এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হোটেল ম্যানেজার - ১৬

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৬৯৩ বার পঠিত
  • সকাল সাড়ে দশটা বাজতে চলল। শরতের ঝলমলে আকাশ।বাতাসে যেন পুজো পুজো গন্ধ।  রিপন স্ট্রীটে ফর্টি টু বাই সি বাড়িটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে দুলাল সরকার। বহু পুরনো তিনতলা বাড়ি। বাড়ির সামনের দিকের লালচে রঙ ফ্যাকাসে গোলাপী হয়ে গেছে। দু এক জায়গায় প্লাস্টার খসা ক্ষতচিহ্ন। বোঝা যাচ্ছে  অনেকদিন হাত পড়েনি বাড়ির মেরামতিতে। এখানে সব গায়ে গায়ে বাড়ি। পুরণো কলকাতার পুরণো বাড়ি। পুরণো পাড়া, পুরণো মানুষ। দুলাল দরজার পাশে কলিং বেলে চাপ দিল। 
        ঘরের দরজার বাইরে দাঁড়াতেই সূর্যকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় স্যার বললেন, ‘ আরে এস এস .... কলকাতায় কি এখনই এলে ? ‘
    একতলার ঘরে একটা সিঙ্গল কাউচে বসে আছেন সূর্যকান্তবাবু । একপাশে সোফায় বসে আছে দুই যুবক। দেখে মনে হয় ওনার ছাত্র টাত্র হবে। দুজনেরই কাঁধে ঝোলা এবং ঝোলার ভিতর বই টই আছে মনে হচ্ছে। চেহারায় একটা গ্রাম্য ছোঁয়া আছে।
    দুলাল ওদের পাশেই বসল। বলল, ‘না স্যার,  কাল এসেছি । বরানগরে আমার বাড়ি। ওখান থেকে আসছি।’
    — ‘ ও আচ্ছা বেশ বেশ।’
    তারপর ছাত্রদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ ঠিক আছে .... তোমাদের আর আটকাব না। অনেকটা রাস্তা যেতে হবে তোমাদের। তা’লে ওই পনের তারিখে দেখা হবে বালীগঞ্জ সায়েন্স কলেজে। আর হ্যাঁ, পৃথ্বীশ .... কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ওই বইটা কিন্তু একটু দেখ। খুব দরকার অামার। লেটেস্ট এডিশানটা লাগবে কিন্তু। ‘
    ছেলে দুটো বিদায় নিল।স্যার বললেন, ‘ কাটোয়া থেকে এসেছে ওরা। ব্রিলিয়ান্ট ছেলে দুজনই। পি এইচ ডি করছে অরবিন্দ দাশগুপ্তর কাছে। অরবিন্দ দাশগুপ্তর নাম শুনেছ তো ? অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের একজন স্টলওয়ার্ট। বিদেশেও ওর নাম ছড়িয়ে পড়েছে। ‘
    দুলাল আমতা আমতা করে বলল, ‘ না স্যার .... আমি ঠিক .... ‘
    সূর্যকান্তবাবু এ কথায় মোটেই ক্ষুণ্ণ হলেন না। বললেন, ‘ বটেই তো.... বটেই তো.... তুমি কি করেই বা ওদের চিনবে। তোমার কাজের ক্ষেত্র তো সম্পূর্ণ আলাদা। আজকাল আর কেই বা কাকে চেনে। শুধু এন্টারটেনারদের সবাই চেনে। যাক গে ওসব কথা।
    তোমাকে যে জন্য ডেকেছি ....আমার এই ঘরে বসেই কাজ। কাজটা করতে হবে আমার এই বাড়ির পাশের ঘরে বসে। কম্পিউটারে সায়েন্টিফিক ডেটা এন্ট্রি করতে হবে। তারপর কিছু স্পেসিফিক জায়গায় পাঠিয়ে দিতে হবে মেল করে। 
    দুলাল কিছু না বলে তাকিয়ে রইল সূর্যকান্তবাবুর মুখের দিকে। সূর্যকান্তবাবু দুলালের মনের কথা আন্দাজ করে নিলেন। তিনি বললেন, ‘ এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সব শিখিয়ে দেওয়া হবে। আমার মেয়ে তোমাকে সব শিখিয়ে দেবে। কাজে ঢোকার পরই তো লোকে কাজ শেখে। চিন্তার কিছু নেই। কাজের নতুন নতুন জায়গা খুঁজে বার করতে পারলে তবেই তো জীবনে এগোতে পারবে।’
    দুলাল বুকে সাহস যোগাড় করে বলল, ‘ কিন্তু আমি তো স্যার জীবনে কোনদিন কম্পিউটার ছুঁইনি।’
    স্যার নির্বিকারভাবে বললেন, ‘ ও কিছু না। এবার ছোঁবে এবং ছুঁলেই ওটা তোমাকে জড়িয়ে ধরবে। চিন্তার কিছু নেই। শ্রীজা তোমাকে সব শিখিয়ে দেবে।হাতি ঘোড়া কোন ব্যাপার না। আর রেমুনারেশানের কথা ভেব না। এখন ওখানে যা পাচ্ছ তার চেয়ে অনেকটাই বেশি পাবে।’ সূর্যকান্তবাবু কাকে যেন হাঁক পেড়ে
    বললেন, ‘ শম্ভু .... শম্ভু .... বাবুকে কি চা টা খাওয়াবি না ... নাকি !’
    ভেতর থেকে আওয়াজ এল , ‘হ্যাঁ ... যাই বাবু ... হয়ে গেছে।’
    মিনিট তিনেক পরে একজন মোটাসোটা মধ্যবয়স্ক গোঁফওয়ালা লোক হাসিমুখে এসে হাজির হল । তার হাতে একটা ট্রেতে দুটো প্লেটে ওমলেট আর দু কাপ চা। একপাশে একটা ছোট টেবিলে ওগুলো রাখল । তারপর টেবিলটা সাবধানে তুলে এনে মাঝখানে বসিয়ে দিল। সূর্যকান্তবাবু সঙ্গে সঙ্গে শিশুর মতো ওমলেটের প্লেটটা তুলে নিয়ে খেতে শুরু করে দিলেন।
    খেতে খেতেই বললেন, ‘ তোমাকে এক্ষুণি কোন মতামত দিতে হবে না। তুমি ভাবনা চিন্তা কর। তাড়াহুড়োর  কোন ব্যাপার নেই। একটা চাকরি ছাড়া তো একটা বড় ডিসিশানের ব্যাপার। তুমি চিন্তাভাবনা কর.... আরে তুমি খাও খাও .... ওসব কথা পরে হবে .... ‘।
    সূর্যকান্ত স্যার নিমেষের মধ্যে ডবল ডিমের ওমলেটটা শেষ করে ফেলে চায়ের কাপে চুমুক দিলেন। 
    দুলাল লাজুক ভঙ্গীতে ওমলেটের প্লেটটা তুলে নিল। 
    সূর্যকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবার এক সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রসঙ্গের অবতারণা করলেন। বললেন, ‘ দেখ দুলাল, নিয়তির বিধান অমোঘ ও অনতিক্রম্য। আমার স্থির বিশ্বাস পৃথিবীর কোন প্রাণী একে বদলাতে পারে না। আমাদের বৈজ্ঞানিক জগতে আমার চেনাজানার মধ্যে আমার মতের সঙ্গে কেউ একমত নয়। তাদের সঙ্গে আমার প্রবল মতবিরোধ আছে। কিন্তু মনে রেখ, ডেসটিনির অস্তিত্বকে উড়িয়ে দিলেই ডেসটিনি তোমাকে ছেড়ে দেবে না।ডেসটিনির কনসেপ্টকে রাইট অফ না করে সায়েন্টিস্টদের বরং উচিৎ এর রহস্য উদ্ঘাটনে ইনটেন্সিভ সায়েন্টিফিক রিসার্চ ওয়ার্কে মনোনিবেশ করা। কিন্তু যে পারসেপশানে তাদের বিশ্বাসই নেই সেটায় তারা এনগ্রসড হবে কি করে ! এ ব্যাপারে আমার নিজস্ব একটা ব্যাখ্যা আছে। কাজটা নিয়ে আমি কিছুটা অগ্রসরও হয়েছি। অ্যাক্জিয়মটা কোয়ান্টাম মেকানিক্স বেসড। আর একদিন আমি আমার কনসেপ্টটা নিয়ে আলোচনা করব। আজ থাক। যাই হোক , তুমি চিন্তা ভাবনা কর কি করবে।শুধু মনে রেখ জীবনে শেখার কোন শেষ নেই। বয়সটা কোন ফ্যাক্টর নয়। ‘
     দুলাল অজস্রবার ‘হ্যাঁ স্যার’ এবং ‘নিশ্চয়ই স্যার’ বলল। 

       স্যারের কাছ থেকে কিছুটা সময় চেয়ে নিয়ে দুলাল আজকে বিদায় নিল। উৎসাহ এবং নিরাশার দোলাচলে দুলতে দুলতে দুলাল বরানগরে এসে পৌঁছল।
    এসে একটা আনন্দের খবর পেল। 
    তার বড় মেয়ে ঈশিতা একটা সর্বভারতীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় ‘ মডার্ন সং ‘ বিভাগে জিতে পঞ্চাশ হাজার টাকা পেয়েছে। একটু আগে খবরটা পাওয়া গেছে। ঈশিতা এখন পুনেতে আছে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের জায়গায়। ওখান থেকেই খবর দিয়েছে। 
    ছোট মেয়ে প্রিয়াংকার ইউনিভার্সিটির রেজাল্ট বেরোবে সামনের সপ্তাহে। প্রিয়াংকা খুব চাপা স্বভাবের। কিন্তু ফার্স্ট ক্লাসের নীচে কিছু আশা করছে না সেটা বোঝাই যায়।
    দুলাল ভাবে নিয়তির লিখন যে খন্ডানো যায় না সেটা তার জীবনে বারবার প্রমাণিত। সূর্যকান্ত স্যার ভুল কিছু বলেননি। নাহলে তার এবং শর্মিষ্ঠার মতো সাদামাটা দুজনের ঘরে এমন গুণী দুটো মেয়ে জন্মালো কি করে। তারা মেয়েদের জন্য বিশেষ কোন চেষ্টা বা যত্ন কোন কিছুই করতে পারেনি। তবু তো হল। আসলে যেটা হবার সেটা হবেই। অত চেষ্টা চরিত্র করে কিছু হয় না।
    এখন, দুলালের সমস্যা হয়ে দাঁড়াল সঠিক সিদ্ধান্তটা নেওয়া। 
    ওসব দমবন্ধ করা পন্ডিতি আবহে সে কতখানি মানিয়ে নিতে পারবে এবং একটা সম্পূর্ণ অজানা একটা কাজ সে কতখানি এবং কতদিনে শিখে উঠতে পারবে সে ব্যাপারে দুলাল বেশ ধন্দে পড়ে গেল। লোকে যতই বলুক শেখার কোন বয়স নেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ও কথাটার কোন দাম নেই।
    তবে এ ব্যাপারে বাড়ির কারও সঙ্গে কোন আলোচনা করল না।সে ঠি ক করল সে নিজে নিজেই ভাববে কদিন ধরে। আগামীকাল সকালেই সে কাঁথিতে ফিরে যাবে ডানলপ থেকে বাস ধরে। ঈশিতা বোধহয় ফিরবে পরশুদিন। ঈশিতার সাফল্যের সূত্রে আনন্দের একটা রেশ লেগে রইল দুলালের মনে । সে ভাবল, তার নিজের রোজগার নিয়ে সে এখন এত ভেবে আকুল হচ্ছে কেন।মেয়ে দুটো তো প্রায় দাঁড়িয়েই গেছে।লড়াইয়ের রাস্তায় এতকাল ধরে তো সে একা একাই হেঁটে এসেছে। তবে দুলাল এটা ভালভাবেই জানে সুখ কপালে না থাকলে কখনও সুখ পাওয়া যায় না। সুসন্তানরাও তাকে সুখ দিতে পারে না। যে যার ভাগ্য নিয়ে জন্মায়। 
        
       পরদিন বেলা এগারোটা নাগাদ তিলোত্তমায় ফিরে দেখল নিখিল  কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে অন্যমনস্কভাবে সিগারেট টানছে।
     
       দুলালকে দেখে নিখিল বলল,  ‘কি ব্যাপার , কলকাতায় গিয়েছিলে শুনলাম। বৌদির শরীর ঠি ক আছে তো ? ‘
    — ‘ হ্যাঁ , ওর শরীর এখন মোটামুটি ঠি কই  আছে। আসলে , আমি কলকাতায় গিয়েছিলাম সূর্যকান্তবাবুর সঙ্গে দেখা করতে । উনি ডেকেছিলেন।’ দুলাল জানায়। 
    — ‘ কি ব্যাপারে ? ‘ 
    — ‘ ও..ই একটা চাকরির জন্য বলেছিলাম ওনাকে .... তাই .... ‘
    — ‘ ও আচ্ছা । কি হল শেষ পর্যন্ত ?’
    —- ‘ হল ... মানে, উনি যে কাজটার কথা বলছেন সেটা খুব হাই ফাই কাজ বুঝলি .... এবং কম্পিউটার নির্ভর। প্রথমত ওটা করতে গেলে আমাকে ভালমতো কম্পিউটার শিখতে হবে — যদিও ওনারা শিখিয়ে নেবেন বলছেন। আর দ্বিতীয়ত , ওইসব বিজ্ঞাণ, মানে লেখাপড়ার ব্যাপারে কি সব লটঘট কাজ .... ও কি আমার দ্বারা সম্ভব হবে। এমনিতেই লজে কাজ করে করে মাথা মোটা হয়ে গেছে।এখন কি আর ওসব হয় ! ‘
    — ‘ উনি কি বলছেন ? ‘
    — ‘ উনি আর কি বলবেন ? ওনার কাছে তো সব কিছুই জলের মতো সহজ। বললেন যে, কোন অসুবিধে হবে না। সব কিছু নাকি ওনার মেয়ে আমাকে শিখিয়ে দেবেন। ‘
    — ‘ তা তুমি কি ঠিক করলে ? ‘
    — ‘ কিছুই ঠিক করিনি এখনও। কয়েকদিন সময় নিয়ে এসেছি ভাবার জন্য। দু এক দিনের মধ্যে ডিসিশান নিতে হবে। সত্যি কথা বলতে কি জানিস নিখিল, একদিকে একটা নতুন উন্নত জগৎ হাতছানি দিচ্ছে , কিন্তু বহুদিনের পুরণো এই জং ধরে যাওয়া মাথা নিয়ে ওখানে পা বাড়াতে ভরসা পাচ্ছি না। ভাবলেই যেন দমবন্ধ হয়ে আসছে। তার চেয়ে মনে হয়, এই যা আছি তাই ভাল। দিব্যি খোলামেলা ভাবে আছি। পয়সাকড়ি যাই পাই বেঁচে তো আছি। এতকাল কাটিয়ে তো দিলাম । কোনদিনও কি এই তিলোত্তমার মায়া ছেড়ে কোথাও গিয়ে স্বস্তি পাব ! যাক ওসব কথা।
    তোর কি খবর বল.... তোর তো প্রায় হয়েই এল।’ দুলাল প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে— ‘ এর মধ্যে আর বাড়ি যাবি নাকি ? আর তো দিন পনের বাকি ।’
    —- ‘ দেখি .... কি করা যায়। আসলে, ওখানে এত ক্যাঁচাল আমার যেতে ইচ্ছে করে না। আমার বড় মেয়ে আর বউ দুটোই একইরকম হারামি .... ‘ নিখিল সিগারেটের শেষটুকু নীচে ফেলে পা দিয়ে ঘষে দেয়।
    — ‘ অার তুই কি ধোয়া তুলসীপাতা নাকি। বেকার কথা বাড়াসনি। হ্যাঁ.... সেই ভদ্রমহিলার খবর কি ? আর কোন লাফড়া হয় নি তো ?’
    — ‘ আর বল কেন । সেই চক্করেই তো চক্কর খাচ্ছি এখনও।না পারছি গিলতে , না পারছি ওগরাতে। মালটার কোন ট্রেসই পাচ্ছি না কদিন ধরে।’
    — ‘ ট্রেস পাওয়ার দরকারটা কি তোর ?’
    — ‘ ওটাই তো বোঝানো মুশ্কিল। একটা বিবেকের দংশন বলা যায় ।’ নিখিল বলে ।
    — ‘ তোর বিবেকের দংশন হবার কারণটা কি ? ওই তো তোর ঘাড়ে এসে চাপল। তারপর ফেলে দিয়ে পালিয়েছিল। মেয়ে দেখলে তোর জ্ঞান থাকে না। কাক কোকিল বিচার নেই ..... ‘।
    — ‘ আরে এটা একটা অন্যরকম ফিলিং । আগে কখনও হয়নি আমার। খালি মনে হচ্ছে অনিন্দিতার বিপদে তার পাশে     দাঁড়ান উচিৎ।’ নিখিল চেয়ারে বসে পড়ে।
    —- ‘ দ্যাখ .... যা ভাল বুঝিস কর .... আবার কোন গাড্ডায় পড়ে যাসনি যেন .... ‘ দুলাল ভেতরে চলে যায়।
      নিখিল চিন্তা করতে লাগল কিভাবে অনিন্দিতার খোঁজ করা যায়। ওর একটা ছেলে আছে, সেই বা কি অবস্থায় কার কাছে কিভাবে আছে সেটাও চিন্তার বিষয়। উকিল সৌম্য দিন্দা তাকে অনিন্দিতার সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ রাখতে বারণ করেছে।
    ওকে ফোন করাও উচিৎ হয়নি। আর দীঘায় ওর এলাকায় যাবার তো কোন প্রশ্নই ওঠে না।একটাই মাত্র উপায় হতে পারে, দিন্দাকে দিয়ে যদি একটা খবর নেওয়ানো যায়। কিন্তু তিনিই বা এসব হ্যাপা নিতে যাবেন কেন, যে ক্লায়েন্ট তার সঙ্গে যোগাযোগই ছিন্ন করে দিয়েছে, তা সে যে কারণেই হোক। ব্যস্ত আইনজীবী তিনি। কিন্তু এসব ব্যক্তিগত ভাবনায় ভারাক্রান্ত হয়ে লজে বসে থাকলে তো চলবে না। নিখিল অফিসে বেরোবার জন্য তৈরি হতে গেল আর একটা সিগারেট পোড়াবার পর।

       আট নদিন হয়ে গেল এখনও শুভঙ্কর পাল বাড়ি ফেরেনি। 
    কাল বিকেলে ফোন করেছিল মনীষাকে। শুভঙ্কর নাকি ব্যবসার কাজে আটকে গেছে ওখানে।ব্যবসার কাজে হলদিয়ায় গিয়ে তো এতদিন থাকেনি কখনও।
    কি এমন ব্যবসা যে এতদিন পড়ে থাকতে হবে ওখানে। ওখানে কোথায় আছে সেটাও পরিষ্কার করে বলে না কিছু । চন্ডিকাপ্রসাদবাবুর সঙ্গে শুভঙ্করের নিশ্চয়ই দেখা হয়েছে। প্রতিবারই তো হয়। চন্ডীবাবু বড় কন্ট্রাকটার । ওখানে পেট্রোকেমিক্যালসে অনেক কাজ পায় । মনীষা ভাবল, চন্ডীবাবুকে ফোন করলেই সব জানা যাবে। আর ওনার সঙ্গে তো কথা বলতেই হবে অমিতাভদের কাজের ব্যাপারে। এর মধ্যে একদিন কাঁথিতে যাবার ইচ্ছে আছে মনীষার। ওখানে গেলে মনটা বেশ ভাল লাগে। এই একঘেয়ে জীবন আর ভাল লাগে না। শুভঙ্কর বাড়িতে থাকলেও ওর সঙ্গে সারাদিনে কটা কথা হয় সন্দেহ। সব