এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • ৬ ডিসে ১৯৯২, আমাদের কেমন কেটেছিল?

    pi
    নাটক | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৯৬৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | ***:*** | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৪১381014
  • কল্লোল লাহিড়ির এই পোস্টটা পড়ে মনে হল টইটা খুল।
    কেমন কেটেছিল সেদিন?

    কল্লোলদা এখানে পোস্ট করতে পারেননি, দিয়ে দিতে বললেন। রইল।

    '১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর আমি কী করছিলাম? মনে করতে গেলে দেখি আসন্ন উচ্চমাধ্যমিকের ভারে বিষণ্ণ ছিলাম। বাবা টেনে নিয়ে গিয়েছিল রবীন্দ্রভবনে সিনে গিল্ড বালী সত্যজিতের শেষ তিনটে ছবি দেখানোর ব্যবস্থা করেছিল। আমরা দেখছিলাম আগন্তুক। একটা উটকো লোক হঠাৎ মামা হিসেবে পরিবারে ঢুকে পড়ে। যাকে আজ তার ভাগ্নীর মনে নেই। একটুও। লোকটা শুধু এই পরিবারে আতিথ্য গ্রহণ করে না। এই সমাজ, সংসার, ধর্ম, বিশ্বাস, সত্যতা, সভ্যতা নিয়ে প্রশ্ন শুরু করে। ভর্তি রবীন্দ্র ভবনে রুদ্ধশ্বাসে সবাই যখন দেখছে ছবিটি। একের এক এক রিল চেঞ্জ করছে প্রজেকশান কাকু। তারই মাঝে ছবি থামিয়ে ঘোষণা করা হয় শহরে কার্ফু জারি হয়েছে। বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছে। যে যার মতো খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যান। কিছুক্ষণ আগে মামা বেশধারী উৎপল দত্ত ধর্ম আর সভ্যতা নিয়ে যে কথা গুলো বলছিলেন সেই কথা গুলো কেমন যেন রিপিট হতে থাকে হলে। আমাদের ছোট্ট শান্ত জনপদটা আর শান্ত রইলো না। জীবনে প্রথম দেখলাম থমথমে হয়ে আছে অঞ্চল। যে কটা জুটমিল তখনও খোলা ছিল সেগুলোর সাইরেন আর শুনতে পেলাম না। সকালে দেখলাম বাড়ির সামনে জি টি রোডে মিলিটারী গাড়ি টহল। এই প্রথম। পাড়ার মধ্যে কেউ বেরোচ্ছে না বাড়ি থেকে। যে খবর কাগজ গুলো আসছে তার ওপরে বড় বড় করে শান্তি, সম্প্রিতী, সৌহার্দ্রের কথা। রেডিও আর টিভিতে খবর ছেঁটে প্রচার করা হচ্ছে। পাড়াতে তখনও মোটে চারটে বাড়িতে ফোন। সবাই তাদের দূরের লোকজনদের খবর নেওয়ার জন্য সেই বাড়ি গুলোতে ভিড় করেছেন। থমথমে পরিবেশের মধ্যে বোঝা যাচ্ছে আসলেই মেরা ভারত মহানের পেছনে অনেক অনেক সাধারণ মানুষকে বলি দিতে হল। দু ঘন্টার জন্য কার্ফু উঠলে সেদিন প্রথম পাড়ার মুদি খানার দোকানে লাইন দিয়েছিলাম। একশো গ্রাম করে মনে আছে কাশীদা চিনি দিয়েছিল সবাইকে। তিন কিলো করে চাল। এক কিলো আলু। ডিম ছিল না। মাছ তো দূরের কথা। বাড়িতে ফ্রিজ মানে আমাদের কাছে স্বপ্ন ছিল। মনে আছে অনেক রাতে চিৎকারে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। ধড়ফড় করে উঠে দেখলাম বাবা ততক্ষণে জানলার কাছে। বাড়ির সামনে চায়ের দোকানী উপেন্দর জি টি রোডের মাঝে গিয়ে চিৎকার করে মদ খেয়ে কাঁদছে। সে এই কয় দিন দোকান খুলতে পারেনি। মন্দির মসজিদ দিয়ে কী হবে যদি দোকানই খুলতে না পারলো? উপেন্দরের সেই মাতাল কান্না আমার আজও মনে আছে। আর কথা গুলোও। আগে তো রুটি। পরনের কাপড়। মাথা গোঁজার ঠাই। তারপর পেছনের সারিতে ধর্ম। বাবা অনেক দিন নেই। উপেন্দর নেই। পুরনো পাড়াটা আমার স্মৃতিতে। আগন্তুক ইউ টিউবে। কিন্তু প্রত্যেক বছর ৬ ডিসেম্বর আছে। মনে করিয়ে দেওয়ার আছে দেশটা আসলে কোন ধর্মেরই নয়। দেশটা মানুষের।'
  • dc | ***:*** | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৯:২৭381017
  • আমার সেরকম ডিটেলস মনে নেই, তবে এটুকু মনে আছে যে অসম্ভব খারাপ লেগেছিল। আর প্রচন্ড রাগ হয়েছিল এই ভেবে যে পুলিশ কিছু করতে পারল না, চোখের সামনে এইভাবে ভেঙ্গে যেতে দিল? পরে অবশ্য বুঝেছিলাম যে রাজ্য সরকার থেকেই হয়তো পুলিশের কাছে নির্দেশ গেছিল, তবে সেদিন তো জানতাম না, তাই প্রচন্ড অবাক হয়েছিলাম আর রাগ হয়েছিল।
  • সিকি | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৯:২৭381016
  • নাস্তিক টইতে লিখেছিলাম - কপি পেস্ট করে দিলাম অংশবিশেষ।

