এমনিতে আমার মেয়েটাকে দেখতে আবোলতাবোলের পাতা থেকে উঠে আসা একটা র্যান্ডাম চরিত্রের মতো। ওর মুখে যেন লেখাই আছে, "আমি একটা আবোলতাবোল!" তা, এর মাঝে শুনলেম মেয়ে একদিন তিন-তিনবার আমার হাতটাকে পাশবালিশের মতো জড়িয়ে ধরে শোওয়ার চেষ্টা করছিল। আমি তখন ঘুমোতেছিলেম, এবং তিনবারই নাকি আমি মেয়েকে মশা ভেবে হাত নাড়িয়ে অত্যন্ত বিচ্ছিরিভাবে তাড়িয়ে দিয়েছি। তাতে শেষবারের বার মেয়ে অত্যন্ত ক্ষেপে গিয়ে আমাকে "আই আই আই আই পপ" বলে উঠে বসেছে। আজকে আবার যেমন মেয়েটা অকারণ তুষার কাপুরের মতো "আ ই উ আ" বলে নাগাড়ে চেঁচিয়ে যাচ্ছিলো আর আমি পাত্তা না দিয়ে চা খাচ্ছিলেম। শেষটায় শ্রীপর্ণার আর সহ্য হলো না। সে "অ্যা-অ্যা-অ্যা-ই" বলে একটা ধমক দিয়ে বসলো মেয়েকে। এতে বিনাচেষ্টাতেই আমার মুখ থেকে বেরিয়ে গেলো, "আহা! ইগনোর করলেও তো পারিস৷ মনে কর, ও ওপাশের রেলবস্তিতে থাকে। ক্যাঁচড়া করতে করতে আমাদের পাড়ার রাস্তায় চলে এসেছে!" বলাবাহুল্য, আমার এই প্রবল কল্পনাশক্তির পরিচয় পেয়ে শ্রীপর্ণা মোটেই খুশি হয়নি।
এছাড়া আজকে কাজু অভিষেকদার মায়ের দেওয়া চীনা রঙ্গনের গাছটাকে খুবই রেসিস্টের মতো শুঁকছিলো বারবার গিয়ে গিয়ে। তাতে আমি কাজুকে বলেছি যে ও আমেরিকান হলে নির্ঘাৎ ট্রাম্পকেই ভোট দিতো! এর খানিক বাদে কাজু আমায় ঘ্যানঘ্যান ক'রে চেয়ার থেকে তোলার চেষ্টা করায় আমি একটা সিগারেটের প্যাকেট খুলে কাজুকে "আজ তোকে তোর ওই নাক সমেত এর ভেতরেই পুরে দেবো" ব'লে তাড়া করি। কাজু তাতে রীতিমতো ল্যাজ হাতে ক'রে পালিয়ে বাঁচে!
এই এতকিছু ভেবেটেবে যা বুঝছি আরকি, যে, আমাকে সহ্য করাটা শুধু মুশকিলেরই নয়, প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। এছাড়া অদূরভবিষ্যতেই আমার মাথায় একটা সুন্দর টাকও পড়বে। সবদিক বিচার করে মনে হয়, আমিই অমিত শাহ-এর যোগ্য উত্তরসূরি।