা করা ভালো না - এই নৈতিকতা থেকে?
  • #:+ | 2405:201:8000:b11b:2c38:33a:73e2:***:*** | ২২ মে ২০২৫ ২০:৩৬731567
  • লেখাটি পড়তে পড়তে মনের মধ্যে একটা হাহাকার ও প্রবল ক্ষোভ  জেগে উঠলো । এভাবে কৃষকদের পরিশ্রমের ফসল নিছক বিনোদনের জন্য নষ্ট করে ফেলার সংস্কৃতি কোনো ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এবার টম্যাটো দিয়ে শুরু, পরের বছর হয়তো উৎসবের নামে অন্য কোনো ফসল নিয়ে মাতামাতি হবে। হুজুগের তো শেষ নেই এই পোড়া দেশে।
  • প্রসূন | 103.***.*** | ২২ মে ২০২৫ ২০:৫১731569
  • টমেটোর ফলন ও অঞ্চলে (হায়দ্রাবাদ, সেকেন্দ্রাবাদ) সারা বছর হয়ে থাকে। স্থানীয় তথা কর্মসূত্রে স্থায়ী বা অস্থায়ী অধিবাসীদের পাতে কাঁচা পাকা টমেটো সম্বচ্ছরের বিষয়। হয়তো চাহিদার থেকে উৎপাদনের হার বেশি হওয়ার নিরিখেই এমন পরিকল্পনা। 
     
    খাদ্যাভাস এদেশে সর্বত্র সমান নয়। এ বঙ্গের প্রান্তিক শহর পুরুলিয়ার ধূলিধূসর গাঁয়ের পথেপ্রান্তে গাছতলায় যেমন পড়ে থাকে তাল। সেকেন্দ্রাবাদে তেমনি গাছতলায় ছড়িয় পড়ে থাকে জামরুল।  
  • সুব্রত | 2001:4490:880:3488:f85c:7ff:fefb:***:*** | ২২ মে ২০২৫ ২২:০৫731574
  • টমেটো ছোঁড়া র খেলা ব‍্যপারটা বেশ নতুন এবং অভিনব। হয়ত দু এক বছরের মধ্যে কোলকাতাতেও শুরু হয়ে যাবে। অপচয়ের ব‍্যপারটা ঠিক মানতে পারছি না। এখন জন্মদিন বা যেকোনো অনুষ্ঠানে কেক কাটার পর খাওয়া হয় কম, মাখা বা মাখানো হয় বেশী। এমনকি বহু জায়গায় মাখামাখি করার জন্য আলাদা করে কেক আনা হয়। সেটাও সাংঘাতিক অপচয়। করোনা কালে কেন্দ্র সরকারের গুদামের চাল স‍্যনিটাইজার তৈরির কাজে লাগানো হয়েছিল সে খবর আনন্দ বাজার এ বড় করে বেরিয়েছিল। তো টমেটোর আর কি দোষ? ঐ খেলার জন্য হয়তো কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই টমেটো কিনতে হবে। যা কিনা 50 বা 100 টাকা কিলো। তাতে চাষীদের লাভ হোক আর না হোক মধ্যসত্বভোগীদের পোয়াবারো।
    তবে ভয় লাগে একটাই....কোন কোম্পানি হয়ত বলবে ছোঁড়ার খেলায়, পায়ের চাপে থেঁতলে নষ্ট হয়ে যাওয়া টমেটো আমি কিনব। তারপর হয়ত তা বোতলবন্দী টমেটো সস রুপে আমাদেরই খাবার টেবিলে ই হাজির হবে।
  • Ranjan Roy | ২২ মে ২০২৫ ২২:৪৪731576
  • কিছুই জানতাম না।
    অত্যন্ত সুলিখিত এবং প্রয়োজনীয় লেখা।
     
    বিতর্ক চলুক। 
  • r2h | 165.***.*** | ২২ মে ২০২৫ ২২:৪৮731577
  • কাঁঠাল যেমন - ত্রিপুরায় এত হত, যে গ্রীষ্মের শেষে ভবঘুরে ছাগলেরাও আর গাছে থেকে পড়ে যাওয়া বেওয়ারিশ কাঁঠাল খেত না। গত বছর দশেকে শুনেছিলাম নাকি রপ্তানি বৃদ্ধিতে সে আর হয় না, তবে পরিবর্তিত বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে কী ব্যাপার জানি না, আজকাল ফাঁকা জায়গা, বাগান কমে যাওয়াতে অত কাঁঠাল গাছ আছে কিনা তাও জানা নেই।

    টম্যাটো উৎপাদকেরা সঠিক দাম পাচ্ছেন - সেটা নিশ্চিত করা উচিত অবশ্যই।

    তবে ঐ, কী কী প্র‌্যাকটিকেল খারাপ দিক, খাবার নষ্ট করা খারাপ এই অবস্থান ছাড়া- তা জানতে আগ্রহী। হতেই পারে বাণিজ্যের বাইরেও অন্য দিক আছে। 
  • সপ্তর্ষি মিত্র | 169.234.***.*** | ২২ মে ২০২৫ ২৩:০৬731578
  • এর সহজ সমাধান হলো যখন সাপ্লাই > ডিমান্ড থাকবে ,তখন এর আয়োজন করা যাতে ঠিক দামে কৃষকরা তাদের জমি খালি ও করতে পারে 
  • Somnath mukhopadhyay | ২৩ মে ২০২৫ ০০:০০731585
  • লেখকের জবাব আগামীকাল।smiley
  • DrSouravM | 2401:4900:76ef:fdac:e114:ac1c:827a:***:*** | ২৮ মে ২০২৫ ১১:৫৭731717
  • They must have bought tomatoes for Tomaterra?!
  • DrSourav M | 2401:4900:76ef:fdac:e114:ac1c:827a:***:*** | ২৮ মে ২০২৫ ১২:০২731719
  • I put a long comment but dont know why only the first line is being shown. I wrote it is very sad to see that the floating culture which we are importing from a part of the western world is destroying our thousands of years old deep rooted cultural identity and it is alarming...
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন