এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • চন্দ্র অভিযান - বিজ্ঞান আর সাহিত্যের ঠমক 

    Surajit Dasgupta লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৬ আগস্ট ২০২৩ | ৪৪২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • বিশ্বের সমস্ত দেশকে চমক দিয়ে, পেছনে ফেলে মহাকাশ বিজ্ঞানে প্রথম দেশ হিসেবে ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান (প্রজ্ঞান) অবতরণ করাতে সক্ষম হলো শেষ অব্দি। চন্দ্রায়ন -১ এবং চন্দ্রায়ন -২ সফল না হলেও চন্দ্রায়ন -৩ সাফল্যের মুখ দেখলো। আমরা ভারতবাসী হিসেবে বিজ্ঞানের আঙিনায় আরও একবার গর্বিত হওয়ার সুযোগ পেলাম। এই সাফল্যের গায়েও রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে লক্ষ করছি। আবার বিভিন্ন রকমের মন্তব্যের ঢেউও নজর এড়িয়ে যাচ্ছে না। আসলে এই ধরনের বিশ্লেষণ বা মন্তব্য আমাদের সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে দীর্ঘকাল ধরেই। ফলে এইসব নিয়ে আর এখন মাথা ঘামাই না। 
     
    আমার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হলে আমার এক আত্মীয় মন্তব্য করেছিলেন, সেকেন্ড ডিভিশন আশা করে কি করে ফার্স্ট ডিভিশন পেলি? আমি বা আমার বাবা - মা কেউই কোনোদিন তার সাথে মাধ্যমিকের পরীক্ষা কেমন হয়েছে বা ফল কিরকম হবে সেইসব নিয়ে আলোচনা করিনি। তবুও তিনি সেই মন্তব্যটি করেছিলেন। সেই আত্মীয়ের নিজের ভাই আমার সাথেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল এবং সে সেকেন্ড ডিভিশন পেয়েছিল। পরে বুঝেছিলাম সেই কারণেই হয়তো তিনি এইরকম মন্তব্য করেছিলেন। আসলে মেঠো বাংলা ভাষায় এটাকে জ্বলন বলে। খুব ছোটবেলা থেকেই এইধরনের জ্বলনের প্রভাবে শরীর অনেক জ্বলে পুড়ে গিয়েছে, তাই দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন মন্তব্য বা বিশ্লেষণকে আর মাথার মধ্যে নেওয়ার চেষ্টা করিনা, তেমনি চন্দ্রযান পর্বের সময়েও চিন্তাভাবনা পাল্টে যায়নি।
     
    মুখবন্ধের স্বাস্থ্য আর না বাড়িয়ে বরং মূল আলোচনায় আসা যাক। এক কথায় বলতে গেলে ভারতবর্ষের গর্বের বিজ্ঞানীরা চন্দ্রবিজয় করলেন। সেই বিজ্ঞানীদের মধ্যে আমার জেলাবাসী (মুর্শিদাবাদ) এবং আমার কলেজের (কৃষ্ণনাথ কলেজ, বহরমপুর) ছাত্ররা আছে বলে স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের চেয়ে আমার বুক অনেকটা বেশী ফুলেছে। এই দেশে বোধহয় প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই চাঁদকে চাঁদমামা বলেই সম্বোধন করা হয়ে এসেছে। আয় আয় চাঁদমামা টি দিয়ে যা, আমার সোনা চাঁদের কনা, দিয়ে আমাদের ছোটবেলা শুরু হয়। এরপরে জীবনে আসে চাঁদের বুড়ি, যে চরকা কাটে চাঁদের মাটিতে বসে। স্কুলে ভর্তি হয়ে একে চন্দ্র শেখার পরেই আসে চাঁদ পৃথিবীর একটি উপগ্রহ। কিন্তু উপগ্রহের সংজ্ঞা ঠিক মত বুঝে ওঠার আগেই মন পাগল হয়ে ওঠে চাঁদের স্নিগ্ধ জ্যোৎস্নায়। আহা কি স্নিগ্ধ, মায়াবী, মোহময় সেই আলো! পূর্ণিমার রাতে চাঁদ লাস্যময়ী হয়ে আপামর পৃথিবীবাসীর কাছে ধরা দেয়। পৃথিবীর যে কোনো সাহিত্যেই চাঁদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। পৃথিবীকে যেমন চাঁদ ছাড়া ভাবা যায় না তেমনি সাহিত্যকেও চাঁদ ছাড়া পানসে লাগে। আর বাঙালিরা এতটাই চন্দ্রমাতে আচ্ছন্ন যে বাঙালি নামে চন্দ্র, চাঁদ, জ্যোৎস্না, চন্দ্রকলা, শশিকলা, চন্দ্রাবতী, শশী ইত্যাদি ইত্যাদি থাকবেই। শ্রীকৃষ্ণের যেমন একশো আটটা নাম তেমনি চাঁদেরও কয়েকশত নাম। 
     
