খ, অনেকদিন হল আপনাকে এখানে দেখছি না। অভিমান করে ডুব দেওয়া আপনার স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। যেদিন আপনাকে শেষ এখানে দেখেছি, সেদিন কিছু মন্তব্য আমার চোখে পড়েছিল। সেটা ঠিক হতে পারে, ভুলও হতে পারে এবং তা নিয়ে আমার কোনও বক্তব্যই নেই। কিন্তু তার পরেই আপনার অন্তর্ধান অন্তত আমার ভালো লাগছে না।
ফিরে আসুন খ। একান্ত অনুরোধ।
বোলারের দাপট ক্রিকেট একবারই দেখেছিল। বডিলাইন সিরিজে। ব্র্যাডম্যানের বিরুদ্ধে লারউড। হেলমেট ছাড়া। ব্র্যাডম্যানই কি বলেছিলেন যে লারউডের কাছে আজকালকার বোলাররা শিশু?
৭৯-এ আসিফ ইকবালের টিমের সঙ্গে একটা নতুন ওপেনার এসেছিল। তসলিম আরিফ। কলকাতা টেস্টে সেকেন্ড ডে স্টাম্পসে সে ব্যাটা ২৮ রানে। পরেরদিন খেলা শেষের দুতিন ওভার আগে আউট হল ৯০ রানে। সারাদিন ব্যাট করে ৬২ রান করেছিল। আর সে খেলা এতই দুর্ধর্ষ খারাপ দেখতে যে উল্টোদিকে অয়াসিম রাজা আরিফ আউট হওয়াতে আনন্দে হাতাতালি দিয়ে উঠেছিল। সেই নিয়ে অল্প জলঘোলাও হয়েছিল।
বালক আমি সেদিন মাঠে গেছিলাম। বালকবেলা এমন কত অকিঞ্চিৎকর খেলা দেখে যে কেটেছে!
গুরুতে খুঁজতে পারছি না কিছুতেই। মোবাইল থেকে খোঁজায় কিছু সমস্যা হচ্ছে বোধ হয়। সেদিন আনন্দবাজার ও ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী টইটা খোঁজার কত চেষ্টা করলাম। গুরুতে প্লাস লিখে, কোটেশন মার্ক দিয়ে, এমনিই, গুগল সার্চ করে, শেষটায় এলসিএম জিসিএম অব্দি - ভারী শক্ত।
প্রাচীন বলে প্রাচীন! এখনকার তালেবর গুরুর দল তখন ঘুন্সি পরে মেঝে থেকে বিশকুট কুড়িয়ে খান।
S-এর T20 বর্ণনাটা জব্বর হয়েছে। :D
আল জাজিরা টেলিভিশনের একটা চলতি প্রোগ্রামের নাম "দ্য সিক্রেট অব মার্শাল আইল্যান্ড"। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অনেকগুলো দ্বীপের সমাহার। আমেরিকান উপকূল থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জে 58000 মানুষের বসবাস। 1946-58 সালের মধ্যে আমেরিকা এখানে মোট 120 টি পরমাণু বোমা ফাটিয়েছে। হাইড্রোজেন বোমা ফাটানোর গর্ত এখনো দূর আকাশ থেকেও দেখা যায়। আমেরিকান মারণাস্ত্র পরীক্ষার এই আঁতুড়ঘরে সাংবাদিকের একটি দল পাঁচবার গিয়ে একটি রিপোর্ট বানিয়েছে, যে রিপোর্ট তারা আগে ছোট ছোট ভাগে প্রকাশ করেছিল। বর্তমানে আল জাজিরা তা সম্প্রচার করছে।
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের পরিমান অত্যন্ত বেশি। নানা রকম তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের মধ্যে আছে প্লুটোনিয়াম। খোদ আমেরিকা থেকে 5300 টন তেজস্ক্রিয় বর্জ এনে এখানে ফেলা হয়। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের সহজ সরল মানুষগুলো বুঝতেই পারে নি এখানে এসব কি হচ্ছে! মাঝে মাঝে সাহেবরা এসে তাদের নিয়ে নানারকম পরীক্ষা চালাতো। জোসেফ একজন 72 বছর বয়সের বাসিন্দা। তিনি 7 বছর বয়সে একদিন সকালে দেখেন আকাশে যেন দুটো সূর্য্য। সেই সময় আমেরিকানরা প্রথম বোমা ফাটায়। যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় অসুখ বিসুখ হলে চিকিৎসা পাওয়া যেত কিনা তিনি বলেন ওরা রক্ত নিতো ও এক্স রে করতো। চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা ছিল না।
