শুধু তাই নয়, মনুস্মৃতি মেনে অনুমোদন করছেন যে শূদ্র যদি কান দিয়ে বেদ শোনে তবে শাস্তিস্বরূপ তার কানে গরম সীসে ঢেলে দিতে হবে, বলা বাহুল্য অন্য শাস্তিও অনুমোদিত- “শ্রবণাধ্যয়নার্থপ্রতিষেধাৎ শৃতেশ্চ”[1]।
২) গীতার চতুর্থ অধ্যায়ের একটি শ্লোককে - 'চাতুর্বর্ণং ময়া সৃষ্ট গুণকর্মবিভাগশঃ - চেরিপিকিং করে ওটা বলা হয়। কিন্তু এই দুটো দেখুনঃ
ক) 'স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরোধর্মো ভয়াবহ , (৩/৩৫)।
তখন হিন্দু-মুসলমান ছিল না। এখানে ধর্ম বলতে নিজের জাতি বা বর্ণের ধর্ম। মনুস্মৃতি ও অন্যান্য সমস্ত স্মৃতি হোল ধর্মশাস্ত্র। মনুস্মৃতিতেও একই কথা বলা হয়েছে। (জগদীশ চন্দ্র ঘোষের টীকা দেখুন)।
সমস্ত জাতি তার স্বভাবজ গুণ নিয়েই জন্মায়। (১৮/৪১-৪৬)।
পরে আরো ব্যখ্যা করেছেন যে অন্যের ধর্ম ভাল ভাবে পালন করার চেয়ে নিজের ধর্ম খারাপ ভাবে পালন করাও শ্রেয়স্কর, । 'শ্রেয়ান স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ।
স্বভাবনিয়তং কর্ম কুর্বন্নাপ্নোতি কিল্বিষম্।। (১৮/৪৭)
আরও দেখুন,ঃ হে কৌন্তেয়! সহজাত কর্ম দোষযুক্ত হলেও ত্যাগ করা উচিৎ নয়।
'সহজং কর্ম কৌন্তেয় , সদোষম্ অপি ন ত্যজেৎ। (১৮/৪৮)।
অর্থাৎ, ভারতীয় দর্শন জাতিকে জন্মগত মানে ,গুণগত নয়।
আর মনুসংহিতা তো বেদপাঠের অপরাধে শূদ্রদের জিভ, কান ইত্যাদি --। সমাজের অর্ধেক হোল নারী। তাদের পৈতে হয়না। কাজেই তারাও বেদপাঠের অধিকারী নয়। ব্রাহ্মণ পরিবারের হলেও নয়। তারা শূদ্রদের মত নমঃ বলবে, ওঁ নয়, কারণ ওটি বৈদিক মন্ত্র।
[1] ব্রহ্মসূত্র, শাংকরভাষ্য, শ্লোক ৩.৯.৩৮।