    পুরোনো বাড়ীর ছাদে জ্যোৎস্না রাতে উত্তমকুমার আর মালা সিনহা। সেটা ১৯৫৭ সাল, ছবির নাম, পৃথিবী আমারে চায়। পূর্ণিমা রাতে জ্যোৎস্নার প্লাবনে উত্তমকুমার আর মালা সিনহা বাঙালিকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, পর্দার পেছনে গীতা দত্তের গলায় "নিশি রাত বাঁকা চাঁদ আকাশে, চুপি চুপি বাঁশি বাজে বাতাসে বাতাসে"। কিংবা জনপ্রিয় অভিনেতা মেহমুদ আপামর বাঙালিকে তথা ভারতবাসীকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, পর্দার পেছনে কিশোর কুমারের গলায় "চন্দা ও চন্দা কিসনে চুরাই তেরি মেরি নিন্দিয়া, জাগে সারি রেয়না তেরি মেরি ন্যায়না"। সেটা ১৯৭১ সাল, ছবির নাম "লাখো মে এক"। আর ১৯৭১ সালের পুজোয় প্রভাষ দে'র সুরে আর পুলক বন্দোপাধ্যায়ের কথায় মান্না দে বাঙালিকে চিরঋণী করে দিয়েছিলেন। চন্দ্রমাকে নিয়ে বাঙালি বোধহয় তার সর্বোৎকৃষ্ট উপহার পেয়েছিল যা তাকে আজও নস্টালজিক করে তোলে, 
     
    ও চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে
    কারো নজর লাগতে পারে
    মেঘেদের উড়ো চিঠি
    উড়েও তো আসতে পারে
    ঝলমল করিও না গো তোমার ঐ অতো আলো
    বেশী রূপ হলে পরে সাবধানে থাকাই ভালো
    মুখের ঐ উড়নিটাকে একটু রাখো
    খুলো না কো দোহাই একেবারে
    এই সবে রাত হয়েছে
    এখনি অমন হলে
    মাঝরাতে আকাশটাতে
    যাবে যে আগুন জ্বলে
    সেই ফাঁকে তুমিও কখন চুরি যাবে
    কাকে পাবে বাঁচাতে তোমারে
     
    চাঁদকে আর তার জ্যোৎস্নাকে নরম ও স্নিগ্ধ ভাষায় প্রকাশ এবং রূপক ও অলংকারের প্রয়োগ এই গানকে অমর করে দিয়েছে। এছাড়া চাঁদকে নিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়াও হাজারো গান এবং কবিতা লেখা হয়েছে। আসলে পৃথিবীতে, মানব সভ্যতায় চাঁদ এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে বিভিন্নভাবে। এই মহাবিশ্বে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের পড়শী হলো চাঁদ, পৃথিবীর আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল ও মোহময় উপস্থিতি হলো চাঁদের। নিজস্ব আলো থাকায় সূর্য যেমন বড়ই কর্কশ, তাই সাহিত্যে, গানে সূর্যের উপস্থিতি খুব একটা বেশী নেই। এই ক্ষেত্রে চাঁদ সূর্যের চেয়ে কয়েকশত যোজন এগিয়ে। সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়ে নিজেকে রহস্যময়ী করে তোলার উদাহরণ বোধহয় দ্বিতীয়টি নেই এই মহাবিশ্বে। গ্রহীতার কদর এক্ষেত্রে দাতার চেয়ে অনেক বেশী।
     
