বৃষ্টিভেজা গদ্যের অভিমুখ সর্বদাই বিষাদলক্ষ্যী হয় : মুজিব মেহদী
বুলবুলভাজা | কাব্য | ১০ এপ্রিল ২০১৩ | ১০২৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
যাত্রামুখে দেখি চোখ বড়ো করা কালো মেঘ গায়ে লালাভা মেখে ওত পেতে আছে, শিলাপাতের সম্ভাবনাসহ, ‘আকাশের শিলাস্তূপ থেকে তিনি বর্ষণ করেন শিলা, আর এ দিয়ে তিনি যাকে ইচ্ছা আঘাত করেন’, শঙ্কা জাগে মনে, আমার খেতের গর্ভিণী ধানের ছড়া, আমার গাছের আমের যত বোল, আমার খড়ের প্রিয় চালাঘর, এ যাত্রা সর্বনাশের সামনে দাঁড়িয়ে গেল তাহলে, হঠাৎ এ-ও মনে হয়ে যায় যে ‘...আর যাকে ইচ্ছা তার ওপর থেকে এ অন্যদিকে ফিরিয়ে দেন’, সহসাই এরকম বিশ্বাস জেগে ওঠে মনে যে আমার ওপর থেকে তা ফিরে যাবে অন্যদিকে, হ্যাঁ, যাবেই ফিরে ইচ্ছাশক্তির বলে, এ বিশ্বাস আমাকে দেন ভারতবর্ষীয় কৃষি ও আবহাওয়াবিদ খনা, তাঁর ‘ধলা মেঘে গলা পানি/ কালা মেঘে ছাগল দৌড়ানি’ আর্যাযোগে, ঝরঝরে লাগতে থাকে নিজেকে, মেঘের দিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি এবং কনিষ্ঠাঙ্গুলি দুটোই একযোগে তুলে ধরি, বলি যে, দুটোর যেকোনোটা খুশি ঢুকিয়ে বসে থাক, শান্তি পাবে, বেচারা মেঘের লালচোখ মুহূর্তে নত হয়ে যায়, ব্রেভো, গর্বে আবারও সাঁইজির চরণ জাগে পোড়া মুখে, কেন যে জাগে, ‘মানুষে মানুষের বিহার/ মানুষ হলে সিদ্ধ হয় তার/ সে কি বেড়ায় দেশ-দেশান্তর/ যেজন পিড়েয় পেরুর খবর পায়’, বারকয় চরণটি ভাঁজতে ভাঁজতেই আমার বোরাক এসে পৌঁছায় কদমতলে, এ কদম সেদিন যে সে কদম ছিল না, নিচে তার ছিল যথেচ্ছ প্রশ্রয়, কামনার ইঙ্গিত
কবিগানের বিলুপ্তি ও কবিয়াল মদন সরকার : মুজিব মেহদী
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১১ | ৯৬৯ বার পঠিত
নেপথ্যে মুখস্থবিদ্যার একটা মহিমা আছে সন্দেহ নেই। কিন্তু যখন একপাক্ষিক গায়ন নয়, সতত জারি করাই আছে যুদ্ধ, তখন তো আর কেবল মুখস্থ জ্ঞান ঝাড়লে হয় না। প্রতি মুহূর্তে নতুন করে পদ বাঁধতে হচ্ছে, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবার জন্য পদবন্ধাকারেই আরেকটা প্রশ্ন ছুড়তে হচ্ছে। এই সহজাত কবিত্বে তাঁদের প্রতি যারপরনাই শ্রদ্ধাবিনত হতে হলো। মনে হলো, এ ক্ষমতা অপরিসীম। বাক্যে-বাক্যে, কখনো তা সম্ভব না হলে অবশ্যই পরের বাক্যের সাথে একটা বলপ্রয়োগহীন অন্ত:মিল থাকছেই। সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য হলো এর স্ফূর্তিটা। পরে জেনেছি এসব কবিতার সবই তাঁরা তৎক্ষণাৎ বানান না, এর কিছু কিছু আগেই তৈরি করা, সময়মতো যা উপস্থাপন করেন মাত্র। তবে উপস্থাপিত সব পদই যে তা নয়, সেটা বোঝা যায় তাৎক্ষণিকভাবে উত্থাপিত প্রশ্নের সাথে সংগতি স্থাপনের উপযোগিতা দেখে। এসবে যথেষ্টই পারঙ্গম মনে হলো তাঁদের, যে স্ফূর্তি নবীন কবিতাকর্মী আমার তখনো নেই (এখনো কি আর আছে!)।
শ্রীলংকার জাতীয় সংগীতের রচয়িতা ও সুরকার কি আনন্দ সামারাকুন নন? : মুজিব মেহদী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১০ মে ২০১১ | ২৭২৯ বার পঠিত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনকালে সম্প্রতি বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম একটি অসমর্থিত খবর ছেপে চলেছে যে, বাংলাদেশ ও ভারতের মতো শ্রীলংকার জাতীয় সংগীতটির রচয়িতা ও সুরকারও রবীন্দ্রনাথ। এ খবর সত্য হলে সেটা আমাদের জন্য নিরানন্দের ব্যাপার নয় নিশ্চয়ই। বরং আমরা এ অর্থে গর্বিত বোধ করতে পারি যে, পৃথিবীতে বাংলাভাষার লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই একমাত্র ব্যক্তি যিনি তিন-তিনটি স্বাধীন দেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে যে, এ সংবাদটি যারা প্রকাশ করছেন, তারা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র ব্যবহার করছেন না কেন? আর এরকম একটা খবর দেশের বড়ো বড়ো সংবাদ মাধ্যমগুলো চেপে যাচ্ছে কেন? তা ছাড়া আমার জানা নেই, আজ পর্যন্ত কোনো রবীন্দ্র জীবনীকার বা গবেষক এরকম দাবি করেছেন কি না