আগামী কাল সকাল সাতটায় সপ্তম বা শেষ পর্বের ভোট গ্রহণ শুরু। উনিজী স্বয়ং বেনারসে এসে তিনদিন ঘাঁটি গেড়েছেন। কেন? আসলে এই দক্ষিণ -পূর্ব এলাকাতেই বিজেপি অপেক্ষাকৃত দুর্বল। ২০১৭ সালে ছ'মাস আগের বিমুদ্রাকরণের আবেগে সবাই ভেসে গেলেও এখানে বিজেপি ৫৪র মধ্যে সবমিলিয়ে ৩৮ দখল করেছিল। বাকি ৬টায় ৪৪, ৪৮, ৫১, ৫৩ --এইহারে জিতেছিল। ২০১৯শে বালাকোটএর পরও ভোট প্রতিশত এবং বিধানসভার সীটে অগ্রগমন দেখলে ছবিটা প্রায় একই। বিহার রাজ্যের সংলগ্ন এই গরীব এলাকায় জাতএর অনুপাত মোটামুটি এরকমঃ
মুসলিম ১৪% + যাদব ১৬% হল সপা'র কোর ভোট।
সামান্য মুসলিম+ দলিত (২২%) হল বসপার কোর ভোট।
এই দলিতের মধ্যে আবার ৭০% হল জাটভ -- কয়েক দশক ধরে মায়াবতীর ।
ব্রাহ্মণ ১২%+ ক্ষত্রিয় ৭% + বৈশ্য ৩% হল বিজেপির কোর ভোট।
এছাড়া আছে এক গাদা ছোট ছোট জাত এবং কায়স্থ ইত্যাদি ।
মোদ্দা কথা হল কোন দলই শুধু কোর ভোটের উপর নির্ভর করে সরকার গঠনের অবস্থায় আসতে পারেনা।
সবার রণনীতি হল কীভাবে ফ্লোটিং ভোটারদের নিজের শিবিরে টানা যায় এবং বিপক্ষের কোর ভোটে ফাটল ধরানো যায়, যত সামান্যই হোক।
এবার মুস্লিমরা এন ব্লক সপা গঠবন্ধনের পক্ষে ভোট দিচ্ছে, অনেকটা নিরুপায় হয়ে।
দলিতদের বেশির ভাগ মায়াবতীর সঙ্গে রয়েছে , বিশেষ করে জাটোভ। কিন্তু সামান্য হলেও ফাটল ধরেছে। তারা বেশিরভাগ গেছে বিজেপির দিকে, অল্প সপার দিকে।
কিন্তু অখিলেশ রাজভর (৪%), কুর্মী (৭%) এবং আরও কিছু (সৈনী , কৈরি , কোলি) এদের নিজের দিকে টানতে পেরেছে।
এখন এই এলাকাতেই মায়াবতী স্ট্রং। এখানকার মীর্জাপুর থেকেই ফুলন দেবী এমপি হয়েছিলেন। যদি মায়াবতী বেশি সীট না পেলেও (কারণ উনি বিজেপির ভবিষ্যতের সঙ্গী) যদি ১৬% ভোট নিজের দিকে ধরে রাখতে পারেন তাহলে সপা'র এই এলাকায় ল্যান্ডস্লাইড ভিক্ট্রি হবে।
এই স্লগ ওভারে ব্যাট করছেন মোদীজি, ওনার ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মা তো রয়েছে। কিন্তু এটা বিধানসভা , তবে ২০১৭র সময়ের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, বিমুদ্রাকরণের ন্যারেটিভ নেই। আস্কিং রেট বেড়ে গেছে। সম্ভবতঃ প্রথম তিনপর্বের বিপুল ডেফিসিট পরের তিনপর্বে কভার হয় নি।
মাঝখানে গোরখপুরেও যোগীজির ছবি সরিয়ে শুধু মোদীজির ছবি লাগানো হয়েছিল। ইউপির ভারপ্রাপ্ত শাহজী নাড্ডাজী কেউই সামনে খুব একটা নেই। আর মোদীজিও কেবল নিজের সংসদীয় কেন্দ্রের মধ্যেই আটকে রইলেন। সম্ভবতঃ ২০২৪এর কথা ভেবে।
আজকের টাইমস অফ ইন্ডিয়ার পোস্ট এডিটোরিয়ালে স্বামীনাথন আইয়ারের বড় লেখা রয়েছে। ভদ্রলোক অর্থনীতি ও রাজনীতির বিষয়ে বাজারপন্থী। উনি তিনজনেরই জনসভা দেখে এসে মন্তব্য করেছেনঃ
অখিলেশ স্টেজে আসা মাত্র উৎসাহী ভলান্টিয়ার ও যুবজনতা ্বেড়া ভেঙে স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে গেল, ওকে ছোঁবে বা ছবি তুলবে বলে।
মোদীজির সভায় বিজেপির কার্যকর্তাদের অভ্যাস করে আসা শ্লোগান ছিল, কিন্তু উৎসাহ কেমন মিইয়ে গেছে। জনতাও বক্তার কথায় সাড়া দিচ্ছে না। আগের মো-দী মো-দী গর্জন নেই।
যোগীজির সভায় লোক কম, কেউ ভাষণ শুনছে না।যেই আইন শৃংখলা বূলডোজার হয়ে উনি নিজের সাফল্যের খতিয়ান পেশ করছেন লোক উঠে চলে যাচ্ছে। একটা ব্যাপার, সম্ভবতঃ ২০১৯ সালেই ২০০ জন বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ণায় বসেছিল।
মোদীজিও কাশী-বিশ্বনাথ কোরিডোর, আইন-শৃংখলা এমনকি উক্রাউনের উদাহরণ টেনে শক্ত মজবুত সরকারের জন্য ভোট দিতে বলছেন। ওঁর মন্ত্রীরা দাড়ি ও জালিদার টুপি নিয়ে কথা বলছে।
অখিলেশ ব্যক্তিগত আক্রমণ এড়িয়ে কথা বলছেন, রোজগার, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিকাশ, পেনশন এবং গরীবদের আগামী ৫ বছর ফ্রি রেশনের।
কাল সন্ধ্যে সাতটা থেকে শুরু হবে এগজিট পোল। বেড্রুম বাবা রঞ্জনানন্দ এবার কাট মারছে। কথা হবে ১০ তারিখ সন্ধ্যেয়। আমার কথা ভুল বা ঠিক যাই হোক। হেরে গেলেও বিরিয়ানি ও কফির স্বাদ একইরকম থাকবে।
আমি বলিঃ
বক আর ঝক, কানে দিয়েছি তুলো।
মার আর ধর, পিঠে বেঁধেছি কুলো।।