এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ফটিক এবং বিরিঞ্চি বাবা

    ঘনাদা
    অন্যান্য | ০৬ জুলাই ২০১২ | ৬৫০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ঘনাদা | 233.223.***.*** | ০৬ জুলাই ২০১২ ০৯:০৪553557
  • বাঙালীর একটা বদ- অভ্যাস আছে। ডাক নামকে বিকৃত করার। একটা স্নেহ মাখা অবজ্ঞার সঙ্গে ডাক নামকে ওলট পালট করে দেয়, এই জাতটা।
    বাঙালী বোধহয়, মনে করে- এই অবজ্ঞা পরে, ছেলেটাকে বড় করে তুলবে।
    তা, ফটিক, ফইটক্যা বা ফটকে হয়েছিল কিনা জানা নেই, তবে উনি একজন সত্যিকারের বড় মাপের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন পরবর্তীকালে।
    আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়কে খাটো না করেই বলা যায়, বেঙ্গল- কেমিক্যাল, যে ফুলে ফেঁপে উঠেছিল, সেটা এই ফটিকের জন্যই।
    প্রফুল্ল চন্দ্র রায় একবার চিঠি দিয়ে, ফটিক সম্বন্ধে কৃত্রিম অভিযোগ করেন রবীন্দ্রনাথকে।
    তিনি, ফটিকের ভালো নাম দিয়ে লিখেছিলেন:-
    আপনি, ফটিকের বইয়ের এত প্রশংসা করছেন, যে বেঙ্গল- কেমিক্যাল অসুবিধায়। প্রশংসার দরুণ বেঙ্গল- কেমিক্যাল ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কারণ, প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সব কাজ- কর্ম শিকেয় তুলে, কেমিস্ট্রি ছেড়ে গল্প লেখায় মত্ত হবে।
    রবীন্দ্রনাথ এই চিঠির উত্তরে যে চিঠি ( ১৮ ই অঘ্রান, ১৩৩২)লেখেন, তার শেষাংশ ছিল এই রকম:-
    “যে সব জন্ম সাহিত্যিক গোলমালে ল্যাবরেটরির ভেতর ঢুকে জাত খুইয়ে বৈজ্ঞানিকের হাটে হারিয়ে গিয়েছেন. তাদের ফের জাতে তুলব। আমার এক একবার সন্দেহ হয়, আপনিও বা সেই দলের একজন হবেন, কিন্তু আর বোধহয়, উদ্ধার নেই।
    যাই হোক, আমি রস যাচাইয়ের নিকষে আঁচড় দিয়ে দেখলাম আপনার বেঙ্গল- কেমিক্যালের এই মানুষটি একেবারেই কেমিক্যাল গোল্ড নন, ইনি খাঁটি খনিজ সোনা”

    রবীন্দ্রনাথ, একবার ফটিককে বলেছিলেন- তুমি এত রস কোথা থেকে পাও?
    ফটিকের উত্তর ছিল- আপনি ভুলে যাচ্ছেন, আমি রসায়নের ( কেমিষ্ট্রি) লোক।
    রবীন্দ্রনাথ ফটিক সম্বন্ধে একজায়গায় বলেছিলেন:-
    “তিনি মূর্ত্তির পর মূর্ত্তি গড়িয়াছেন। এমন করিয়া গড়িয়াছেন যে মনে হইল ইহাদিগকে চিরকাল চিনি।”
    একজন লেখকের এর চেয়ে বড় প্রশস্তি কি আর হতে পারে?
    বুদ্ধিদীপ্ত রসবোধ, শ্লেষ বা ব্যঙ্গের লক্ষ্য- সন্ধানে দক্ষতা এবং সেই সঙ্গে অনায়াস ভঙ্গিতে কৌতুককর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অতুলনীয় ক্ষমতা ফটিকের ভালো রকমই ছিল।
    এই সব দুর্লভ গুণের অধিকারী হয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রশস্ত অঙ্গনে রসের ঝরণা ছুটিয়ে পাঠকদের “ হাড্ডি পিলপিলিয়ে” দিয়েছিলেন।
    তার রচনার মধ্যে দিয়ে কটাক্ষ করেছেন, আঘাত হেনেছেন, কিন্তু এই রসিকতা শুধু বিষের দহন আনে নি, এনেছে বিশুদ্ধ কৌতুক রস।
    পাঠকদের দুর্ভাগ্য, তাঁরা Zআন্তি পারে নি।
    যে কোনো তারযন্ত্রে, তারটাকে বেঁধে সুরেলা করতে হয়। এই ফটিক, ২১ টা সুরে বাঁধা তার লাগিয়েছিলেন, যা বাংলা সাহিত্যের সেতারকে আরও সুরেলা করে তুলেছিল। সেই তারের ঝংকারে,সুরের মূর্চ্ছনা তো বটেই, ঝলসে উঠেছিল বিদ্যুৎতের দীপ্তি।
    বিয়াল্লিশ বছরে পা দিয়ে,একসময় ফটিক যে কলম তুলে কাগজে আঁচড় কেটেছিল, তার থেকে বেরিয়ে এসেছিল, সোনার ফসল।
    ভালো ল্যাংচা খেতে গেলে বর্দ্ধমানের শক্তিগড় যেতেই হবে। ১৮৮০ সালের ১৮ ই মার্চ ( অন্যমতে, ১৬ ই মার্চ), ফটিকের জন্ম এই শক্তিগড়ের কাছে ব্রাহ্মণ পাড়ায়। শক্তিগড়, এই ফটিকের জন্যই আরও বিখ্যাত হয়ে আছে।
    ফটিক নামের আড়ালে, এই মানুষটি কে? বুদ্ধিমান পাঠক নিশ্চয়ই আন্দাজ করেছেন!
    হ্যাঁ! ঠিকই ধরেছেন, ইনি ৺ রাজশেখর বসু। একটা ছদ্মনামও ছিল- পরশুরাম।
    আগে, জেনে নেই রাজশেখর বসু নামটা কেন হয়েছিল ফটিকের।
    বড় ভাই, শশীশেখরের স্মৃতিচারণ থেকে জানতে পারি:-
    “দ্বার ভাঙ্গা থেকে ঘুরে এসে চন্দ্রশেখর ( পিতা) বললেন : - ফটিকের নাম ঠিক হয়ে গেছে।মহারাজ লক্ষ্মীশ্বর সিংহ ( শ্রোত্রিয় ব্রাহ্মণ) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার দ্বিতীয় ছেলের নামও একটা শেখর হবে নাকি? কি শেখর হবে?
    আমি বললাম:- ইওর হাইনেস, যখন তাকে আশীর্বাদ করেছেন, তখন আপনিই তার শিরোমাল্য- আমি আপনার সামনেই তার নামকরণ করলাম, রাজশেখর।”
    ঠিকঠাক ভাবে বলতে গেলে, এই নামকরণটা সার্থক হয়েছিল। জীবনের রঙ্গমঞ্চে তিনি, গ্রীক ট্র্যাজেডির নিঃসঙ্গ নায়ক ছিলেন।
    ঋষিসুলভ জীবনজিজ্ঞাসার সঙ্গে ক্ষত্রিয়সুলভ তিতিক্ষা তাঁর জীবনকে এক রাজকীয় আভিজাত্যে প্রচ্ছদায়িত করে রেখেছিল। এক্ষেত্রে, তিনি সত্যিই রাজশেখর।
    প্রসঙ্গত বলে রাখি, চন্দ্রশেখর ছিল, রাজশেখরের বাবার নাম।
    আমরা এটা জানি, বাঙালী কবি বা লেখকের গায়ে একটা অগোছালো ঢিলেঢালা চাদর থাকে।
    এই চাদরটি তিনি সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। কবিস্বভাব থাকলেও তিনি ছিলেন, অসাধারণ বিষয়নিষ্ঠ বা বস্তুনিষ্ঠ।
    প্রতিটি কাজের নিঁখুত ছক তৈরি করেই তিনি কাজে নামতেন। এটাই ছিল তাঁর স্বভাব। আজকালকার এম.বি. এ. ডিগ্রিধারীরা তাঁর ধারকাছ দিয়েও যেতে পারবেন কিনা, সন্দেহ আছে।
    বেঙ্গল কেমিক্যালকে পূর্ণভাবে গড়ে তোলার কাজই হোক বা “চলন্তিকা” অভিধান, রামায়ণ- মহাভারতের অনুবাদই হোক, সেই সব রচনার কাজ , সব কিছুই তিনি প্ল্যান- মাফিক করতেন।
    যে কোনো সফল বৈজ্ঞানিকের একটা গুণ থাকা দরকার, সেটা হল- একান্ত পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা।
    রাজশেখর সেটা অনায়াসে করতে পারতেন। তাই তাঁর এই ক্ষমতাকে নিজের জীবন আর কাজে প্রয়োগ করে, একজন সফল লেখকের পাশাপাশি, প্রযুক্তিবিদ হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
    সংসারধর্মই হোক বা সাহিত্য কর্ম, যখনই সার্থক শিল্প হয়ে ওঠে, তখন সেই সবের সঙ্গে অঙ্কের বা গণিতের কোন পার্থক্য থাকে না।
    ভালো সাহিত্য কর্ম আর ভালো অঙ্ক সমার্থক। Muse of the Universe কে যদি ঠিক ভাবে ভাবা যায় তবে সেটা বিচিত্র অঙ্কের ঐকতান। বিশ্বজাগতিক নিয়মের অঙ্কই তো ছন্দ।
    মানুষের জীবনকেও তাই অঙ্কের নিয়মে ছকে নিয়ে তার মধ্যে থেকে এসেন্স অফ লাইফ বা জীবন নির্যাস সংগ্রহ করেছেন রাজশেখর।
    একটি শিশু যেমন হামাগুড়ি দিয়ে সারা বাড়ীতে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে, একটা লাল পিঁপড়কেও মুখে পোরে তার স্বাদ জানার জন্য তখন পিঁপড়ের হুলের তীক্ষ্ণ কামড় পেয়েও তাকে ছাড়ে না, কৌতুহলের জন্য, রাজশেখরও সেই রকম কৌতুহলের অধিকারী ছিলেন।
    (চলবে)
    তথ্যঋণ এবং কৃতজ্ঞতা:- রাজশেখর বসু স্মরণিকা ( আলিপুরদুয়ার, ১৯৮৩), চরিতাভিধান- সাহিত্য সংসদ, ইন্টার নেট।

