এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা   সমাজ

  • এক ছাত্রের স্মৃতিচারণ 

    দীপ
    আলোচনা | সমাজ | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৪০৫ বার পঠিত
  • কলকাতার একটি সার্ধশতাব্দীপ্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আভ্যন্তরীণ রুচি ও সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করলেন সেই প্রতিষ্ঠানের এক প্রাক্তন ছাত্র। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীতে অবস্থিত ঐ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাভাষা চূড়ান্ত অবহেলিত ও ব্যঙ্গের বিষয়বস্তু!
    তবে শুধু ঐ বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একমাত্র নয়, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাভাষা অবজ্ঞার পাত্র! অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্পষ্টভাষায় লেখা থাকে বাংলাভাষায় কোনো কথা বলা যাবেনা! 
    বিশ্বমানব(!!!) বাঙালী চুপ করে থাকে অথবা সোচ্চার সমর্থন জানায়!
    --------------------------------------------------------------------

    সেন্ট জেভিয়ার্স, পার্ক স্ট্রিট ক্যাম্পাস। বছর দশেক আগের কথা। ঢোকার কয়েক মাসের মধ্যে বুঝে গেলাম, বাংলায় কথা বলা বা বাঙালির হয়ে কিছু বলাটা এখানে প্রায় দণ্ডনীয় অপরাধ And "not so cool Brroooooo!" এমনিতে তো কলকাতার উচ্চবিত্ত অন্তঃসারশূন্য মাড়োয়ারী সম্প্রদায় প্রতি পদক্ষেপে জাজ করে, তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ, আর বাকি যে কতিপয় বাঙালি, তারা অনেকটা "রাজা যত বলে পারিষদ গণ বলে তার শতগুণ।" মানে মাড়োয়ারীদের থেকেও বড় মারোয়াড়ি। সংখ্যাগুরুদের চোখে কীভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠা যায় সেই কুৎসিত প্রতিযোগিতায় মত্ত। তাদের বাঙ্গালীদের যদি খিস্তি করে নিজেদেরকে ছোট করতে হয় তাতেও অসুবিধা নেই। একমাত্র বাঙালি জাতির পক্ষেই এ ধরনের আত্মবলিদান সম্ভব। 

    একটা বিরাট এনুয়াল ফেস্ট হত। হাবভাবই বদলে যেত জ্যাভেরিয়ানদের। এবং অন্তত আমার তিন বছরে আমি একজনও বাঙালি আর্টিস্টকে আস্তে দেখিনি। শিরলে শেঠিয়া এসেছে, বিশাল শেখর এসেছে, আরো অনেকে এসেছে। কলকাতার বুকে মিনি মুম্বাই। বাংলা ব্যান্ড বা আর্টিস্ট আসত কিন্তু সেটা বেঙ্গলি লিটারারি সোসাইটির প্রোগ্রামে। এই সোসাইটির আয়োজকরা আবার একটা বাক্যও পুরো বাংলায় বলতে পারত না। বাংলার হয়ে কিছু বলতে গেলে মারওয়ারীদের নাক সিটকানো থেকে শুরু করে কটাক্ষপাত, বাংলা গান বা বাংলায় কোনো কিছুর প্রতি দেখিয়ে দেখিয়ে অবজ্ঞা, সবই জুটত। এখন এই পোস্ট দেখে জেভিয়ার্সের গর্বিত স্টুডেন্টরা ডিফেন্ড করতে দৌড়ে আসবে। তাতে আমার কিছু এসে যায় না। কারন আমি যে ঘৃণা ওদের চোখে দেখেছি, যে অবজ্ঞা ওদের গলায় শুনেছি, যে নিজের ভাষাকে একবিন্দুও ভালবাসে, তার হয় মরে যেতে ইচ্ছে করবে, আর নয় একটা কষিয়ে থাবড়াতে ইচ্ছে করবে। সে যাক গে। এ নিয়ে একদিন বিশদে লেখা যাবে যে আমি ঠিক কী কী স্যাম্পল দেখেছিলাম।

    ইমন ম্যাডামের এই গর্জনটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। হয়তো নিজে যে কথাগুলো চড়িয়ে বলতে পারিনি সেগুলো এনার মাধ্যমে বলা হয়েছে বলে গায়ের জ্বালা মিটেছে। কিন্তু কী অসম্ভব ব্যাধি এটা! সাহস কী অসম্ভব বেড়ে গেছে এদের! তারা জানে, বা তারা ভাবছে যে এই ধরনের কথা প্রকাশ্যে বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বলা যায়। এভাবে একটা সংস্কৃতির দিকে তাচ্ছিল্যের বাণ ছুঁড়ে দেওয়া যায়। অনেক তথাকথিত স্বাধীনপন্থী আবার বলছেন, "ইমন যেটা করেছেন সেটা একপ্রকারের Radicalism।"

    ........ প্রার্থনা করি তাদের যেন নিজের রাজ্য, নিজের শহরের বুকে, কোনোদিন আমার মত চার বছরব্যাপী হতভাগ্য সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন হয়ে বেঁচে না থাকতে হয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 2402:3a80:198f:cc03:878:5634:1232:***:*** | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৩১744310
  • কিগো পশ্চিমবঙ্গের মহাবিপ্লবী বাবুবিবিরা, এসব নিয়ে একটু প্রতিবাদ হবেনা?
    রামকৃষ্ণ মঠ পুরুষ কর্মী চাওয়ায় তো গর্জন আর কান্নাকাটিতে কান পাতা যাচ্ছিলো না!
  • দীপ | 2402:3a80:198d:b0be:778:5634:1232:***:*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৮744323
  • পশ্চিমবঙ্গের মহাবিপ্লবী বাবুবিবিরা খুব বুদ্ধিমান! তাঁরা সবসময় নরম জায়গায় বিপ্লব দেখাতে আসেন! ভুলেও অন্যকোনো জায়গায় বিপ্লব দেখান না!
    রামকৃষ্ণ মিশন খুব নরম জায়গা তো, তাই সেখানে বিপ্লব করা যায়! কিন্তু ভুলেও কলকাতার নামীদামী অভিজাত ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে একটা কথাও বলা যায়না! সেখানে বিপ্লব করতে গেলে পিঠের চামড়া যে আস্ত থাকবে না, সে তথ্য পশ্চিমবঙ্গের মহাবিপ্লবীরা ভালোই জানেন!
     
    শুধু এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, কলকাতার নামীদামী সব অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে এই কথা সত্য!ইন্দ্রনাথ গুহের স্কুলে বিপ্লব করতে গেলে ইন্দ্রনাথ গুহ পিছন দিয়ে একসাথে মনুসংহিতা আর শরিয়তী আইন ঢুকিয়ে দিতো! সব জায়গায় নাক গলানোর ইচ্ছা সারা জীবনের মতো বন্ধ হয়ে যেতো!
  • দীপ | 2402:3a80:198b:c84a:678:5634:1232:***:*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৩744324
  • ২০১৬ সালে ভগিনী নিবেদিতার সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিবেদিতা স্কুল বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও স্কুলের উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করে। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ মানুষের কাছে স্কুলকর্তৃপক্ষ আর্থিক সহযোগিতার আবেদন জানান। 
     
    জনৈকা মাকুনী এইসময় ফেসবুকে রটাতে থাকে, স্কুলের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য প্রাক্তন ছাত্রীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবী করা হয়েছে!
    কলকাতার কোনো নামীদামী অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে এরকম মিথ্যা খবর বাজারে ছাড়লে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়তো! কোনো রঙের দাদার ল্যাজ ধরে লাভ হতো না!
     
    মাকুনীকে আরেকটি তথ্য জানিয়ে রাখি। রামকৃষ্ণ মঠমিশনের মূল কেন্দ্র ও তাদের শাখা কেন্দ্রগুলি প্রত্যেক বছর তাদের আয়ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট দ্বারা পরীক্ষিত। সারদা মঠ ও মিশনের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এক‌ই কথা প্রযোজ্য!
    কোনো কিছু লেখার আগে একটু পড়াশোনা করে নেবেন!
  • দীপ | 42.***.*** | ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৫৯744434
  • খাস কলকাতার একটি স্কুলের বিজ্ঞাপন! 
    আশা করি সর্ববিদ্যাবিশারদ মহাবিপ্লবীরা প্রতিবাদ করবেন!
  • দীপ | 42.***.*** | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:০৫744475
  • পশ্চিমবঙ্গের মহাবিপ্লবীরা খুব বুদ্ধিমান! তাঁরা খুব ভালো করেই জানেন কোথায় গর্জন করতে হয়, আর কোথায় ন্যাজ গুটিয়ে গর্তে ঢুকতে হয়!
     
    আপাতত এঁরা মৌনব্রত অবলম্বন করেছেন! এখন এঁদের গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোবে না! পরে আবার সময়সুযোগ মতো গর্জন করবেন!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন