ছোটদের জন্যে একটা গল্প লেখার ফরমাশ করলেন এক ভদ্রলোক।
ছোটদের জন্যে লিখতে আমার খুব ভাল লাগে, তাই এককথায় রাজীও হয়ে গেলাম। সবে একটা খসড়া করতে বসেছি, ফোন এল, “দাদা শুরু করেছেন?”
-“হ্যাঁ, এই তো, বসেছি।”
-“ইয়ে, কী নিয়ে লিখবেন ভেবেছেন কিছু?”
-“ভাবছিলাম একটু গাছপালা, প্রকৃতির মধ্যে বড় হওয়া, এই সব নিয়ে। এগুলো তো আজকাল...”
-“হ্যাঁ সেই ভাল, তবে জন্তু জানোয়ার নিয়ে লিখুন। আমাদের একজন ইলাস্ট্রেটর আছে, খুব ভালো জন্তু জানোয়ার আঁকতে পারেন।”
-“ওহ, আচ্ছা, তাই হবে।”
মনে মনে বললাম জানোয়ার। ... ...
ছোটবেলায় একটা কথা শুনতাম, মর্ণিং শোজ দ্য ডে। এক্কেবারে বাজে কথা। সকালে রোদ্দুর উঠেছে দেখে একদিন ছাতাটা বাড়িতে রেখে বেরিয়েছিলাম, আর সেদিনই কী বিষ্টি কী বিষ্টি! ভিজে জাব হয়ে ফিরতে হোল। ওসব মর্ণিং ফর্ণিং নয়, সোজাসুজি আকাশই দেখে দিনকাল যা বোঝার বুঝতে হয়। আর দিনকালের বোঝার আছে টা কী! সারা সপ্তা অফিস-টিভি-ঘুম, আর ছুটির দিন শপিং-টিভি-ঘুম, এই তো জীবন। পুরো টাকাটাই মাটি, নয়তো পুরো মাটিটাই টাকা। এর মধ্যে দিনকাল বোঝাবুঝি আসেই বা কোথা থেকে?
আসে। আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে যে জগত, সেটাই আকাশ। ওইজন্যেই বিখ্য ... ...
একদিন একটি শৃগাল কুকুরদের তাড়া খাইয়া পলাইতে গিয়া একটি চৌবাচ্চার ভিতর পড়িয়া গেল। সেই চৌবাচ্চায় কেহ লাল রঙ গুলিয়াছিল। তাহাতে পড়িয়া শৃগালটি লালবর্ণ হইয়া গেল।
তাহার লালবর্ণ দেখিয়া অরণ্যের অন্য জীবজন্তু ভয় পাইয়া গেল। স্বয়ং পশুরাজকেও ভয় পাইতে দেখিয়া ধূর্ত শৃগাল বুঝিল যে এ হেন রক্তিম বর্ণের সাহায্যে সে সমস্ত অরণ্যবাসীদের নিয়ন্ত্রণ করিতে সক্ষম হইবে। সে অবিলম্বে নিজেকে তাহাদিগের নেতা ঘোষণা করিল এবং নূতন নিয়ম কায়েম করিল। সেটি হইল, কোনও প্রাণী কোনও শিকার ধরিলে তাহা হইতে সকলকে ভাগ না দিয়া খাইতে পারিবে ... ...
পত্রিকার সম্পাদকেরা সচরাচর আধাপাগল হন। আমার সম্পাদক বদ্ধ পাগল। নাহলে আজ সকালবেলা ফোন করে আগামীকালের মধ্যে মহাভারত নিয়ে একটা লেখা লিখতে বলেন!আরে আমি কি নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, নাকি অর্ণব গোস্বামী, যে সবকিছু নখের ডগায় থাকবে, কাগজ কলম নিয়ে বসলেই লেখা বেরোবে ফরফর, ফরফর!
কে কাকে বোঝায়!
ফোনটা আসবার পর থেকে সারাদিন অফিসে চিন্তা করেছি, কিস্যু আসেনি মাথায়। কয়েকজনকে জিগ্যেসও করলাম। পাশের টেবিলের বিকাশদা রেসের মাঠ থেকে সানি লিওন অনেককিছুর খবর রাখেন। আমার প্রশ্ন শুনে কাগজ পাকিয়ে কান চুলকোতে চুলকো ... ...
(স্থানঃ রিজার্ভ ফরেস্ট। পরিবর্তে কচুবন ও চলবে।
কালঃ একটা হলেই হোল। কল সেন্টারের যুগে রাউন্ড দ্য ক্লক কাজকম্মো চলে।
পাত্রঃ যে কটা বিনা পয়সায় নাটক করতে রাজী হয় আর কি।)
দ্রোণঃ একি, প্র্যাকটিশ ছেড়ে কোথায় গেল সব? যুধিষ্ঠির!
যুধিঃ প্রেজেন্ট প্লিজ!
দ্রোণঃ রোলকল করছিনা। পান্ডবগণ, কৌরবগণ, কোথায় সবাই?
যুধিঃ অল গন স্যার, হাইডিং।
দ্রোণঃ কী! শুটিং ছেড়ে লুকোচুরি খেলা হচ্ছে!!
যুধিঃ নট প্লেয়িং স্যার, ভয়ে হাইডিং।
দ্রোণঃ অসম্ভব!! আমার ছাত্ররা ভয়ে লুকোতেই পারে না! কোথায়, ড ... ...
একদিন সকালে খবরের কাগজটা হাতে নিয়েই বড়মা-র সে কি হাঁউমাউ চিৎকার!
-‘ওরে কে কোথায় আছিস, ছুটে আয়!’
আমি তখন ইস্কুল যাওয়ার আগে ব্রেকফাস্টের পাঁউরুটিটা লুকিয়ে ভুলোকে খাওয়াচ্ছিলুম। দাদা স্কুলের ব্যাগ-এর মধ্যে কী একটা যেন খুঁজছিল। মা ফোর্থ গিয়ারে খুন্তি নাড়িয়ে আমাদের টিফিনের জন্য চিঁড়ের পোলাও বানাচ্ছিল। বড়মার আওয়াজ শুনেই আমরা তিনজনে চমকে মোমকে আমি পাঁউরুটি ছুঁড়ে, দাদা ব্যাগ ফেলে, মা খুন্তি ঠেলে ছুট লাগালুম ‘কী হলো, কী হলো’ বলে।
ভুলোও কিছু না বুঝে লেজ নাড়তে নাড়তে আমাদের পিছন পিছন এল।
দেখি ... ...
একদা যে বাঘটির গলায় হাড় ফুটিয়াছিল, আজ তাহার গলায় পুণরায় হাড় ফুটিল। পূর্ব অভিজ্ঞতা তিক্ত হইবার কারণে সারস পক্ষী পুণর্বার সেই হাড় বাহির করিতে রাজী হইল না। যন্ত্রণায় ছটফট করিতে করিতে বাঘ সম্মুখের ডাক্তারখানায় যাইল। টোকেন লহিয়া এক ঘটিকা প্রতীক্ষা করিবার পর ডাক্তার তাহার রক্তচাপ, শারীরিক উষ্ণতা ইত্যাদি মাপিয়া কহিলেন, গলার জন্য তাহাকে ইএনটি বিশারদ দেখাইতে হইবে। সন্ধানও বাতলাইয়া দিলেন। তাহার পর নিজ ফীস গুনিয়া লহিলেন।
উক্ত হাসপাতালে যাইয়া বাঘ দিশাহারা হইয়া পড়িল। সুন্দরী অভ্যর্থিকা তাহার ঠিকুজি কুষ্ ... ...
বইওআলা।বই -- বই -- ভালো বই!
অমল।বইওআলা, বইওআলা, ও বইওআলা!
বইওআলা।ডাকছ কেন? বই কিনবে?
অমল।কেন কিনব! আমি তো ই-বুক পড়ি।
বইওআলা।কেমন ছেলে তুমি। কিনবে না তো আমার বেলা বইয়ে দাও কেন?
অমল।আমি যদি তোমার জায়গায় থাকতুম তো অন্য ব্যবসা করতুম।
বইওআলা।অন্য ব্যবসা!
অমল।হাঁ। তুমি যে কত হাঁক পেড়েও কিছু বিক্রী করতে পারছ না তা দেখে আমার মন খারাপ লাগছে।
বইওআলা।(বইর ব্যাগ নামাইয়া) বাবা, তুমি কি বিজনেস কনসাল্ট্যান্ট?
অটল, তোমার সাক্ষাৎ পেয়ে চিনতে পারেনি বলে
মোদি ভেসে গেল অলকানন্দা জলে
করো আনন্দ আয়োজন করে পড়ো
লিপি চিত্রিত লিপি আঁকাবাঁকা গেরুয়া পদ্মফুলে
যে আম আদমি, তাকে খুঁজে বার করো
করেছো, অটল; করেছিলে; ছেড়ে হাত থেকে দলখানি
ভেসে যাচ্ছিল–ভেসে তো যেতই, মনে না করিয়ে দিলে;
–‘হেরে যাচ্ছ যে!’ হেরেই থাকত–সে-দল উঠবে বলে
লোক ডুবে মরে, লোক ভেসে যায় রাজনীতি বেনোজলে।। ... ...
বয়স মারে ঝাপটা মুখে, বয়স মারে চড়,
দেখার চোখ ও ঝাপসা হয়, বয়স নির্ভর!
মন তো আজও ছুটতে রাজী সবুজ খোলা মাঠে,
স্মৃতির পাতা হাতড়ে তার এখনো দিন কাটে।
শরীর তাকে সাথ না দিয়ে ইশারা করে, ‘থামো!
এই বয়সে ছেলেমানুষী মানেই তো ভাঁড়ামো!’
সরল মন প্রশ্ন করে ‘ছেলেমানুষ নই?’ ... ...