    ( চলবে)
  • de | 213.197.***.*** | ০৬ জুলাই ২০১২ ১৪:৩৬553559
  • চলুক! খুব ভালো লাগছে!
  • ঐশিক | 213.2.***.*** | ০৬ জুলাই ২০১২ ১৪:৫৫553560
  • চললে তো, ঘনাদা শুরু করেন আর শেষ করেন না :( পুরীর-রথ নিয়ে লেখাটা বেশ হছিল কিন্তু শেষ করলেন না ঘনাদা।
  • শঙ্খ | 169.53.***.*** | ০৬ জুলাই ২০১২ ১৯:১৭553561
  • খুব সুন্দর লিখেছেন কিন্তু ঘনাদা!! আরেকটু হোক না।
  • ঘনাদা | 233.223.***.*** | ০৭ জুলাই ২০১২ ২১:৪৪553562
  • পুরো লেখাটা লেখাই আছে । তাই, পরশুরাম শেষ হবে । কথা তো বলার জন্য ধারাবাহিক ভাবে বেরুচ্ছে । তাই বেরুনোর আগে দিতে পারবো না !
    বিনয় সহকারে বলি, এবারে প্রচুর ফরমাস আছে বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনের জন্য লেখার ! পাইয়ের ও প্রচণ্ড চাপ দিয়ে চলেছে লেখার জন্য ।
    আমা খুব আলসে আর আঙ্গুলের ব্যাথায় বয়সোজনিত কারণে কাবু ।
    কতটা কি হয়ে উঠবে, নিজেও জানি না ।

    লিংকটা দিলাম:-
    http://kothatobolarjonyei.blogspot.in/2012/07/poroshuram1.html
  • ঘনাদা | 125.187.***.*** | ১৯ জুলাই ২০১২ ১৬:০৯553563
  • রাজশেখর বসুর জবানীতেই শোনা যাক, কেন তিনি ছদ্মনাম নিয়েছিলেন! (ডঃ সুশীল রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকার)
    “পরশুরাম একজন স্যাকরা। পৌরাণিক পরশুরামের সঙ্গে এর কোনো সম্বন্ধ নেই। স্বনামে গল্প ছাপানোতে আমার একটু সংকোচ ছিল। বন্ধু-বান্ধব সহ একটা ছদ্মনামের চিন্তা করছিলাম। দৈবক্রমে সেই সময় তারাচাঁদ পরশুরাম নামে একজন কর্মকার, আমাদের পার্শি বাগানের বাড়ীর “উৎকেন্দ্র”র মজলিসে উপস্থিত হয়। হাতের কাছে তাকে পেয়ে তার নামটাই নিয়ে নেই। এই নামের পেছনে অন্য কোনো গূঢ় উদ্দেশ্য নেই। পরে, আরও লিখবো জানলে ও-নাম হয়তো নিতাম না।”
    এবারে, “উৎকেন্দ্র”র মজলিসের ব্যাপারে কিছু বলি। পৈত্রিক বাড়ী, ১৪ নং পার্শি বাগান লেনে বসতো “উৎকেন্দ্র”র বৈঠক। “উৎকেন্দ্র” র নামটা তৈরি হয়েছিল- উৎকট + কেন্দ্র, এই দুটো শব্দ অনুসারে। “উৎকট” এই নামটার প্রথম অক্ষর উৎ এবং কেন্দ্র নিয়ে। এতে, রাজশেখর ছাড়াও থাকতেন তাঁর চার ভাই, জলধর সেন, ব্রজেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, শৈলেন সাহা, রঙীন হালদার, প্রেমাংকুর আতর্থী, যতীন সেনের মত সেই কালের জ্ঞানী-গুণীরা। অশ্লীল এবং যৌন – আলোচনাও বাদ যেত না। এখানেই রাজশেখর বসুর গড্ডালিকার গল্পগুলো পাঠ করা হত।
    জলধর সেন, তা “ভারতবর্ষ” পত্রিকায় ছাপান। পরে, এটা বই আকারে প্রকাশিত হলে, রাজশেখর প্রথম এই “পরশুরাম” নামটা ব্যবহার করেন। তখন তাঁর বয়স ৪২ বছর। এদিক দিয়ে পরবর্তী কালের প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলির সঙ্গে মিল আছে।
    তাঁর প্রথম রচনা “দেশে-বিদেশে” বইটাও মুজতবার ৪২ বছরে প্রকাশিত হয়। আমার ব্যত্তিগত পর্য্যবেক্ষণ হলো-
    বিশাল মাপের সাহিত্যিকদের কোনো না কোনো ভাবে একটা অদ্ভুত মিল থেকেই যায়।
    এখন কথা হচ্ছে, রাজ শেখর বসুর জনপ্রিয়তার উৎস কোথায়?
    মৌলিক পরিকল্পনার উদ্ভাবনী শক্তি হাস্যরস সৃষ্টির প্রথম এবং প্রধান কথা। রাজশেখর বসুর তা সহজাত কবচ-কুণ্ডলের মতই ছিল। এছাড়া, তাঁর হাস্যরস সৃষ্টির পেছনে কাজ করত একটা স্বতঃস্ফূর্ত ভাব। কোনো কৃত্রিমতা তাঁর রচনাকে কোনোভাবেই স্পর্শ করে নি। তাই তিনি বাংলা সাহিত্যে বিরাজ করেছেন, রাজকীয় মহিমায়।
    এটার কারণ “বোধহয়” তিনি নিজেই বলে গিয়েছেন। ডঃ সুশীল রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে, তিনি একবার বলেছিলেন:-
    “জীবনে আমি খুব কম লোকের সঙ্গে মিশেছি। তাই আমার অভিজ্ঞতাও খুব কম। গ্রাম বেশী দেখি নি। কর্মসূত্রে যাদের সঙ্গে মিশেছি, তারা সবই ব্যবসায়ী এবং দোকানদার ক্লাস।”
    আমার মনে হয়, ব্যবসায়ী এবং দোকানদার ক্লাসের সঙ্গে তাঁর যে কথোপকথন হত, তাতেই তাঁর গল্পের ঝুলি ফুলে ফেঁপে যেত। শান্ত, গম্ভীর, এবং সংযমী-বিদগ্ধ এই রস সাহিত্যিক, তাই রসিকতার সামান্য সুযোগ পেলেই তার সদ্ব্যবহার করতেন।
    ১৯২২ সালে,পরশুরাম ছদ্মনামে, তাঁর প্রথম রচনা- শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী লিমিটেড। প্রকাশিত হয়েছিল, জলধর সেন সম্পাদিত “ভারতবর্ষ” পত্রিকায়। প্রথম রচনার কথা বলতে গিয়ে, তাঁর স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিমায় তিনি বলেছিলেন (ডঃ সুশীল রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে):- “আমার প্রথম রচনা অবশ্য- কবিতা ছিল। শিশুদের হাম বা ডিপথেরিয়া হওয়ার যে একটা প্রাকৃতিক নিয়ম আছে, ঠিক সেই প্রাকৃতিক নিয়মেই আমি দু-একটি কবিতা লিখি, কিন্তু সেটা পনেরো–ষোল বছর বয়সেই চুকে যায়। বাল্যের কবিতা রচনার কথা বাদ দিলে বেঙ্গল কেমিক্যালসেই আমার সাহিত্য–চর্চার আরম্ভ। এখানেই তার হাতে খড়ি, বলতে পারা যায়। অবশ্য মূল্য–তালিকা তৈরি করা বা বিজ্ঞাপন লেখাকে যদি কেউ সাহিত্য বলে গ্রাহ্য করে! কেন না, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী লিমিটেডের আগে আমার যা-কিছু বাংলা রচনা তা এছাড়া আর কিছু না।”
    শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী লিমিটেড লেখা প্রকাশিত হবার পর, রাজশেখর বসু বলেছিলেন, লেখাটি পড়ে পাঠকদের ধারণা হয়েছিল, এই রচনা কোনো উকিলের।
    এই “শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী লিমিটেড” এর গল্পে, আমরা ব্যঙ্গের প্রাথমিক চকিত স্পর্শ পেয়েছিলাম। ভণ্ডামি আর মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে, বক্তব্য সেখানে তির্যক রেখায় অঙ্কিত হয়ে ছিল।
    স্বদেশী কোম্পানী বা বাংলার যৌথ ব্যবসা গুলো মোটামুটি ভাবে চিরকালই জাল-জুয়াচুরির আখড়া ("এই ট্র্যাডিশন সমানে চলিতেছে")।
    বাঙালীর এই জাতীয় চরিত্রের মজ্জাগত প্রবৃত্তির বিরুদ্ধেই হাস্য-রসাত্মক দৃষ্টি ভঙ্গিতে আক্রমণ করেছিলেন, রাজশেখর বসু।
    ব্রহ্মচারী অ্যান্ড ব্রাদার–ইন–ল, জেনারেল মার্চ্চেন্টসের শ্যামানন্দ ব্রহ্মচারী, অটল, গণ্ডেরিরাম- এই সব চরিত্রকে আজও আমরা বাস্তব জীবনে দেখতে পাই। মানুষ ঠকানোর ব্যবসা এদের দীর্ঘকালের।
    ব্যঙ্গের প্রয়োজনে কিছু অতিরঞ্জনের ছোঁয়া থাকলেও, কখনই তা বাস্তবকে ছাড়িয়ে যায় নি।
    গণ্ডেরিরাম ব্যবসা করে ভেজাল ঘিয়ের। চর্বি, চিনা বাদাম তেল মিশিয়ে যে বস্তুটি সে উৎপাদন করে, তার নাম দিয়েছে- "ঘই"।
    নিরামিষ ভোজী, ফোঁটা-কাটাওয়ালা, ভজন-পূজনে সমর্পিত প্রাণ গণ্ডেরিরাম এই পাপ কাজ করেন কি করে?
    অটলের এই প্রশ্নের জবাবে গণ্ডেরিরাম উত্তর দিচ্ছে:-
    “পাপ? হামার কেনো পাপ হোবে? বেওসা তো করে কাসেম আলি। হামি রহি কলকাত্তা ! ঘই বনে হাথরাসমেঁ। হামি না আঁকসে দেখি, না নাকসে শুঁখি। হনুমানজি কি কিরিয়া। হামি তো স্রিফ্ মহাজন আছি। রূপয়া দে কর খালাস।”
    এই সংলাপে হাসি চেপে রাখা দায় হয়।
    “শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী লিমিটেড” র প্রসপেক্টাসটিও চরম ভাবে শ্লেষাত্মক।
    “যাত্রীদের নিকট হইতে যে দর্শনী ও প্রণামী আদায় হইবে, তাহা ভিন্ন আরও নানা প্রকারে অর্থাগম হইবে। দোকান, বাজার, অতিথি শালা, মহাপ্রসাদ বিক্রয় হইতে প্রচুর আয় হইবে। এতদ্ভিন্ন by product recovery এর ব্যবস্থা থাকিবে। ৺ সেবার ফুল হইতে সুগন্ধি তৈল প্রস্তুত হইবে, এবং প্রসাদী বিল্বপত্র মাদুলিতে ভরিয়া বিক্রিত হইবে। চরণামৃতও বোতলে প্যাক করা হইবে। বলির নিহত ছাগ সমূহের চর্ম ট্যান করিয়া উৎকৃষ্ট “কিড-স্কিন” প্রস্তুত হইবে এবং বহুমূল্যে বিলাতে চালান যাইবে। হাড় হইতে বোতাম হইবে। কিছুই ফেলা যাইবে না।”
    আমরা রাজশেখর পূর্ব ত্রৈলোক্যনাথের ডমরু-চরিতেও আমরা এই ধরণের বাঙালীর যৌথ ব্যবসার সন্ধান পেয়েছি।

    (চলবে)

    তথ্য ও ঋণ স্বীকার:-
    আলিপুর দুয়ার থেকে প্রকাশিত “রাজশেখর বসু (পরশুরাম) স্মরণিকায়”, ১৯৮৩ তে প্রকাশিত প্রবন্ধ সকল।
    ১। সর্বশ্রী বিমলেন্দু বিষ্ণু, কমলেশ রাহা রায়, ডঃ জোৎস্নেন্দু চক্রবর্তী, মিহির রঞ্জন লাহিড়ী, ডঃ হরিপদ চক্রবর্তী, ডঃ সুরঞ্জন দত্তরায়, অর্ণব সেন, পবিত্রভূষণ সরকার।
    ২। সংসদ বাংলা চরিতাভিধান।
    ৩। ইন্টারনেট।
    ৪। পরশুরাম রচনাবলী।
  • ranjan roy | 24.96.***.*** | ১৯ জুলাই ২০১২ ২২:২৭553564
  • ঘনাদা,
    খুব ভালো।, আছি।
  • nina | 78.34.***.*** | ২০ জুলাই ২০১২ ০৪:৩৯553565
  • ঘনাদা--একেবারে সুপার--as usual
  • ঘনাদা | 125.187.***.*** | ৩০ জুলাই ২০১২ ১৫:০২553566
  • আজ বেরিয়েছে তৃতীয় কিস্তি:-

    উদ্ভট হাস্যরসের পরিবেশন আমরা দেখি, বিরিঞ্চি বাবা, মহাবিদ্যা, কচি সংসদ, চিকিৎসা সংকট, উলট পুরাণ; এই সব গল্পে। ভণ্ডামি, জোচ্চুরি, ভাববিলাস, সমাজ বিরোধিতাকে তীব্র ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এটা আমাদের অজানা নয়, ব্যঙ্গ অনেক সময়েই রূপকের মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়। যেমন, একটা উদাহরণ হাতের সামনেই আছে- রবীন্দ্রনাথের, “তোতা কাহিনী”। এটাও রূপক ধর্মী ব্যঙ্গ। “উলট পুরাণ” গল্পটিতে পাই রূপকের মধ্যে পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ। এটিকে, রাজনৈতিক ব্যঙ্গ বা ইংরেজিতে বলা যায় পলিটিকাল স্যাটায়ার। “বিরিঞ্চি বাবা”-য় পাই গুরুগিরির ভণ্ডামির মুখোশ টান মেরে খুলে ফেলা, “কচি-সংসদ” গল্পে পাই তরুণ সমাজের উৎকট ভাববিলাসিতা আর ন্যাকামির হাস্যকর স্বরূপ সম্মুখে আনা, “চিকিৎসা সঙ্কট”-এ মানুষের হাস্যোদ্দীপক আচরণ, “মহাবিদ্যা”-য় পাই চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যার মহিমা কীর্তন। এই সবেতে, আমরা একটা জিনিস দেখতে পাই, সেটা হল, আহাম্মুকি-অপদার্থতা-ভণ্ডামি- কাপুরুষতার শাশ্বত রূপ। কোন একটা সীমিত কালে
    আটকে নেই এই সব চরিত্র। সব চরিত্র যেন চেঁচিয়ে বলছে, “দুনিয়া বুরা মুই সাচা হয়ে কি করবো”। অসাধারণ মন্তব্য।
    রাজশেখরের গল্পে আমরা দেখতে পাই, সুনিপুণ মনের উজ্জ্বল প্রকাশ। কবিতাতেও তিনি তাঁর সংযম সিদ্ধ রসিকতা বোধ- বিদ্যা আর wit দেখিয়েছেন।

    তিনি লিখছেন-

    “মাননীয় ভদ্রমহিলা ও ভদ্রলোকগণ

    এবং আর সবাই যাঁদের এপাড়ায় বাস,

    মন দিয়ে শুনুন আমার অভিভাষণ,

    আজ আমাদের আলোচ্য- Eat more grass।”

    কবিতাটার উপসংহারে তিনি বলছেন –
    “এদের দেখে শিখুন। যদি আপনারাও চান

    এই অতি আরামের আদর্শ যাত্রা,

    তবে আজ থেকেই উঠে পড়ে লেগে যান,

    সব কমিয়ে দিয়ে বাড়ান ঘাসের মাত্রা।”

    এবারে দেখি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। রাজশেখরের পড়াশোনা- দ্বারভাঙ্গা স্কুল, পাটনা কলেজ, প্রেসিডেন্সী কলেজ। ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে রসায়নে এম.এ (তখন এম.এস সি. ছিল না)-তে তিনি প্রথম হলেন। তারপর ওকালতি পাশ করলেও বেশিদিন ওকালতিতে মন লাগে নি। বাবা, চন্দ্রশেখর তখন তাঁর ছেলেকে তুলে দিলেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের হাতে (১৯০১)। সেই থেকে তিনি আমৃত্যু বেঙ্গল কেমিক্যালেই থেকে গেলেন। ১৯০৪ থেকে ১৯৩৩, এই ত্রিশ বছর ছিলেন ম্যানেজার আর বাকী ১৯৬০ পর্যন্ত (২৭ বছর) – ডিরেক্টর।

    নিজে রিসার্চ করে কসমেটিকসের কেমিক্যালস্ আবিষ্কার করা, লোক দিয়ে করান সেই সবের ব্র্যান্ড নেমিং- মোট কথা, জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ, সবই করতেন তিনি। বাড়ীতেও একটা ছোটোখাটো ল্যাবরেটরী করেছিলেন। অফিস থেকে ফিরে এসে, তিনি এখানেও নানা রকম ছোট খাট পরীক্ষা- নিরীক্ষা করতেন ।

    সারাটা জীবন এক সুশৃঙ্খল কর্মপদ্ধতির কঠিন বন্ধনে নিজেকে বেঁধে নিয়েছিলেন। সব হিসেব নিকেশ করেই চলতেন। নাহলে ভেবে দেখুন তো, রামায়ণ- মহাভারত –চলন্তিকা অভিধান- সাহিত্য- অফিস, কিভাবে সব একসঙ্গে সামলানো যায়? ভাবাই যায় না! এই প্রসঙ্গে, একটা কথা না বললেই নয়। তাঁর লিখিত নির্দেশ ছিল, মৃত্যুর পর যেন “বল হরি, হরি বোল” বলে মৃতদেহ না নিয়ে যায়। কিন্তু, তাঁর প্ল্যানের সঙ্গে মহাকালের প্ল্যান মেলে নি। সে কথা পাঠক মাত্রই পরবর্তীতে বুঝতে পারবেন।

    অপ্রয়োজনীয় কথা তো বলতেনই না, সময়ও খরচ করতেন না। একটা মজার দৃষ্টান্ত দিচ্ছি। একবার পেন্সিল কাটতে গিয়ে, আঙ্গুল কেটে যায়। আয়োডিন লাগিয়ে বেঁধে রাখলে প্রচুর লোকে প্রশ্ন করবে আর তার উত্তর দিতে হবে জেনে তিনি বড় করে একটা বিজ্ঞাপন লিখে টেবিলে রেখেছিলেন, “পেন্সিল কাটতে গিয়ে আঙ্গুলটা একটু কেটেছে। ভয়ের কারণ নেই”।

    রাজশেখর বিয়ে করেছিলেন পটলডাঙ্গার দে পরিবারে। প্রসঙ্গত বলে রাখি কবি বিষ্ণু দে এই পরিবারেরই সন্তান। রাজশেখরের স্ত্রীর নাম ছিল মৃণালিনী। একমাত্র মেয়ে প্রতিমার বিয়ে দিয়েছিলেন, রাসায়নিক অমর পালিতের সঙ্গে। ক্যানসারে (মতান্তর আছে) অমর মারা যান ১৯৩৪ সালে। সেই শোক সামলাতে না পেরে, মেয়ে তার ঠিক এক ঘণ্টা পরেই মারা যান হার্ট ফেল করে। এদের একই সঙ্গে সৎকার করা হয়। প্রতিমা রেখে গিয়েছিলেন, দুটি শিশু সন্তান। ছেলেটা ছিল, জন্ম থেকেই বোধ শক্তিহীন। নাতনী আশাই, স্বামী-ছেলে নিয়ে ছিলেন, রাজশেখরের শেষ জীবনের সাথী। মৃণালিনী মারা যান ১৯৪২ সালে। রাজশেখরের বয়স তখন ৬২।
    আগেই বলেছি, রাজশেখরের প্রথম বই “গড্ডলিকা” বের হয় তাঁর ৪২ বছর বয়েসে। মোট বই– ২১ টি। দু’খানা তাঁর মারা যাবার পর প্রকাশিত। ১ টা অভিধান, ৯ টা গল্পের বই, ৫ টা অনুবাদ মূলক বই, ৩ টা প্রবন্ধ, ২ টা বিজ্ঞান আর ১ টা কবিতার বই। “গীতা”- বইটি তিনি আগে লিখলেও ছাপান নি। কারণ, ছোট ভাই গিরীন্দ্রশেখর মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে শ্রীমদ্ ভগবদ্ গীতার ওপর একটা বিরাট বই লিখেছিলেন। গিরীন্দ্রশেখর বলেছিলেন, দাদা রাজশেখরের “গীতা”র পাণ্ডুলিপি সাহায্য তিনি নিয়েছিলেন। রাজশেখর তাই পাণ্ডুলিপির ওপর বড় করে লিখে রেখে ছিলেন, “ছাপা হবে না”।
    প্রতিমা মারা যায় রাজশেখরের ৫৪ বছর বয়সে। স্ত্রী তার ৮ বছর পর। তারপরও তিনি ১৮ বছর ধরে, সমস্ত শোক বুকে রেখে সাহিত্য চর্চা করেছেন, নাতি নাতনীকে বুকে করে আগলে বড় করেছেন। নাতনীর ভাল বিয়ে দিয়েছেন।
    তিনি নিজেই নিজের চিকিৎসা করতেন। রক্তচাপ বাড়ায়, চারবার অজ্ঞানও হয়েছিলেন। শেষে ১৯৬০ সালের ২৭ শে এপ্রিল, দুপুর বেলা হৃদ্‌রোগে তিনি মারা যান।

    (চলবে)

    তথ্য ও ঋণ স্বীকার:

    আলিপুর দুয়ার থেকে প্রকাশিত “রাজশেখর বসু (পরশুরাম) স্মরণিকায়”, ১৯৮৩ তে প্রকাশিত প্রবন্ধ সকল।
    ১। সর্বশ্রী বিমলেন্দু বিষ্ণু, কমলেশ রাহা রায়, ডঃ জোৎস্নেন্দু চক্রবর্তী, মিহির রঞ্জন লাহিড়ী, ডঃ হরিপদ চক্রবর্তী, ডঃ সুরঞ্জন দত্তরায়, অর্ণব সেন, পবিত্র ভূষণ সরকার।
    ২। সংসদ বাংলা চরিতাভিধান।
    ৩। ইন্টারনেট।
    ৪। পরশুরাম রচনাবলী।
  • বিপ্লব রহমান | 212.164.***.*** | ৩০ জুলাই ২০১২ ২০:১৬553558
  • আরে! ফটিক-বিরিঞ্চি সমগ্র এইখানে? ভালোই হলো। এখন থেকে পুরো পর্ব টইয়ের এই সুতোতেই পড়বো। কষ্ট করে ঘনাদার ফেবু সুতো খুঁজেপেতে লেখা পড়তে হবে না। আর মতামত যা দেওয়ার এখানেই দেবো। নানান সুতোয় গিয়ে মতামত দেওয়াও বেশ ঝামেলার ব্যাপার।

    রাজশেখর বসুকে বিনম্র শ্রদ্ধা।

    ঘনাদা, জিন্দাবাদ। চলুক।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন