পরশু এগারোই সেপ্টেম্বর গিয়েছে। আমরা যারা সাত আর আটের দশকের পর (বা হয়তো তার আগেও যারা জন্মেছেন) জন্মেছি, তাঁদের অনেকের কাছেই এই দিনটার স্মৃতি মানে ২০০১ সালের সেই বুকে কাঁপ ধরানো ঘটনা। তখন সদ্য বাড়িতে টিভি এসেছে! কিন্তু এখনকার মতো চটজলদি ব্রেকিং নিউজ পাওয়া যেত না, টুইটার ট্রেন্ডও ছিল না, ফলে আমরা খবরটা জেনেছিলাম বেশ কয়েক ঘন্টা পর। সেই প্লেন উড়ে আসা আর তাসের পাতার মতো ধ্বসে পড়া দুটো বিল্ডিং...এই সন্ত্রাসী আক্রমণ আর চারটে টেররিস্ট অ্যাটাক থেকে কীভাবে আলাদা তখন বুঝিনি, কিন্তু ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভেঙে পড়ার দৃশ্যটা জীবনের মতো মনে গেঁথে গিয়েছিল। আমরা কে কীভাবে প্রথম ৯/১১ এর সেই ... ...
মিডিয়া। বর্তমানে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে অসীম শক্তিশালী এনটিটি এই তিন অক্ষরের গুরুঘণ্টাল। স্পেস টাইমে এমন কোনো বিন্দু নেই, যেখানে মিডিয়া সিঁদ কাটতে পারে না। ব্যক্তি থেকে সংগঠন, অতীত থেকে ভবিষ্যত, শিল্প থেকে বিজ্ঞান... কার আস্পর্ধা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে! এই ফেক নিউজ পরিবেশন করে সবাইকে উত্তেজিত করে তুলল, এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পাবলিক পারসেপশন বদলে দিল, প্রয়োজন পড়লে মিডিয়া ট্রায়াল আর রিভিউ বম্বিং করিয়ে করে কোনো আর্ট ফর্মকে বয়কট করানোতেও তাদের জুড়ি নেই। পাশাপাশি তলায় তলায় আখের গুছিয়ে নিতে তারা ওস্তাদও বটে। তবে কিনা খবরদার...মিডিয়ার সঙ্গে আবার সাংবাদিকতাকে গুলিয়ে ফেলবেন না। সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা...ও জিনিস এ যুগে বিরল। ও নামে যারা আছে, তারা ... ...
শিক্ষক দিবসে অনেকেই পোস্ট দিচ্ছেন। এই সূত্রে একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। কিন্তু ব্যাপারটা বলার আগে খানিক ভূমিকা বেঁধে নেওয়া দরকার। আমার জীবনে রক্ত মাংসের শিক্ষকদের প্রভাব খুব বেশি নেই। যতটা শিখেছি, বই পড়ে, নানান ধরনের লোকের সঙ্গে আলাপ করে আর পথে পথে ঘুরে। যেমন, কাকাবাবুর 'ভয়ংকর সুন্দর' গল্পে পড়া 'আকাশ পুরোনো হয় না' কথাটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষার একটা বলেই মনে করি। একজন আমাকে বলেছিল, টিচিং লাইজ ইন ডিসগাইজ। কোথায় সে দেখা দেবে, কেউ জানে না। হ্যাঁ, স্কুলজীবনে অনেক শিক্ষকের সাবজেক্ট নলেজ ভালো ছিল, যত্ন নিয়ে পড়াতেন, কিন্তু ওইটুকুই। পাউডার কৌটোর টেলিস্কোপ আমাকে কেউ বানিয়ে দেয়নি, প্রোফেসর লুপিনের মতোও কেউ ... ...
কিছু কিছু বই পড়লে পুণ্য হয়। মনে হয়, তীর্থে এসেছি। পড়তে পড়তেই মন থেকে সমস্ত পাপ ধুয়েমুছে যায়। এ বইটা সেরকম। বুকের ভেতর এতদিন ধরে যত কলুষতা আর উন্নাসিকতা জমে ছিল, বানজারা নদীর জলে ধুয়ে গেলবানজারা একটা নদীর নাম। তাকে ঘিরে থাকে অরণ্য। এইটুকুই মূল প্লট। বাকিটা স্রেফ ম্যাজিক, তাই বলে বোঝানো যায় না। লেখক ও শিল্পী শিবশঙ্কর ভট্টাচার্যের জাদু কলম আমাকে যে ঘোরের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, তা নিয়ে রিভিউ লেখাও সম্ভব নয়। শুধু এইটুকু বলি, ফরেস্ট ইকোসিস্টেম নিয়ে এমন ইনফরমেটিভ অথচ মায়াবী লেখা আমি ইহজন্মে পড়িনি। ... ...
আমরা সবাই জানি আগের সপ্তাহে 'গাঁওবুড়ো' গল্পের জন্য ও হেনরি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন সাহিত্যিক অমর মিত্র। এই খবর শুনে অনেকেই আহ্লাদিত, কিন্তু সুসংবাদ এখানেই শেষ নয়। কাল জানা গিয়েছে সাহিত্যিক গীতাঞ্জলি শ্রী-এর লেখা উপন্যাস 'রেত সমাধি' বুকার পুরস্কারের শর্ট লিস্টে চলে এসেছে। (ছ'টা বইয়ের মধ্যে পাঁচজন লেখিকা, চারটে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাবলিশার্স। শুনেও ভালো লাগে) এতদিন ধরে কোনও ভারতীয় ভাষার উপন্যাস এই স্বীকৃতি পায়নি। ... ...
যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। চটপট একটা বইপ্রচারের পোস্ট করে কেটে পড়ছি। ১) রাশিয়া যে একদিন ইউক্রেনে সামরিক অনুপ্রবেশ করবে, সেটা প্রায় নিশ্চিত ছিল। সারা দুনিয়ার পলিটিকাল স্ট্র্যাটেজিস্টরাই জানত, এ শুধু সময়ের অপেক্ষা। ইউএস আর ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যরাই পরোক্ষভাবে রাশিয়াকে এ জন্য কাঠি করেছে। প্রথমে ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য আর প্রশিক্ষণ দিয়ে, তারপর তাদের ইইউতে ঢোকানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রচুর ফেক নিউজ সার্কুলেট করা হয়েছে, গুজবও ছড়ানো হয়েছে কম নয়। ... ...
তেল। এনার্জি মার্কেটে যার আর এক নাম ব্ল্যাক গোল্ড। পৃথিবীর একমাত্র পার্থিব পণ্য বা ‘কমোডিটি’ যার অধিকার নিতে একের পর এক যুদ্ধ হয়েছে। কখনও সামনে, কখনও বা আড়ালে। অর্থনীতিতে তেলের গুরুত্ব যত বেড়েছে, ততোই তীক্ষ্ণ হয়েছে এই প্রতিস্পর্ধা। অয়েল সুপ্রিমেসির এই দৌড়ে যুক্ত হয়েছে একের পর এক শক্তিশালী দেশ। একদিকে কূটনীতিক কৌশল, অন্যদিকে ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির গোপন পরিকল্পনা। ... ...
বরফের ঝড়ে পথ হারিয়ে একটা গুহায় আশ্রয় নিলাম। সেখানে দেখা হল ইয়েতির সঙ্গে।প্রথমে ভেবেছিলাম মানুষ। মোটকা পশমের কোট পরে আছে। হয়তো অন্য পর্বতারোহী দলের লোক। কথা বলতে বলতে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে এগিয়ে দিয়েছিলাম তার দিকে। ইয়েতি আপত্তি করেনি।গুহাটা দেখার জন্যে টর্চ জ্বালতে গিয়ে তার ইয়া বড়কা মুখ আর চারটে আঙুলওয়ালা গাবদা গোবদা পা দেখে ভুলটা কেটে গেল। পড়ি কি মরি করে পালিয়ে এলাম। বহু কষ্টে ক্যাম্পে ফিরলাম। ইয়েতি কিন্তু আমার পিছু ছাড়ল না। ... ...
সম্প্রতি বিবিসি ওয়ান 'ইম্যাজিন' বলে একটা সিরিজ করেছে, তার একটা এপিসোড দেখতে গিয়ে একজন শিল্পীর কথা জানতে পারলাম। শুধু জানতে পারলাম না, বলা উচিত জেনে বোমকে গেলাম। বর্তমান সময়ে পারফরম্যান্স আর্ট জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং একইসঙ্গে সবচেয়ে বিতর্কিত শিল্পী ও তারকাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মারিনা আব্রামভিচ। গত পঞ্চাশ বছরে তিনি শিল্প জগতে যে ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করছেন, তার হিসেব করতে হলে ইয়া মোটকা বই হবে। এমনিতেও পারফরম্যান্স আর্ট বিষয়ে আমাদের ধ্যানধারণা খুবই সীমিত, মঞ্চানুষ্ঠান বা থার্ড থিয়েটার (সেটা পারফর্মিং আর্ট) বাদেও যে শিল্পের একাধিক ফর্ম হতে পারে, এক্সপ্রেশনকে ভিন্ন মাত্রায়, ভিন্ন মাত্রায় গিয়ে সেলিব্রেট করা যায়, সেরকম কোনও শিক্ষা আমরা পাইনি। ... ...
Saikatদা একটা পোস্ট দিয়েছিলেন কিছুদিন আগে, তাতে একটা লোকের কথা ছিল। মাঝেমাঝে রাতের একান্তে বারান্দায় একা চেয়ার টেনে বসেন। কানে হেডফোন, দুই আঙুলের মধ্যে সিগারেট নিয়ে একটা গান শুনে যান... একটাই গান।আজ যানে কি জীদ না করো...সৈকতদার অনেক লেখা পড়েই মনের ভিতর আবেগী বাতাস উমড়ে আসে, মনে পড়ে যায় হারিয়ে যাওয়া কোনও স্মৃতি। কিন্তু এই পোস্টটা আমার কাছে বিশেষ ভাবে স্মরণীয় হয়ে রইল। কারণ, এই পোস্টটা পড়ার কিছুক্ষণ আগেই আমি আবিষ্কার করেছি, এই গানটার পিছনে থাকা অনেক কথা। এই গান, এই কম্পোজিশন তৈরি হওয়ার পিছনে দীর্ঘদিনের অপেক্ষা আছে, ঐশ্বরিক কোনও উপায়ে বহু মানুষের জীবনও জড়িয়ে গিয়েছে এই গানের সৃষ্টির সঙ্গে। ... ...