সময়ে মোবাইলে কথা বলছে নীচু স্বরে। কথা বলতে বলতে প্রায়ই বাড়ির সামনের মাঠটায় চলে যায় । ওখানে ঘুরতে ঘুরতে অনেকক্ষণ ধরে কাদের সঙ্গে যেন কথা বলে। মনীষার মনটা আজকাল একদম ভাল লাগে না। দামী জিনিসে ভরে যাচ্ছে বাড়ি । একতলা থেকে নানাবিধ অলঙ্করণ সমেত দোতলা হয়েছে। এখানে কোলাঘাটের দিকে পাঁচকাঠা জমি কিনেছে শুভঙ্কর। বছরে অন্তত দুবার মনীষাকে গয়না গড়িয়ে দিচ্ছে কলকাতার বউবাজার থেকে। হঠাৎ এমন প্রাচুর্যের মিনার গজিয়ে উঠতে দেখায় কেমন একটা অস্বস্তির কাঁটা বিধে থাকে মনীষার মনে। কেমন যেন একটা দুর্বিপাকের ঘূর্ণি হাওয়া পাক খায় চারপাশ ঘিরে। ভয় লাগে মাঝে মাঝে । অকারণেই ভয় লাগে। শুভঙ্কর যেন আর আগের মতো নেই। আবার উল্টো চিন্তার স্রোতও বয় মনে। মনীষা ভাবে, কি সব আবোলতাবোল ভাবছে ..... দুৎ.... সব ঠি ক আছে। কোথাও কিছু বিগড়োয়নি। কিন্তু চন্ডীবাবুকে একটা ফোন করতেই হবে ।

        মনীষার মোবাইলে প্রচুর গান লোড করা আছে। হিন্দী ফিল্মী গান যেমন আছে, তেমন রবীন্দ্রসংগীত, বাংলা সমকালীন গান, এমনকি ভক্তিগীতিও আছে। মনীষা ‘ আমাকে আমার মতো থাকতে দাও ....’ গানটা শুনতে লাগল। ‘.... আমি নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি .... ‘ । মনীষার এখনও নিজের মতো গুছিয়ে নেওয়া হল না। টাকার অভাবে জীবন চলে না, আবার টাকা এলেই বাঁধন শক্ত হয় না। একই সংসারে প্রত্যেকটি মানুষ এক একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো দাঁড়িয়ে আছে সংসার সমুদ্রের জলে। যে যার গাছ পাথর কাদা মাটি নিয়ে ভেসে থাকে যতদিন বাঁচে। প্রত্যেকেই একই হাওয়ায় শ্বাস প্রশ্বাস নেয় 
    ঠি কই ,  কিন্তু বাঁচার ধরণ আলাদা আলাদা। কাদা মাটি জল পাথর সব বিভিন্ন প্রকারের। দ্বীপগুলো সব একাকার হয়ে যায় কিংবা তাদের ভিন্ন অস্তিত্ব অদৃশ্য হয়ে যায় যখন সমুদ্রের বিপুল জলরাশির তলায় কোন ভয়ঙ্কর সাইক্লোনের পরে প্রকৃতির প্রবল ঝাপটায় তারা সবাই মিলে চাপা পড়ে।
        মনীষা শুয়ে শুয়ে নানা কথা ভাবতে লাগল। ছোটবেলার নানা কথা মনে পড়তে লাগল। স্মৃতি সততই মধুর এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। মনীষার মন ঘুরপাক খেতে লাগল স্মৃতির নাগরদোলায়।
    সে দোলা থেমে গেল মোবাইলের ঝনঝনানিতে। রেশ কেটে গেল এক লহমায়। চন্ডীবাবু ফোন করেছেন । তিনি বললেন, ‘ দুদিন আগের মিসকল দেখলাম .... তাই.... ‘
    — ‘ হ্যাঁ মন্টুদা , আমি ফোন করেছিলাম । ভাল আছেন তো ?’
    — ‘ হ্যাঁ, ওই .... চলে যাচ্ছে আর কি .... তুই কেমন আছিস ?’
    — ‘ ওই একই ..... চলে যাচ্ছে আর কি .... । আচ্ছা মন্টুদা হলদিয়ায় শুভঙ্করের সঙ্গে আপনার দেখা হয়েছিল নাকি ? ‘
    — ‘ শুভঙ্কর ? কই নাতো । ও কি হলদিয়ায় এসেছে নাকি ? জানিনা  তো।‘  চন্ডিকাপ্রসাদ পতিতুন্ডি ওরফে মন্টুদা জানালেন।
    — ‘ হ্যাঁ সেরকমই তো বলে গেছে। ব্যবসার কাজে গেছে। ‘
    — ‘ কতদিন হল ?’
    — ‘ তা আট দশদিন হবে ‘ 
    — ‘ ফোন করেনি এর মধ্যে ? ‘
    — ‘ হ্যাঁ কালকেই ফোন করেছিল।’
    — ‘ তাহলে চিন্তা করছিস কেন। হয়ত খুব ব্যস্ত আছে, তাই আমার সঙ্গে দেখা করার সময় পায়নি। ‘
    — ‘ না .... ব্যাপারটা ঠিক তা না। আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে শুভঙ্কর হলদিয়ায় নেই।কেন এরকম মনে হচ্ছে ঠি ক   বোঝাতে পারব না। আমার মনটাও আজকাল একদম ভাল লাগে না। ‘
    — ‘ সেকি রে ! তোরও যদি মন খারাপ হয় তা’লে তো মুশ্কিলের ব্যাপার। তুই যেমন দুরন্ত হাসিখুশি আছিস তেমনই থাক।তুই অন্যরকম হয়ে গেলে আমাদের ভাল লাগবে না। আমি দেখছি শুভঙ্কর কোথায় আছে। কোন চিন্তা করিসনি।’
    — ‘ হ্যাঁ মন্টুদা .... একটু দেখুন প্লিজ.... । আর ... আমিতো একইরকম থাকতে চাই কিন্তু আজকাল একদম ভাল লাগে না। আর হ্যাঁ ..... মন্টুদা .... আর একটা কথা ছিল ।দুজন ভদ্রলোকের কিছু কাজের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।ভি আর এস হয়ে গেছে .... ‘
    —- ‘ অ ....। ওরা  তোর কে     হয় ?’
    — ‘ না তেমন কেউ হয় না। আমরা কাঁথিতে গেলে যে লজে উঠি সেখানকার বোর্ডার। খুব ভাল ছেলে ওরা।’
    চন্ডীবাবু বললেন, ‘ আচ্ছা... বুঝতে পেরেছি। কি কাজ করত ওরা ? ‘
    — ‘ কোন একটা ফিনান্সিয়াল কোম্পানিতে .... ‘
    — ‘ অ বুঝতে পেরেছি। কিন্তু আমার এখানে যে সব কাজ আছে সেসব ওরা পছন্দ করবে কিনা জানিনা। আচ্ছা .... ঠিক আছে দেখছি কি করা যায় .... চিন্তা করিসনি । রাখছি এখন কেমন.... শুভঙ্করের ব্যাপারটা দেখছি। পরে ফোন করব । ছাড়ছি .... ‘
    লাইন কেটে গেল। 
       
        মনীষা পরদিন সকালে মেচেদা থেকে বাসে উঠল কাঁথি যাবার জন্য। বান্টিকে রেখে গেল পাশের বাড়িতে জা-এর কাছে। বান্টি ওর খুব ন্যাওটা।

        ‘ কি খবর .... মশায় ...  কেমন আছেন ? ‘
    অমিতাভর ঘরের দরজা খোলা ছিল। অমিতাভ খবরের কাগজে চোখ বোলাচ্ছিল। অবচেতনে প্রতীক্ষিত একটা কন্ঠস্বরে তার বুকের রক্তে ঢেউ খেলে গেল সহসা। মুখ তুলে দেখল দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে মনীষা। অতি পরিচিত অতি সাধারণ কোন লোক কখনও বা কোন গোপন রহস্যের ধোঁয়ায় আবৃত হয়ে কোন দূর দ্বীপের মানুষ হয়ে যায়। অমিতাভরও মনীষাকে  ঠি ক তেমন তার দুয়ারে আগত কোন রহস্যময় দূর দ্বীপবাসিনী বলে মনে হল। এই অপ্রত্যাশিত আগমনে আবিষ্ট হয়ে সে নিষ্পলকে চেয়ে রইল লালচে ফাইবারের চশমা পরা সহাস্য মুখের দিকে। 
    ‘ হ্যাঁ, এই .... মানে, আপনি হঠাৎ ? ‘ অমিতাভ সামলে নেয় নিজেকে।
    —- ‘ কেন , আসতে নেই ? এ..ই দেখতে এলাম আপনারা সব কেমন আছেন ? আমার তো একটা কর্ত্তব্য আছে না কি ! হা: হা: হা: ..... ‘ একটু থামে মনীষা। তারপর আবার বলে, ‘ এদিকে একটা দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি।আমার হাসব্যান্ড ব্যবসার কাজে হলদিয়া গিয়েছিল। প্রায় দশদিন হয়ে গেল। এখনও ফিরল না। এত দেরি তো কোনবার হয় না। এত চিন্তা হচ্ছে না কি বলব ....’
    মনীষার আলোকোজ্জ্বল মুখে মেঘলা ছায়া পড়ে।
    অমিতাভর মনের সুরগুঞ্জনে আচমকা বিতৃষ্ণার ফুলকি ছিটকে এসে পড়ে। তাল কেটে যায় মনোরম আবেশের। সে কোনমতে গতানুগতিক আশ্বাসবাক্য উচ্চারণ করে— ‘ কোন কাজে আটকে গেছে নিশ্চয়ই ..... এসে যাবে । চিন্তা করবেন না।’
    বাপি কোন কাজে তিনতলায় উঠছিল। সে মনীষাকে দেখে তাড়াতাড়ি এদিকে চলে এল। 
    — ‘ আরে বৌদি .... কখন এলেন ? হঠাৎ ? ‘
    এই সময়ে পিনাকপাণি আর অর্ণাশ্রী সাত নম্বর ঘর থেকে বেরোল। ওদের দেখে বাপি বলল, ‘ আপনারা নীচে যান। রিক্শা দাঁড়িয়ে আছে।’
    মনীষা মনের উদ্বেগ চাপতে না পেরে বাপিকেও শুভঙ্কর সম্পর্কিত সব কথা বলে ফেলল। 
    নিতান্তই বালক বাপি স্নেহশীল চোখে মনীষার দিকে চেয়ে রইল। তারপর বলল, ‘ কোন চিন্তা করো না মনীষা বৌদি । আমি তোমার কোন ক্ষতি হতে দেব না। ‘
    অমিতাভ চমকে উঠল।মনীষা কিছু বুঝতে না পেরে বাপির মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।
     ( ক্রমশ : )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:f4b1:9dd4:f0f7:***:*** | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:১৮503884
  • পড়ছি। নেশা ধরে যাচ্ছে।
  • Anjan Banerjee | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:১০503893
  • অনেক অনেক ধন্যবাদ । সঙ্গে থাকুন ।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:3dce:d6c4:914b:***:*** | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২২:৪৫503900
  • খাসা গপ্পো ফেঁদেছেন লেখক। নেশা ধরে বটে 
  • syandi | 45.25.***.*** | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:৩১503901
  • সুন্দর লেখেন ভদ্রলোক। এনার এই টুকরো টুকরো ঘটনাকে জুড়ে একটা কম্পলিট স্টোরি তৈরির  চেষ্টা দেখে বনফুলের 'হাটেবাজারে' মনে পড়ে।
  • Anjan Banerjee | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৪৫503909
  • অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা সবাইকে 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন