ওদের কথা : কৃষ্ণকলি রায়
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৪ নভেম্বর ২০১১ | ১৩০৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
রূপকথার পুরো জগতটা জুড়েই রাজপুত্তুর কোটালপুত্তুরদের সাথে সমান জাঁকিয়ে আছে এই সব না-মানুষরা। সে আমাদের দেশের গল্পেই বলুন আর অন্য দেশের কাহিনীতেই বলুন। রূপকথার জাদু দুনিয়ায় জন্তু জানোয়ার, পাখিপক্ষীরা যে মানুষের মতই কথা বলতে পারবে তাতে আশ্চর্য্য হবার কিছু নেই। ভালুক এসে চাষীর সাথে ফসলের ভাগ নিয়ে ঝগড়া করবে, শেয়াল আর সারস এ ওর বাড়ি নেমন্তন্ন যাবে, খরগোশ আর কচ্ছপ দৌড়ের বাজি ধরবে এসব ওখানে হামেশাই হয়ে থাকে। কিন্তু আজ আমি সেই সব না-মানুষদের কথা বলব নানান দেশের রূপকথায় যারা এক্কেবারে মানুষের মত হয়েই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে আসুন দেখি আমাদের নিজেদের দেশের আঙিনায়। বাংলার রূপকথায় সেই যে ছিলো এক হীরেমন পাখি। এই হীরেমন দুনিয়ার সব প্রশ্নের উত্তর জানতো, তে¢ত্রশকোটি দেবদেবীর নাম বলতে পারতো।
একের মধ্যে বৈচিত্র্য কিম্বা মিলমিশের ১লা বৈশাখ : কৃষ্ণকলি রায়
বুলবুলভাজা | টুকরো খাবার | ১৫ এপ্রিল ২০১০ | ৯৯০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
আর,এই নানা রকম খাবার? ও তো আমিই করেছি সব। ঐ যে আহা নববর্ষে মায়ের লাল পাড় শাড়ি, শুক্তো, মোচার ঘন্ট, বাটি চচ্চড়ি, রুই মাছের কালিয়া - এই সব নস্টালজিয়ায় ভিজে চুপচুপে হয়ে যেতে আমার মোটেই ভালো লাগেনা। আমার সব উৎসব, সব আনন্দ, সব সময় আমার মনের মধ্যে থাকে, আমার সঙ্গে যায়, যেখানে যাই আমি। বাংলা নববর্ষতে আনন্দ করার জন্য তাই খাস বাঙালী খাবারই খেতে হবে কেন?
যে জন আছে মাঝখানে : কৃষ্ণকলি রায় ও অন্বেষা ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | অন্য যৌনতা | ৩০ আগস্ট ২০১০ | ১৮৮১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
কিন্তু এই দেহব্যবসার কাজটা খুব সোজা নয়। খদ্দেররা অনেক সময় শোয়, সব করে, কিন্তু নিজেদের চাহিদা মিটে গেলেই পয়সাকড়ি না দিয়ে পালায়। একদিন পার্কে গেছি, একজন পুলিশের লোক এসে বললো ওর সাথে যেতে। আমি প'¡শ টাকা চেয়েছিলাম। কিন্তু সে কুড়ির বেশি দেবেনা। পুলিশের লোক তো, তাই ওতেই রাজী হলাম। কিন্তু যেই না তার মজা লোটা হয়ে গেল, সে উল্টোবাগে হাঁটা দিলো। কুড়ি টাকারও দেখা পেলামনা। আমি দৌড়ে তাকে ধরে বললাম যে টাকা না দিলে পুলিশে রিপোর্ট করবো। সে তো হেসেই অস্থির। প্রমাণ কোথায় যে এমনি হয়েছে? আমি কন্ডোমটা দেখলাম, গিঁট দিয়ে বাঁধা, ভেতরে ওরই বীর্য্য রয়েছে। কিন্তু সে নির্বিকার মুখে বললো যে এটা যে ওরই তা কে বিশ্বাস করবে?
সাঙ্গ এ লীলা : কৃষ্ণকলি রায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০২ এপ্রিল ২০০৭ | ১০২২ বার পঠিত
দুটো দিনে সবাই মালগাড়ির চেন ঝোলানোর শব্দ একটু না একটু শুনতে পেলো। যে যেখানেই থাক, খানিকটা টংলিং টংলিং সব্বার কানে..... দুটো দিনে। ঠিক এক মাস দশ দিনের দূরত্বে। পায়েস রাঁধার দিন,ধূপ জ্বালানোর দিন। কাছাকাছি। মোটে এক মাস দশ দিনের দূরত্বে। লীলা মজুমদার; বন্ধ চোখের পাতার তলায় ঝাঁপতাল ফিসফিসিয়ে থেমে যায়;কোথায় একটা মালগাড়ি টংলিং থামিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে; হয়তো একটা বর্মীবাক্স আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যায়। জলমানুষ ফিরে যায় তার মায়ের কাছে। এক্ষুনি, অনেকগুলো ছোটবেলার মনে পড়ছে গাঢ় হাসির মধু রঙা লীলা মজুমদারীয় রসকে,যার মধ্যে দিয়ে টলটলে আশাবাদীত্ব মনের মধ্যে চুঁইয়ে যেতো। অনেক গুলো লাল নীল ছোটবেলা...
লীলা মজুমদার - একশো বছর : কৃষ্ণকলি রায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২০ মে ২০০৭ | ১৩১৬ বার পঠিত
কাল তো ওঁর জন্মদিন। কিসমিশ দিয়ে পায়েস রাঁধতে হবে। পেয়ারা গাছের নীচে বসে বাক্স হাতড়ে দেখতে হয় কজনের জন্য পায়েস হবে। কাল তো ওঁর একশো বছরের জন্মদিন, আমাদের ছোট থাকা, বড় হওয়া, বড় থাকা সব কিছু জুড়ে যিনি, সেই লীলা মজুমদারের।
জিহ্ব : কৃষ্ণকলি রায়
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ২১ জানুয়ারি ২০০৮ | ১২২৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
আমার দাঁতে অনেকটা জীবন জড়িয়ে গেছে। জার্মান শেফার্ড জিভ ইচ্ছে মত ক্লান্ত হয়। ঐ সব ফাঁকফোকর ঘুরে 'তাড়ানো তাড়ানো' পরিচ্ছেদ গুলোতে চরম ক্লান্তি ওর। অন্য সময়ে ওকে ভার্মিয়ের বলে ডাকতেও ইচ্ছে করে কোনো কোনো দিন।
ভালোই। গুঁড়ো গুঁড়ো না তাড়ানো জীবন অনেক ক্ষণ ধরে জিভের আঁচে দমপুখ্ত,'চাওয়াদের' ঝিকমিকে সব চে ভালো বাসাটা থেকে আখরোট-বাসরে সেঁধিয়ে যায়। রোজ রোজ। অহনের সব বেলাগুলো, বার্ষিকগতির রাস্তায় পড়ে পাওয়া ঋতুরা,আমার শৈশব,কৈশোর,আমার প্রৌঢ়ত্ব,ইন্তেকাল,একমাত্র ওই টের পায়। জিভটা। আমার ভার্মিয়ের।
চার : কৃষ্ণকলি রায়
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : পুজো ২০০৬ | ০১ অক্টোবর ২০০৬ | ৫৭০ বার পঠিত
এখন আকাশ। কুচকুচে। ধ্যাৎ এটা শুক্লপক্ষ, ক্যালেন্ডার বলেছে। তো? আমি কুচকুচেই দেখতে পাই; তারা ছিটানো। আজি যত তারা ........ফুটকি ফুটকি ফুটকি। জ্বলজ্বলে। সবুজ। অগুন্তি, না অগুন্তি নয়, গোনা যায়। সফটওয়্যার আছে, আই পি ল্যাব। আই পি ল্যাব ভাইরাস গুনে চলে। টেন টু দি পাওয়ার এইট। সেভেন। এইট। সাইবারগোল্ড দিয়ে রং করা সবুজ ওরা সব, অ্যানোডিস্ক ফিল্টারকে কুচকুচে কালো দেখায়। আই পি ল্যাবের কখনো ভুল হয় না। মেথানলের গন্ধকে ও অকারণ আজে অগুরু ব'লে ভাবেনি। একটা প্যাঁচা ডাকছে কোথাও, চী-ঋ-ঋ-ঋ , আমারে কুড়ায়ে নেবে । আমার তোবড়ানো অলফ্যাক্ট্রি আবার ভুল বলতে থাকে ..... রূপশালী রূপশালী রুপশালী, ধুস। জানলায় আকাশ টোকা দেয়। শুক্লপক্ষই। নিরাচন্দের পর ছ দিন চলে গেছে।
দ্য আদার সাইড : কৃষ্ণকলি রায়
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : পুজো ২০১০ | ০১ অক্টোবর ২০১০ | ৭৭১ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
হলটায় রোজ রোজ একটাই সিনেমা চলে। মিনিটরা আরো মিনিটদের ডাকে, ঘন্টারা আরো ঘন্টাদের, দিন,সপ্তা,মাস,বরষ ডাকে। আরো সব দিন, সপ্তা,মাস, বরষকে। সবার চোখের মণি জুড়ে এই একটা সিনেমাই চলে। মানুষ গুলো তাতে হাঁটে, বসে, ঘোরে, ফেরে। মানুষগুলোর চারপাশে হাওয়ায় ধুলোর কণার মত কথা ওড়ে। ছোটছোট গোলগোল কথা, বড়মত কোণাচে কথা, ভাঙাভাঙা গুঁড়োগুঁড়ো কথা।ওড়ে। সিনেমাটায় ঠিক এত ঘন্টা এত মিনিট পরে একটা মেরুন রঙের ট্রাম চলে যায়, সেই সময়েই রাস্তা পেরোয় একটা হলুদ ছাতা, আকাশ জুড়ে বিষ্টি থরথর ক'রে কাঁপতে থাকে।