ছত্তিশগড়ে মাওবাদঃ এক বিহঙ্গম দৃষ্টি -- চতুর্থ ও শেষ পর্ব : রঞ্জন রায়
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : রাজনীতি | ১২ অক্টোবর ২০১২ | ১১৩৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
আমি গিয়ে ভাব করি ইনশাস রাইফেল নিয়ে ব্যাজার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা ছত্তিশগড় আর্মড পুলিশের দুই জোয়ানের সঙ্গে। একজন চেয়ে নেয় সাক্ষরতার একটি ম্যাগাজিন। বলে -- আমি উত্তরপ্রদেশের গ্র্যাজুয়েট। বই পড়তে ভালবাসি, এখানে কিছু পাইনে। রোদ্দূর চড়ছে। আমরা দুজন হ্যান্ডপাম্প থেকে জল খেতে একে অন্যের সাহায্য করি, জানতে পারি সকাল থেকে ওর পেটে কিছু পড়েনি। ভোর ছ'টার থেকে ডিউটি লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই দুপুরে লাঞ্চের সময় কিছু জুটবে। জিগাই-- রাত্তিরে মশারি? জঙ্গলে ওডোমস?
-- ওসব সি আর পি'র জোয়ানরা পায়, হাজার হোক কেন্দ্রীয় সরকারের সেপাই। আমাদের কে পোঁছে?
ইতিমধ্যে সর্দারজী টাটা সাফারিতে চড়ছেন দেখে সরকারি ছোট আমলাদের মধ্যে টেবিলে সাজানো কাজু-কিসমিস- বিস্কুট-কলা-আঙুর খাবলে নিয়ে পকেটে পোরার অশ্লীল প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। দেখতে দেখতে টেবিল সাফ। আমার পকেটে কিছু বিস্কুট, আর কিসমিস। তার থেকে গুনে ক'টি দেই ওই ছয়ফুটিয়া সেপাইকে, ও হেসে ধন্যবাদ দেয়। সলওয়া জুড়ুম শিবিরের জনতাকে মন দিয়ে দেখেছি। মনে হয় ওদের আজ গাঁয়ে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেও ফিরে যাবে না। মানুষ অভ্যাসের দাস। সেই খাঁচার পাখি, বনের পাখি গল্প।
-- এই মালী, চৌকিদার, রাঁধুনি, এস পি ও (স্পেশাল পোলিস ফোর্স)।
-- আমাদের সাক্ষরতা অভিযানের উদ্দেশ্য সরকারি চাকরি পাইয়ে দেয়ার চেয়েও পেশাগত দক্ষতা হাসিল করে সেল্ফ এমপ্লয়মেন্টের দিকে যাওয়া। আর শিক্ষিত কে? যে লোকটি এম বি এ করে দিল্লিতে মাল্টিন্যাশনালে চাকরি করে রাত্তিরে মত্ত অবস্থায় বৌকে পেটায় সেই শিক্ষিত?