    প্রথম ধর্ম, বিলিফ ইত্যাদি সম্পর্কে ধাক্কাটা খেলাম এর দেড় বছরের মাথায়। ১৯৯২। ৬ই ডিসেম্বর। রোজ কাগজে পড়ছি ধর্মপরিচয়ের নামে মানুষ মানুষকে মারছে। তলোয়ার দিয়ে মাথা কেটে দিচ্ছে। জাস্ট এ হিন্দু বলে, ও মুসলমান বলে।

    বীভৎস ইমপ্যাক্ট হয়েছিল সেই সময়ের খবরগুলোয়, ঐ ঘটনাই আমাকে প্রথম সজ্ঞানে ধর্ম, ঈশ্বর এবং বিশ্বাসকে অশ্রদ্ধা করতে শেখায়। আমাদের মফসসল শহরে দাঙ্গা হয় নি, কিন্তু কলকাতা অশান্ত হয়েছিল। কদিন পরে মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার প্রথম দিন স্কুলে গিয়ে জানতে পারলাম পরীক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে, পাওয়েল স্যার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে কোশ্চেন পেপার আনতে গিয়ে কলকাতায় আটকে গেছে, ফিরতে পারছে না। পরীক্ষা পিছিয়ে গেল।

    তারপরে ভারত শান্ত হল, পরীক্ষা শেষ হল। মাধ্যমিকের প্রস্তুতি এইবারে। সেই সময়ে প্রথম চিন্তাটা মাথায় এল। এই পরিচয়গুলো তা হলে মানুষকে আরেকটা মানুষের কাছে ভালনারেবল করে দেয়? আমি হিন্দু ছাড়াও তো আরো পরিচয় আছে আমার, সেগুলো কিছুই ম্যাটার করবে না যদি একজন মুসলমান আমার সামনে খোলা তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়? কিম্বা ভাইসি ভার্সা? আমার ধর্ম, আমার বিশ্বাস, আমার ভগবান তা হলে এইজন্যেই তৈরি হয়েছে - এইটা ডিফাইন করার জন্য যে, আমি ওর থেকে আলাদা? আমি ওর মত নই? এবং আমার সংকটমুহূর্তে তারা আমাকে বাঁচাতে পারবে না? সারা দেশে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান, ধর্মপ্রাণ হিন্দু খুন হয়েছে জাস্ট হিন্দু বা মুসলমান পরিচয়ের জন্য। তা হলে কী দরকার এই পরিচয় বয়ে বেড়াবার?

    প্রশ্নটা আজও রয়ে গেছে। এর সাথে জুড়ে গেছে আরও অনেক প্রশ্ন, যার উত্তর খুঁজে পাই নি।

    পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করার সময়ে একদিন এমনিই কী মনে হল, কমোডে পৈতেটা ফেলে ফ্লাশ করে বেরিয়ে এলাম। পরে বাড়িতে আমাকে পৈতেহীন অবস্থায় দেখেছে সবাই, কিন্তু কেউ কোনও প্রশ্ন করে নি।
  • dc | ***:*** | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৯:৩১381018
  • ছোট থেকে বড়ো হওয়ার সময়ে দুয়েকটা জিনিস নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই ভীষন রাগ হতো। একটা তো বাবরি মসজিদ ধংস, আরেকটা হলো টিভিতে রামায়ন-মহাভারত। যাস্ট সহ্য করতে পারতাম না। বারবার মনে হতো আমাদের দেশের পাবলিক ডিসকোর্স এভাবে ধর্মের দিকে কেন ঝুঁকে যাচ্ছে। ওঃ আরেকটা এরকম জিনিস ছিল গণেশের দুধ খাওয়া।
  • dc | ***:*** | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৯:৩৭381019
  • ছোটবেলার থেকে এই একটা দলকে ঘৃণা করি, আজও কোন পরিবর্তন হলো না। সিপিএমকে ভোট দিতে পারি, এমনকি চোরের সর্দার কংগ্রেসকেও কে ভোট দিতে, কিন্তু বিজেপিকে কোনদিন কোন অবস্থাতেই ভোট দেবনা।
  • প্রসূন দে | ***:*** | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ২৩:১৮381020
  • #রামায়ণটিভিসিরিয়াল
    #টু_বাবরী_মসজিদ

    ২৫ শে জানুয়ারী , ১৯৮৭ সাল -- দিনটি ছিল রোববার । ভারতের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সরকার পরিচালিত দুরদর্শন শুরু করলো ধর্ম ভিত্তিক এক টিভি সিরিয়ালের প্রচার। রামায়ণ । নতুন ধারার মিডিয়া সংস্কৃতির স্বাদ পেতে শুরু করলো দেশবাসী। সেই টিভি সিরিয়াল চলল ১৯৮৮ এর ৩১ শে জুলাই পর্যন্ত ।

    অধিকাংশ দেশ বাসীর চিন্তাধারার এক সুনির্দিষ্ট স্তরে প্রোথিত হয়ে গেল এক ভিন্ন ধারার যুক্তির প্রাচুর্যতা ।

    রামায়ণ টিভি সিরিয়াল দেখিয়ে দিয়েছে মানুষের উন্মাদনাকে --- একটি দেশের এক বিশাল সংখ্যক মানুষ কিভাবে প্রতিটি রোববার সকাল বেলা নির্দিষ্ট সময়ে মাস হিস্টিরিয়াতে আক্রান্ত হতে পারে তা আমরা দেখেছি। পুরো বিষয়কে একটি সোশ্যাল এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে দেখলে এর থেকে যা উৎপাদিত হয়েছে এর নাম 'হিন্দুত্ব' নামক একটি প্রোডাক্ট। রামায়ণ শেষ হতে হতেই শুরু হল , মহাভারত । ১৯৮৮ এর ২রা অক্টোবর শুরু হয়ে চলল , ১৯৯০ এর ২৪ শে জুন পর্যন্ত । মাধ্যম কিন্তু সেই সরকার নিয়ন্ত্রিত দুরদর্শন । বাজারকে ভিত্তি করে ধর্ম ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ কিংবা রাজনীতির সাথে জাতীয়তাবাদের রসায়ন নির্ভর ভোট রাজনীতির বয়ন এবং বিপণনের সিরিয়াস শুরুয়াত কিন্তু তখনই । রামায়ণ সিরিয়ালের কুশীলবদের ভোট রাজনীতিতে অংশ গ্রহন নিশ্চয় কারণ সমৃদ্ধ ।

    হিন্দুত্ব কমোডিটির ধাক্কায় রামায়ণ টি ভি সিরিয়াল শুরু হবার ৩০৬ সপ্তাহ পরে , ১৯৯২ এর ৬ ই ডিসেম্বর তারিখে বাবরী মসজিদ গণ আক্রমণের সম্মুখীন হবে কিংবা , রাজনীতির দর্শন - ভাবাবেগের ভিন্ন ভিন্ন অবতারের জন্ম যে হবে সেটা মোটেও আশ্চর্য ঘটনা ছিল না ।
  • amit | ***:*** | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:১৮381021
  • তখন যাদবপুরে পড়ি। এটা মনে আছে কিছুদিন পরে কারফিউ উঠলে অনেক বন্ধুদের কথাতেই মনে হয়েছিল যে ভেঙে ভালোই হয়েছে। পাড়াতেও আসে পাশে অনেককেই মুখেই কথাটা সোনা গেছে। তখন কলকাতা এতটা স্প্লিট হয়নি হয়তো, এখন তো বাড়িভাড়া দিতে গেলেও লোকে জাতপাত দেখে। আর এখন বন্ধুদের WhatsApp গ্রুপঃ এ যেসব পোস্ট ঘুরে বেড়ায়, তাতে আর আশ্চর্য লাগেনা।

    আমার বাড়িতেও কিছুটা এই ধরণের কথা শুনেছিলাম যে যাক আপদ বিদেয় হয়েছে, যেটা একটু অস্বাভাবিক লেগেছিলো প্রথমে কারণ আমার নিজের এক পিসি এবং এক কোসিন দিদি র বর-রা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আর বাড়ির সকলেই ঘোর বামপন্থী। তবে মনে হয় সেটা ঠিক আনন্দ নয়, বরং একটা রিলাক্সেড ফিলিং ছিল যে ভেঙে যাওয়ার পরে এটা নিয়ে আর বিজেপি জল ঘোলা করতে পারবে না। সেটা যে কত ভুল আশা ছিল এখন বোঝা যাচ্ছে।
  • Du | ***:*** | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:২৭381022
  • এই টিভিতেই রামায়নের রাম রামজী হল আর কৃষ্ণ শ্রীকৃষ্ণ অথবা কৃষ্ণ ভগবান। আর এই টিভিতেই অপদার্থ (তখন অপদার্থ ভেবেছিলাম এখন তো খবর যে সাট ছিল) নৃসিংহ অবতার দুঃখ মুখ করে খুশি চাপলেন।
  • pi | ***:*** | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:৫৮381023
  • অমর মিত্র লিখেছেন,

    .১৯৯২ এর ৬-ই ডিসেম্বর আমি ছিলাম ধুলাউড়ী নামের এক গ্রামে। জেলা মুরশিদাবাদ। ভগবানগোলার কাছে। সঙ্গে আমার স্ত্রী এবং কন্যা চকোরি। চকোরি তখন ছ'বছর। ধুলাউড়ী মুসলমান প্রধান গ্রাম। গিয়েছিলাম সাহিত্য সভায়। বহরমপুর থেকে এসেছিলেন অনীক পত্রিকার সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্তী। লালগোলা থেকে লেখক অলোক সান্যাল। আমি ছিলাম অনীকের নিয়মিত লেখক। বিকেলে ওঁরা চলে গেলেন। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আরম্ভ হয়েছে। পরদিন আমরা যাব মুর্শিদাবাদ দেখতে। আমরা ছিলাম স্থানীয় স্কুলের হেড মাস্টার মশায়ের বাড়ি। সে ছিল এক সম্ভ্রান্ত মুসলমান পরিবার। হেড স্যার এবং তাঁর স্ত্রীর কথা খুব মনে পড়ে। পিঠে করেছিলেন। কন্যাটি খুব ন্যাওটা হয়ে গিয়েছিল জেঠির। সন্ধ্যার টেলিভিশনের খবর দেখাল বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছে। আমি জানতাম না। হেড স্যার খবর দিলেন আমাকে, আলাদা করে ডেকে বললেন, মিত্রদা আপনাদের এখানে রাখা ঝুঁকির হয়ে যাবে। খবরটা ছড়িয়ে পড়ছে। ভালো মন্দ দুরকম মানুষই তো আছে গ্রামে। কিছু খারাপ যদি হয়ে যায়, আমি আটকাতে পারব না। সারাজীবন অপরাধী হয়ে থাকতে হবে। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন না।
    নির্ঝর বলেছিল, বউদি, হেড স্যার রাখতে পারছেন না, ভয় পাচ্ছেন, আমার বাড়িতে তাহলে রাখব কী করে ?
    গভীর শীতের রাত নেমেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে আচমকা। হেড স্যারের স্ত্রীর চোখে জল। আমার মেয়েকে বুকে চেপে আছেন। রাতের খাওয়ার পর আমাদের রওনা।
    কলকাতায় ফিরতে হবে। ভগবানগোলায় লালগোলা প্যাসেঞ্জার আসবে রাত এগারটা নাগাদ। হেড স্যারের কথায় কয়েকজন তরুণ হলো আমাদের সাথী। তারা কবিতা লিখত, গল্প লিখত, পত্রিকা করত। এখনো পত্রিকা করে মামুন হোসেন নির্ঝর, বহরমপুর থাকে, স্কুল শিক্ষক। ওদের সঙ্গে টাঙ্গায় করে নিস্তব্ধ রাতে আমরা রওনা হলাম স্টেশনের দিকে। ট্রেন ছিল সম্পূর্ণ অন্ধকার। আর প্যাসেঞ্জার নেই বললেই হয়। তরুণরা টিকিট কেটে আমাদের তুলে দিল ট্রেনে। আমরা এবার একা হয়ে গেলাম। হিন্দু মুসলমানে দাঙ্গা, মুসলমান যুবকরা ছিল ভরসা। সারা দেশে দাঙ্গা লেগেছে যে তা তখন জেনে গেছি। থমথমে হয়ে আছে নিঝুম রাত। ভয় ঢুকছিল যে ভিতরে তা বুঝতে পারছিলাম। কুঁকড়ে মুকড়ে বসে ছিলাম আমরা দুজনে। কন্যা ঘুমিয়ে পড়েছে। সারারাত ঘুম ছিল না। শেষ রাতে সেই নির্জন, যাত্রীবিহীন ট্রেন কল্যাণী, সাতটা নাগাদ দমদম। সেদিন কারফিউ এবং হরতাল। হেড স্যারের সঙ্গে অনেকদিন যোগাযোগ ছিল। পিঠে খাওয়াতে পারেননি যে তাঁর স্ত্রী, আমার কন্যার জেঠি, সে আফশোস তাঁর চিঠিতে ছিল। সব মনে পড়ে গেল এখন। সবার উপরে মানুষ সত্য। মানুষ মানুষেরই জন্য। এই আমাদের দেশ।
  • S | ***:*** | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:১৪381015
  • আবার হবে নাকি?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন