নো ভোট ফর বিজেপি একটি জরুরী ক্যাম্পেইন। কেন্দ্রে দুটি টার্ম ক্ষমতায় থেকে বিজেপি কী করতে পারে তা দেশের মানুষ দেখেছেন - তাদের ভোট দিতে না বলাটা কোন নেগেটিভ প্রচার নয়। কিন্তু অসম্পূর্ণ প্রচার অবশ্যই। বিজেপিকে ভোট দেব না, আমিও দেব না, আপনিও দেবেন না, বেশ কথা - কিন্তু কাকে দেব, সেটা স্পষ্ট করে বলাটাও এই মুহুর্তে খুব জরুরী। "বিজেপির বিরুদ্ধে যে আছে, তাকেই দিন" বা "আপনার পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিন শুধু বিজেপিকে নয়" - এই ধরণের প্রচারে কখনোই কোন বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়না। আমাকে স্পষ্ট করে বলতে হবে, কাকে ভোট দিতে বলছি, তবেই আমার বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য হবে।
আপনি যদি মনে করেন গত ১০ বছরে তৃণমূল সরকার ভাল কাজ করেছে, চুরি-চামারি করেনি বা করে থাকলেও সেটা এই মুহুর্তে মেজর ইস্যু নয়, নির্বাচনী হিংসা করেনি, বা সিপিএম এখনো হলদি নদীর কুমীরের মতই হিংস্র, তাদের ভোট দেওয়া যায় না, তাহলে সরাসরি তৃণমূলকেই ভোট দিতে বলুন। বিজেপকে দেবেন না, তৃণমূলকে দিন। সম্পূর্ণ এবং বিশ্বাসযোগ্য স্ট্যান্ড।
আমার মত আপনিও যদি মনে করেন অত্যাচারে, মিথ্যাচারে এবং ভ্রষ্টাচারে তৃণমূল বিজেপির ক্ষুদ্রতর সংস্করণ মাত্র, অথবা যদি মনে করেন শ্রমজীবি ক্যান্টিন, আমপানের সময়ে মানুষের পাশে থাকা, অতিমারী উপেক্ষা করে মানুষকে খাবার, স্যানিটাইজার পৌঁছে দেওয়া, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য লড়ে যাওয়া - এসব নির্বাচনী ইস্যু হয়ে ওঠা উচিৎ, তাহলে বামফ্রন্ট ও তার জোটসঙ্গীদের ভোট দিতে বলুন। বিজেপিকে দেবেন না, তৃণমূলকে দেবেন না, বামফ্রন্টকে ভোট দিন। স্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য স্ট্যান্ড।
বিপক্ষ নেওয়া জরুরী। পক্ষ নেওয়াও ততটাই জরুরী।
#ভোট_ফর_লেফট
খুবই প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী লেখা, বিশেষ করে এই ক্রিটিক্যাল সময়ে যেখানে কাকে ভোট দেবো এবং কেন দেবো সেটাই সবচেয়ে বড় চিন্তার এবং গবেষণার বিষয়।
নো ভোট ফর বিজেপি ক্যাম্পেনটার মধ্যে একটা মরীয়া ব্যাপার আছে। একটা ওপেন এন্ডেড ব্যাপারও আছে। যাকে খুশি দিন তৃণমূল, সি পি এম - কেবল বিজেপিকে নয়।
এতদ্বারা এই দুটো দলের প্রতি আপনার অনুরাগ বা বীতরাগ কে না ধরেও বিজেপির বিপদকে বোঝানো গেল।
বাস্তবেও বামেরা যদি বামকেই আর বাম বিরোধীরা যদি তৃণমূলকেই ভোট দেন - বিজেপির চান্স কমবে। ডাই হার্ট বাম বিরোধীদের ভোট তৃণমূলে না গিয়ে বিজেপিতে গেলে বা তৃণমূল বিরোধী ভোট বামে আটকে না থেকে বিজেপির দিকে গেলেই বিজেপির সুবিধে হয়ে যাবে।
তবে তৃণমূল যে হারে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে, আর ক্রমশ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ইত্যাদি মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে, তাতে বাইরে থেকে থার্ড লেফটদের সমর্থন তাকে বাঁচাতে পারবে না। তৃণমূল যত দুর্বল হবে মুসলিম ভোটও তত ভাগ হবে।
মনে রাখতে হবে ২০১১ র সময় থার্ড লেফটদের সমর্থন তৃণমূলকে সাহায্য করেছিল কারণ সেটা ছিল তার উত্থানের সময়। যাবতীয় অ্যান্টি লেফট ভোট তার সঙ্গে এমনিতেই এসে গিয়েছিল। এবার অ্যান্টি লেফট রাজনীতি করে আসা তৃণমূল মোকাবিলা করছে ফার রাইট বিজেপির। তার কট্টর তো বটেই নরম দক্ষিণপন্থীরা স্বাভাবিকভাবেই সেখানে গিয়ে বসে আছে। শাসন ক্ষমতা থেকে চলে যাবে বুঝলে ক্ষমতার আশেপাশে থাকা লোকেরা এমনিই চলে যায়। ফলে সিপিএম এর ২০১১ র বিপদের চেয়ে তৃণমূলের ২০২১ এর বিপদ কম নয়।
সমস্যা অনেক। কংগ্রেসকে মাঝে রেখে সিপিএম তৃণমূল জোট এর উদ্যোগ তেমন হল না এটা খানিকটা আশ্চর্যের। ভারত বিভাজনের সময় শরৎ বোস সোহরাবর্দি আবুল কাশেমরা যুক্ত বাংলা গঠনের একটা চেষ্টা করেছিলেন। সেই সাম্প্রদায়িক সংঘাতের তীব্র আবহেও এই চেষ্টাটা হয়েছিল। এবার তৃণমূল সি পি এম শিট শেয়ারিং এর কথাটাও তো সেভাবে আলোচনাতে এলো না।
"কংগ্রেসকে মাঝে রেখে সিপিএম তৃণমূল জোট এর উদ্যোগ তেমন হল না এটা খানিকটা আশ্চর্যের।" একেবারেই আশ্চর্যের না।
-তৃণমূল বড় পারটি তার বেশি কাউকে দরকার নেই, বিশেষত তাদের হিসেবে যেগুলি ইনকনসিকোয়েনশিয়াল পারটি যেগুলি তাদের।
-তৃণমূল বিজেপি ডিল হতে ই পারে এবং সেটা বিজেপিকে প্রধান বিরোধী দল করার ডিল হতে ই পারে
-তৃণমূল কয়েকটি ভোটে দক্ষিণ বঙ্গের র মুসলমানদের ভোট পেয়েছে বলে তাকে সেকুলার রাজনীতি তে কমিটেড পারটি বলে ধরে নেবার কোন কারণ নেই।
- সিপিএম বিরোধী বাম পন্থী বা নাগরিক সমাজের প্রতি নিধিরা তৃণমূল এর সঙ্গে ঘোষনা করে প্রি পোল আলায়েন্সে যাচ্ছেন না কেন, সিট শেয়ারে যাচ্ছেন না কেন সেটাই আশ্চর্য।