    সবচেয়ে কাছের পড়শী হওয়ার কারণেই চাঁদের রহস্যময়তার পর্দা সরানোর চেষ্টা করে এসেছেন বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই। এক্ষেত্রে আমেরিকা বা সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতবর্ষের চেয়ে শত যোজন এগিয়ে। চাঁদে চন্দ্রযান পাঠানো, চাঁদে মানুষের অবতরণ, মঙ্গলগ্রহে মঙ্গলযান পাঠানো বা আগামীদিনে মানুষের অবতরণ, মহাবিশ্ব জুড়ে মহাকাশযানের ঘোরাফেরা ইত্যাদি মহাবিশ্বের রহস্যময়তা উদঘাটনের লক্ষেই, বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই। এই খাতে টাকা খরচের কোনো আশু লাভ পাওয়া যায় না বলেই এত কথা, এত বিরূপ মন্তব্য। আমরা অশিক্ষিত তাই এইসব মন্তব্যগুলোকে চেটেপুটে খাই। সামরিক খাতে যে সমস্ত টাকা খরচ করে বিভিন্ন দেশ বা আমাদের দেশ সেই টাকাও তো তাহলে অপব্যয়। কবে কোন দেশের সাথে যুদ্ধ হবে বা আদৌ কোনোদিন হবে কিনা সন্দেহ, তাহলে প্রতি বছর বাজেটে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা অর্থহীন। এত এত টাকা খরচ করে সৈন্যবাহিনী লালন - পালন করা বা যুদ্ধাস্ত্র কেনাও অর্থহীন। আবার এত টাকা খরচের পরে যুদ্ধ হলে যদি সেই দেশের সেনাবাহিনী পরাজিত হয়, ইউক্রেনের মত, তাহলে সেটাও অপচয়।
     
    আমরা অর্থাৎ মানুষেরা এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এবং উন্নত জীব কিন্তু আরও উন্নত হওয়াটাও নিশ্চয়ই আমাদের লক্ষ। এই পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্বকে চিরস্থায়ী করাটাও নিশ্চয়ই আমাদের লক্ষ। এর জন্য প্রথমেই দরকার এই পৃথিবী এবং সমগ্র জগৎ সংসার সম্পর্কে সঠিক এবং পরিষ্কার ধারণা তৈরী করা। তাদেরকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেনা, চরিত্র বোঝা। বিজ্ঞান এই লক্ষেই কাজ করে চলেছে। অন্য দেশের রক্তচক্ষুর হাত থেকে বাঁচার জন্য যেমন দেশের সেনাবাহিনী নিত্য কাজ করে চলেছে তেমনি সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের বশীভূত নয় যে সমস্ত শক্তি তাদের হাত থেকেও আমাদের বাঁচতে হবে। অগ্নি, বরুণ, ধরিত্রী, বায়ু সম্পর্কে যেমন আমরা ধীরে ধীরে জেনেছি মানব সভ্যতার প্রারম্ভিক কাল থেকে এবং বর্তমানকালে তাদেরকে অনেকটাই বশীভূত করতে পেরেছি (প্রলয়, সুনামি ইত্যাদি ছাড়া), তেমনি গ্রহ, গ্রহানুপুঞ্জ, উপগ্রহ, নক্ষত্রপুঞ্জ, উল্কারাশি, ব্রহ্মাণ্ড, ছায়াপথ ইত্যাদি সম্পর্কেও আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বিস্তারিত জানতে হবে তাদের সম্পর্কে। মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো বা মহাকাশ - স্টেশন তৈরীর পরেই কিন্তু এই পৃথিবীর অনেক না - বশীভূত শক্তিকে অনেকখানি পরাভূত করা গিয়েছে। চন্দ্রযান, মঙ্গলযান, মহাকাশযান এইসমস্ত লক্ষপুরণেরই এক একটা পর্যায় এবং অংশ।
     
    পৃথিবী যেমন সূর্যের চারিদিকে ঘোরার পাশাপাশি নিজের অক্ষের চারিদিকেও ঘোরে। কিন্তু পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের এই ধরনের কোনো ঘূর্ণন নেই। চাঁদ শুধু পৃথিবীর চতুর্দিকেই ঘোরে। এই কারণে অন্য কোনো গ্রহ থেকে যেমন পৃথিবীর সমস্তটাই দেখা যায়, তেমনি পৃথিবী থেকে আমরা চাঁদের শুধু একদিকটাই দেখতে পাই। যাকে আমরা উত্তর মেরু নাম দিয়েছি। অন্য প্রান্তকে বা অন্য দিকটাকে কোনদিনই দেখতে পাইনা, যাকে আমরা দক্ষিণ মেরু নাম দিয়েছি। মানুষের চন্দ্র অভিযানের শুরু সেই ১৯৫৮ সালে। আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রায় একইসময়ে শুরু করেছিল এই অভিযান। আমেরিকা শুরু করেছিল ১৭ই আগস্ট আর রাশিয়া ২৩শে সেপ্টেম্বর। সোভিয়েত ইউনিয়ন সেখানে ১২ই সেপ্টেম্বর, ১৯৫৯ সালে সাফল্য পায়। আর আমেরিকার প্রথম সাফল্য আসে ২৮শে জুলাই, ১৯৬৪ সালে। এখনও অব্দি বহু দেশ চন্দ্র অভিযানে অংশ নিয়েছে, এমনকি চাঁদে মানুষ অব্দি পাঠানো হয়েছে। অনেকের কাছে সাফল্য ধরা দিয়েছে আবার অনেকেই এখনো অব্দি সফল হতে পারেনি। কিন্তু ১৯৫৮ সাল থেকে এখনও অব্দি যত প্রচেষ্টাই হয়েছে সবটাই চাঁদের উত্তর মেরুকেন্দ্রিক। দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের চেষ্টা হয়নি বললেই চলে। আসলে দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করা উত্তর মেরুর থেকে অনেকবেশী কঠিন। কারণ চাঁদের দক্ষিণ মেরু আমরা দেখতে পাইনা, অনেকবেশী খানাখন্দে ভরা বলে শোনা যায়। আবার বরফ বা জল বা আগ্নেয়গিরি ইত্যাদি থাকলেও থাকতে পারে বলে অনুমান করা হয়। ফলে সেখানে সাফল্যের পরিমাণ অনেক কম হওয়াটাই স্বাভাবিক। উত্তর মেরু সম্পর্কে ইদানীংকালে ধারণা তৈরী হওয়ার পরে আমরা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর দিকে নজর দিয়েছি। এক্ষেত্রে স্মরণীয় যে আমরা চাঁদের উত্তর মেরুতে কোনো যান অবতরণ করাতে সক্ষম হইনি এখনও। সেই আমরা চন্দ্রায়ন - ৩ প্রকল্পে চললাম চাঁদের দক্ষিণ মেরু বিজয় করতে। একটু বেশীরকমের বাড়াবাড়ি করে ফেলেছিল আমাদের বিজ্ঞানীরা, হয়তো এইরকমই মনে করেছিল সারা বিশ্বের লোকেরা। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা তাঁদের লক্ষে অবিচল ছিলেন, কারণ তাঁদের হাতে ছিল চন্দ্রায়ন - ১ ও চন্দ্রায়ন - ২ এর অভিজ্ঞতা এবং সর্বোপরি চন্দ্রায়ন - ২ এর প্রপালশন মডিউলের সজীব থাকা। পুরো প্রকল্পের সঠিক সম্পাদন না হওয়া অব্দি তাকে আমরা সাফল্যের তালিকায় আনতে পারিনা। সেই অর্থে অনেক প্রকল্পের মত চন্দ্রায়ন - ২ একটি বিফল প্রকল্প ছিল, কিন্তু চন্দ্রায়ন - ২ এ শুধুমাত্র ল্যান্ডার চন্দ্রপৃষ্ঠে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, তার আগে অব্দি সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। চন্দ্রায়ন - ৩ প্রকল্পে আমাদের বিজ্ঞানীরা সেই চন্দ্রায়ন - ২ এর প্রপালশনের সাথেও যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করতে পেরেছেন। শেষ অব্দি অত্যন্ত সফলতার সাথে ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে এবং ভারতবর্ষ বিশ্বের চতুর্থ দেশ (সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা এবং চীনের পরে) হিসেবে চাঁদে কোনো যান অবতরণ করতে সক্ষম হয়। আর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নিজেদের নাম খোদাই করতে সক্ষম হয় আমাদের গর্বের বিজ্ঞানীরা।
     
    প্রজ্ঞান রোভার তন্ন তন্ন করে খুঁজে কোথাও সেই চরকা কাটা বুড়ি বা কোনো চরকার খোঁজ পায়নি। কোনো পানের দোকান বা বরজের খোঁজ পায়নি, ফলে চরকা কাটা বুড়ি কোথা থেকে পান পায় আর কি করে এত পান খায় তার হদিশ পাওয়া যায়নি। কোনো জায়গায় কোনো কলঙ্কের দাগ পায়নি চাঁদের গায়ে। পতঙ্গের মত দেখতে কোনো সেলেনাইট - এর দেখা পাওয়া যায়নি (সূত্র - এইচ জি ওয়েলসের "ফার্স্ট ম্যান ইন মুন" উপন্যাস)। সাহারা মরুভূমির মতই চাঁদকে রুক্ষ লেগেছে প্রজ্ঞানের, স্নিগ্ধ - মোহময় বলে একদমই মনে হয়নি। আবার দক্ষিণ মেরুতেও প্রজ্ঞান সূর্যের আলো পেয়েছে, একেবারেই অন্ধকার নয় সেই অঞ্চল। প্রজ্ঞান তার কার্যকালের শেষে চন্দ্রমাকে চুপি চুপি বলতে পারেনি তার জোছনাকে সামলে রাখার জন্য, কারণ জোছনার দেখাই সে পায়নি।
     
    বিজ্ঞান যতই সাহিত্যকে বেআব্রু করে তুলুক না কেনো, সাহিত্য নিজের জায়গাতেই অবিচল থাকবে। চাঁদের স্নিগ্ধতার, মোহময়তার, জ্যোৎস্নার, সৌন্দর্য্যতার জয়গান সাহিত্য চিরকাল করে চলবে। চাঁদ আমাদের কাছে চাঁদমামা হয়েই বিরাজ করবে, গুবলু সোনার কপালে টিপ দিয়েই যাবে। চরকা বুড়ি বা সেলেনাইটদের বসবাস থাকবেই চাঁদে। কারণ চাঁদ এতটাই মনোমুগ্ধকর আমাদের কাছে যে আমরা বাঁচতে পারবো না চাঁদের স্নিগ্ধতা ছাড়া।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sumita Dasgupta | 103.***.*** | ২৬ আগস্ট ২০২৩ ২০:৫১522968
  • খুব ভালো লাগলো।
  • ?? | 2405:8100:8000:5ca1::f:***:*** | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৫৫523271
  • ওগুলো চন্দ্রযান ১ চন্দ্রযান ২ চন্দ্রযান ৩।  চন্দ্রায়ান নয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন