কদিন আগের পুরোন কেসটার আপডেট দিয়ে যাই।সেই মেয়েটি আজ মাইনে পেয়েছে। একমাস কাজ করেছে। মাইনে পেল, কিন্তু স্যালারি স্লিপ পায় নি। ওরা ওসব বিশেষ দেয় টেয় না।
নতুন কোম্পানিতে দিন সাতেকের মধ্যেই জয়েন করবার জন্য ডেকেছে। তবে ক্লজ ছিল স্যালারি স্লিপ বা রিলিজ লেটার নিয়ে আসতে হবে।
আমি বুদ্ধি দিলাম সব কথা খুলে বলতে নতুন কোম্পানিকে। কিচ্ছু না লুকিয়ে। মেয়েটা ভয়েই মরে।
বললাম, অত ভয় পাস না, জীবন একটাই, সাহস নিয়ে বাঁচ।
তবে এসব কথায় বিশেষ কাজ হয় না, মার খেতে খেতে এদের মার খাওয়াটাই অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে।
লাঞ্চ ব্রেকে ফোন করে বলল, কী করি বলতো?
আমি বললাম নতুন কোম্পানীর এইচারকে মেসেজ কর।
নিম্নরূপ মেসেজ পাঠানো হলো।
Hello ****, I have received my salary for the month of May, but the salary slip is not yet issued.
I am trying to get my salary slip. I will contact you again with further developments.
এরপর মিনিট দশেক অপেক্ষা করে আরেকটি মেসেজ পাঠানো হলো। নিম্নরূপ
Dear ****,
as I understand, they may neither issue a pay slip, nor a release letter on time.
Nonetheless, I am going to submit my resignation today, as I am eagerly waiting to join ""XYZ" asap.
Is this okay?
Have a nice weekend,
Thanks again,
ABCD
এরপর উত্তর পেল OK
ব্যস, আর চিন্তা নেই।
এদিকে বস বারবার ডেকে সকলের সামনে অপমান করে যাচ্ছে, হ্যান করেঙ্গা ত্যান করেঙ্গা করে। ও যেসব কাজ করে দিয়েছে, সেসব কাজ অন্য মেয়েরা নিজেরা করেছে বলে চালাচ্ছে। খুবই অসুস্থ পরিবেশ।
ও লিফটের কাছে এসে আমাকে ফোন করছে বারবার।
বললাম, এসব নিয়ে ভাবিস না, রেজিগনেশনটা দিয়ে দে।
বলছে, পরে যদি রিলিজ লেটার না দেয়?
— তাহলে গাঁড় মারা। ও জীবনেও রিলিজ লেটার দেবে না। ছমাস পরে ছাড়লেও দেবে না। মধ্যিখান থেকে ঐ ছমাসে তুই পাগলে পরিণত হবি। হাতে পাওয়া ভাল চাকরিটাও হাতছাড়া হবে।
তা শেষে, বাড়ি ফিরে রেজিগনেশন মেল করে দিয়েছে। সেখানেও কেন ছাড়ছে সেসব নিয়ে মিথ্যে কারণ লিখতে চাচ্ছিল। বারন করলাম। কারণ দেখানোর বাধ্যবাধকতা নেই। ছেড়ে দিচ্ছি — এটাই যথেষ্ট। ক্রীতদাস মনোবৃত্তি থেকে বেরিয়ে আয়!
কারণ দেখায় নি। দু লাইনের রেজিগনেশন মেল করে দিয়েছে।
কালকে শেষবারের মত অফিসটাতে যাবে, কাজ হ্যান্ডওভার করতে।
— কাল যদি বস ডেকে জিগ্যেস করে, কিঁউ রেজিগনেশন দিয়া? কী বলব?
— তুই বল, আমি শুনছি।
— বলব, মেরা কাম পে তো আপ স্যাটিসফায়েড নেহি, ইসি লিয়ে ম্যায়নে সোচা...
— থাম!
— কেন?
— বাংলায় বলবি। পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ভাষা বাংলা।
— কিন্তু লোকটা তো মারোয়াড়ি।
— তো? ওর প্রদেশে গেলে ও তোর সঙ্গে বাংলা বলে?
— হি হি, ঠিক বলেছিস।
— এবং, কোনও কৈফিয়ৎ দিবি না। বলবি, আমার এখানে পোষাচ্ছে না, তাই ছেড়ে দিলাম চাকরিটা।
— তাহলে যদি জিগ্যেস করে, কিঁউ, কেয়া প্রবলেম হ্যায়?
— বলবি, এখানকার পরিবেশ আমার সুট করছে না।
— আচ্ছা। কিন্তু...
— ভয় পাস না। এদের ভয় পেয়ে পেয়েই বাঙালীরা শেষ। দাপটের সঙ্গে চাকরি ছাড়বি। মনে থাকবে তো?
— হি হি, থাকবে