"কাজেই প্রশ্নটা শুধু কলোনিয়াল নয়, প্রশ্নটা হয়ে গেছিল মরালিটির। অবশ্য ইটনে যেত লর্ডের বাচ্চারা। তারাও লর্ড হবে। তাদের কলকারখানায় চাকরির প্রয়োজন নেই। তাই তাদের বিজ্ঞান না শিখলেও চলবে, এই হচ্ছে ধারণা।"
-- সম্বিতের বক্তব্য দারুণ ভাবে তুলে ধরেছে বর্তমান বিতর্কে এই প্যারাডাইম শিফটের গুরুত্ব।
এলেবেলে ও এস এম এর বিতর্ক খানিকটা আধা গ্লাস খালি নাকি আধা গ্লাস ভরাতে আটকে রয়েছে।
প্রশ্ন হল গ্লাসটি ( ভারতে বিজ্ঞানচর্চা) আগে ভরা ছিল , ইংরেজ আসায় খালি হল? নাকি আগে খালি ছিল , ইংরেজ আসায় উপচে পড়ল?
এলেবেলের বক্তব্যের ধরতাই হল --আমি যা বুঝলাম-- শালার ব্যাটা শালা ইংরেজ তার কলোনিয়াল উদ্দেশ্যপূর্তির জন্যে মেপেজুকে যতটুকু দরকার তাই করেছে ,তার বেশি নয়। সে ইউরোপীয় সাহিত্যই হোক , কি ,বিজ্ঞান চর্চা। যেহেতু ভারতের উন্নয়ন তাদের লক্ষ্য ছিল না, পায়ে বেড়ি পরিয়ে রাখাই আসল ব্যাপার। রেল-ডাকখানা- বিজ্ঞান যাই হোক তা হল উপরি পাওনা, ফাউ।
-- এনিয়ে কোন বিতর্ক নেই। প্রশ্ন হল ইংরেজদের উদ্দেশ্য যাই হোক, ওই কোল্যাটারালে আমরা লাভবান হয়েছি কিনা? পাশ্চাত্ত্য সংস্কৃতির ছোঁয়া না পেলে, প্রিন্টিং প্রেস না এলে তালপাতার পুঁথির থেকে আধুনিক রিপাবলিকের ধারণা আমাদের মধ্যে দ্রুত শেকড় ছড়াত কি? সমস্ত তৃতীয় বিশ্বে এমনকি আফ্রিকাতেও কলোনিয়াল প্রভুদের ভাষা, সংস্কৃতির প্রসার একদিকে যেমন শিক্ষিত গোলাম/কেরাণী বানিয়েছে , সেটাই আরেকদিকে বিদ্রোহ, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা এবং স্বাধীন হলে কীভাবে দেশ গড়া হবে তার কাঠামোর স্বপ্ন যুগিয়েছে। কলোনি ধ্বংসের বীজ এর মধ্যেই নিহিত ছিল।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানুষ এক ভেবে কিছু করে ফল হয় আর।
সেই অ্যাডাম স্মিথের রুটিওয়ালা ক্যান রুটি বানায় ইত্যাদি ইত্যাদি।
পি এসঃ শ্রমিকশ্রেণীকে যারা মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছেন তাঁরা কেউ শ্রমিক নন , বরং শোষকশ্রেণীতে জন্ম নেয়া, পালিত হওয়া লোকজন।
ইটনের সিলেবাস দিয়ে ভারতে বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাস বলা অনেকটা ফার্পোর মেনু দেখে বিংশ শতকের কলকাতার খাবারের ইতিহাস রচনার মতন।
প্রথম থেকে দেখি। হেস্টিংস ইন্ডোফাইল ছিলেন। উইলিয়াম জোন্স, এশিয়াটিক সোসাইটি এসব করে হেস্টিংস পুরনো দেশীয় চর্চার পেছনে পয়সা ঢেলেছিলেন। এই ওরিয়েন্টালিস্ট শিক্ষার জোরে বিলিতি শিক্ষা, বিশেষতঃ বিজ্ঞানের দিকে কোন ঝোঁকই পড়ল না। এ হল সরকারী পজিশন। অন্যদিকে ক্রিশ্চান মিশনারিরা ইংরিজি শিক্ষা চালাবার চেষ্টা করছিলেন নিজেদের উদ্যমে। এই সরকারী-বেসরকারী ওরিয়েন্টালিস্ট-বনাম-ওয়েস্টার্নের টানাপোড়েন চলবে অনেকদিন। মূল টানাপোড়েন অবশ্য শিক্ষার মাধ্যম নিয়ে। ওরিয়েন্টালিস্টরা চাইছেন দেশীয় ভাষা - মূলতঃ সংস্কৃত আর আরবী। পশ্চিমপন্থীরা চাইছেন ইংরিজি। টানাপোড়েনের শেষ হবে ১৮৩৫-এ মেকলের রেফারিগিরিতে, পশ্চিমিদের পক্ষে। কলকাতা তথা ভারতে ১৮৩০-এর দশক থেকেই বিজ্ঞান-শিক্ষা চালু হয়েছিল। তবে ইংল্যান্ডে সেটা ভিক্টোরিয়ান যুগ। আমরা যে ভিক্টোরিয়ান মরালিটি, ভিক্টোরিয়ান প্রুডারি এসবের কথা শুনি সে জিনিস ইংল্যান্ডের স্কুলশিক্ষায় ঢুকে পড়েছিল। ইটন-টিটনের মতন সুপার এলিট পাবলিক স্কুলে বিজ্ঞানকে ল্যাং মেরে ল্যাটিনশিক্ষার দিকে জোর দেওয়া হয়েছিল, আত্মিক উন্নতিসাধনের জন্যে। ভিক্টোরিয়ান যুগের আগে কিন্তু বিজ্ঞানের শিক্ষা মাধ্যমিক স্তরে ইংল্যান্ডে ছিল। এই হল এক্সিকিউটিভ সামারি। নীচে এরই চর্বিত-চর্বন।
ইটন দিয়েই শুরু করি - অষ্টাদশ শতকে ইংরেজরা স্কুলে বিজ্ঞান কী শিখছে? তারা বিজ্ঞান পড়ছে Quadrivium নামে চারটে বিষয়ে, যার অভিধানের মানে হল, a medieval university curriculum involving the “mathematical arts” of arithmetic, geometry, astronomy, and music.
Arithmetic taught the science of the numbers, Geometry focused on the science of forms, Music taught the science of sound and harmony, Astronomy was the study of time (of “form in motion”)
উচ্চশিক্ষায় এই হলেও অবশ্য এর ঠিক কতটা স্কুল অব্দি পৌঁচেছিল, বলা মুশকিল। কিন্তু পৌঁচেছিল, কারণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভেলিউশনের পরে কলকারখানায় ল্যাটিনের থেকে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির প্রয়োজন। কাজেই লেখালিখি হচ্ছে 'আরও বিজ্ঞান পড়াও' এই বলে।
মুশকিল হল, ঊনবিংশ শতকে ভিক্টোরিয়ান যুগের শুরুতে আত্মিক উন্নতির দিকে এত নজর গেল যে বিজ্ঞান শিক্ষায় ভাঁটা পড়ল। " Girls from upper class families were taught by a governess. Boys were often sent to public schools like Eton. In Victorian public schools, boys were taught the classics like Latin but little else. Science and technical subjects were neglected. Public schools also placed great emphasis on character building through sports and games."
কাজেই প্রশ্নটা শুধু কলোনিয়াল নয়, প্রশ্নটা হয়ে গেছিল মরালিটির। অবশ্য ইটনে যেত লর্ডের বাচ্চারা। তারাও লর্ড হবে। তাদের কলকারখানায় চাকরির প্রয়োজন নেই। তাই তাদের বিজ্ঞান না শিখলেও চলবে, এই হচ্ছে ধারণা।
এদিকে ভারতে ১৮১১ সালে লর্ড মিন্টো লিখেছেন - "It is common remark that Science and Literature are in progressive state of decay among the Natives of India. ... The abstract sciences are abondoned, polite literature neglected, and no branch of learning cultivated but what is connected with the particular religious doctrines of people. ... unless Government interpose with a fostering hand the retrieval of letters may shortyl become hopeless ..."
১৮১৩ সালে কোর্ট অফ ডিরেক্টরস ভারত সরকারকে আদেশ দিলেন - "That a sum of not less than a lac of Rupees, in each year shall be set apart, and applied to the retrieval and improvement of literature, and the encouragement of the learned natives of India and for the introduction and promotion of a knowledge of the sciences among the British territories of India."
১৮১৬ সালে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় 'for the tuition of the sons of respectable Hindoos in the English and Indian languages and in the literature and science of Europe and Asia.'
১৮২৩ সালে রামমোহন রায় লর্ড আমহার্স্টকে লিখলেন, "...But as the improvement of the native population is the object of the Government, it will consequently promote a more liberal and enlightened system of instruction, embracing Mathematics, Natural Philosophy, Chemistry, Anatomy, with other useful sciences, ..."। অর্থাৎ রামমোহন তখনও বিজ্ঞানশিক্ষার মান নিয়ে খুশি ছিলেন না। (শিবনাথ শাস্ত্রীর 'রামতনু লাহিড়ী...' থেকে)
কিন্তু অবস্থা আস্তে আস্তে বদলাল। কারণ ডাফ সায়েব লিখেছেন (বিনয় ঘোষ থেকে উদ্ধৃত), "সভার সদস্যরা যখন বক্তৃতা দিতেন তকন ইংরেজ লেখকদের প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁরা নিজেদের মতামত জোরালো করে শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরতেন। আলোচ্য বিষয় হলে অ্যাডাম স্মিথ ) জেরিমি বেন্থাম, বৈজ্ঞানিক বিষয় হলে নিউটন ও ডেভি, ধর্মবিষয় হলে হিউম ও টম পেইন, দার্শনিক বিষয় হলে লক, রীড, স্টিউয়ার্ট ও ব্রাউন প্রমুখের রচনা থেকে প্রচুর পরিমাণে আবৃত্তি করা হত।" ডাফ সাহেব কলকাতায় আসেন ১৮৩০ সালে। তার ঠিক পরেই ডাফ সাহেবের স্কুল তৈরি করেন। ১৮৩৫ একটি সরকারী মিনিট গৃহীত হয়ঃ " A government minute was adopted on 7 March 1835, to the effect that in higher education, the object of the British government in India should be the promotion of European science and literature among the natives of India" (উইকি)।
ডেভিড হেয়ার লিখেছেন ১৮৪০ সালে, "Through the kind permission of Dr. O'Shaughnessy the first and second classes of the school (the Pataldanga English School) enjoy the privilege of attending his lectures in Chemistry and Natural Philosphy at the Medical College". (কলিকাতা দর্পণ, দ্বিতীয় পর্ব, রাধারমণ মিত্র)
First and second class মানে ক্লাস নাইন আর টেন। Natural Philosphy হল আজ যাকে Natural Science বা Physical Science বলা হয়। মূলতঃ ফিজিক্স।
অর্থাৎ কলকাতায় ১৮৩০-এর দশক থেকে বিজ্ঞানের শিক্ষা চালু ছিল।
ইংরেজ রা না থাকলেও আসতে পারতো।স্থানীয় রাজারা ই আনতে পার তো।
দুটো জিনিষ।এক স্থানীয় রাজারা ইংরেজ দের আগে আধুনিক বিজ্ঞান প্রসারের কেন্দ্র তৈরি করে উঠতে পারে নি।অর্থাৎ মেডিকেল কলেজ এর আগে মেডিকেল কলেজ বা রুরকির আগে ইঞ্জনিয়ারিংয়ের কলেজ বা কলকাতা ইউনির আগে কোন ইউনিভার্সিটি।
দুই,যেহেতু ইংরেজ দের আন্ডারে ছিলো ভারত।তাই ইংরেজ দের বাঁধা থাকলে,এসব আধুনিক শিক্ষার প্রসার হওয়া সম্ভব ছিলো না।
সংস্কৃত কলেজে কি হয়েছে? আয়ুর্বেদ এর চর্চা?পরিষ্কার করে বলুন।আপনি কিচ্ছুটি জানেন না,তাই এই বিষয়ে কথা বলছেন।
অ্যানাটোমি শেখার একটা পদ্ধতি আছে।১৬শ শতাব্দীতে ভেসালিয়াস শুরু করেন।উইলিয়াম হার্ভে ১৬২৮ সালে রক্ত সঞ্চালন ডেমো করে দেখান।এগুলো সব ডকুমেন্টেড জিনিষ।বহু বছরের চর্চা। ইওরোপীয় দের আয়ত্বের জিনিষ।সুশ্রুত বর্ণিত আয়ুর্বেদ চর্চা নয়।
এলেবেলে গোল পোস্ট সরাতে শুরু করেছেন।ইংরেজরা আমাদের দেশের লুঠের টাকায় বিজ্ঞানের প্রসার ঘটিয়েছে।
চমৎকার!নিউটন তো সপ্তদশ শতাব্দীর লোক।তাঁর জন্মের প্রায় শত বর্ষ পরে পলাশী। স্টিফেনস নের রেল ইঞ্জিন তৈরী ও পলাশীর যুদ্ধের আগে।
প্রথম মেডিকেল স্কুল গাইস হাসপাতাল পলাশীর যুদ্ধের আগে!
আর একটা কথা,যুদ্ধে যদি কোন দেশ জেতে সে তো অর্থ লুণ্ঠন করবেই।ইতিহাস সেই কথাই বলে।
রেলপথ তৈরী করেছে,নিজেদের বাণিজ্যের সাহায্যের জন্য।তো কি হয়েছে?ভারতে তো রেলপথ তৈরী হয়েছে। আফ্রিকায় বহু ফ্রেঞ্চ কলোনি তে,কিছুই নেই।ইউনি ভার্সিটি তৈরী হয় নি।
ভারতে,ব্রিটিশ আমলে প্রচুর কলেজ,ইউনি,ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,মেডিকেল কলেজ হয়েছে।যা হয়েছে, তার অধিকাংশ তো এখনও রয়ে গেছে। কি সব উল্টো পাল্টা ,আগডুম বাগডুম চালাচ্ছেন এখানে?
আপনি আনন্দবাজার ধুয়ে জল খান। ও জিনিস সংস্কৃত কলেজে তার ৮ বছর আগে হয়ে গেছে।
অরিন, দুঃখিত আপনার মন্তব্যটি দেখতে পাইনি। আমি আপনার কথা অস্বীকার করছি না। কিন্তু প্রত্যক্ষ শিক্ষা আর পরোক্ষ শিক্ষায় যে বিস্তর ফারাক আছে সেটা নিশ্চয়ই মানবেন। যেমন মানবেন ভারতবর্ষে পলাশি-উত্তর লুঠের অর্থে ইংল্যান্ডে বিজ্ঞানের বিকাশের প্রসঙ্গটিও। এমন নয় যে, তার আগে সে দেশে বিজ্ঞান চর্চা হয়নি। কিন্তু হয়েছে উপনিবেশকে শোষণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে। সে আপনি কলম্বাসের অভিযানই বলুন কিংবা ভারতে রেলপথের বিস্তার। আমাদের উন্নতি বা যোগাযোগের জন্য তো আর ব্রিটিশরা এদেশে রেলপথ চালু করেনি। তাই নয় কি?
আর নারীশিক্ষা নিয়ে বেথুন কিংবা বিদ্যাসাগরের বাকতেল্লা মারতে আসলে বিপদে পড়ে যাবেন! ইংরেজি শিক্ষিত বাবুদের চলনসই বিবি বানানোর স্কিম ছিল ওটা। গুচ্ছের অর্থের অপচয় করে। বলবেন, রেফারেন্সের বন্যা বইয়ে দেব। কেমন?
//একজন হিন্দু ছাত্র শব ব্যবচ্ছেদ করবে,সেটা সে যুগে কল্পনার অতীত ছিলো।//
আমিও আপনার সুরে সুর মিলিয়ে বলি কী অপরিসীম ধৃষ্টতা!
অ্যাডাম বলেছেন ১৮২৮ সালে ডাক্তার টাইটলার (Tytler) যখন সংস্কৃত কলেজে দেহব্যবচ্ছেদ শুরু করেন, তখন দেখা যায়:
The students not only handled the bones of the human skeleton without reluctance, but in some instances themselves performed the dissection of the softer parts of animals. এরা না সংস্কৃত কলেজের ছাত্র ছিল!! কী হব্যা?
আর সেই তখন থেকে বিজ্ঞান-বিজ্ঞান করে হেদিয়ে মরছেন। তো নিন, দেখে চক্ষু সাত্থোক করুন। এটা ১৮২৪ এ মাদ্রাজের বিজ্ঞানের চিত্র। বিষয়বস্তুগুলো ইংল্যান্ডের স্কুল-কলেজে কবে থেকে পড়ানো শুরু হয় বলবেন দিকি।
https://postimg.cc/2qhWGfVt/c2c2bbef
ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে আপনার সঙ্গে তক্কে যাব না। টেনিসনও আছেন আবার ব্রাউনিং-ও আছেন। অথচ ভার্জিনিয়া উলফ নেই! বাদ্দিন। ও আপনার বোঝা কম্মো নয়।
খুব interesting আলোচনা। এলেবেলে, আপনার প্রতিপাদ্য যে ইংরেজ কলোনী গড়বে বলে ভারতীয়দের সমকালীন বিজ্ঞানপাঠ থেকে পরিকল্পিতভাবে দূরে রাখতে চেয়েছিল। এ ব্যাপারটি কেউ অস্বীকার করছে না। তবুও বাস্তবিক তাদের মাধ্যমেই ভারতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান চর্চার সূত্রপাত ঘটেছে, বহু ক্ষেত্রে প্রথাগত শিক্ষার বাইরেও ইংরেজ বৈজ্ঞানিক সাধারণ মানুষদের নিয়ে কাজ করেছেন যেমন জোসেফ ব্যাঙ্কস (বোটানি), বা অ্যালান অকটাভিয়ান হিউম (পাখী চর্চা)। ওরিয়েনটালিসট দের হাত ধরে ভারতীয় archaeology র বিস্তার হয়েছে। ইংরেজ সাম্রাজ্যবিস্তারের উদ্দেশ্যে করেছে ঠিকই, কিন্তু তাতে করেও ভারতীয় বিজ্ঞানে তাদের অবদান অস্বীকার করা যাবে না, তাই না?
আর একটা কথা,কেন অতো কম ছাত্র পড়তো মেডিকেল কলেজে, জানেন?জানলে এরকম অর্থহীন প্রশ্ন করতেন না।
একজন হিন্দু ছাত্র শব ব্যবচ্ছেদ করবে,সেটা সে যুগে কল্পনার অতীত ছিলো।অনেকটা বিধবা দের পুনর্বিবাহ দেবার মতন দূরহ কাজ। যেটা বিদ্যাসাগর করে দেখিয়েছিলেন।
ডাক্তারী পড়তে আসার পেছনে সামাজিক বাঁধা টাই বড় কথা ছিলো।ইংরেজদের উৎসাহের অভাব নয়। মেয়েরা আরও অনেক পরে যোগদান করেন।কিন্তু করেছিলেন বা করতে পেরেছিলেন,ইংরেজ দের ও কিছু প্রগতিশীল ব্যক্তির একান্ত সহযোগিতায়। নয় তো, মেয়েরা আজও পিছিয়ে থাকতেন। পড়ুন,জানতে পারবেন।
এতো মহা তর্ক বাগিশের পাল্লায় পড়া গেলো দেখছি!!২০২০সালে ও একশ চল্লিশ কোটি ভারত বাসীর মধ্যে প্রতি বছর একলাখের কম ডাক্তার পাশ করে বেরোয়।
কোম্পানী এসেছে ব্যবসা করতে।তার মাঝেই মেডিকেল কলেজ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে।এটাই তো প্রমাণ করছে,ভারতীয় দের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা প্রসার এর চেষ্টা করছে।সেটা কেরানি তৈরির জন্য হোক,নিজেদের রাস্তা ঘাট তৈরির জন্য হোক বা আর্মির চিকিৎসার জন্যই হোক।
আধুনিক বিজ্ঞানের প্রসার তো ব্রিটিশ যুগেই ঘটেছে। বেদ, পুরান থেকে তো ছিটকে বেড়িয়ে আসে নি।
তারপর আর একটা গোলা দিলেন,যেসব প্রোথিত যশা বিজ্ঞানীদের নাম নিলাম,তাদের জন্য নাকি ভারতীয় দের কোন লাভ হয় নি।
আশ্চর্য্য!!নিউটন,ডারউইন,ম্যাক্সওয়েল,হার্ভে,ফ্যারাডে এঁদের গবেষণার বিষয় বস্তু পড়ে,ভারতীয় দের কিছু লাভ হয় নি?
সাহিত্যে, শেক্সপিয়ার,শেলী,কিটস, টেনিসন,বায়রন,ওয়ার্ডস ওয়ার্থ, ব্রাউনিং,হার্ডি,বার্নস,ইয়েটস, এলিয়ট,ডিকেন্স,অস্কার ওয়াইল্ড -- এঁদের লেখা পত্র পড়ে মনে হয়েছে,তিন - চার জন পাতে শুধু দেওয়ার যোগ্য? কি অপরিসীম ধৃষ্টতা!!
শেয়াল যেমন কুমিরছানা দেখায়, আপনার হাল হয়েছে অবিকল ওইরকম। মশাই ১৮৮২-র আগে কেবল বাংলার লোকসংখ্যা ৪ কোটির বেশি। ওই বছরে মেয়োর উদ্যোগে প্রথম জনগণনা শুরু হলে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ৬ কোটির ওপরে। আপনি ঘুরেফিরে চারটে কুমিরছানা দেখাচ্ছেন! বাকিরা কোথায়? মধুসূদন গুপ্ত 'ডাক্তার' এটা একমাত্র আপনি ছাড়া আর বোধহয় কেউ জানেন না!