সেই বাড়ির নেই ঠিকানা, অথবা মনে করো সাততলা বাড়িটার ঠিক সামনে থেকে একটা অজানা লাল সুড়কির পথ শূন্যের দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছে। আর কিছু করে থাকি বা নাই থাকি, কিছু সংসার পাকিয়েছি বটে জীবনে। মাপতে গিয়ে দুটো ম্যাটাডোর আর ছ'টা ডিকি ভরে গেলো। বাক্সে বাক্সে বন্দী বাক্স, বাক্স-বোধন উৎসব চলছে এখন; কোনটা কোন বাক্সে রয়েছে বুঝতে না পারার ছোট ছোট বাক্স রহস্য। গোটা ব্যাপারটা মিটে যাওয়ার পর মনে হচ্ছে পিঠে ব্যাগ নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে ফিরলাম; এখনও যথেষ্ট কোমরের জোর আছে নাকি বাড়ি বসে বসে বসে গেছি পুরাই! প্রথমবার বাড়ি বদলানোর সময় প্রতীক ছিল সাথে, দ্বিতীয়বার তুহিন আর গুড্ডু, এবার আমি একা। হ্যাঁ, শ্রীপর্ণা তো ছিলই, তবে বাবা মনে হয় ফাইনালি এবার আমায় নিয়ে গর্বিত হতে পারে। পুজো-লক্ষ্মীপুজোর মাঝখানে যা ম্যানেজমেন্ট স্কিল দেখালাম নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া দু'দিনে কম করে চল্লিশবার চারতলা সিঁড়ি ওঠানামার পরও পায়ে একটুও ব্যাথা নেই। একটা পেশীতেও টান ধরেনি একফোঁটা। উল্টে আনন্দ হচ্ছে, যা হয় সব ভালোর জন্যই হয়; নতুন পাড়ার ব্যাপারই আলাদা।
সব গোছগাছ শেষ হয়ে গেলে সুফি ফেরত আসবে। আজ চারদিন হয়ে গেলো মেয়েটা বাড়ি নেই, দিদার কাছে রয়েছে সোদপুরে। এই দু'গাড়ি উপচানো মালপত্রের কথা তখন আর মাথায় থাকবে না। এই যে এতসবকিছু আমারই ঘাড়ে চেপে রয়েছে ভুলে যাবো। জলের তলায় থাকা মাছ যেমন বুঝতে পারেনা মাথার ওপর থাকা জলের ওজন, আমিও তলিয়ে যাবো ভরে ভরে থাকা সব রাত্রি আর দিনের ভিতর। অযথা ভেসে উঠতে কেই বা চেয়েছিল কবে!