এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • মানস দাশগুপ্ত | 55.64.***.*** | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৯:১০371224
  • জৈব চাষের গুণাগুণ
    অধুনা তেলেঙ্গানা রাজ্যের ওয়ারাঙ্গল জেলার একটি ছোট দরিদ্র গ্রাম এনাবাভি, রুক্ষ জমিতে ভরা ছিল। এই গ্রামের অনেক কৃষকের ভবিতব্য ছিল আত্মহত্যা, ধার ও জীবনের দৈন্যদশা থেকে মুক্তি পাবার জন্য। কিন্তু মাত্র ৫২ ঘরের এই গ্রামবাসীরা বাঁচার তাগিদে লড়াই চালিয়ে যায়।
    ২০০৬ সালে এই গ্রাম রাসায়নিক কীটনাশক পদার্থ, সার ও জিনগত বীজ ছেড়ে জৈব সার ও বীজ ব্যবহার করা শুরু করে। আজ এই গ্রামের চারিদিকে সবুজের সমারোহ। অনুর্বর জমি পার হয়ে, ধূলোয় ভরা এই গ্রামের রাস্তার পাশে অনেক তুলো পরিষ্কার করার কারখানা ও তুলোর বাজারের পাশ থেকে দেখা যায় সবুজ জমি, গরু ও ভেড়ার পাল চরে বেড়াচ্ছে। কিভাবে সম্ভব হল এই পরিবর্তন?
    একটু পিছিয়ে যাওয়া যাক। ২০০৬ সালের আগে এই গ্রামের গ্রামবাসীদের সঙ্গী ছিল—পুরুষ ও মহিলাদের ত্বকের রোগ, গর্ভাবস্থার সময় মহিলাদের গর্ভস্রাব (miscarriage), দেনার দায়ে আত্মহত্যা, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যাথা, ঘুম ঘুম ভাব ইত্যাদি। পোন্নম পদ্মার কথায়—আমার তিনবার গর্ভস্রাব হয়েছে। যেহেতু সবাইকে এক ধরণের যন্ত্রণার মধ্যে দিন যাপন করতে হত তাদের মধ্যে ছিল একতা, ছিল না কোন সম্প্রদায়গত বিভেদ। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবার জন্য সবাই যখন পথ খুঁজছিল তখন এল ঐতিহ্যগত বীজ, জৈব কীটনাশক ও সারের ব্যবহারের কথা।
    জৈব পচনশীল পদার্থ, গোবর ও গোয়ালঘর পরিষ্কারের জল ব্যবহৃত হল সার হিসাবে। রসুন, নীম, সবুজ লঙ্কা ও অন্যান্য জৈব জিনিস কীটনাশক হিসাবে এবং গাঁদা ও তীব্র গন্ধযুক্ত ফুলের বেড়া দিয়ে চাষের জন্য ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গকে আটকানোর ব্যবস্থা করা হল। এর ফলে আগে যেখানে রাসায়নিক সার ব্যবহারে প্রতি একরে খরচ হত ৩৫০০ টাকা সেখানে তা কমে দাঁড়াল মাত্র ৫০০ টাকাতে।
    আগে গ্রামে ছিল মাত্র একটি পুকুর, ফলে বছরে চাষ হত মাত্র একবার। গ্রামবাসীরা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ২৬টি নলকূপ বসালেন ও ১১টি কুঁয়ো খুঁড়লেন। বৃষ্টির জল ধরে রাখতে শিখলেন। বিচক্ষণতার সঙ্গে জলের ব্যবহারের ফলে ঐ রুক্ষ জমিগুলি আজ সারা বছর সবুজ থাকে এবং সারা বছর ধরে তুলো, ডাল ও তরি-তরকারির চাষ হচ্ছে। তারা আজ বিটি তুলোর ব্যবহার সম্পূর্ণ ত্যাগ করেছে ও তারা দেখতে পাচ্ছে জৈব তুলোর চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেতারা আজ তাদের বাড়ি থেকে এই তুলো নিয়ে যাচ্ছে। গ্রামবাসীদের কথায়--আগে গরুরা বিটি তুলোর পাতা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ত যা এখন হয় না, আর গ্রামবাসীদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে প্রায় কোন সমস্যাই নেই।না ত্বকের সমস্যা না অন্যান্য সারীরিক সমস্যা। গ্রামবাসীরা নিজেদের মধ্যে দল করে বীজ ভাগ করে নেয় ও যৌথভাবে ফসল বিক্রির দাম নির্ধারণ করে।
    জনপ্রিয় টিভি টক শো ‘সত্যমেব জয়তে’(প্রথম পর্ব, আমীর খান দ্বারা সঞ্চালিত)এই গ্রামটির কথা দেখানো হয়েছিল। অনেক লোক এই গ্রাম দর্শন করেছে কিভাবে জৈবিক পদ্ধতিতে সারা বছর চাষ হচ্ছে, তা দেখতে।
    আজ আমার বাংলায় কোন কোন অত্যুৎসাহী মানুষ এই কাজে এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের জানাই অন্তরের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।
  • স্বাতী রায় | 127.194.***.*** | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ২৩:৪০371225
  • এই খবর গুলো মনে আশা জাগায়. পশ্চিমবঙ্গেও জানি কেউ কেউ অর্গানিক ফার্মিং কে বেঁচে থাকার উপায় বলে মেনে নিয়েছেন.
  • aranya | 83.197.***.*** | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৫৮371226
  • বাঃ, ভাল লাগল।

    'গরুরা বিটি তুলোর পাতা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ত' - এটা জানতাম না
  • pi | 57.29.***.*** | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৭:১৫371227
  • পবতে কোথায় কোথায় কী হচ্ছে, একটু জানা যাবে ?

    সিকিম তো ১০০% অর্গানিক, সিকিম নিয়েও কেউ লিখলে ভাল হত।
  • aranya | 83.197.***.*** | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৯:০৪371228
  • গ্রামবাসীরা যে অসুখ বিসুখে ভুগতেন, সেটাও কি এই বিটি তুলো চাষ আর কেমিকাল সার ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন