মধ্যবিত্ত বাঙালির নেশাভাঙ বা দারু-বাসনা : অনীক রুদ্র
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব ২০১৪ | ১৯ অক্টোবর ২০১৪ | ১১৮০ বার পঠিত
তামাকু এবং অহিফেন সেবনের নেশা বাঙালির দীর্ঘকালের সঙ্গী ছিল। এখন বরং কিছুটা কমেছে। ভাল আফিং - তামাক পাওয়াও যায় না। কলিকাতার সিমলা পাড়ার দত্তবাড়ির ছেলে শ্রীযুক্ত নরেন্দ্রনাথ একদা হুঁকো তানলে জাত যায় কিনা দেখার অভিলাষে ছেলেবেলাতেই পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। পোস্তর ঢেড়ি ভেজানো জলপান করতে আমরা আমাদের অনেক দাদু ঠাকুমা - দিদিমাদের ও দেখেছি। এখনও সস্তায় এমন নেশা করা যায় মানালি বা আফগানিস্তানের গাঁজা ( গ্রন্স নামে ও যার সুখ্যাতি) অবশ্য বহুমুল্য এখন। একদা সাধু সন্ত বাউল থেকে শুরু করে, শিল্পীদের মধ্যে গঞ্জিকা সেবন, পঞ্চমুখী কল্কেতে টান দিয়ে আগুন তুলে দেওয়া বিখ্যাত ছিল। শহরের উল্লেখযোগ্য কবি ও ইন্টেলেকচুয়াল রূপচাঁদ পক্ষীর নামও আমরা জানি। নাম বদলের চেষ্টা করলেও গাঁজা পার্ক আজও স্বমহিমায় অবস্থান করছে। কিন্ত গেঁজেলদের সংখ্যা খুব একটা বেড়েছে বলা যায় না। ছাত্রাবস্থায় মধ্যবিত্ত বাঙালি, হয়ত অর্থনৈতিক অসুবিধার জন্য শুখা নেশায় বহুলাংশে অভ্যস্ত ছিল। গাঁজা- ভাঙ- চরস- চণ্ডু -মাজুম - ফুটুস- বাদামী চিনি, স্ম্যাক-ক্র্যাক প্রভৃতি নেশারও বেশ চল ছিল। মধ্যবিত্তের বিকাশ ঠিকমত হচ্ছিল না বলেই, অভিভাবকরা সন্তান সন্ততিদিগের পর্যাপ্ত রাহা খরচ জোগাতে না পারায় - কালির সিরাপ, ফিনাইল- ডেনড্রাইট জাতীয় বস্ত শুঁকে নেশা করার রেওয়াজ এখনও চালু আছে। সেদিক থেকে মদ্যপানের নেশায় খরচও বেশি হয়। বঙ্গজীবন থেকে গত চার দশকে অন্তর্হিত হয়েছে বুনিয়াদী এবং কোয়ালিটি শিক্ষা, হয়তো নেশার বস্তুর প্রসারের কারণেই। শিক্ষায় জাতীয় স্তরে বাংলার স্থান এখন পিছন থেকে তিন নম্বরে। নেশার প্রসার তার অন্যতম একটি কারণ হতে পারে। লক্ষ্য করলে দেখা যায় পানশালা বা মদের দোকানের সংখ্যা যত বেড়েছে তার সামান্য ভগ্নাংশেও বাড়েনি নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাঙালি রাজনীতিবিদ বহু চেষ্টায় সমর্থ হয়েছেন "অ্যাল-কোলাহল" তৈরি করে, নেশার চক্রে ছেলে-ছোকরাদের ভিড়িয়ে দিয়ে, তাদের, বিশেষত বাঙালিদের আরও অকর্মণ্য ও অলস করে তুলতে। গাঁজা প্রসঙ্গে একটি কহাবত লাগু আছে দীর্ঘকাল। তা হল "গাঁজা পীয়ে রাজা.... বিড়ি পীয়ে চোর"। ক্যানাবিস বা গাঁজার অপকারী দিকের তুলনায় উপকারী দিকই বেশি। আমাদের শিক্ষকমশাই প্রফেসর জি সি চট্টোপাধ্যায় তার ক্যানাবিস সংক্রান্ত সেমিনারে এই গবেষণার কথা তুলে ধরেছিলেন। আর মদ্য?