প্লুটোনিয়াম ও হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার পর জীবানু অস্ত্রের প্রয়োগ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করে। যথারীতি এই জীবানুর প্রভাব পরীক্ষা করা হতো এখানকার পশুপাখি ও মানুষদের উপর। এই দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের তারা গিনিপিগ ও ইঁদুর হিসেবে ব্যবহার করেছে।
মার্শাল সরকার ও আন্তর্জাতিক চাপে আমেরিকা কিছু কিছু তেজস্ক্রিয় বর্জ্য তুলে কবর দিয়েছে রুনিট দ্বীপে। যদিও আমেরিকান বিশেষজ্ঞদের মত এটি এই এলাকার তেজস্ক্রিয় দূষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে সব ধরনের খাবারে তেজস্ক্রিয়তার পরিমান অত্যন্ত বেশি বলে এখানে সবজি ও ফলমূল খাওয়া যায় না। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের মানুষের পুনর্বাসনের জন্য 2.5 বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেবে বলে আমেরিকা স্বীকার করলেও মাত্র 600 মিলিয়ন ডলার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলেছে। এমনকি রুনিট দ্বীপপুঞ্জের কবরখানার দায় ও তারা নিতে চায় না। ডায়াবেটিস রোগীর হার এখানে অত্যন্ত বেশি, তার সাথে আছে তেজস্ক্রিয়তার কারনে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা, যথা ক্যানসার।
আমেরিকার এই সব কাণ্ডকারখানার পেছনে আসল উদ্দেশ্য হল ভারত মহাসাগরের উপর দখলদারি। আমেরিকার ন্যাভাল ফোর্সের দুই তৃতীয়াংশ আছে ভারত মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় যা আদতে আমেরিকার উপকূল থেকে বহুদূরে। তাদের লক্ষ্য পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি। একটা বলয়ের আকারে তারা এশিয়া মহাদেশকে ঘিরে রেখেছে। শুধু দক্ষিন এশিয়া জুড়ে 47000 নৌসৈন্য তারা মোতায়েন করেছে। বারাক ওবামা নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি একটি বক্তৃতায় বলেন যে তিনি ন্যাশনাল গার্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন এশিয়া-প্যাসিফিকে শক্তি বাড়াতে হবে।
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ হল এই শক্তি বৃদ্ধির লঞ্চ প্যাড। তাই মারণাস্ত্রের ঢালাও কারবার, তাই জৈব অস্ত্র দিয়ে মার্শালের গরীব জনজাতির উপর চলেছে পাশবিক পরীক্ষানিরীক্ষা যা হিটলারের জার্মানির কথা মনে করিয়ে দেয়। আমেরিকান যে সাংবাদিক সারা বিশ্বের কাছে এই ঘটনা তুলে ধরেন তিনি বলেছেনঃ এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ওরা করে কারণ অস্ত্র তৈরী করতে ওরা লক্ষ কোটি ডলার খরচ করে ফেলেছে। এই টাকা তুলতে হলে যুদ্ধ চাই, তাই যুদ্ধের উন্মাদনা ও জিগির জিইয়ে রাখে। তাই নতুন নতুন শত্রু খুঁজে ওরা ফের করে। নিজেরা মারণাস্ত্রের ভাণ্ডারে দাঁড়িয়ে অন্য দেশে weapon of mass destruction খুঁজে বেড়ায়।
https://www.latimes.com/projects/marshall-islands-nuclear-testing-sea-level-rise/
এই লিঙ্ক এই সংক্রান্ত অসংখ্য লেখার একটি।
হাজারে নয় মার্চেন্ট। বিজয় মার্চেন্ট হল এমসিসি ম্যানুয়াল স্কুল। যার উজ্জ্বলতম নক্ষত্র গাভাসকার। ওই কারণেই মার্চেন্টের কাস্টিং ভোটে গাভাসকারের প্রথম সিরিজে যাওয়া হয়েছিল। আর ওদিকে ছিল বয়কট। বলা হত বয়কটের ফরোয়ার্ড ডিফেন্স এমন যে তিনি নাকি বলে গন্ধ শুঁকতে পারতেন এতই ক্লাসিকাল ঝুঁকে পড়া ফরোয়ার্ড ডিফেন্স।
আগেকার প্লেয়াররা বিজয় হাজরে এট অল হেবি আঁতেল ছিল। টেক্সটবুক মেনে খেলত। এই সেদিনও রাহুল দ্রাবিড়ের মত দু-চার পিস আঁতেল ছিল। এখন পুরো সাবল্টার্ন সংস্কৃতি। বলের লাইনে ব্যাট এল কি এল না দেখার দরকার নেই, এমন পাওয়ার শট যে থিক এজ পেলেও ছয়।
ক্রিকেটে যত গোলা পাবলিকের ভিড়। শুধু চার-ছয় দেখতে যায়। তাই জন্যে ক্রিকেটের রুল চার-ছয়ের জন্যে তৈরি হয়েছে। ওয়ান-ডে থেকে পতন শুরু। টি-টোয়েন্টিতে এসে সার্কাসে পরিবর্তন কমপ্লিট। পোষা বোলাররা আসে, রিং মাস্টার ব্যাটসম্যান তুলে তুলে ছয় মারে, গোলা পাবলিক হাত্তালি দেয়। তবে এইসব টি-টয়েন্টি হয়ে একটা ভাল হয়েছে, টেস্ট ক্রিকেট যখন হয়, ডিসিশান হয়। আমরা যারা আশির দশকে বড় হয়েছি, টেস্ট ক্রিকেট অসম্ভব বোরিং হয়ে গেছিল। পাটা উইকেট, ঠুকুর-ঠুকুর খেলা!
রঞ্জনবাবু কেমন আছেন বলুন?
করোনা সময়কালটাকে চুটিয়ে কাজে লাগালাম বলতে পারেন। কিছু লাইব্রেরির কাজ বাকি ছিল। সে আর হবে না বলেই ধারণা। দুটো-একটা বই জরুরি ছিল। জানি না সেসব কিনতে পারব কি না। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে আমার বিদ্যাসাগর চর্চা। গুরুর পুরনোরা তাকে বহুচর্চিত 'নির্মোহ ব' না বললেই বাঁচি। হেজিওগ্রাফিতে আমার উৎসাহ নেই, সমকালীন সময়টাকে নিয়ে খুবই আছে। চেষ্টা করব সেই সময়টাকে ধরার। এবারে আরও একটু গুছিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে। দেখা যাক।
আপনার সঙ্গে খুব তক্কো হবে এমনটাই আশা করলাম। গান্ধীর সময়ে কিন্তু ফাঁকি দিয়েছিলেন!
মানুষের বাড়িতে ড্রয়িংরুম থাকে ঠিকই কিন্তু কালেভদ্রে ব্যবহৃত হয়! হয়তো বিদ্যাসাগরের ড্রয়িংরুমও কালেভদ্রে ব্যবহৃত হবে। বাঙালির ড্রয়িংরুম কনসেপ্টটাও বেশ অভিজাত। তাই নয় কি?
নাহ, বোলারদের দিন ফুরিয়ে গেছে, সেটা কথা না। বোলাররা ডমিনেট যথেষ্টই করে সময় সময়। টেস্ট তো আছেই। বস্তুত পনেরোর বিশ্বকাপের পরের নিয়মে হালকা ভারসাম্য আনার চেষ্টা হয়েছে একদিনের খেলাতেও। দুটো নতুন বল, ফিল্ড রেস্ট্রিকশনে। আর কুড়ি কুড়ি খেলা শুধুই ব্যাটের লড়াই লাগলেও অন্তিমে এটাই দাঁড়িয়েছে যে বোলার যার, খেলা তার। যে কারণে কোনোবার লুরুর দলটা আইপিএল জেতে না, বেস্ট ব্যাটিং লাইন আপ নিয়েও।
প্রসঙ্গত, এবারের বিশ্বকাপের ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাকিস্তান খেলাটা কিন্তু ফাস্ট বোলারদের দাপট দেখানোর দারুণ বিজ্ঞাপন ছিল।
এই যে এলেবলে, দেখুন নাম না করতেই এসে গেছি । আমার বিশেষ প্রিয় বিদ্যেসাগর নিয়ে কবে শুরু হবে? এখন এই করোনা যুগে এর চেয়ে ভাল সুযোগ ? তবে যাই বলুন, আর যাই লিখুনঃ
"যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি বাড়ি যায়,
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়"।
আমি জানি প্রত্যেক বাড়িতে সুন্দর ড্রইংরুম থাকলেও পেছনে বাথরুম পায়খানা আছে। তাতে কি ড্রইংরুমে বসব না?