চিরকাল জানতাম কং, সিপিএম বিরোধী পক্ষ। হঠাৎ তারা এক হয়ে গেল। যারা কংগ্রেসকে সাপোর্ট করত, যেমন আমার পরিবার, পুরো কংগ্রেসি, তারা শকড। আগে পলিটিক্যাল কার্টুনগুলোই ছিল সব কং, সিপিএমের এনমিটি নিয়ে।
সিপিএমকে আশ্রয় করে কংগ্রেস প্রচুর ভোট হাতছাড়া করেছে। কমন ফ্যাক্টর একটাই- মমতা বিরোধিতা।
দুটো দলই কৃপাপাত্র অতিদীন।
No NRC movement টা অনেক অংশে দিকভ্রান্ত। এটা অনেকের কাছে এখন মমতা বিরোধী মঞ্চ হয়ে উঠেছে তাই অচিরেই এর ফোকাসটা নষ্ট হয়ে যাবে। আর বিজেপি এতে পাচ্ছে সুযোগ। আঞ্চলিক দল গুলোর শক্তি খর্ব করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে বিজেপি। তাই আঞ্চলিক দলগুলোর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ওরা উদ্যত। ওরা দেখাতে চাইবে আঞ্চলিক দলগুলো ওদের চামচা। আঞ্চলিক দলগুলোর ওপর আস্থা, বিশ্বাস যাতে উঠে যায় এবং মানুষ নিরুপায় হয়ে বিজেপিকে বাছে।
আর এই সময়ে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী প্রচণ্ড গুজব রটায়। ওটা একটা ইনফ্লুয়েনশিয়াল ইন্ডাস্ট্রি। TMC, AAP= BJP এটা এখনো প্রমাণিত হয়নি। শুধু শুধু তেঁতে কিচ্ছু লাভ নেই। প্লাস বিজেপি আই টি সেল।
এখন বেশ কিছু মিছিলে সামনে থাকা কয়েকজন নিজেদের মধ্যে সিধান্ত নিয়ে হঠকারি কিছু কাজ করছে যাতে পুরো ব্যাপারটা মিনিংলেস হয়ে যাচ্ছে। দিল্লী দাঙ্গার প্রতিবাদে মৌলালী থেকে এন এন ব্যানার্জি রোড যাওয়ার সময় হঠাৎ ওয়েলিংটনের মোড়ে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু করল। কি না তারা বিজেপি অফিসে যাবেই। সেটা কিন্তু উদ্দেশ্য ছিল না। পুলিশ ব্যারিকেড দিল। এরপর ব্যারিকেড ভেঙে, পুলিশকে ধাক্কা মেরে, পরিষ্কার দেখলাম একজন পুলিশের গায়ে হাত তুলল। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে আটকে দিল। মিছিলের বাকী অংশ কিংকর্তব্য বিমুঢ়! সকলে বিরক্ত। কয়েকজন বলেই ফেলল 'পুলিশ যা করেছে বেশ করেছে।' অথচ এন এন ব্যানার্জি রোডে গিয়ে পথসভা হওয়ার প্ল্যান ছিল। সেদিন শিক্ষাজগতের অনেকে এসেছিল।
আমি এটা বুঝতে পারছিনা, এ রাজ্যে প্রতিবাদ করার স্পেস পাচ্ছি। আমি সেই স্পেসটার সদ্ব্যবহার করতে চাই। সোজা কথা। বিজেপি স্টেট গুলোয় সেই স্পেস টুকুও নেই। নো এন আর সি মুভমেন্ট যদি বর্তমান রাজ্য সরকার বিরোধী মঞ্চ হয় তাহলে সেটার সেখানেই মৃত্যু এবং তাতে বিজেপি'র আরো বেশী সুযোগ করে দেওয়া। আমাদের রাজনৈতিক জায়গাটা এখন খুব খারাপ। প্রশাসনকে পাশে না পেলে আন্দোলন করতে পারবেন? ২০১১য় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামদলকে ৩৪ বছর বাদে তাদের মসনদ থেকে হটিয়েছিল, সে শোধ তুলতে তারা এমন অনেক কিছু করছে যার জন্যে বিজেপি extra সুবিধে পাচ্ছে। হাসির ব্যাপার হল তৃণমূলকে হটালে বাম- কং আসবে না। আসবে বিজেপি। এর চাইতেও সোজা অংক আর নেই। বামদল তৃণ'র বিরোধী পক্ষ হোক। বাম প্রাসঙ্গিক হোক। বিজেপি উবে যাক। এটাই চাই।
এসব কারণে ১৯শে ডিসেম্বর রামলীলা থেকে যে জনস্রোত হেঁটেছিল তারা অনেকেই আর এই মুভমেন্টে আর নেই, থাকতে চাইছে না।
কংগ্রেস, সিপিএমের জোট না ভাঙলে ওদের অস্তিত্ব সংকটেই থাকবে। ওদের ইণ্ডিভিজ্যুয়ালি এক্সিসট করতে হবে।
এখন দেশময় দলমত নির্বিশেষে অ্যান্টি- বিজেপি হতেই হবে। বিজেপি নিশ্চিহ্ন হোক, তারপর নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করা যাবে।